প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

মায়লাপোরাতে শ্রীরামকৃষ্ণ মঠের ১২৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ

Posted On: 08 APR 2023 6:58PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ০৮ এপ্রিল, ২০২৩

 

শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস, মাতা শ্রীসারদা দেবী এবং স্বামী বিবেকানন্দকে আমার প্রণাম। তামিলনাডুর রাজ্যপাল শ্রী আর এন রবিজী, চেন্নাই রামকৃষ্ণ মঠের সাধু-সন্তরা এবং আমার প্রিয় তামিলনাডুবাসী আপনাদের সকলকে শুভেচ্ছা জানাই।

বন্ধুগণ,

আমি আপনাদের মধ্যে আসতে পেরে আনন্দিত। রামকৃষ্ণ মঠ এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যাকে আমি গভীরভাবে শ্রদ্ধা করি। আমার জীবনে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি চেন্নাইতে তার পরিষেবার ১২৫তম বর্ষ উদযাপন করছে। আমার আনন্দের এও এক অন্যতম কারণ। তামিলবাসীর মধ্যে আসতে পেরে আমি আনন্দিত। তামিল ভাষা, তামিল সংস্কৃতি এবং চেন্নাইয়ের জীবনযাপন আমি ভালোবাসি। আজ আমার বিবেকানন্দ হাউস ঘুরে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। আমি বিশেষভাবে উদ্বুদ্ধ হয়েছি। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে যুবসম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছনোর পুরনো রীতি প্রত্যক্ষ করে আমি আনন্দিত।

বন্ধুগণ,

সাধু থিরুভল্লুভার বলেছেন, বিশ্বে দয়া সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রামকৃষ্ণ মঠ বিভিন্নভাবে তামিলনাডুবাসীর সেবা করে চলেছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে পাঠাগার ও বই ব্যাঙ্কের ব্যবস্থা করেছে। কুষ্ঠ সম্বন্ধে সচেতনতা বাড়াতে গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নে এই মঠ বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।

বন্ধুগণ,

তামিলনাডুতে রামকৃষ্ণ মঠের প্রভাব সম্পর্কে আমি এইমাত্র কথা বললাম। কিন্তু, এর কথা আসবে পরে, যা প্রথমে উল্লেখ করতে হয়, তা হ’ল স্বামী বিবেকানন্দ ও কন্যাকুমারী। এখানকার বিখ্যাত পাথরে বসে স্বামীজী তাঁর জীবনের অর্থ খুঁজে পেয়েছিলেন। পশ্চিমী দেশ থেকে ফিরে তামিলনাডুতেই প্রথম পদার্পণ করেন স্বামীজী। সেই সময় উৎসবের মতো পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল।

বন্ধুগণ,

স্বামী বিবেকানন্দ বঙ্গ সন্তান। তাঁকে তামিলনাডুতে নায়কের মতো স্বাগত জানানো হয়। স্বাধীনতার বহু পূর্বেই এই ঘটনা ঘটেছিল। ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ – এর এক অনন্য নিদর্শন। একইভাবে, রামকৃষ্ণ মঠ সারা দেশের জনগণের সেবায় নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে চলেছে। ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ প্রসঙ্গে আমরা কাশী - তামিল সঙ্গমমের সাফল্য দেখতে পাই। আমি শুনেছি যে, সৌরাষ্ট্র – তামিল সঙ্গমম্‌ গড়ে উঠছে। দেশের একতা রক্ষায় এ ধরনের সব প্রচেষ্টার সাফল্য কামনা করি।

বন্ধুগণ,

আমাদের সরকার স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে উদ্বুদ্ধ। তিনি বলেছিলেন, যখন সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠা হয়, তখন সমাজ উন্নত হয়। বর্তমানে আপনারা দেখতে পারেন এই একই নীতিতে আমাদের ফ্ল্যাগশিপ কর্মসূচিগুলি রূপায়িত হচ্ছে। বর্তমানে সকলের জন্য উন্নয়নের দ্বার উন্মুক্ত।

আমাদের অন্যতম সফল প্রকল্প মুদ্রা যোজনার অষ্টম বর্ষপূর্তি আজ। তামিলনাডুর ক্ষুদ্র উদ্যোগপতিরা মুদ্রা যোজনাকে বিশেষভাবে সফল করে তুলেছেন। ৩৮ কোটিরও বেশি ঋণ দেওয়া হয়েছে ক্ষুদ্র উদ্যোগপতিদের। এর মধ্যে বিপুল সংখ্যক মহিলা ও সমাজের প্রান্তিক শ্রেণীর মানুষরা রয়েছেন। এর পাশাপাশি, বাড়ি, বিদ্যুৎ, এলপিজি সংযোগ, শৌচাগারের মতো সুবিধাগুলি এখন প্রতিটি পরিবারে পৌঁছে যাচ্ছে।

বন্ধুগণ,

ভারতকে নিয়ে স্বামী বিবেকানন্দের স্বপ্ন ছিল বিশাল। আমি আজ নিশ্চিত যে, তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে ভারত যেভাবে এগিয়ে চলেছে, তিনি তা প্রত্যক্ষ করছেন। তাঁর বিশেষ বার্তা ছিল নিজের ও দেশের উপর বিশ্বাস রাখা। বর্তমানে বহু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শতক হবে ভারতের। আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হ’ল – সকল ভারতীয়ই এখন অনুভব করেন যে এটি আমাদের সময়। সমগ্র বিশ্ব এখন পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আমাদের মান্য করে। স্বামীজী সর্বদাই বলতেন যে, মহিলাদের সাহায্য করার আমরা কেউ নই। যদি তাঁদের সঠিক কাজ করার পথ প্রশস্ত করে দেওয়া হয়, তবে তাঁরাই তাঁদের সমস্যার সমাধান করবেন। আজকের ভারত বিশ্বাস করে যে, মহিলা নেতৃত্বাধীন উন্নয়নে ক্রীড়া, সশস্ত্র বাহিনী, স্টার্টআপ কিংবা উচ্চ শিক্ষা – সবক্ষেত্রেই মহিলাদের জয়জয়কার।

স্বামীজী বিশ্বাস করতেন যে, খেলাধূলা ও সুস্থতা চরিত্র গঠনের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে আমাদের সমাজ খেলাধূলাকে পেশা হিসাবে স্বীকৃতি দিচ্ছে। যোগ ও ফিট ইন্ডিয়া আজ জনআন্দোলনে পরিণত হয়েছে। স্বামীজী বিশ্বাস করতেন, শিক্ষা মানুষের ক্ষমতায়নে সাহায্য করে। তিনি কারিগরি ও বৈজ্ঞানিক শিক্ষার পক্ষে মত পোষণ করতেন। বর্তমানে আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গির কথা মাথায় রেখে আমাদের জাতীয় শিক্ষা নীতির সংস্কার করা হয়েছে।

বন্ধুগণ,

তামিলনাডুতে স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ৫টি চিন্তাভাবনার কথা। আমরা সদ্য স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদযাপন করেছি। দেশ আগামী ২৫ বছর অমৃতকাল উদযাপনের জন্য প্রস্তুত। এই সময়ে ৫টি চিন্তাভাবনা অর্থাৎ ৫টি প্রতিজ্ঞা পালন করার সময়। তা হ’ল – উন্নত ভারত গঠন, ঔপনিবেশিকতা থেকে মুক্ত হওয়া, ঐতিহ্য উদযাপন, ঐক্যবদ্ধ হওয়া এবং কর্তব্য পরায়ণ হয়ে ওঠা। আমরা কী ব্যক্তিগত ও সমন্বিত স্তরে এগুলি মেনে চলতে পারি? যদি ১৪০ কোটি জনগণ এই নীতি মেনে চলেন, তবে অবশ্যই ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারত আত্মনির্ভর হয়ে উঠবে। আমি নিশ্চিত যে, এই লক্ষ্য পূরণে স্বামী বিবেকানন্দের আশীর্বাদ আমাদের সঙ্গে রয়েছে।

ধন্যবাদ আপনাদের।

ভনাক্কম।

 

PG/PM/SB



(Release ID: 1915975) Visitor Counter : 126