প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

বারাণসীতে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএইচইউ) স্বাধীনতা সভানগরে সংসদ সংস্কৃত প্রতিযোগিতার

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

"তারুণ্যের শক্তিই বিকশিত ভারতের ভিত্তি"

Posted On: 23 FEB 2024 8:41PM by PIB Agartala

য়াদিল্লি, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪।। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ বারাণসীতে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্র সভাঘরে সংসদ সংস্কৃত প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দেন। কাশী সংসদ প্রতিযোগিতার উপর একটি পুস্তিকা এবং একটি কফি টেবল বুকের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন তিনি। কাশী সংসদ জ্ঞান প্রতিযোগিতা, কাশী সংসদ ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা এবং কাশী সংসদ সংস্কৃত প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। বারাণসীর সংস্কৃত পড়ুয়াদের মধ্যে বই, ইউনিফর্ম, বাদ্যযন্ত্র ও মেধার শংসাপত্র বিতরণ করেন তিনি। কাশী সংসদ ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতার গ্যালারি পরিদর্শন করে প্রতিযোগীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় মেতে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তরুণ পড়ুয়াদের মধ্যে উপস্থিত থাকতে পেরে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত। এই অনুভূতি অনেকটা জ্ঞানের গঙ্গায় ডুব দেওয়া মতো। সুপ্রাচীন এই শহরের নিজস্ব পরিচয় রক্ষায় নতুন প্রজন্মের প্রয়াসের ভুয়সী প্রশংসা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের যুবশক্তি অমৃতকালে দেশকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে। কাশীকে ভারতের শাশ্বত জ্ঞানের রাজধানী আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, এই শহর তার পূর্বতন গরিমা ফিরে পাচ্ছে, এটা সারা দেশের কাছেই অত্যন্ত আনন্দ ও গর্বের বিষয়। প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, যাঁরা পুরস্কার পেলেন না, তাঁদেরও নিজেদের পরাজিত বা অনগ্রসর ভাবার কোনো কারণ নেই। প্রত্যেকেই এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা লাভ করেছে। সাংসদ হিসেবে কাশীর উন্নয়নের লক্ষ্যে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ন্যাস, কাশী বিদ্বৎ পরিষদ এবং শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানান। আজ যে কফি টেবল বুক প্রকাশিত হল, তাতে গত ১০ বছরে কাশীর পুনরুজ্জীবনের ইতিহাস ধরা রয়েছে বলে তিনি জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সবাই বাবা বিশ্বনাথের ইচ্ছানুসারে চলছি। মহাদেবের আশীর্বাদে কাশীতে গত ১০ বছর ধরে ‘বিকাশের ডমরু’ ধ্বনিত হচ্ছে। সেখানে কোটি কোটি টাকার প্রকল্পের উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিবরাত্রি ও রংভারি একাদশির আগে কাশী উন্নয়নের উৎসব উদযাপন করছে। কাশীতে এখন বিকাশের গঙ্গা বইছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাশী কেবল আমাদের ধর্মের একটি তীর্থস্থানই নয়, ভারতের শাশ্বত চেতনার প্রাণবন্ত কেন্দ্র। অতীতে সারা বিশ্ব ভারতকে যে সমীহের দৃষ্টিতে দেখতো, অর্থনৈতিক শক্তি নয়, তার ভিত্তি ছিল সাংস্কৃতিক, আধ্যাত্মিক ও সামাজিক সমৃদ্ধি। কাশী ও বিশ্বনাথ ধামের মতো ‘তীর্থ’গুলি ছিল দেশের উন্নয়নের ‘যজ্ঞশালা’। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শৈব তীর্থ ছাড়াও কাশী বুদ্ধের শিক্ষাদানের কেন্দ্র, জৈন তীর্থঙ্করদের জন্মস্থান এবং আদি শঙ্করাচার্যের বোধিলাভের পুন্যভূমি। সারা দেশ এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসায় কাশী মহামানবের মিলনক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এমন বৈচিত্র্যপূর্ণ স্থানেই নতুন চিন্তাভাবনার জন্ম হয় এবং নতুন চিন্তাভাবনাই প্রগতিকে লালন করে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বনাথ ধাম আমাদের নির্ণায়ক দিশা দেখাবে, ভারতকে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবে। বিশ্বনাথ ধাম করিডর আজ জ্ঞান ও ন্যায় বিচারের ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে রয়েছে। কাশীতে একদিকে যেমন ধ্রুপদী সঙ্গীতের মূর্চ্ছনা শোনা যায়, তেমনি শোনা যায় আধ্যাত্মিক সংলাপ। কাশী চিন্তাভাবনার বিনিময়ে উৎসাহ দেয়, সুপ্রাচীন জ্ঞানের সংরক্ষণ করে এবং নতুন আদর্শের জন্ম দেয়। কাশী সংসদ সংস্কৃত প্রতিযোগিতা এবং কাশী সংসদ জ্ঞান প্রতিযোগিতা এরই অঙ্গ, যেখানে সংস্কৃতে হাজার হাজার পড়ুয়াকে মেধাবৃত্তির সঙ্গে বই, পোশাক ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করা হয়। বিশ্বনাথ ধাম কাশী তামিল সংগমম এবং গঙ্গা পুষ্কারুলু মহোৎসবের মতো কর্মসূচি আয়োজনের মধ্য দিয়ে ‘একভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’ প্রচারাভিযানেরও অঙ্গ হয়ে উঠেছে। উপজাতীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে এই শহর অন্তর্ভুক্তিকরণেরও বিকাশ ঘটাচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। কাশীর পণ্ডিতজন এবং বিদ্বৎ পরিষদ আধুনিক বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রাচীন জ্ঞানের গবেষণা করছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, নতুন কাশী নতুন ভারতের অনুপ্রেরণা হয়ে দেখা দিয়েছে। এখানকার যুব সমাজ বিশ্বজুড়ে ভারতীয় জ্ঞান, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বার্তাবহ হয়ে উঠবে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের জ্ঞান, বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতার বিকাশে যেসব ভাষার অবদান সব থেকে বেশি, তার মধ্যে প্রধান হল সংস্কৃত। ভারত যদি এক ধারণা হয়, সংস্কৃত তার মূল প্রকাশ। ভারত এক যাত্রা হলে সংস্কৃত সেই ইতিহাসের এক প্রধান অধ্যায়। ভারত বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের দেশ, সংস্কৃত তার উৎস। একসময়ে জ্যোতির্বিজ্ঞান, গণিত শাস্ত্র, চিকিৎসা শাস্ত্র, সাহিত্য, সঙ্গীত, শিল্প – সব কিছু নিয়ে গবেষণারই প্রধান ভাষা ছিল সংস্কৃত। এই সব শাখার মধ্য দিয়ে ভারত বিশ্বে তার স্বাতন্ত্র্য প্রতিষ্ঠা করেছে। কাশী ও কাঞ্চিতে বেদের উচ্চারণ ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর সুরমূর্চ্ছনা। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ কাশী ঐতিহ্য ও উন্নয়নের মডেল হয়ে উঠেছে। সারা বিশ্ব দেখছে কীভাবে ঐতিহ্য ও আধ্যাত্মিকতাকে কেন্দ্র করে আধুনিকতার প্রসার হয়। এই প্রসঙ্গে তিনি অযোধ্যার উল্লেখ করে বলেন, নবনির্মিত মন্দিরে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার পর অযোধ্যাও কাশীর মতো বিকশিত হচ্ছে। কুশিনগরে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভগবান বুদ্ধের সঙ্গে জড়িত স্থানগুলিতে আধুনিক পরিকাঠামো ও সুযোগ সুবিধা গড়ে তুলছে। আগামী ৫ বছরে দেশ উন্নয়ন ও সাফল্যের এক নতুন মাত্রায় পৌঁছবে বলে অঙ্গীকার করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ হলো মোদীর গ্যারান্টি। আর মোদীর গ্যারান্টি মানে গ্যারান্টি পূর্ণ হওয়ার গ্যারান্টি। প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া সেরা আলোকচিত্রগুলি ভোটের মাধ্যমে বেছে নিয়ে পর্যটকদের জন্য পিকচার পোস্টকার্ড করার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। একটি স্কেচিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করে সেরা স্কেচগুলিকে নিয়েও পোস্টকার্ড করা যেতে পারে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি। এছাড়া কাশীর জন্য একটি গাইড প্রতিযোগিতা করারও পরামর্শ দিয়েছেন শ্রী মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাশীর মানুষই তাঁর সব থেকে বড় শক্তি এবং তিনি একজন সেবক ও বন্ধু হিসেবে কাশীর প্রতিটি নাগরিকের সেবা করে যাবেন। 

অনুষ্ঠানে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। 

SKC/SP/KMD


(Release ID: 2008525) Visitor Counter : 77


Read this release in: English