রাষ্ট্রপতির সচিবালয়

সংসদে মাননীয় রাষ্ট্রপতি শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মু-র ভাষণ

Posted On: 01 FEB 2024 12:27PM by PIB Agartala

নতুন দিল্লি, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৪

 

মাননীয় সদস্যবৃন্দ,

১.     নতুন সংসদ ভবনে প্রথমবার ভাষণ দিচ্ছি আমি। “স্বাধীনতার অমৃত কাল”-এর সূচনায় তৈরি হয়েছে এই অসাধারণ ভবনটি।
    এই ভবনের নির্মাণে প্রতিফলিত ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর সুবাসিত ধারণা এবং তা ভারতের সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রতিভলন।
    আমাদের গণতান্ত্রিক এবং সংসদীয় রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধার বার্তা দেয় এই ভবন।
    পাশাপাশি, এই ভবন একবিংশ শতকের নতুন ভারতের পক্ষে প্রাসঙ্গিক নতুন চিন্তাধারা অনুসরণ করে এগনোয় দায়বদ্ধতার কথাও মনে করিয়ে দেয়।
    আমি প্রত্যয়ী যে স্বাধীনতার অমৃত কালে ‘বিকশিত ভারত’ গড়ে তোলায় গুরুত্বপূর্ণ নানা নীতি নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনার সাক্ষী হয়ে উঠবে এই ভবন। 
    আপনাদের সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।

মাননীয় সদস্যবৃন্দ,

২.     এই বছর আমাদের সংবিধান কার্যকর হওয়ার ৭৫তম বার্ষিকী।
    এই অধ্যায়ে স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদযাপনের অমৃত মহোৎসবের সমাপ্তি ঘটেছে।
    এই সময়কালে দেশজুড়ে হয়েছে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন। 
    দেশ স্মরণ করেছে বহু নাম না জানা স্বাধীনতা সংগ্রামীকে।
    ৭৫ বছর পরে নবীন প্রজন্ম স্বাধীনতা সংগ্রামের অধ্যায়কে পুনরুজ্জীবিত করেছে।

৩.    এই অভিযানকালে :

•    ‘মেরি মাটি, মেরা দেশ’ কর্মসূচির আওতায় দেশের প্রতিটি গ্রামের মাটি অমৃত কলসে ভরে নিয়ে আসা হয়েছে দিল্লিতে।
•    ২ লক্ষেরও বেশি ফলক বসানো হয়েছে।
•    ৩ কোটিরও বেশি মানুষ ‘পঞ্চ প্রাণ’-এর শপথ নিয়েছেন।
•    ৭০,০০০-এরও বেশি অমৃত সরোবর তৈরি হয়েছে।
•    গড়ে উঠেছে ২ লক্ষেরও বেশি “অমৃত বাটিকা”।
•    দু কোটিরও বেশি বৃক্ষ রোপণ হয়েছে।
•    ১৬ কোটিরও বেশি মানুষ তেরঙ্গার সঙ্গে সেলফি আপলোড করেছেন।

৪.    অমৃত মহোৎসবের সময়ে,

•    “কর্তব্য পথ”-এ স্থাপিত হয়েছে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তি।
•    দেশের সব প্রধানমন্ত্রীর জীবন ও অবদান নিয়ে জাতীয় রাজধানী দিল্লিতে চালু হয়েছে সংগ্রহশালা।
•    শান্তিনিকেতন এবং হোয়েসাল মন্দির স্থান পেয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায়।
•    “সাহিবজাদে”-এর স্মরণে ঘোষিত হয়েছে বীর বাল দিবস।
•    ভগবান বিরসা মুন্ডার জন্ম দিবস ঘোষিত হয়েছে “জনজাতীয় গৌরব দিবস” হিসেবে।
•    দেশভাগের ভয়াবহ অধ্যায়ের স্মৃতি উস্কে দিতে ১৪ আগস্ট দিনটিকে ঘোষণা করা হয়েছে “বিভাজন বিভীষিকা স্মৃতি দিবস” হিসেবে।

মাননীয় সদস্যবৃন্দ,

৫.    বিগত বছরটিতে একের পর এক ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জন করেছে ভারত। এসেছে গর্বের নানা মুহূর্ত। 

•    বিশ্বব্যাপী সঙ্কটের মধ্যেও ভারত হয়ে উঠেছে দ্রুততম বিকাশশীল দেশ, ধারাবাহিকভাবে দুটি ত্রৈমাসিকে এদেশের বিকাশহার ৭.৫ শতাংশের উপরে।
•    চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ভারতই প্রথম নিজের পতাকা তুলেছে।
•    আদিত্য অভিযানের আওতায় সফলভাবে উৎক্ষেপিত উপগ্রহ পৌঁছে গেছে পৃথিবীর থেকে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে।
•    ঐতিহাসিক জি-২০ শিখর সম্মেলনের সফল আয়োজন বিশ্বে ভারতের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে। 
•    এশিয়ান গেমসে প্রথমবার ১০০-র বেশি পদক পেয়েছে ভারত।
•    প্যারা এশিয়ান গেমসেও ভারত ১০০-র বেশি পদক পেয়েছে।
•    ভারত পেয়েছে তার দীর্ঘতম সমুদ্র সেতু – অটল সেতু।
•    ভারত পেয়েছে প্রথম নমো ভারত ট্রেন এবং প্রথম অমৃত ভারত ট্রেন।
•    ৫জি পরিষেবার দ্রুততম প্রসারে সফল হয়েছে ভারত।
•    ভারতের একটি বিমান সংস্থা বিশ্বের বৃহত্তম বিমান চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।
•    গত বছর আমার সরকার মিশন মোডে লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে।

মাননীয় সদস্যবৃন্দ,

৬.    বিগত ১২ মাসে আমার সরকার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রণয়ন করেছে। 
    এই আইনগুলি প্রণীত হয়েছে সব সাংসদের সহযোগিতায়।
    ‘বিকশিত ভারত’-এর ধারণার বাস্তবায়নে এই আইনগুলি নির্ভরযোগ্য ভিত্তি তৈরি করেছে।
    তিন বছর অপেক্ষের পর নারী শক্তি বন্দন অধিনিয়ম প্রণীত হওয়ার ক্ষেত্রে আপনাদের সকলের প্রচেষ্টার আমি ভূয়সী প্রশংসা করি।
    এর ফলে লোকসভা এবং প্রাদেশিক আইনসভাগুলিতে মহিলাদের অধিকতর প্রতিনিধিত্বের পথ প্রশস্ত হয়েছে।
    এই বিষয়টি নারী-নেতৃত্বাধীন বিকাশে সরকারের দায়বদ্ধতাকে আরও জোরদার করে।
    সংস্কার, সম্পাদন এবং পরিবর্তনের মন্ত্রে অটল থেকেছে আমার সরকার।
    দাসত্বের অধ্যায়ে তৈরি হওয়া ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা এখন অতীত। এখন শাস্তি বিধান নয়, ন্যায়বিচারেই অগ্রাধিকার। ‘ন্যায়বিচার সর্বাগ্রে’-এই নীতির উপর আধারিত একটি নতুন ন্যায় সংহিতা পেয়েছে এই দেশ।
    ডিজিটাল ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ আইন ডিজিটাল পরিসরকে আরও নিরাপদ করে তুলবে।
“অনুসন্ধান জাতীয় গবেষণা ভিত্তি আইন” দেশে গবেষণা এবং উদ্ভাবনার পালে হাওয়া লাগাবে।
    জম্মু এবং কাশ্মীর সংরক্ষণ আইন সেখানকার আদিবাসীদের প্রতিনিধিত্বের অধিকার নিশ্চিত করবে। 
    এই সময়ে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধিত হয়েছে। তার ফলে তেলঙ্গানায় একটি সম্মক্ক সারাক্কা কেন্দ্রীয় আদিবাসী বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার পথ তৈরি হয়েছে। 
    গত বছর আরও ৭৬টি পুরনো আইন বাতিল হয়েছে। 
    আমার সরকার পরীক্ষায় বেনিয়ম নিয়ে যুব সমাজের উদ্বেগের বিষয়ে সচেতন।
    সেজন্যই, ওই ধরণের ভ্রষ্টাচারের ক্ষেত্রে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সংস্থান সম্বলিত একটি নতুন আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মাননীয় সদস্যবৃন্দ,

৭.    অতীতের চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে ভবিষ্যতের দিশায় উদ্যোগ ও শক্তির প্রয়োগের মাধ্যমেই একটি দেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যেতে পারে।
    বিগত ১০ বছরে এই ধরণের একাধিক কর্মকাণ্ডের সাক্ষী থেকেছে ভারত। দেশের মানুষ এজন্য অপেক্ষা করেছিলেন দশকের পর দশক ধরে।
    একটি রাম মন্দির নির্মাণের আকাঙ্ক্ষা শতকের পর শতক ধরে লালন করেছেন মানুষ। আজ তা বাস্তব। 
    জম্মু-কাশ্মীরের ক্ষেত্রে সংবিধানের ৩৭০ ধারার বিলোপ নিয়ে বিভিন্ন মহলে সংশয় ছিল। আজ তা ইতিহাস।
    ‘তিন তালাক’-এর বিরুদ্ধেও সংসদ কঠোর আইন প্রণয়ন করেছে।
    প্রতিবেশী দেশগুলিতে নিপীড়নের শিকার সংখ্যালঘুদের এদেশের নাগরিকত্ব প্রদানের লক্ষ্যে এই সংসদ একটি নতুন আইন প্রণয়ন করেছে।
    দীর্ঘদিন ধরে প্রত্যাশিত এক পদ এক পেনশন নীতি রূপায়িত করেছে আমার সরকার। এর সুবাদে অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীরা এখনও পর্যন্ত প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা পেয়েছেন।
    ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্য প্রথমবার চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ পদ তৈরি হয়েছে। 

মাননীয় সদস্যবৃন্দ,

৮.    দেশপ্রেমের এক অনন্ত উৎস হল উৎকলমণি পন্ডিত গোপবন্ধু দাসের এই কয়েকটি অনন্য পংক্তি। তিনি বলেছেন,

मिशु मोर देह ए देश माटिरे,
देशबासी चालि जाआन्तु पिठिरे।
देशर स्वराज्य-पथे जेते गाड़,
पूरु तहिं पड़ि मोर मांस हाड़।

অর্থাৎ
আমার দেহ বিলীন হোক এদেশের মাটিতে,
আমার কাঁধে ভর দিয়ে চলুক দেশের মানুষ।
দেশের স্বাধীনতার পথে যে গহ্বরগুলি রয়েছে,
তার প্রত্যেকটি মসৃণ হয়ে উঠুক আমার অস্থিমজ্জায়।

কর্তব্যবোধ এবং দেশকে সর্বাগ্রে রাখার মূল্যবোধের চরমতম প্রতিফলন ঘটেছে এই পংক্তিগুলিতে।

৯.    বিগত ১০ বছরের প্রচেষ্টার সাফল্য আজ পরিলক্ষিত। 
    ‘গরিবি হঠাও’ শ্লোগান শুনেছি ছোটবেলা থেকেই, আমাদের জীবনে এখন প্রথম প্রত্যক্ষ করছি দারিদ্র দূরীকরণের মহাযজ্ঞ।
    নীতি আয়োগের তথ্য অনুযায়ী আমার সরকারের বিগত ১০ বছরের মেয়াদে প্রায় ২৫ কোটি দেশবাসী দারিদ্রের কবলমুক্ত হয়েছেন।
    এর ফলে দরিদ্র মানুষের মধ্যে প্রত্যয়ের আবহ তৈরি হয়েছে।
    ২৫ কোটি মানুষের দারিদ্র দূর হলে, তাঁর দারিদ্রও দূর হওয়া সম্ভব।

১০.    আজ অর্থনৈতিক বিভিন্ন মাত্রার দিকে তাকালে, আমাদের মনে এই প্রত্যয় জাগে যে ভারত এগিয়ে চলেছে সঠিক দিশায়, গ্রহণ করা হচ্ছে সঠিক সিদ্ধান্ত।

•    বিগত ১০ বছরে :

•    অর্থনীতির প্রশ্নে ভারত “ভঙ্গুর পাঁচ”-এর থেকে উত্তীর্ণ হয়ে “শীর্ষ স্থানীয় পাঁচ”-এ পৌঁছে গেছে।
•    ভারতের রপ্তানি ৪৫০ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ৭৭৫ বিলিয়ন ডলার ছাপিয়ে গেছে।
•    প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়েছে।
•    খাদি এবং গ্রামীণ শিল্পপণ্যের বিক্রয় চার গুণ বেড়েছে।
•    আয়কর রিটার্ন জমা দেন এমন মানুষের সংখ্যা ৩.২৫ কোটি থেকে বেড়ে প্রায় ৮.২৫ কোটিতে পৌঁছেছে, অর্থাৎ দ্বিগুণেরও বেশি।

•    এক দশক আগে :

•    দেশে মাত্র কয়েকশো স্টার্ট-আপ ছিল, এখন তার সংখ্যা ১ লক্ষের বেশি।
•    বাণিজ্যিক সংস্থার নিবন্ধিকরণ বছরে ৯৪ হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে ১ লক্ষ ৬০ হাজার। 
•    ২০১৭-র ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯৮ লক্ষ মানুষ জিএসটি দিয়েছেন, এখন এই সংখ্যা ১ কোটি ৪০ লক্ষ।
•    ২০১৪-র আগের ১০ বছরে বিক্রি হওয়া গাড়ির সংখ্যা ছিল প্রায় ১৩ কোটি। বিগত ১০ বছরে দেশের মানুষ ২১ কোটিরও বেশি গাড়ি কিনেছেন।
•    ২০১৪-১৫-য় প্রায় ২ হাজার বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে, ২০২৩-২৪ বর্ষের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ১২ লক্ষ বৈদ্যুতিক গাড়ি।


মাননীয় সদস্যবৃন্দ,

১১.    বিগত দশকে আমার সরকার সুপ্রশাসন এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতাকে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের মূল ভিত্তি করে তুলেছে। 
    এর ফলে আমরা প্রত্যক্ষ করেছি বড় ধরণের অর্থনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়া।
•    এই সময়ে দেশে দেউলিয়া বিধি চালু হয়েছে।
•    জিএসটি-র সুবাদে ভারতে এখন এক দেশ এক কর ব্যবস্থা কাজ করছে।
•    আমার সরকার সার্বিক প্রশ্নে অর্থনৈতিক সুস্থিতি নিশ্চিত করেছে।
•    বিগত ১০ বছরে মূলধনী খাতে ব্যয় ৫ গুণ বেড়ে ১০ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। আর্থিক ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
•    আজ বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় ৬০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চেয়েও বেশি।
•    আমাদের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার হাল আগে ছিল বেশ খারাপ, আজ এদেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা বিশ্বের সবচেয়ে দক্ষ একটি হয়ে উঠেছে।
•    ব্যাঙ্কগুলির অনুৎপাদক সম্পদের শতাংশ আগে ছিল ১০ কিংবা তার বেশি, এখন তা মাত্র ৪ শতাংশ।
•    মেক ইন ইন্ডিয়া এবং আত্মনির্ভর ভারত কর্মসূচি আমাদের শক্তি।
•    আজ ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন উৎপাদক দেশ।
•    বিগত ১০ বছরে মোবাইল ফোন উৎপাদন ৫ গুণ বেড়েছে।
•    কয়েক বছর আগেও ভারত খেলনা আমদানি করতো, আজ ভারত মেড ইন ইন্ডিয়া খেলনা রপ্তানি করছি।
•    ভারতের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনের পরিমাণ ১ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
•    আজ প্রতিটি ভারতবাসী দেশে নির্মিত বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রান্ত-কে দেখে গর্ব অনুভব করছেন।
•    আমাদের বায়ু সেনার অন্যতম সম্পদ হয়ে উঠেছে তেজস যুদ্ধ বিমান। 
•    সি-২৯৫ পরিবহণ বিমান তৈরি হতে চলেছে ভারতে।
•    ভারতে তৈরি হবে আধুনিক বিমান ইঞ্জিন।
•    উত্তরপ্রদেশ এবং তামিলনাড়ুতে গড়ে উঠছে প্রতিরক্ষা করিডর।
•    আমার সরকার প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে।
•    আমার সরকার মহাকাশ ক্ষেত্রকে নতুন স্টার্ট-আপ সংস্থার জন্য খুলে দিয়েছে।

মাননীয় সদস্যবৃন্দ,

১২.    আমার সরকার সম্পদসৃজনকারীদের অবদানকে স্বীকৃতি দেয় এবং ভারতের বেসরকারি ক্ষেত্রের ক্ষমতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।
    ভারতে বাণিজ্যের উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলতে আমরা দায়বদ্ধ এবং সরকার সেই লক্ষ্যে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে চলেছে।

•    ইজ অফ ডুইং বিজনেস-এর নিরিখে ভারতের ক্রমিক উন্নতি পরিলক্ষিত।
•    বিগত কয়েক বছরে ৪০ হাজারেরও বেশি অপ্রাসঙ্গিক বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া হয়েছে কিংবা সরলীকৃত হয়েছে।
•    কোম্পানি আইন এবং সীমিত দায়বদ্ধতা অংশীদারিত্ব আইনের ৬৩টি সংস্থানকে ফৌজদারি বিচার প্রক্রিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। 
•    জনবিশ্বাস আইন বিভিন্ন আইনের আওতায় ১৮৩টি সংস্থানের ক্ষেত্রে ফৌজদারি বিধি সরিয়ে নিয়েছে। 
•    আদালতের বাইরে বিরোধের সন্তোষজনক নিষ্পত্তির জন্য একটি মধ্যস্থতা আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। 
•    অরণ্য এবং পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্র পেতে এখন ৭৫ দিনেরও কম সময় লাগে, আগে লাগতো ৬০০ দিন।
•    মুখোমুখি না হয়ে মূল্যায়ন ও যাচাইয়ের ব্যবস্থা কর প্রশাসনে স্বচ্ছতা এনেছে।

মাননীয় সদস্যবৃন্দ,

১৩.    আমাদের অতিক্ষুদ্র – ক্ষুদ্র ও মাঝারি ক্ষেত্র সংস্কারের সুবাদে উপকৃত হচ্ছে বিপুল মাত্রায়।
    আপনারা জানেন, আজ, এই ক্ষেত্রে কোটি কোটি নাগরিক কর্মরত।
    আমাদের সরকার এই সমস্ত সংস্থা এবং উদ্যোগপতিদের ক্ষমতায়নে পূর্ণ দায়বদ্ধতার সঙ্গে কাজ করছে। 

•    অতিক্ষুদ্র – ক্ষুদ্র ও মাঝারি সংস্থার সংজ্ঞার পরিসর বিস্তৃততর রয়েছে। 
•    নতুন সংজ্ঞায় বিনিয়োগ এবং লেনদেনের বিষয়টি জড়িত।
•    বর্তমানে উদ্যম এবং উদ্যম সহায়ক পোর্টালে ৩.৫ কোটি ক্ষুদ্র ও মাঝারি সংস্থা নিবন্ধিত।
•    ক্ষুদ্র ও মাঝারি সংস্থার জন্য ক্রেডিট গ্যারান্টি প্রকল্পের আওতায় গত ৫ বছরে প্রায় ৫ লক্ষ কোটি টাকার গ্যারান্টি দেওয়া হয়েছে। 
•    এই পরিমাণ ২০১৪-র আগের দশকের তুলনায় ৬ গুণেরও বেশি।

মাননীয় সদস্যবৃন্দ,

১৪.    আমার সরকারের আরেকটি উল্লেখযোগ্য সংস্কার কর্মসূচি হল ডিজিটাল ভারত তৈরি করা, ডিজিটাল ভারত এদেশে জীবনযাপন এবং ব্যবসাবাণিজ্য অনেক সহজ করে তুলেছে। 
    আজ ভারতের সাফল্যকে স্বীকৃতি দেয় সারা বিশ্ব। এদেশের মতো ডিজিটাল প্রণালী নেই উন্নত দেশগুলিতেও। 
    সাধারণ মানুষের কল্পনারও অতীত ছিল যে, এমনকি গ্রামেও, দৈনিন্দিন কেনেবেচার কাজ ডিজিটাল পদ্ধতিতে হতে পারে। 

•    আজ তাৎক্ষণিক ভিত্তিতে বিশ্বের ডিজিটাল লেনদেনের ৪৬ শতাংশ হয়ে থাকে ভারতে।
•    ইউপিআই-এর মাধ্যমে গত মাসে রেকর্ড ১২০০ কোটি লেনদেন হয়েছে। 
•    এই লেনদেনের পরিমাণ ১৮ লক্ষ কোটি টাকা – যা একটি রেকর্ড।
•    বিশ্বের অন্য নানা দেশও এখন এধরণের মঞ্চ ব্যবহার করে লেনদেন চালু করছে।
•    ডিজিটাল ইন্ডিয়া কর্মসূচি ব্যাঙ্কের কাজকর্ম এবং ঋণদান অনেক সহজ করে তুলেছে।
•    জনধন – আধার – মোবাইল ত্রয়ী দুর্নীতি প্রতিরোধে সহায়ক হয়ে উঠেছে। 
•    সরাসরি সুবিধা হস্তান্তর কর্মসূচির মাধ্যমে আমার সরকার এখনও পর্যন্ত প্রাপকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৩৪ লক্ষ কোটি টাকা পাঠিয়েছে। 
•    জনধন – আধার – মোবাইল ত্রয়ীর সৌজন্যে ১০ কোটি ভূয়ো প্রাপককে উচ্ছেদ করা গেছে। 
•    এর ফলে ২.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা অযোগ্য প্রাপকের হাতে যাওয়া আটকানো গেছে।
•    ডিজিলকার পরিষেবা সাধারণ মানুষের জীবন সহজতর করেছে, এর ব্যবহারকারীদের এখনও পর্যন্ত ৬০০ কোটিরও বেশি নথি প্রদান করা হয়েছে। 
•    প্রায় ৫৩ কোটি মানুষের ডিজিটাল হেলথ আইডি তৈরি হয়েছে আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য খাতার আওতায়।

মাননীয় সদস্যবৃন্দ,

১৫.    ডিজিটাল পরিকাঠামোর পাশাপাশি বস্তুগত পরিকাঠামোতেও নজিরবিহীন লগ্নি হয়েছে। আজ ভারতে এমন পরিকাঠামো সরঞ্জাম তৈরি হচ্ছে যা আগে ভারতীয়দের কাছে স্বপ্নের সমতুল ছিল।

    বিগত ১০ বছরে :

•    গ্রামে গ্রামে প্রায় ৩.৭৫ লক্ষ কিলোমিটার নতুন রাস্তা তৈরি হয়েছে। 
•    জাতীয় মহাসড়কের মোট দৈর্ঘ্য ৯০ হাজার কিলোমিটার থেকে বেড়ে হয়েছে ১ লক্ষ ৪৬ হাজার কিলোমিটার।
•    ৪ লেনের জাতীয় মহাসড়কের মোট দৈর্ঘ্য ২.৫ গুণ বেড়েছে।
•    উচ্চগতিতে যান চলাচলের উপযুক্ত করিডরের দৈর্ঘ্য আগে ছিল ৫০০ কিলোমিটার, এখন ৪ হাজার কিলোমিটার।
•    বিমানবন্দরের সংখ্যা ৭৪ থেকে বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৯-এ।
•    বড় বন্দরগুলির পণ্য আদানপ্রদানের ক্ষমতা দ্বিগুণ হয়েছে। 
•    ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৪ গুণ বেড়েছে। 
•    প্রায় ২ লক্ষ গ্রাম পঞ্চায়েত অপটিক্যাল ফাইবারে সংযুক্ত হয়েছে।
•    গ্রামে গ্রামে খুলেছে ৪ লক্ষেরও বেশি সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্র – যা কর্মসংস্থানের বড় উৎস।
•    দেশে ১০,০০০ কিলোমিটার গ্যাস পাইপলাইন বসেছে।
•    এক দেশ, এক পাওয়ার গ্রিড দেশে বিদ্যুৎ সংবহন উন্নততর করেছে।
•    এক দেশ, এক গ্যাস গ্রিড গ্যাস-ভিত্তিক অর্থনীতির পালে হাওয়া লাগাচ্ছে।
•    মেট্রো পরিষেবা সিমিত ছিল ৫টি শহরে, এখন তা চালু হয়েছে ২০টি শহরে। 
•    ২৫ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি রেললাইন পাতা হয়েছে – যা বহু উন্নত দেশের রেলপথের মোট দৈর্ঘ্যের তুলনায় বেশি।
•    রেলপথের ১০০ শতাংশ বৈদ্যুতিকীকরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে ভারত। 
•    এই সময়ে চালু হয়েছে ভারতের প্রথম সেমি হাইস্পিড ট্রেন।
•    আজ ৩৯টিরও বেশি রুটে চলছে বন্দে ভারত ট্রেন।
•    ১৩০০-রও বেশি রেল স্টেশনকে অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্পের আওতায় উন্নততর করে তোলা হচ্ছে। 

মাননীয় সদস্যবৃন্দ,

১৬.    আমার সরকার বিশ্বাস করে, ‘বিকশিত ভারত’-এর অসাধারণ কাঠামো গড়ে উঠবে চারটি মূল স্তম্ভের উপর।
    এই স্তম্ভগুলি হল – যুব শক্তি, নারী শক্তি, কৃষক এবং দরিদ্র।
    ভারতের সমাজে এঁদের পরিস্থিতি এবং আশা-আকাঙ্ক্ষা বর্গ এবং স্থান বিশেষে অভিন্ন।
    সেজন্যই আমার সরকার এঁদের ক্ষমতায়নে অক্লান্তভাবে কাজ করে চলেছে। 
    এঁদের ক্ষমতায়নে আমার সরকার কর রাজস্বের একটি বড় অংশ খরচ করছে। 

•    ৪ কোটি ১০ লক্ষ দরিদ্র পরিবার পাকা বাড়ি পেয়েছেন। এজন্য খরচ হয়েছে প্রায় ৬ লক্ষ কোটি টাকা।
•    ১১ কোটি গ্রামীণ পরিবারে এই প্রথম নলবাহিত জল পৌঁছে গেছে।
•    এজন্য প্রায় ৪ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। 
•    দেওয়া হয়েছে ১০ কোটি উজ্জ্বলা গ্যাস সংযোগ।
•    এই সুবিধায় উপকৃত বোনেরা খুব কম দামে রান্নার গ্যাস পাচ্ছেন।
•    এই প্রকল্পে সরকার প্রায় ২.৫ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করেছে।
•    করোনা ভাইরাস অতিমারি শুরু হওয়ার পর থেকে ৮০ কোটি দেশবাসীকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হচ্ছে।
•    এই পরিষেবার মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়ানো হয়েছে।
•    এজন্য অতিরিক্ত ১১ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে।
•    আমার সরকার প্রতিটি কল্যাণমূলক প্রকল্পের সুবিধা প্রতিটি যোগ্য প্রাপকের কাছে পৌঁছে যাওয়ার বিষয়টি দ্রুত নিশ্চিত করতে উদ্যোগী। যোগ্য প্রাপকদের একজনও বঞ্চিত থাকবেন না।
•    এই লক্ষ্যে ১৫ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা – যাতে এখনও পর্যন্ত যোগ দিয়েছেন ১৯ কোটি নাগরিক।

মাননীয় সদস্যবৃন্দ,

১৭.    বিগত কয়েক বছরে সারা বিশ্ব দুটি বড় ধরণের যুদ্ধ এবং করোনার মতো অতিমারির স্বাক্ষী হয়েছে।
    এই সঙ্কট সত্ত্বেও আমার সরকার দেশে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে, স্বস্তি পেয়েছেন মানুষ।
    ২০১৪-র আগের ১০ বছরে মুদ্রাস্ফীতির গড় হার ছিল ৮ শতাংশের উপর। কিন্তু বিগত দশকে এই হার ৫ শতাংশে বেঁধে রাখা গেছে। 
    সাধারণ নাগরিকদের সঞ্চয় বৃদ্ধিতে আমার সরকার উদ্যোগী।

•    আগে ২ লক্ষ কিংবা তার বেশি টাকা আয়ে, আয়কর প্রযোজ্য হতো।
•    আজ ভারতে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্জনে আয়কর দিতে হয় না।
•    কর ছাড় এবং সংস্কারের সুবাদে বিগত ১০ বছরে ভারতের করদাতারা ২.৫ লক্ষ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছেন।
•    আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন হাসপাতালেও বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। এর ফলে দেশের নাগরিকদের প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে।
•    জন ঔষধি কেন্দ্রগুলির কল্যাণে আমাদের দেশের মানুষ ওষুধ ক্রয় খাতে প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করেছেন। 
•    করোনারি স্টেন্ট, হাঁটু প্রতিস্থাপনের সরঞ্জাম কিংবা ক্যান্সারের ওষুধের দাম কমানো হয়েছে। এর ফলে রোগীরা বছরে প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা বাঁচাতে পারছেন।
•    আমার সরকার কিডনি রোগীদের নিখরচায় ডায়ালিসিসের ব্যবস্থা করেছে, প্রতি বছর এর সুবিধা পাচ্ছেন ২১ লক্ষেরও বেশি রোগী। প্রতি বছর ১ লক্ষ টাকা করে সাশ্রয়ের সুযোগ পাচ্ছেন তারা।
•    দরিদ্র মানুষের কাছে ভর্তুকিযুক্ত রেশন পণ্য পৌঁছে দিতে আমার সরকার প্রায় ২০ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করেছে। 
•    ভারতীয় রেলে প্রতিটি যাত্রীকে রেল প্রায় ৫০ শতাংশ ছাড় দেয়। এর ফলে দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত যাত্রীরা প্রতি বছর ৬০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারেন।
•    কম খরচে বিমান পরিষেবা পাচ্ছেন দরিদ্র এবং মধ্যবিত্তরা। উড়ান প্রকল্পের আওতায় এবাবদ তারা ৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি সাশ্রয় করেছেন। 
•    এলইডি বাল্ব প্রকল্পের আওতায় বিদ্যুৎ বিল বাবদ ২০ হাজার কোটি টাকারও বেশি সাশ্রয় হয়েছে। 
•    জীবনজ্যোতি বীমা যোজনা এবং সুরক্ষা বীমা যোজনার আওতায় দরিদ্র মানুষ ১৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি পেয়েছেন।

মাননীয় সদস্যবৃন্দ,

১৮.    আমার সরকার নারী শক্তিকে আরও জাগ্রত করতে প্রতিস্তরে কাজ করে চলেছে। 
    এই বছরের সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ মহিলাদের ক্ষমতায়ণের লক্ষ্যে উৎসর্গীকৃত ছিল।
    ওই কুচকাওয়াজে বিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে আমাদের কন্যাদের শক্তি।
    আমার সরকার কন্যাদের ভূমিকা জলে, স্থলে, অন্তরীক্ষে, মহাকাশে – সর্বত্রই বৃদ্ধি করেছে।
    অর্থনৈতিক স্বাধীনতার মূল্য মহিলাদের কাছে কতটা, সে বিষয়ে আমরা সচেতন।
    আমার সরকার অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে ক্লান্তিহীনভাবে কাজ করে চলেছে। 

•    স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিতে সংযুক্ত হয়েছেন প্রায় ১০ কোটি মহিলা।
•    এইসব গোষ্ঠীগুলিতে ৮ লক্ষ কোটি টাকার ব্যাঙ্ক ঋণ এবং ৪০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
•    সরকার ২ কোটি মহিলাকে লাখপতি দিদি করে তোলার কর্মসূচি রূপায়ণ করছে। 
•    এই গোষ্ঠীগুলিকে নমো ড্রোন দিদি প্রকল্পের আওতায় ১৫ হাজার ড্রোন দেওয়া হয়েছে। 
•    মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ ১২ সপ্তাহ থেকে বাড়িয়ে ২৬ সপ্তাহ করায় দেশের মহিলারা দারুণভাবে উপকৃত।
•    আমাদের সরকারই প্রথম সশস্ত্র বাহিনীতে মহিলাদের স্থায়ী কমিশনের ব্যবস্থা করেছে।
•    এই প্রথম সৈনিক স্কুল এবং ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন মহিলা ক্যাডেটরা।
•    আজ যুদ্ধ বিমানও চালাচ্ছেন মহিলারা, এই প্রথম নৌ সেনার যুদ্ধ জাহাজ চালনায় তাঁরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
•    মুদ্রা যোজনার আওতায় ৪৬ কোটি ঋণ দেওয়া হয়েছে – এর ৩১ কোটি দেওয়া হয়েছে মহিলাদের।
•    এই প্রকল্পের সুবাদে স্বনিযুক্ত হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন কোটি কোটি মহিলা।

মাননীয় সদস্যবৃন্দ,

১৯.    আমার সরকার কৃষি কাজকে আরও লাভজনক করে তুলতে সচেষ্ট। আমাদের লক্ষ্য চাষবাসের খরচ কমানো এবং তা আরও লাভজনক করে তোলা। 
    আমার সরকারই প্রথম কৃষিনীতি এবং প্রকল্পের আওতায় ১০ কোটি ক্ষুদ্র কৃষককে অগ্রাধিকারের কেন্দ্রে রেখেছে। 

•    পিএম-কিষান সম্মান নিধি প্রকল্পের আওতায় কৃষকরা এখনও পর্যন্ত ২ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকা পেয়েছেন।
•    বিগত ১০ বছরে ব্যাঙ্ক থেকে কৃষকদের সহজশর্তে ঋণদান তিনগুণ বেড়েছে।
•    প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনার আওতায় কৃষকরা ৩০ হাজার কোটি টাকা প্রিমিয়াম দিয়েছেন। পরিবর্তে তাঁরা দাবিবাবদ পেয়েছেন ১.৫ লক্ষ কোটি টাকা।
•    বিগত ১০ বছরে ধান ও গমের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য খাতে কৃষকরা প্রায় ১৮ লক্ষ কোটি টাকা পেয়েছেন।
•    এই পরিমাণ ২০১৪-র আগের ১০ বছরের তুলনায় ২.৫ গুণ বেশি। 
•    আগে তৈলবীজ এবং ডাল শস্যের ক্ষেত্রে সরকারি ক্রয় ছিল নামমাত্র।
•    বিগত ১০ বছরে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য খাতে তৈলবীজ এবং ডাল চাষীরা ১.২৫ লক্ষ কোটি টাকা পেয়েছেন। 
•    আমাদের সরকারই প্রথম কৃষিজ রপ্তানি নীতি প্রণয়ন করেছে। 
•    এর ফলে কৃষিজ পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ৪ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। 
•    বিগত ১০ বছরে সুলভ মূল্যে কৃষকদের কাছে সার পৌঁছে দিতে ১১ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। 
•    আমার সরকার ১.৭৫ লক্ষেরও বেশি প্রধানমন্ত্রী কিষান সমৃদ্ধি কেন্দ্র তৈরি করেছে। 
•    এখনও পর্যন্ত প্রায় ৮,০০০ কৃষক উৎপাদক সংগঠন তৈরি হয়েছে। 
•    আমার সরকার কৃষি ক্ষেত্রে সমবায় ব্যবস্থাপনাকে জোরদার করছে। এই প্রথম তৈরি হয়েছে আলাদা সমবায় মন্ত্রক।
•    বিশ্বে বৃহত্তম শস্য মজুত পরিকল্পনার সূচনা হয়েছে সমবায় ক্ষেত্রে। 
•    যেসব গ্রামে সমবায় সমিতি ছিল না, সেখানে তৈরি হয়েছে ২ লক্ষ সমিতি।
•    মৎস্য চাষ ক্ষেত্রে রূপায়িত হচ্ছে ৩৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি মূল্যের প্রকল্প – যার সুবাদে বিগত ১০ বছরে মৎস্য উৎপাদন ৯৫ লক্ষ মেট্রিক টন থেকে বেড়ে ১৭৫ লক্ষ মেট্রিক টন হয়েছ, অর্থাৎ প্রায় দ্বিগুণ।
•    অসামুদ্রিক মৎস্য উৎপাদন ৬১ লক্ষ মেট্রিক টন থেকে বেড়ে হয়েছে ১৩১ লক্ষ মেট্রিক টন।
•    মৎস্য ক্ষেত্রে রপ্তানি দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে – এর পরিমাণ ৩০ হাজার কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬৪ হাজার কোটি টাকা। 
•    দেশে এই প্রথম গবাদি পশুপালক এবং মৎস্য চাষী ও মৎস্যজীবীরা কিষান ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা পাচ্ছেন। 
•    বিগত দশকে দুধের মাথা পিছু প্রাপ্যতা ৪০ শতাংশ বেড়েছে। 
•    গবাদি পশুর পা ও মুখে রোগের মোকাবিলায় প্রথমবার বিনামূল্যে প্রতিষেধক কর্মসূচি চালু হয়েছে। 
•    এখনও পর্যন্ত চারটি পর্যায়ে এই প্রকল্পের আওতায় ৫০ কোটি ডোজ প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। 

মাননীয় সদস্যবৃন্দ,

২০.    সরকারের এইসব কল্যাণমূলক কর্মসূচির প্রভাব শুধুমাত্র পরিষেবা প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। দেশের নাগরিকদের জীবনচক্রের উপর এসবের ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে।
    আমার সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের প্রভাব নিয়ে নানান সরকারি এবং অসরকারি সংগঠন সমীক্ষা করে চলেছে।
    এইসব প্রকল্পের প্রভাব যথেষ্ট কার্যকর এবং দারিদ্র দূরীকরণে প্রয়াসী প্রতিটি দেশের কাছে প্রেরণাদায়ী।
    সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের সমীক্ষায় যে বিষয়গুলি উঠে এসেছে :

•    ১১ কোটি শৌচালয় নির্মাণ এবং উন্মুক্ত পরিসরে রেচনকর্ম বন্ধ হওয়ার সুবাদে রোগব্যাধির বালাই কমেছে।
•    এর ফলে শহরাঞ্চলের প্রতিটি দরিদ্র পরিবার চিকিৎসা বাবদ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত বাঁচাতে পারছেন। 
•    নলবাহিত পানীয় জল পরিষেবা লক্ষ লক্ষ শিশুর জীবনহানি রুখছে।
•    পিএম আবাস যোজনার আওতায় পাকা বাড়ি নির্মাণের কর্মসূচি পরিষেবা প্রাপকদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে। 
•    পাকা বাড়ি আছে এমন পরিবারগুলির শিশুদের মধ্যে স্কুল ছুটের প্রবণতা কমছে।
•    প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষিত মাতৃত্ব অভিযানের আওতায় প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব ১০০ শতাংশে পৌঁছেছে। এর ফলে অনেক কমেছে প্রসূতি মৃত্যুর হার।
•    আরেকটি সমীক্ষা অনুযায়ী উজ্জ্বলা প্রাপকদের মধ্যে বড় ধরণের রোগব্যাধির প্রবণতা নিম্নমুখী।

মাননীয় সদস্যবৃন্দ,

২১.    আমার সরকার মানবকেন্দ্রিক উন্নয়নে বিশ্বাসী। প্রতিটি নাগরিকের মর্যাদা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিক ন্যায় সম্পর্কে এই হল আমাদের ধারণা। ভারতীয় সংবিধানের ছত্রে ছত্রে এই আদর্শের কথাই বলা আছে। 
    দীর্ঘদিন ধরে অধিকার নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। আমরা সরকারের দায়িত্ব ও দায়বদ্ধতার উপরও জোর দিয়েছি। এর ফলে নাগরিকদের মধ্যেও কর্তব্যের বোধ জেগে উঠেছে। তাঁরা বুঝতে পারছেন, একজনের কর্তব্য পালন অন্যজনের প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করে।
    আমার সরকার তাঁদের জন্যও কাজ করে চলেছে, যাঁরা এতদিন বিকাশস্রোতের বাইরে ছিলেন। বিগত ১০ বছরে আদিবাসী অধ্যুষিত হাজার হাজার গ্রামে প্রথমবার পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ ও সড়ক পরিষেবা। লক্ষ লক্ষ আদিবাসী পরিবার নলবাহিত জল সরবরাহের সুবিধা পাচ্ছেন এখন। একটি বিশেষ কর্মসূচির আওতায় আমার সরকার আদিবাসী অধ্যুষিত হাজার হাজার গ্রামে ৪জি ইন্টারনেট সংযোগও পৌঁছে দিচ্ছে। বন ধন কেন্দ্র এবং ৯০টিরও বেশি অরণ্যজ পণ্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য আদিবাসীদের কল্যাণে বিশেষভাবে সহায়ক হয়ে উঠেছে। 
    আমার সরকারই প্রথম বিশেষভাবে সঙ্কটাপণ্য জনজাতি গোষ্ঠীগুলির আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে উদ্যোগ নিয়েছে। ২৪ হাজার কোটি টাকার পিএম জনমন যোজনা চালু হয়েছে এই লক্ষ্যে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে আদিবাসীরা সিকল সেল অ্যানিমিয়ার শিকার হয়েছেন। এই প্রথম এই সমস্যার মোকাবিলায় চালু হয়েছে জাতীয় কর্মসূচি। তার আওতায় ১ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে।
    “দিব্যাঙ্গজন”-এর জন্য আমার সরকার চালু করেছে ‘সুগম্য ভারত’ অভিযান। ভারতীয় সঙ্কেত ভাষায় পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করা হয়েছে।
    সমাজে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষজনের মর্যাদা ও অধিকার রক্ষায় প্রণীত হয়েছে একটি আইন।

মাননীয় সদস্যবৃন্দ,

২২.    বিশ্বকর্মা পরিবারগুলির অবদান ছাড়া দৈনন্দিন জীবন সুচারুভাবে নির্বাহ হওয়া অকল্পনীয়। এই পরিবারগুলি প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাদের দক্ষতা বজায় রেখে চলেছেন। কিন্তু সরকারের সহায়তার অভাবে তারা অতীতে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হন। এঁদের কল্যাণে চালু হয়েছে পিএম বিশ্বকর্মা যোজনা – যার আওতায় এসেছেন ৮৪ লক্ষ মানুষ।
    দশকের পর দশক ধরে আমাদের পথ বিক্রেতা বন্ধুদের পাশে দাঁড়ানোর কেউ ছিল না। তাঁদের জন্য আমার সরকার চালু করেছে পিএম স্বনিধি যোজনা। এর আওতায় ১০,০০০ কোটি টাকারও বেশি ঋণ দেওয়া হয়েছে এখনও পর্যন্ত। তাঁদের প্রতি আস্থার প্রতিফলনস্বরূপ সরকার দিচ্ছে বন্ধকহীন ঋণ। ওই আস্থার প্রতিদানে, তাঁরা ঋণ পরিশোধই শুধু করেননি, পরবর্তী কিস্তির সুবিধাও নিয়েছেন। এঁদের একটি বড় অংশ দলিত, অনগ্রসর, আদিবাসীবর্গের। এঁদের মধ্যে রয়েছেন মহিলারাও।

মাননীয় সদস্যবৃন্দ,

২৩.    আমার সরকার “সকলের সঙ্গে, সকলের বিকাশ, সকলের বিশ্বাস এবং সকলের প্রয়াস”-এর মন্ত্রে দীক্ষিত। 

•    এই প্রথম সাধারণবর্গের অর্থনৈতিক প্রশ্নে অস্বচ্ছলদের ক্ষেত্রেও সংরক্ষণের সুবিধা বিস্তৃত করা হয়েছে।
•    ওবিসি-দের কেন্দ্রীয় কোটার আওতায় ডাক্তারি পাঠক্রমের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরেও ২৭ শতাংশ সংরক্ষণ চালু করা হয়েছে।
•    ন্যাশনাল কমিশন ফর ব্যাকওয়ার্ড ক্লাসেস-কে দেওয়া হয়েছে সাংবিধানিক মর্যাদা।
•    বাবা সাহেব আম্বেদকরের স্মৃতি বিজড়িত ৫টি কেন্দ্রকে পঞ্চতীর্থ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। 
•    দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আদিবাসী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতি উৎসর্গীকৃত ১০টি সংগ্রহালয় গড়ে তোলা হচ্ছে।

মাননীয় সদস্যবৃন্দ,

২৪.    আমার সরকারই প্রথম দশকের পর দশক ধরে বঞ্চিত এলাকাগুলির উন্নয়নে উদ্যোগী হয়েছে। সীমান্তসন্নিহিত গ্রামগুলিকে আগে দেশের প্রান্তিক গ্রাম হিসেবে ধরা হতো। আমরা তাঁদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত গ্রাম হিসেবে রেখে চালু করেছি ভাইব্রেন্ট ভিলেজ কর্মসূচি। 
    আন্দামান-নিকোবর কিংবা লাক্ষাদ্বীপের মতো দূরবর্তী অঞ্চলগুলিও উন্নয়নের প্রশ্নে অবহেলিত ছিল। আমার সরকার ওই দ্বীপগুলিতে আধুনিক পরিকাঠামো তৈরি করেছে। সেখানে সড়ক এবং বিমান সংযোগের পাশাপাশি উন্নতমানের ইন্টারনেট পরিষেবাও পৌঁছে গেছে। মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে লাক্ষাদ্বীপ জলের তলা দিয়ে অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ পেয়েছে। এর ফলে স্থানীয় অধিবাসীদের পাশাপাশি পর্যটকরা উপকৃত হবেন।
    উচ্চাভিলাষী জেলা কর্মসূচির আওতায় আমাদের সরকার দেশের ১০০টিরও বেশি জেলার উন্নয়নে জোর দিয়েছে। এই উদ্যোগের সাফল্য অর্জনের পর চালু করা হয়েছে উচ্চাভিলাষী ব্লক কর্মসূচি। 

মাননীয় সদস্যবৃন্দ,

২৫.    আজ আমার সরকার সীমানা সংলগ্ন প্রতিটি অঞ্চলে গড়ে তুলছে আধুনিক পরিকাঠামো। অনেকে আগেই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এই কাজ হওয়া উচিত ছিল। সন্ত্রাসবাদ, আগ্রাসনবাদ – সব ক্ষেত্রেই সমুচিত জবাব দিচ্ছে আমাদের বাহিনী। 
    অভ্যন্তরীণ সুরক্ষার প্রশ্নে আমার সরকারের উদ্যোগের সুফলগুলি আজ স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান।

•    জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষ নিরাপত্তার প্রশ্নে নিজেকে সুরক্ষিত মনে করছেন।
•    আগে যেসব বাজারঘাট জঙ্গি হামলার ভয়ে শুনশান থাকতো, সেখানে এখন কর্মচঞ্চলতা।
•    উত্তরপূর্বে বিচ্ছিন্নতাবাদী সক্রিয়তা নিম্মগামী।
•    বহু সংগঠন স্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে এগিয়ে আসছে।
•    নকশাল প্রভাবিত এলাকা সঙ্কুচিত হয়েছে এবং হিংসার ঘটনাও কমেছে।

মাননীয় সদস্যগণ,

২৬.    আগামী শতাব্দীগুলির ভবিষ্যৎ লিখনের জন্য এটাই ভারতের সময়। আমাদের পূর্বপুরুষরা হাজার হাজার বছরের এক উত্তরাধিকার রেখে গিয়েছেন। এমনকি, আজও আমরা অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে আমাদের পূর্বসূরীদের অনন্য সাফল্য নিয়ে গর্ববোধ করি। বর্তমান প্রজন্মেরও এ ধরনের দীর্ঘস্থায়ী উত্তরাধিকার তৈরি করে যাওয়া উচিৎ, যা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানুষ স্মরণ করবেন।
আমাদের সরকার সেই বড় দৃষ্টিভঙ্গীকে সামনে রেখে কাজ করে চলেছে।
এই কর্মসূচি আগামী পাঁচ বছরের জন্যও হতে পারে, আবার এটি আগামী ২৫ বছরের জন্য পথনির্দেশিকাও বটে। আমাদের কাছে বিকশিত ভারতের সঙ্কল্প শুধুমাত্র আর্থিক সমৃদ্ধির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। আমরা সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং কৌশলগত শক্তির ক্ষেত্রেও সমান গুরুত্ব দিচ্ছি। এছাড়া, উন্নয়ন ও আর্থিক সমৃদ্ধি স্থায়ী হবে না। গত এক দশক ধরে সেই লক্ষ্য মাথায় রেখেই আমরা কাজ করে চলেছি। 

মাননীয় সদস্যগণ,

২৭.     আজ বিশ্বের প্রতিটি সংস্থা ভারতের দ্রুত উন্নয়ন সম্পর্কে সুনিশ্চিত হয়েছে। ভারতের নীতির উপর ভিত্তি করেই দেশ-বিদেশের সংস্থাগুলি এই মূল্যায়ন করেছে। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে রেকর্ড বিনিয়োগ হয়েছে এবং নীতিগত সংস্কারের ফলে লগ্নিকারীদের আস্থা বেড়েছে। পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে স্থায়ী ও শক্তিশালী সরকার বিশ্ব জুড়ে আস্থার আবহ তৈরি করেছে। 
আজ গোটা দুনিয়া বিশ্বাস করে যে, একমাত্র ভারতই আন্তর্জাতিক সরবরাহ-শৃঙ্খলকে শক্তিশালী করতে পারে। সেই লক্ষ্যেই ভারত আজ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে। দেশ জুড়ে এমএসএমই একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে গড়ে তোলা হয়েছে।
১৪টি ক্ষেত্রে আমার সরকার পিএলআই প্রকল্প চালু করেছে। এই প্রকল্পে এ পর্যন্ত প্রায় ৯ লক্ষ কোটি টাকার উৎপাদন হয়েছে। এর ফলে, দেশ জুড়ে লক্ষ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে এবং স্বনিযুক্তির ক্ষেত্রে সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে। পিএলআই – এর মাধ্যমে বৈদ্যুতিন, ওষুধ, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত সরঞ্জাম ক্ষেত্রও উপকৃত হচ্ছে। আমাদের সরকার দেশে তিনটি বড় ওষুধ পার্ক গড়ে তুলেছে।

মাননীয় সদস্যগণ,

২৮.     আজ ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছে। গোটা বিশ্ব ‘আত্মনির্ভর ভারত’ – এর প্রশংসা করছে। সেমিকন্ডাক্টর ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ লগ্নি এসেছে। সেমিকন্ডাক্টরের মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক এবং অটোমোবাইল ক্ষেত্রও উপকৃত হচ্ছে। 
দেশে গত কয়েক বছরে লক্ষ লক্ষ বৈদ্যুতিক যান তৈরি হয়েছে। আমরা এখন বড় বড় বিমান নির্মাণের লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিয়েছি। আগামী দিনগুলিতে উৎপাদন ক্ষেত্রে কোটি কোটি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। 

মাননীয় সদস্যগণ,

২৯.     আজ গোটা বিশ্বে পরিবেশ-বান্ধব সামগ্রীর বিশেষ চাহিদা তৈরি হয়েছে। আমরা এখন দূষণমুক্ত শক্তির উপর বিশেষ জোর দিচ্ছি।

•    গত ১০ বছরে অ-জীবাশ্ম জ্বালানির উৎপাদন ৮১ গিগাওয়াট থেকে বেড়ে ১৮৮ গিগাওয়াটে দাঁড়িয়েছে।
•    এই সময়ে সৌরশক্তির উৎপাদন ২৬ গুণ বেড়েছে। 
•    একইভাবে, বায়ুশক্তির উৎপাদন বেড়েছে দ্বিগুণ।
•    পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির ক্ষেত্রে বিশ্বে এখন ভারতের স্থান চতুর্থ। 
•    বায়ুশক্তির ক্ষেত্রেও আমরা চতুর্থ স্থানে রয়েছি। 
•    সৌরশক্তির ক্ষেত্রে আমরা রয়েছি পঞ্চম স্থানে।
•    ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত অ-জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ শক্তির ৫০ শতাংশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে। 
•    গত ১০ বছরে ১১টি নতুন সৌর পার্ক তৈরি করা হয়েছে। এখন আরও ৯টি পার্ক তৈরির কাজ চলছে। 
•    কয়েকদিন আগে বাড়ির ছাদে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা চালুর একটি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পে ১ কোটি পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হবে। এর ফলে, বিদ্যুৎ বিলের সাশ্রয় হবে। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিক্রিও করা যাবে। 
•    পারমাণবিক শক্তির ক্ষেত্রেও দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। আমার সরকার ১০টি নতুন পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অনুমোদন দিয়েছে।
•    হাইড্রোজেন শক্তির ক্ষেত্রেও ভারত দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। এ পর্যন্ত লাদাখ এবং দমন ও দিউ-তে আমরা ২টি নতুন প্রকল্প চালু করেছি।
•    ইথানলের ক্ষেত্রেও আমার সরকার নজিরবিহীন কাজ করেছে। ইথানল সংমিশ্রণে দেশ ১২ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। খুব শীঘ্রই এই লক্ষ্যমাত্রা ২০ শতাংশে পৌঁছে যাবে। এর ফলে, আমাদের দেশের কৃষকদের আয় বৃদ্ধি হবে। এ পর্যন্ত সরকারি সংস্থাগুলি ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের ইথানল সংগ্রহ করেছে। এইসব প্রক্রিয়ার ফলে শক্তির ক্ষেত্রে বিদেশি নির্ভরতা কমবে। কয়েকদিন আগে একটি নতুন ব্লক থেকে বঙ্গোপসাগরে তেল উৎপাদনের কাজ শুরু হয়েছে। দেশের কাছে এটি একটি বড় সাফল্য। 

মাননীয় সদস্যগণ,

৩০.     গোটা বিশ্বে খনিজ সম্পদের পরিমাণ সীমিত। সেই কারণে আমাদের সরকার বৃত্তাকার অর্থনীতি গড়ে তোলার উপর জোর দিচ্ছে। এই লক্ষ্যে ভারত প্রথম ‘ভেহিক্যাল স্ক্র্যাপেজ পলিসি’ গ্রহণ করেছে। 
গভীর সমুদ্রে খননের ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। এই লক্ষ্যে গভীর সমুদ্র মিশন হাতে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে, সামুদ্রিক জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে আরও উন্নত বোঝাপড়া গড়ে উঠবে। এই কারণে, গবেষণার জন্য ভারত ‘সমুদ্রায়ন’ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। 
আমার সরকার মহাকাশ শক্তির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। এর অর্থ হ’ল – মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন। এছাড়া, এর অন্যতম লক্ষ্য হ’ল – মহাকাশ অর্থনীতির ক্ষেত্রে ভারতের অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি করা। ভারতের মহাকাশ কর্মসূচির সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে, মহাকাশ ক্ষেত্রে নতুন নতুন স্টার্টআপ – এর সৃষ্টি হচ্ছে। সেদিন আর বেশি দূরে নেই, যেদিন আমরা দেখবো, ভারতের গগনযান মহাকাশে পৌঁছে যাবে।

মাননীয় সদস্যগণ,

৩১.     আমার সরকার ভারতকে বিশ্বের ডিজিটাল অর্থনীতির ক্ষেত্রে প্রথম সারির দেশে রূপান্তরিত করেছে। এতে লক্ষ লক্ষ তরুণের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য হ’ল – বিশ্বের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দেশ হিসেবে ভারতকে সামনের সারিতে রাখা। 
আমাদের সরকার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপরও কাজ করে চলেছে। এর ফলে, ভারতের তরুণদের সামনে নতুন নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাবে। নতুন নতুন স্টার্টআপ গড়ে উঠবে। কৃষি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। 

মাননীয় সদস্যগণ,

৩২. আমাদের সরকার শিক্ষা ও ভারতের তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে ধারাবাহিকভাবে নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করে চলেছে। এই লক্ষ্যে নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতি রূপায়ণ করা হয়েছে। 
বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের উন্নত শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে আমাদের সরকার ১৪ হাজারেরও বেশি ‘পিএম শ্রী বিদ্যালয়’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। ইতিমধ্যে ৬ হাজারেরও বেশি বিদ্যালয় চালুও হয়ে গেছে। 
উচ্চ শিক্ষায় মেয়েদের নথিভুক্তি বেড়েছে। তপশিলি জাতিভুক্ত পড়ুয়াদের ৪৪ শতাংশ, তপশিলি উপজাতিভুক্ত পড়ুয়াদের ৬৫ শতাংশেরও বেশি এবং ওবিসি-দের ক্ষেত্রে ৪৪ শতাংশেরও বেশি নথিভুক্তির হার বেড়েছে। 
অটল উদ্ভাবন মিশনে ১০ হাজার অটল টিঙ্কারিং ল্যাব তৈরি করা হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ১ কোটিরও বেশি ছাত্রছাত্রী।
২০১৪ সাল পর্যন্ত দেশে ৭টি এইমস্ এবং ৩৯০টিরও কম মেডিক্যাল কলেজ ছিল। গত এক দশকে ১৬টি এইমস্ এবং ৩১৫টি মেডিকেল কলেজ তৈরি করা হয়েছে। ১৫৭টি নার্সিং কলেজ তৈরি করা হচ্ছে। গত এক দশকে ডাক্তারিতে আসন সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। 

মাননীয় সদস্যগণ,

৩৩.     পর্যটন শিল্প তরুণদের জন্য বড় কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। গত ১০ বছরে পর্যটন ক্ষেত্রে আমার সরকার নজির বিহীন কাজ করেছে। দেশের পর্যটকরা তো বটেই, বিদেশি পর্যটকের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। 
আজ গোটা বিশ্ব ভারতকে জানতে চাইছে। এছাড়া, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে পর্যটনের সুবিধাও অনেক বেড়ে গিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বিমানবন্দর নির্মাণের ফলে যাতায়াত ব্যবস্থার আরও উন্নতি ঘটেছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটছে। আন্দামান-নিকোবর ও লাক্ষাদ্বীপ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। 
আমাদের সরকার তীর্থ ক্ষেত্র এবং ঐতিহাসিক স্থানগুলির উন্নয়নের উপর গুরুত্ব দিচ্ছে। ভারতের ঐতিহ্যবাহী পর্যটন কেন্দ্র সম্পর্কে বিশ্ব জুড়ে আগ্রহ বাড়ছে। গত এক বছরে ৮.৫ কোটি মানুষ কাশী ভ্রমণ করেছেন। ৫ কোটিরও বেশি মানুষ মহাকাল পরিদর্শন করেছেন। ১৯ লক্ষেরও বেশি পর্যটক কেদার ধামে গিয়েছেন। ‘প্রাণ প্রতিষ্ঠা’র প্রথম ৫ দিনে ১৩ লক্ষ পুণ্যার্থী অযোধ্যা ধাম পরিদর্শন করেছেন। 

মাননীয় সদস্যগণ,

৩৪.     তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের মাধ্যমে আমরা ক্রীড়া অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে চলেছি। আমার সরকার ক্রীড়া ক্ষেত্র ও ক্রীড়াবিদদের নজিরবিহীন সহায়তা প্রদান করে চলেছে। ক্রীড়া ক্ষেত্রেও ভারত একটি বড় শক্তি হয়ে উঠতে চলেছে।
খেলোয়াড়দের পাশাপাশি, ক্রীড়ার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রের উপরও আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। দেশে আজ জাতীয় ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। দেশ জুড়ে কয়েক ডজন উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। গত ১০ বছরে ভারত সাফল্যের সঙ্গে অনেক আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। ‘বিকশিত ভারত’ – এর লক্ষ্যে ‘মেরা যুবা ভারত’ তৈরি করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি তরুণ এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।

মাননীয় সদস্যগণ,

৩৫.     গত তিন বছর ধরে বিশ্ব জুড়ে অস্থিরতা চলছে। বিশ্বের বিভিন্ন অংশে বহু সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে আমার সরকার বিশ্ব – মিত্র হয়ে উঠেছে। এর ফলে, ভারত গরিব দেশগুলির কন্ঠস্বর হয়ে উঠেছে।
গত ১০ বছরে গতানুগতিক চিন্তাভাবনার ক্ষেত্রেও পরিবর্তন এসেছে। আগে সমস্ত কূটনৈতিক কাজকর্ম দিল্লির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। আমার সরকার এখন সাধারণ মানুষের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণও সুনিশ্চিত করেছে। ভারতের জি-২০ সভাপতিত্বকালে আমরা তা বুঝতে পেরেছি। যেভাবে সাধারণ মানুষ জি-২০’র সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন, তা এককথায় নজিরবিহীন। দেশ জুড়ে চলা নানা কর্মসূচির মাধ্যমে গোটা বিশ্ব ভারতের সম্ভাবনার সঙ্গে পরিচিত হয়েছে। 
গোটা বিশ্ব ঐতিহাসিক জি-২০ শীর্ষ বৈঠকের প্রশংসা করেছে। বহুধাবিভক্ত বিশ্বে যেভাবে সহমতের ভিত্তিতে দিল্লি ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়েছে, তা ঐতিহাসিক বলা চলে। 
জি-২০’তে আফ্রিকান ইউনিয়নের স্থায়ী সদস্যপদ প্রাপ্তিতে আমাদের প্রয়াস প্রশংসিত হয়েছে। এই বৈঠক চলাকালীন ভারত – মধ্যপ্রাচ্য – ইউরোপ করিডর ঘোষণা করা হয়েছে। এই করিডর সামুদ্রিক ক্ষেত্রে ভারতের সক্ষমতাকে আরও মজবুত করবে। 

মাননীয় সদস্যগণ,

৩৬.     বর্তমানে বিশ্ব জুড়ে বিতর্ক ও সংঘাতের পরিবেশের মধ্যেই ভারত গোটা দুনিয়ার সামনে তার স্বার্থকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে। ভারতের বিদেশ নীতি আজ অতীতের সমস্ত সীমাবদ্ধতাকে দূর করেছে। বর্তমানে বিশ্বের বহু সংস্থা ভারতকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারত আজ গোটা বিশ্বে অগ্রণী দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। 
মানবতার ক্ষেত্রে যখনই কোনও সঙ্কট তৈরি হয়েছে, তখনই ভারত কঠোর ভূমিকা নিয়েছে। বিশ্বের যেখানেই সঙ্কট দেখা দিক না কেন, ভারত তাতে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। যেখানেই সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে, অপারেশন গঙ্গা, অপারেশন কাবেরী, বন্দে ভারত – এর মতো কর্মসূচির মাধ্যমে ভারতীয়দের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। 
আমার সরকার বিশ্ব জুড়ে যোগাসন, প্রাণায়ম ও আয়ুর্বেদের প্রসার ঘটাতে ধারাবাহিকভাবে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। গত বছর রাষ্ট্রসঙ্ঘের সদর কার্যালয়ে বিশ্বের ১৩৫টি দেশের প্রতিনিধিরা যোগাসনে অংশ নিয়েছিলেন, যা রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। 

মাননীয় সদস্যগণ,

৩৭.     আমরা এখন সভ্যতার ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে রয়েছি, যা আগামী শতাব্দীগুলির ভবিষ্যৎ গড়ে দেবে। চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি দেশ এ ধরনের এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হয়েছে। কয়েক শতাব্দীর অপেক্ষার পর অযোধ্যার মন্দিরে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এটি আমাদের কোটি কোটি দেশবাসীর মনে আস্থা ও প্রেরণার সঞ্চার করেছে। 

মাননীয় সদস্যগণ,

৩৮.     আপনারা কোটি কোটি ভারতবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। বিদ্যালয় ও কলেজগুলিকে আজকের প্রজন্মের পড়ুয়াদের স্বল্প পুরোপুরি আলাদা। আমাদের সকলের কর্তব্য হ’ল – তাঁদের স্বপ্ন পূরণে চেষ্টার কোনও ত্রুটি না রাখা। বিকশিত ভারত আমাদের অমৃত প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণ করবে। এজন্য আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। 

মাননীয় সদস্যগণ,

৩৯. শ্রদ্ধেয় অটলজি বলেছিলেন –

अपनी ध्येय-यात्रा में,
हम कभी रुके नहीं हैं।
किसी चुनौती के सम्मुख
कभी झुके नहीं हैं।

১৪০ কোটি দেশবাসীর স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে আমার সরকার সেদিকেই এগিয়ে চলেছে। 

আমার দৃঢ় বিশ্বাস, নতুন এই সংসদ ভবন ভারতের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের কাজ অব্যাহত রাখবে এবং নতুন ও স্বাস্থ্যকর ঐতিহ্য স্থাপন করবে। 
২০৪৭ সালে এই সভায় আমার অনেক বন্ধু হাজির থাকবেন না। কিন্তু, আমাদের এমন এক উজ্জ্বল ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার রেখে যাওয়া উচিৎ, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের মনে রাখে। 

আপনাদের সকলকে শুভেচ্ছা!

ধন্যবাদ!

জয় হিন্দ!
জয় ভারত! 

SKC/KMD



(Release ID: 2003408) Visitor Counter : 70


Read this release in: English