সংস্কৃতিমন্ত্রক

নেহেরু সায়েন্স সেন্টার আয়োজিত ওয়েবিনারে বিজ্ঞান ও যোগের দর্শনের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে


'ইয়ামা'এবং 'নিয়মা' যোগা মুদ্রার মাধ্যমে একে অপরের থেকে কি ভাবে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা যায় তা ব্যাখা করা হয়েছে

Posted On: 19 JUN 2020 2:55PM by PIB Kolkata

মুম্বাই, ১৯শে জুন, ২০২০

 



যোগ, মানুষ এবং প্রকৃতির মধ্যে ক্রিয়া,সংবরণ,পূর্ণতা এবং সঙ্গতি বজায় রেখে, শরীর ও মনের মধ্যে ঐক্য সংগঠিত করতে সহায়তা করে। স্বাস্থ্য এবং সুস্থ থাকার একটি সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া হলো যোগ। ড: দীপিকা কোঠারি, প্রথম যোগ-সূত্র- "অথ যোগ অনুশাসনম" বিস্তারিত ভাবে ব্যাখ্যা করেন। গত বৃহস্পতিবার মুম্বাইতে অনুষ্ঠিত নেহেরু সায়েন্স সেন্টার(এনএসসি) আয়োজিত ওয়েবিনারে অংশগ্রহন করে এই যোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, সারা বিশ্ব যখন কোভিড-19 অতিমারীর বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছে, তখন এই প্রাচীন যোগশাস্ত্র ক্রমাগত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ড: রাজ্ভি মেহেতা সহ ওয়েবিনারে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য বক্তারা ভারতের প্রাচীন মন্দিরগাত্রে এবং স্থাপত্যে বর্ণিত যোগের গুরুত্ব তুলে ধরেন। এনএসসির নির্দেশক শ্রী শিবপ্রসাদ খেনেড, সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।


যোগের ইতিহাস তুলে ধরেন ড:কোঠারি। তিনি বলেন, পতঞ্জলী যে বিজ্ঞানকে সংকলিত, রীতিভুক্ত এবং সুসংহত করেছেন, তাই বর্তমান যুগে "যোগ সূত্র" বলে পরিচিত হয়েছে। ড:কোঠারি নির্মিত তথ্যচিত্র "হিস্ট্রি অফ যোগ-দ্য পাথ অফ মাই এনশেষটারস" ৬০০০ বছর সময়কালের যোগের বিবর্তনকে তুলে ধরেছে। তথ্যচিত্রটি শেষ হয়েছে স্বামী বিবেকানন্দর সময়কালকে তুলে ধরে। স্বামীজি ভারতীয় যোগাকে পশ্চিমের দেশ গুলির সামনে তুলে ধরেন এবং এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টা করেন।


ড:কোঠারি বলেন, বিশ্বের প্রাচীনতম বিদ্যা ঋক বেদে যোগের সূত্রের দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হয়েছে, তাহলো 'তপ:' এবং 'ধ্যান'। তিনি এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ব্যাখার পাশাপাশি যোগের আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মুদ্রার ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন পতঞ্জলী লিখেছেন, ইয়ামা এবং নিয়ামার মাধ্যমে আমরা আমাদের কোষকে সুরক্ষিত রাখতে পারি এবং এর মধ্যে দিয়ে আমাদের প্রতিদিনের জীবনে আত্মসংযম বজায় রাখতে প্রশিক্ষিত হয়ে থাকি।


শ্রীমতী কোঠারি বলেন, ভারতের সংস্কৃতির সঙ্গে যোগ ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে। বর্তমানে এই অতিমারীকালে যোগের গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনা সংক্রমণ কালে আমরা দূরত্ব বজায় রাখছি। ভারতীয় সংস্কৃতিতে দূরত্ব বজায় রাখাই দস্তুর। পশ্চিমের দেশগুলি এই নিয়ম মানে না। একই সঙ্গে ভারতীয়রা 'শৌচ' এবং 'শুচিতায়'বিশ্বাস করে, যা এই অতিমারীকালে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।


যোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, যোগ সূত্র এবং ভারতের প্রথম নাগরিক সভ্যতা অর্থাৎ সিন্ধু সভ্যতার মধ্যে একটি যোগসূত্র রয়েছে। সেখানে নিয়মিত যোগ চর্চা হতো। সেই সময় থেকে এখনো পর্যন্ত আমাদের জীবনধারায় বেশ কিছু সুঅভ্যাস রয়ে গেছে। যেমন প্রতিদিনের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং সাত্ত্বিক ভোজন ইত্যাদি। ভারতীয়রা না জেনেই বেশকিছু ইয়ামা এবং নিয়ামা পালন করে থাকে।


প্রাচীনকালে যে সমস্ত বিদেশী পর্যটকরা ভারত সফরে আসেন, তাঁরা উল্লেখ করেছেন, ভারতের প্রতিটি অংশের মানুষ সরল, সত্যবাদী এবং সৎ।

এখনও পর্যন্ত ভারতীয়রা সেই ধারা বজায় রেখেছেন বলে ড:রাজভি মেহেতা উল্লেখ করেন। গোটা বিশ্বে এখন ১০০টির বেশি দেশে যোগ অনুশীলন করা হয়। গত শতক ধরে যোগ গুরু বি কে এস লাইঙ্গার গোটা বিশ্বের নাগরিকদের কাছে যোগের বিস্ময়কর উপকারিতার কথা তুলে ধরেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৪ সালে রাষ্ট্রসেঙ্ঘর সাধারণ সভায় ২১শে জুন তারিখটিতে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালন করার প্রস্তাব দেন। রাষ্ট্রসংঘ তা অনুমোদনের ঘোষণা করলে যোগের গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পায় বলে শ্রীমতী মেহেতা মন্তব্য করেন।


ড: মেহেতা বলেন, ভারতীয় প্রাচীন যোগের মুদ্রা গুলি পশ্চিমি দেশগুলি পছন্দ করে। এই গুলি অনুশীলন করে তারা উপকৃত হয়। যোগের আসন গুলি ভারতীয় কলা এবং স্থাপত্যকে তুলে ধরেছে। এই লকডাউন সময়কালে মানুষ যোগের অনুশীলনের মাধ্যমে বাইরের আকর্ষণ থেকে সরে এসে আত্মসংযম করতে পেরেছেন বলে ড:মেহেতা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, যোগের মাধ্যমে শরীর এবং মনের ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব। পতঞ্জলী যোগাশ্রমের সঙ্গে যুক্ত ড:মেহেতা বলেন, এই অতিমারীকালে যোগের বেশ কিছু আসন মানুষকে বিশেষ ভাবে সহায়তা করে। টাডাসন, হামসাসন, ময়ূরাসন এবং বশিষ্টাসন শরীর ও মনকে শান্ত রাখে। একই ভাবে, মরিচাসন, মূলবন্ধাসন, পরিপূর্ণ মৎসেন্দ্রাসন, বদ্ধ কনাসন, গর্ভ পিন্ডাসন, পদ্মাসন মন এবং শরীরকে মজবুত করে।


সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীনে দ্য ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ সায়েন্স মিউজিয়ামের সায়েন্স সেন্টার আয়োজিত একটি প্রদর্শনীর মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।

 



CG/PPM



(Release ID: 1632784) Visitor Counter : 173


Read this release in: English , Hindi