প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন
উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ ভাবনাকে মুখ্যমন্ত্রীরা প্রশংসা করেছেন এবং কোভিড মহামারীকে মোকাবিলার জন্য সময়োচিত ব্যবস্থা নেওয়ায় তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন
প্রধানমন্ত্রী সব ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ রাখতে এবং ভাইরাসের অভিযোজনের পরিবর্তনে কঠোর নজরদারি চালানোর ওপর জোর দিয়েছেন
পার্বত্য অঞ্চলে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন না করে ভিড় জমানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সকলকে সতর্ক করেছেন
আমাদের যে বিষয়টি ভাবা উচিত সেটি হল কিভাবে তৃতীয় ঢেউকে আটকানো যাবে : প্রধানমন্ত্রী
টিকাকরণের বিরুদ্ধে ভ্রান্ত ধারণার মোকাবিলা করার জন্য সামাজিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশিষ্ট জন এবং বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
‘বিনামূল্যে সকলের জন্য টিকা’ অভিযানে উত্তর পূর্বাঞ্চল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : প্রধানমন্ত্রী
চিকিৎসা ক্ষেত্রে পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য সম্প্রতি ২৩ হাজার কোটি টাকার যে প্যাকেজ অনুমোদিত হয়েছে সেটি সহায়ক হবে : প্রধানমন্ত্রী
পিএম কেয়ার্সের সহায়তায় অক্সিজেন প্ল্যান্টের কাজ শেষ করতে মুখ্যমন্ত্রীদের উদ্দেশে অনুরোধ
Posted On:
13 JUL 2021 5:36PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লী, ১৩ জুলাই, ২০২১
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে উত্তর পূর্বাঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা, সিকিম, মেঘালয়, মিজোরাম, অরুণাচলপ্রদেশ, মণিপুর এবং আসামের মুখ্যমন্ত্রীরা বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। কোভিড মহামারীর বিরুদ্ধে যথাযথ সময়ে প্রধানমন্ত্রী ব্যবস্থা নেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীরা তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির প্রতি তাঁর বিশেষ চিন্তা ভাবনার জন্য প্রশংসা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীরা ছাড়াও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় উন্নয়ন মন্ত্রী এবং অন্যান্য দপ্তরের মন্ত্রীরা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রীরা নিজ নিজ রাজ্যে টিকাকরণের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন। একইসঙ্গে প্রত্যন্ত অঞ্চলে টিকাকরণের জন্য কি কি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। টিকা নিতে অনেকে ইতস্থত করায় উদ্ভুত সমস্যার সমাধানের জন্য যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বৈঠকে তা নিয়েও আলোচনা হয়। কোভিড পরিস্থিতির ভালোভাবে মোকাবিলার জন্য চিকিৎসা পরিকাঠামো উন্নতিতে কি কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং পিএম কেয়ার্স তহবিলের মাধ্যমে কি ধরণের সহযোগিতা পাওয়া গেছে, মুখ্যমন্ত্রীরা সে বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিতে সংক্রমণের হার এবং সংখ্যা কমানোর জন্য সময়োচিত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, সার্বিকভাবে নতুন করে সংক্রমণের হার কম হলেও এর জন্য শৈথিল্যের কোনো স্থান নেই এবং সকলকে পরিস্থিতির বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি দেশের কিছু কিছু অঞ্চলে সংক্রমিতের হার বৃদ্ধি পাওয়ার কথা উল্লেখ করে নমুনা পরীক্ষা, সংক্রমিতের সংস্পর্শে কারা কারা এসেছেন তাদের চিহ্নিত করা এবং টিকাকরণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব দেশে কোভিড পরিস্থিতির বিষয়ে একটি সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন। তিনি জানিয়েছেন উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো কোনো রাজ্যে সংক্রমণের হার বেশি এবং চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ানোর জন্য কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন। সচিব, টিকাকরণের অগ্রগতি সম্পর্কেও বৈঠকে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উত্তর পূর্বাঞ্চলের জনসাধারণ, স্বাস্থ্যকর্মী এবং সরকারের কঠোর পরিশ্রমের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির ভৌগলিক অবস্থান দূর্গম হওয়া সত্ত্বেও নমুনা পরীক্ষা, চিকিৎসা এবং টিকাকরণের জন্য পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি জেলায় সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি এই পরিস্থিতিতে সতর্ক থাকার গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। পরিস্থিতির মোকাবিলায় তিনি মাইক্রো কনটেনমেন্ট বিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে গত দেড় বছর ধরে যেসব অভিজ্ঞতা এবং ভালো পদ্ধতি সম্পর্কে জানা গিয়েছে সেগুলিকে পুরোদমে কাজে লাগানোরও তিনি পরামর্শ দিয়েছেন।
করোনা ভাইরাসের দ্রুত অভিযোজনের প্রসঙ্গটি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী অভিযোজন এবং সমস্ত ভ্যারিয়েন্টগুলির বিষয়ে কঠোর নজরদারির পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন অভিযোজন এবং তার প্রভাব নিয়ে বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে রোগ প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা পদ্ধতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই কোভিড আচরণবিধি যথাযথভাবে মেনে চলার ওপর শ্রী মোদী গুরুত্ব দিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা, টিকা নেওয়ার গুরুত্ব এখন সকলের কাছে পরিষ্কার। পাশাপাশি নমুনা পরীক্ষা, সংক্রমিতদের সংস্পর্শে কারা কারা এসেছেন তাঁদের চিহ্নিত করা এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করার মাধ্যমে এই কৌশলের সাফল্য প্রমানিত।
পর্যটন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর মহামারীর প্রভাবের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী সকলকে সতর্ক করে বলেছেন, যথাযথ আচরণবিধি না মেনে পার্বত্য অঞ্চলে ভিড় জমানো সঠিক নয়। তৃতীয় ঢেউ আসার আগে অনেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে চাইছেন, এই বক্তব্যকে নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তৃতীয় ঢেউ নিজে নিজে আসবেনা, এটি আমাদের সকলকে বুঝতে হবে। কিভাবে তৃতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলা করা যাবে সেটিই আমাদের মনে সবথেকে বড় প্রশ্ন। অসতর্কভাবে ভিড় জমানোর ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা বার বার সতর্ক করছেন। কারণ এর ফলে সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পায়। ভিড় এড়ানোর জন্য তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
শ্রী মোদী বলেছেন, ‘সকলের জন্য বিনামূল্যে টিকা’ অভিযান শুরু করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই অভিযানে উত্তর পূর্বাঞ্চল সমান গুরুত্ব পাচ্ছে। টিকাকরণ প্রক্রিয়াকে ত্বরাণ্বিত করার জন্য আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। টিকাকরণের বিষয়ে যে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে সেটিকে মোকাবিলা করতে মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে। একাজে তিনি সামাজিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশিষ্টজন এবং বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাহায্যের পরামর্শ দিয়েছেন। যেসব অঞ্চলে সংক্রণের ছড়িয়ে পরার সম্ভাবনা আছে সেখানে টিকাকরণ অভিযানকে ত্বরান্বিত করার ওপর তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা নতুন পরীক্ষা এবং চিকিৎসার পরিকাঠামোর উন্নয়নে ২৩ হাজার কোটি টাকার একটি প্যাকেজ অনুমোদন করেছে। এই প্রসঙ্গটি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন উত্তর পূর্বাঞ্চলে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়নে এই প্যাকেজ সহায়ক হবে। এই অঞ্চলে নমুনা পরীক্ষা, পরীক্ষাকেন্দ্র এবং জিন বিন্যাসের কাজ এর ফলে বৃদ্ধি পাবে। উত্তর পূর্বাঞ্চলে হাসপাতালের শয্যা, রোগীর অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা এবং শিশুদের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলার ওপর তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন। শ্রী মোদী বলেছেন, দেশজুড়ে পিএম কেয়ার্সের মাধ্যমে বহু অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরি হচ্ছে। এর মধ্যে উত্তরপূর্বের এ ধরণের ১৫০টি প্ল্যান্ট রয়েছে। তিনি মুখ্যমন্ত্রীদের অনুরোধ করেছেন এই প্ল্যান্টগুলির কাজ যাতে দ্রুত শেষ হয় তার জন্য তাঁরা যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন। শ্রী মোদী উত্তর পূর্বাঞ্চলের ভৌগলিক অবস্থানের জন্য এখানে অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরির প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। অক্সিজেন প্ল্যান্ট, আইসিইউ ওয়ার্ড এবং নতুন নতুন মেশিন চালানোর জন্য প্রশিক্ষিত মানব সম্পদের প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে তিনি একাজে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। ব্লক স্তরের হাসপাতালগুলিতে এইসব মেশিন পাঠানো হচ্ছে তাই সেখানে প্রয়োজনীয় মানব সম্পদের দরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে তিনি সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী দেশে প্রতিদিন ২০ লক্ষ নমুনা পরীক্ষা অর্জনের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, যেসব জেলায় সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে সেখানে নমুনা পরীক্ষার পরিকাঠামো বাড়াতে হবে। তিনি যথেচ্ছভাবে নমুনা পরীক্ষার পাশাপাশি সার্বিকভাবে এই পরীক্ষা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছেন। শ্রী মোদী আশা করেন সকলের যৌথ উদ্যোগে আমরা নিশ্চিতভাবে এই সংক্রমণ আটকাতে পারবো।
CG/CB/NS
(Release ID: 1735109)
Visitor Counter : 234