সারওরসায়নমন্ত্রক
মিউকোরমাইকোসিসের চিকিৎসার জন্য ওষুধ যাতে পাওয়া যায় সরকার তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে
Posted On:
17 JUN 2021 6:24PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লী, ১৭ জুন, ২০২১
দেশে কয়েকটি রাজ্যে অ্যাম্ফোটেরিসিন বি-র চাহিদা বেড়ে গেছে। কোভিড পরবর্তী সময়ে যেসব রোগী মিউকোরমাইকোসিসে আক্রান্ত হচ্ছেন তাদেরকে এই ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। সরকার অ্যাম্ফোটেরিসিন বি-র ৬ লক্ষ ৬৭ হাজার ভয়েল উৎপাদন করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়াও অ্যাম্ফোটেরিসিন ডিওক্সিকোলেট এবং পোসাকোনাজোল-কে মিউকোরমাইকোসিসের চিকিৎসার কাজে ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে।
মিউকোরমাইকোসিসের চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত ওষুধের সরবরাহ নিশ্চিত করতে ফার্মাসিউটিক্যাল দপ্তর এবং সিডিএসসিও পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। মে মাসের গোড়ায় ওষুধের চাহিদা এবং সরবরাহের মধ্যে পার্থক্য দূর করার জন্য উৎপাদনের পরিমাণ, মজুত এবং উৎপাদক সংস্থাগুলির কাছে কতো ওষুধ বিভিন্ন সংস্থা চেয়েছে সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। ১০ মে ফার্মাসিউটিক্যাল দপ্তর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক, সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কনট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও), ডিরেক্টরেট অফ জেনারেল হেল্থ সার্ভিসেস (ডিজিএইচএস) পরিস্থিতির পর্যালোচনার জন্য একটি বৈঠক করে। সমস্ত রাজ্য যাতে চাহিদা মতো ওষুধ পায় তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন রাজ্যের জন্য ওষুধের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে। যতদিন না পর্যন্ত চাহিদা এবং সরবরাহের মধ্যে ঘাটতি দূর হচ্ছে ততদিন এই ব্যবস্থা কার্যকর থাকবে।
উৎপাদন বৃদ্ধি
দেশে উৎপাদন বাড়াতে কেন্দ্র ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছে। কাঁচামাল সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানের জন্য ফার্মাসিউটিক্যাল দপ্তর এবং ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই) ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে সমন্বয় বজায়ে রেখে চলেছে। বিকল্প ওষুধের সন্ধান, ওষুধ উৎপাদন করার নতুন ব্যবস্থা তৈরিতে অনুমতি দেওয়ার বিষয়গুলি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। যে সমস্ত সংস্থাগুলি লিপোসমাল অ্যাম্ফোটেরিসিন বি উৎপাদন করে তাদের উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ওষুধ উৎপাদন, বিদেশ থেকে আমদানি করা, ওষুধের লাইসেন্স এবং কাঁচামালের যোগান নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
ভারত সেরাম অ্যান্ড ভ্যাকসিনস লিমিটেড, সিপলা, সানফার্মা, বিডিআর ফার্মাসিউটিক্যাল্স এবং লাইফ কেয়ার ইনোভেশন্স- এই ৫টি সংস্থা বর্তমানে লিপোসমাল অ্যাম্ফোটেরিসিন বি উৎপাদন করে। এই মাসে প্রায় ২ লক্ষ ৬৩ হাজার ভয়েল এই সমস্ত সংস্থাগুলি উৎপাদন করবার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে। লিপোসমাল উৎপাদনের প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল। ডিসিজিআই বড় বড় ওষুধ উৎপাদক সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনার পর এমকিওর, গুফিক, অ্যালেমবিক, লাইকা, ন্যাটকো লিমিটেড এবং ইনটাস ফার্মাকে অ্যাম্ফোটেরিসিন বি লিপোসমাল ইঞ্জেকশন উৎপাদন করার এবং বাজারজাত করার অনুমতি দিয়েছে। আশা করা হচ্ছে এই ৬টি সংস্থা এমাসে ১ লক্ষ ১৩ হাজার ভয়েল উৎপাদন করবে।
অ্যাম্ফোটেরিসিন বি লিপোসমাল ইঞ্জেকশনের দেশে উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। আশা করা যায় জুন মাসে এই উৎপাদন ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার হবে। এপ্রিল মাসে যেখানে ৬২ হাজার অ্যাম্ফোটেরিসিন বি লিপোসমাল ইঞ্জেকশন উৎপাদন হয়েছিল বর্তমানে তার থেকে ৫ গুণ বেশি উৎপাদন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সরকার পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে। ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির সঙ্গে নিয়মিত বৈঠকে যেখানে যেখানে সমস্যা হচ্ছে সেগুলির সমাধান করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ওষুধ আমদানির উদ্যোগ
বিদেশ মন্ত্রক বিভিন্ন দেশ থেকে ওষুধ আমদানির বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে। মন্ত্রক অ্যাম্ফোটেরিসিন বি-র বিকল্প হিসেবে লিপোসমাল অ্যাম্ফোটেরিসিন বি চিহ্নিত করেছে। এরপর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক লিপোসমাল অ্যাম্ফোটেরিসিন বি অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, জার্মানী, আর্জেন্টিনা ও চীন থেকে ওষুধ তৈরির কাঁচামালগুলি সংগ্রহ করার জন্য উদ্যোগী হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রক এইচএসপিসি এবং জিএসটিজি-এনএ’র আমদানি নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হয়েছে। এই উপাদানগুলি ভারতে লিপোসমাল অ্যাম্ফোটেরিসিন বি উৎপাদনে কাচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
ফার্মাসিউটিক্যালস দপ্তর এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় দূতাবাস মের্সাস গিলাড থেকে ওষুধ আমদানি করার জন্য মাইলান ল্যাবের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে। বর্তমানে গিলাডের পাঠানো ৯ লক্ষ ৫ হাজার ভয়েল ইতিমধ্যেই মেসার্স মাইল্যানের কাছে এসে পৌঁছেছে।
ওষুধের বরাদ্দ
সীমিত পরিমাণ ওষুধ থাকায় বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে সরবরাহের ক্ষেত্রে নানা বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেন্দ্র ভারত সিরামের লিপোসমাল সহ অন্যান্য সংস্থাগুলির থেকে লিপোসমাল অ্যাম্ফোটেরিসিন বি বিভিন্ন রাজ্যকে বরাদ্দ করেছে। ১৪ই জুন চাহিদা বিবেচনা করে রাজ্যগুলির জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমানে লিপোসমাল অ্যাম্ফোটেরিসিন বির ৬,৬৭,৩৬০টি ভয়েল রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে দেওয়া হবে। এছাড়াও ৫৩ হাজার অ্যাম্ফোটেরিসিন বি-র ভয়েল বরাদ্দ করা হয়েছে।
সরবরাহ নিশ্চিত করা
ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যালস প্রাইসিং অথরিটি (এনপিপিএ)ওষুধ সরবরাহের দিকে নজর রাখছে। রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির কাছে ঠিকমতো সরবরাহ করার জন্য এনপিপিএ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
৭ই জুন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক মিউকোরমাইকোসিস সংক্রান্ত কোভিড-১৯এর চিকিৎসা এবং ব্যবস্থাপনা নিয়ে জাতীয় টাস্ক ফোর্সের পরামর্শ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে পাঠিয়েছে। অ্যাম্ফোটেরিসিন বি, লিপোসমাল অ্যাম্ফোটেরিসিন বি, অ্যাম্ফোটেরিসিন ডিওক্সিকোলেট, পোসাকোনাজোল বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার এবং ওষুধ উৎপাদক সংস্থাগুলির সঙ্গে মিউকোরমাইকোসিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের উৎপাদন আমদানি করা, সরবরাহ করা এবং কত ওষুধ মজুত আছে সেদিকে প্রতিনিয়ত নজর রাখছে।
CG/CB /NS
(Release ID: 1727958)
Visitor Counter : 221