স্বাস্থ্যওপরিবারকল্যাণমন্ত্রক

ভারতীয় সার্স-কোভ-২ জেনোমিক কনসর্টিয়াম (ইনসাকগ) সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর

Posted On: 07 JUL 2021 7:16PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ৭ জুলাই, ২০২১

প্রঃ ইনসাকগ কি?
উঃ ইনসাকগ হল জাতীয় স্তরে একাধিক প্রতিষ্ঠিত জিনোম সিকোয়েন্সিং ল্যাবরেটরি নিয়ে গঠিত একটি সংস্থা যেখানে ১০টি পরীক্ষাগার রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর নমুনা পরীক্ষাকারী অগ্রণী প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিয়ে এই কনসর্টিয়াম যা ইনসাকগ নামে পরিচিত গঠন করে। পরবর্তী সময়ে এই কনসর্টিয়ামের অধীনে পরীক্ষাগারের সংখ্যা আরও বাড়ানো হয়। বর্তমানে কনসর্টিয়ামের অধীনে ২৮টি ল্যাবরেটরি রয়েছে যেগুলি সার্স-কোভ-২-এর জেনোমিক বা জিনগত গঠন পরিবর্তনের ওপর নজরদারি করছে।
প্রঃ ইনসাকগ-এর উদ্দেশ্য কি?
উঃ সার্স-কোভ-২ ভাইরাস প্রধানত কোভিড-১৯ ভাইরাস হিসেবে পরিচিত। এই ভাইরাস সারা বিশ্বে জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। তাই এই ভাইরাসের বিস্তার, বিবর্তন এবং জিনের গঠনগত রূপান্তরগুলি আরও ভালোভাবে উপলব্ধি করতে তথা জেনোমিক বিভিন্ন তথ্যের আরও নিবিড় বিশ্লেষণ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল। এই প্রেক্ষিতে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়া সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের জিনগত সিকোয়েন্স কিভাবে প্রসারিত হয়েছিল তা বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে অনুধাবন করতে ইনসাকগ কনসর্টিয়াম প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই কনসর্টিয়ামের অধীনে থাকা পরীক্ষাগারগুলিতে নমুনা বিশ্লেষণ এবং সিকোয়েন্সের ভিত্তিতে ভাইরাসের জিনের গঠনগত কোড বা বৈশিষ্ট্যে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে কিনা তা সনাক্ত করা হয়।
ইনসাকগ কনসর্টিয়ামের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ :
. দেশে ভ্যারিয়েন্ট অফ ইন্টারেস্ট-এর (ভিওআই) এবং ভ্যারিয়েন্ট অফ কনসার্ন-এর (ভিওসি) পরিস্থিতি নিরূপণ করা.
. জিনের গঠনগত পরিবর্তনগুলি প্রাথমিকভাবে সনাক্তকরণের জন্য নিরন্তর নজরদারি এবং পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা যাতে আরও কার্যকরভাবে জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ কমানো যায়।
. দ্রুত হারে সংক্রমণের ঘটনা এবং যে অঞ্চলে সংক্রমণের ঘটনা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে তার পাশাপাশি, মৃত্যুর ঘটনাগুলির ক্ষেত্রে সংগৃহীত নমুনার জেনোমিক উপস্থিতি নির্ধারণ করা।
প্রঃ ভারতে সার্স-কোভ-২ ভাইরাল সিকোয়েন্স কখন শুরু হয়েছিল?
উঃ ভারতে ২০২০-তে সার্স-কোভ-২ ভাইরাল জিনোম সিকোয়েন্স প্রক্রিয়া শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভায়রোলজি এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) বিভিন্ন দেশ যেমন ইংল্যান্ড, ব্রাজিল বা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে আসা আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের নমুনার সিকোয়েন্স পাঠানো হয়েছিল কারণ, প্রাথমিকভাবে এই দেশগুলিতে হঠাৎ করেই এই ভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত হারে বৃদ্ধি ঘটেছিল। এদিকে বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (সিএসআইআর), কেন্দ্রীয় জৈবপ্রযুক্তি দপ্তর এবং ন্যাশনাল ডিজিজ কন্ট্রোল স্বতন্ত্রভাবে ভাইরাসের সিকোয়েন্স পরীক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল। ভাইরাসের এই ভ্যারিয়েন্ট বা প্রজাতি অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে ইনসাকগ কনসর্টিয়ামের পরীক্ষাগারগুলিতে ট্র্যাক বা বিশ্লেষণ করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে এই ভাইরাসের নমুনা বিশ্লেষণ করে নতুন শ্রেণীর ডেল্টা ও ডেল্টা প্লাস সিকোয়েন্সের বিশ্লেষণ শুরু হয়।
প্রঃ ভারতে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের নজরদারি কৌশল কি ?
উঃ প্রাথমিকভাবে আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মধ্যে থেকে সংগৃহীত নমুনার ভ্যারিয়েন্টের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল এবং পরে ওই ভ্রমণকারীদের সংস্পর্শে আসা অন্যান্য ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে নমুনার ৩-৫ শতাংশের সিকোয়েন্সের কাজ শুরু হয়েছিল।
পরবর্তীকালে গত এপ্রিল মাসে নিরন্তর নজরদারি ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে রাজ্য / কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকেও অবহিত করা হয়। এই নজরদারি কৌশলের অঙ্গ হিসেবে অঞ্চল-ভিত্তিক বিভিন্ন নজরদারি কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছিল এবং আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। নিরন্তর নজরদারি ব্যবস্থা সারা দেশে বর্তমানে চালু নমুনা পরীক্ষার এক ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। একইভাবে, জেলাগুলিতেও আক্রান্তের ক্রমবর্ধমান ঘটনার ওপর নজর রাখার ব্যবস্থা শুরু হয়েছে। যে জেলাগুলি থেকে আক্রান্তের ঘটনা দ্রুত হারে বেড়েছে, সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তার বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে।
প্রঃ ইনসাকগ কনসর্টিয়ামের পরীক্ষাগারগুলিতে নমুনা পাঠানোর ক্ষেত্রে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) কি ?
উঃ ইনসাকগ কনসর্টিয়ামের পরীক্ষাগারগুলিতে নমুনা প্রেরণ এবং পরবর্তী জিনোম সিকোয়েন্সিং বিশ্লেষণ সংক্রান্ত কাজকর্মের আদর্শ কার্যপরিচালন বিধি বা এসওপি নিম্নরূপ :
ইন্টিগ্রেটেড ডিজিজ সার্ভেইলেন্স প্রোগ্রাম বিভিন্ন জেলা এবং অঞ্চল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তা আঞ্চলিক জিনোম সিকোয়েন্সিং ল্যাবরেটরিগুলিতে পাঠায়। এরপর, জিনোম সিকোয়েন্সের বিশ্লেষণ করে সেখানে উদ্বেগের কোনও কারণ রয়েছে কিনা তা জানার পর প্রয়োজনীয় তথ্য কেন্দ্রীয় নজরদারি ইউনিটকে পাঠানো হয় যাতে রাজ্য নজরদারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় বজায় রেখে মহামারী ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করা যায়। এরপর, জিনোম সিকোয়েন্স বিশ্লেষণ ও তার ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় তথ্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রক, ভারতীয় চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ, কেন্দ্রীয় জৈবপ্রযুক্তি দপ্তর তথা রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া হয়।
প্রঃ ভ্যারিয়েন্ট অফ কনসার্ন বা ভিওসি-র বর্তমান পরিস্থিতি কি ?
উঃ ভাইরাস সংক্রমণের উদ্বেগ সম্পর্কিত নতুন প্রজাতির বিভিন্ন মিউট্যান্ট ভারতে ৩৫টি রাজ্যের ১৭৪টি জেলায় পাওয়া গেছে। এই রাজ্যগুলির মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সহ মহারাষ্ট্র, দিল্লি, পাঞ্জাব। উল্লেখ করা যেতে পারে, এই রাজ্যগুলি থেকে সর্বাধিক সংখ্যায় ভিওসি রিপোর্ট পাওয়া গেছে। এমনকি দেশে কমিউনিটি বা সামুদায়িক স্যাম্পেলে বা নমুনায় জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে উদ্বেগজনক যে সমস্ত ভ্যারিয়েন্ট বা প্রজাতির প্রমাণ মিলেছে তার মধ্যে রয়েছে – আলফা, বিটা, গামা ও ডেল্টা।
মহারাষ্ট্রের প্রথমবার বি.১.৬১৭.২.১ (এওয়াই.১) প্রজাতির হদিশ পাওয়া যায়। এর ফলে রাজ্যের একাধিক জেলায় আক্রান্তের সংখ্যায় অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি ঘটে। এখন এই প্রজাতির ভাইরাসের অস্তিত্ব দেশের অনেক রাজ্যেই পাওয়া গেছে।
প্রঃ ডেল্টা প্লাস প্রজাতি কি ?
উঃ বি.১.৬১৭.২.২ (এওয়াই.১) বা ডেল্টা প্লাস হিসেবে অধিক পরিচিত। এই মিউট্যান্ট বা প্রজাতিটি অন্যান্য প্রজাতির সঙ্গে ডেল্টা প্রজাতির অস্তিত্বকে স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।

CG/BD/DM



(Release ID: 1733442) Visitor Counter : 354


Read this release in: English