প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী বারাণসীতে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন

মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাশী ও উত্তর প্রদেশের প্রয়াসের প্রশংসা করেছেন
কাশী পূর্বাঞ্চলের বড় চিকিৎসা হাব হয়ে উঠছে : প্রধানমন্ত্রী
মা গঙ্গা ও কাশীর পবিত্রতা এবং সৌন্দর্য্য প্রেরণাদায়ক ও অগ্রাধিকারের বিষয় : প্রধানমন্ত্রী
এই অঞ্চলে ৮ হাজার কোটি টাকার একাধিক প্রকল্পের কাজ চলছে : প্রধানমন্ত্রী
উত্তর প্রদেশ দেশে বিনিয়োগের আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠছে : প্রধানমন্ত্রী
আইনের শাসন ও উন্নয়নের ওপর অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে, যাতে উত্তর প্রদেশবাসীর কাছে কর্মসূচির সমস্ত সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়া যায় : প্রধানমন্ত্রী
উত্তর প্রদেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভাইরাস সম্পর্কে আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন

Posted On: 15 JUL 2021 5:58PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৫ জুলাই, ২০২১

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বারাণসীতে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন। বারাণসী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট প্রসূতি ও শিশু চিকিৎসা বিভাগের পাশাপাশি তিনি গোদাউলিয়াতে মাল্টি-লেভেল পার্কিং, গঙ্গানদীতে পর্যটনের প্রসারে রো-রো ভেসেল পরিষেবা এবং বারাণসী গাজিপুর মহাসড়কে তিন লেনবিশিষ্ট উড়ালপুলের উদ্বোধন করেন। এই প্রকল্পগুলির জন্য প্রায় ৭৪৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। শ্রী মোদী ৮৩৯ কোটি টাকার একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন। এই প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে – সেন্ট্রাল ইন্সটিটিউট অফ পেট্রোকেমিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (সাইপেট)-র সেন্টার ফর স্কিল অ্যান্ড টেকনোলজিকাল সাপোর্ট শাখা, জল জীবন মিশনের আওতায় ১৪৩টি গ্রামীণ প্রকল্প সহ কারখিয়াওনে ম্যাঙ্গো অ্যান্ড ভেজিটেবল ইন্টিগ্রেটেড প্যাক হাউস।
এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী এক জনসভায় ভাষণে পূর্ণ শক্তি নিয়ে নতুন প্রজাতির করোনা ভাইরাস যখন আঘাত হেনেছিল গত সেই কয়েকটি মাসের কঠিন সময়ের কথা স্মরণ করেন। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী ও উত্তর প্রদেশ ও কাশীর প্রয়াসের প্রশংসা করেন। মহামারী মোকাবিলায় তিনি উত্তর প্রদেশ সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, কাশীতে করোনা যোদ্ধারা যেভাবে দিবারাত্রি প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় বজায় রেখে কাজ করেছেন, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। কঠিন সময়েও কাশী এটা প্রমাণ করেছে যে, সে কখনও থেমে থাকে না, কখনও ক্লান্তও হয় না। জাপানি এনসেফেলাইটিস যখন ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল, শ্রী মোদী সেকথা উল্লেখ করে সেই পরিস্থিতির সঙ্গে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ-এর সময় অভূতপূর্ব পরিস্থিতি মোকাবিলার তুলনা করেন। জাপানি এনসেফেলাইটিস ছড়িয়ে পড়ার সময় ছোট ছোট চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলাতেও ব্যাপক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা কম থাকা সত্ত্বেও পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছিল। বর্তমানে উত্তর প্রদেশে সর্বাধিক সংখ্যায় নমুনা পরীক্ষা ও টিকাকরণ হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।
শ্রী মোদী উত্তর প্রদেশে চিকিৎসা পরিকাঠামোর দ্রুত অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে বলেন, গত চার বছরে মেডিকেল কলেজের সংখ্যা চার গুণ বেড়েছে। এছাড়াও, আরও অনেক মেডিকেল কলেজ গড়ে তোলার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এই রাজ্যে প্রায় ৫৫০টি অক্সিজেন উৎপাদন ইউনিট গড়ে তোলা হচ্ছে বলেও জানান। এর মধ্যে আজ ১৪টির উদ্বোধন হয়েছে। শিশু চিকিৎসা পরিষেবায় ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটের মানোন্নয়ন এবং অক্সিজেনের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে তিনি রাজ্য সরকারের প্রয়াসের প্রশংসা করেন। এ সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি ২৩ হাজার কোটি টাকার যে প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে, তার ফলে উত্তর প্রদেশও লাভবান হবে। কাশী শহর পূর্বাঞ্চলের একটি চিকিৎসা হাব হয়ে উঠছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, এক সময় চিকিৎসার জন্য কাশীর মানুষকে দিল্লি ও মুম্বাই যেতে হয়েছে। এবার এ ধরনের চিকিৎসা পরিষেবা কাশীতেই পাওয়া যাবে। আজ যে সমস্ত প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে, সেগুলি এই শহরে চিকিৎসা পরিকাঠামোর মানোন্নয়নে সাহায্য করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাচীণ কাশী শহরে এমন অনেক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, যেগুলি এই শহরের ঐতিহ্যকে বজায় রেখে অগ্রগতির পথ মসৃণ করবে। তিনি বলেন, মহাসড়ক, উড়ালপুল, রেল ওভার ব্রিজ, ভূগর্ভস্থ ওয়্যারিং, নিকাশি ব্যবস্থা ও পানীয় জল, পর্যটনের প্রসার প্রভৃতি ক্ষেত্রে সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ চলছে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।
গঙ্গা ও কাশী শহরের পবিত্রতা ও সৌন্দর্য্য অনুপ্রেরণার বিষয় বলে উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এই ঐতিহ্য রক্ষায় অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এই লক্ষ্যে সড়ক, পয়ঃপ্রণালী, উদ্যান ও স্নানের ঘাটগুলির সৌন্দর্য্যায়নে নিরন্তর কাজ চলছে। পঞ্চকোষী মার্গের সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। বারাণসী গাজীপুর সেতুটির সংস্কার করা হচ্ছে, যা পক্ষান্তরে বহু গ্রাম ও পার্শ্ববর্তী শহরগুলির মানুষের উপকারে আসবে।
কাশীতে আসা পর্যটকরা শহরের সর্বত্রই বড় মাপের এলইডি স্ক্রিন দেখতে পাবেন বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, সর্বাধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে স্নানের ঘাটগুলিতে ইনফরমেশন বোর্ড বসানো হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় বসানো এলইডি স্ক্রিন এবং ইনফরমেশন বোর্ডগুলিতে কাশীর ইতিহাস, স্থাপত্য, শিল্পকলা প্রভৃতি সম্পর্কে বিবরণ পর্যটকদের কাছে তুলে ধরা হবে। এমনকি, এর ফলে পুণ্যার্থীরাও লাভবান হবেন। মা গঙ্গার ঘাটে এবং কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে আরতি অনুষ্ঠান বড় এলইডি স্ক্রিনগুলিতে সারা শহরে সম্প্রচার করা হবে। প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, আজ বারাণসীতে যে রো-রো পরিষেবা এবং বিলাসবহুল নৌকা- বিহার পরিষেবার সূচনা হয়েছে, তার ফলে পর্যটনের বিকাশ ঘটবে। সেই সঙ্গে, আজ চালু হওয়া রুদ্রকাশ সেন্টারটি শহরের শিল্পীদের এক বিশ্বমানের মঞ্চ প্রদান করবে।
প্রধানমন্ত্রী আধুনিক সময়ের এক আদর্শ শিক্ষণ কেন্দ্র হিসাবে কাশীর মানোন্নয়নের কথা উল্লেখ করে বলেন, বর্তমানে এই শহরে আদর্শ বিদ্যালয়, আইটিআই এবং এ ধরনের অনেক আধুনিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সাইপেটের যে দক্ষতা উন্নয়ন ও কারিগরি সহায়তা সংক্রান্ত কেন্দ্রটির আজ উদ্বোধন হয়েছে, তার ফলে শিল্প সংস্থার আরও বিকাশ ঘটবে। উত্তর প্রদেশ খুব দ্রুত দেশের অন্যতম একটি বিনিয়োগের গন্তব্য হয়ে উঠছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েক বছর আগেও এই রাজ্যটিকে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অনুপযুক্ত বলে মনে করা হ’ত। কিন্তু, আজ এই রাজ্যটি ব্যবসা-বাণিজ্য তথা স্বদেশী উৎপাদনের দিক থেকে অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী এজন্য যোগী সরকারের সাম্প্রতিক সময়ে পরিকাঠামো উন্নয়নে নিরলস প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। সাম্প্রতিক সময়ে এই রাজ্যটিতে যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোমূলক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, সেকথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, ইতিমধ্যেই প্রতিরক্ষা করিডর, পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেসওয়ে, বুন্দেলখন্ড এক্সপ্রেসওয়ে, গোরক্ষপুর লিঙ্ক এক্সপ্রেসওয়ে এবং গঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দেশে কৃষি পরিকাঠামোর আধুনিকীকরণে ১ লক্ষ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করা হয়েছে। এর ফলে, দেশে কৃষি বাজারগুলি লাভবান হবে। দেশীয় কৃষি বাজারকে আধুনিক ও সুবিধাসম্পন্ন করে তুলতে এটি একটি বড় পদক্ষেপ।
উত্তর প্রদেশে সাম্প্রতিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের এক দীর্ঘ তালিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, আগেও রাজ্যটির জন্য একাধিক প্রকল্প ও আর্থিক সহায়তার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু, দুর্ভাগ্যের বিষয় এগুলি লক্ষ্ণৌতে এসেই থমকে যেত। উন্নয়নমূলক কর্মসূচিগুলির সুফল যাতে সকলের কাছে পৌঁছয়, তা সুনিশ্চিত করতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর আন্তরিকতা ও সক্রিয় প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ উত্তর প্রদেশে আইনের শাসন বহাল হয়েছে। এক সময় মাফিয়ারাজ ও সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, এখন তা আইনের যাতাকলে সীমিত হয়েছে। পিতামাতা ও অভিভাবকরা একটা সময় বোন ও কন্যাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার ব্যাপারে সর্বদাই ভীত-সন্ত্রস্ত থাকতেন। কিন্তু, এখন অবস্থায় পরিবর্তন এসেছে। আজ উত্তর প্রদেশ
সরকার উন্নয়নের চাকায় পরিচালিত হচ্ছে। দুর্নীতি ও স্বজনপোষনের নীতিতে নয়। আর এই কারণেই রাজ্যবাসী এখন সমস্ত প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা সরাসরি উপভোগ করছেন। আজ রাজ্যে নতুন নতুন শিল্প সংস্থা বিনিয়োগ করছে। সেই সঙ্গে, কর্মসংস্থানের সুযোগ-সুবিধাও ক্রমশ বাড়ছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
করোনা যাতে আরও একবার নিজের প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, সে ব্যাপারে উত্তর প্রদেশবাসীকে নিজেদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের কথা পুনরায় স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী সতর্ক দেন, করোনার প্রভাব ধীরে ধীরে কমতে থাকলেও যে কোনও ধরনের অসতর্কতা আরও বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। এই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেককে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে বলেন, সকলের জন্য টিকাকরণ কর্মসূচিতে দ্রুত টিকা নিতে।

CG/BD/SB



(Release ID: 1735917) Visitor Counter : 198


Read this release in: English