প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ
Posted On:
03 APR 2020 1:25PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ০৩ এপ্রিল, ২০২০
আমার প্রিয় দেশবাসী,
নমস্কার।
করোনা বিশ্ব মহামারীর বিরুদ্ধে দেশব্যাপী লকডাউনের আজ ৯ দিন পূর্ণ হচ্ছে।
এই সময়ে আপনারা সবাই যেরকম অনুশাসন এবং সেবা ভাবের পরিচয় দিচ্ছেন, তা অভূতপূর্ব।
সরকার, প্রশাসন ও জনগণ সবাই মিলে এই পরিস্থিতি ভালোভাবে সামলানোর চেষ্টা করেছেন।
আপনারা যেভাবে ২২শে মার্চ রবিবার করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধরত প্রত্যেক ব্যক্তিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন, সেটাও আজ প্রতিটি দেশের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।
আজ অনেক দেশ এর অনুকরণ করছে।
জনতা কার্ফিউ হোক, ঘন্টা বাজানো, হাততালি, থালা বাজানো কর্মসূচি হোক – এইসব কিছু, সঙ্কটকালে দেশকে তার সামগ্রিক শক্তি সম্পর্কে অনুভব করিয়েছে।
এই মনোভাব ফুটে উঠেছে যে, দেশ ঐক্যবদ্ধ হয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়তে পারে।
এখন লকডাউনের সময়ে, দেশে আপনাদের সবার এই ঐক্যবদ্ধ রূপ পরিলক্ষিত হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
আজ যখন দেশের কোটি কোটি মানুষ বাড়িতে রয়েছেন, তখন কারও মনে হতেই পারে যে, তিনি একা কী করবেন, কেউ কেউ হয়তো ভাবছেন যে, এত বড় লড়াই তিনি একা কিভাবে লড়বেন?
এই প্রশ্নও হয়তো মনে জাগছে, কতদিন আরও এমন কাটাতে হবে।
বন্ধুগণ,
এটা লকডাউনের সময় অবশ্যই, আমরা নিজের নিজের বাড়িতে অবশ্যই রয়েছি, কিন্তু আমরা কেউ একা নই।
১৩০ কোটি ভারতবাসী সামগ্রিক শক্তি প্রত্যেক ব্যক্তির সঙ্গে রয়েছে, প্রত্যেক ব্যক্তির সম্বল।
সময়ের সঙ্গে দেশবাসীর এই সামগ্রিক শক্তির বিরাট রূপ, এর সৌন্দর্য এবং দিব্যতা অনুভব করা প্রয়োজন।
বন্ধুগণ,
আমাদের দেশে মানা হয় যে, জনতা জনার্দন ঈশ্বরেরই রূপ। সেজন্য দেশ যখন এত বড় লড়াই লড়ছে, তখন এই লড়াইয়ে বারবার জনতারূপী মহাশক্তির অভিব্যক্তি প্রকাশ করে যেতে হবে।
এই অভিব্যক্তি আমাদের মনোবল দেবে, লক্ষ্য স্থির রাখবে, লক্ষ্য পূরণের জন্য প্রাণশক্তি যোগাবে, আমাদের যাত্রাপথকে আরও স্পষ্ট করবে।
বন্ধুগণ,
করোনা মহামারীর ফলে বিস্তৃত অন্ধকারের মাঝে, আমাদের নিরন্তর আলোর পথে যেতে হবে।
যাঁরা এই করোনা সঙ্কটে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত, আমাদের গরিব ভাইবোন – তাঁদেরকে নিরাশা থেকে আশার পথে নিয়ে যেতে হবে।
এই করোনা সঙ্কট থেকে যে অন্ধকার ও অনিশ্চয়তা জন্ম নিয়েছে, তার সমাপনে আমাদের আলোর পথে দৃঢ়তার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে।
এই অন্ধকারময় করোনা সঙ্কটকে পরাজিত করার জন্য আমাদের আলোর তেজকে চারদিকে ছড়িয়ে দিতে হবে। আর সেজন্য –
এই রবিবার ৫ই এপ্রিল আমাদের সবাইকে একসঙ্গে, করোনা সঙ্কটের অন্ধকারকে প্রতিস্পর্ধা জানাতে হবে। তাকে আলোর শক্তির সঙ্গে পরিচয় করাতে হবে।
এই ৫ই এপ্রিল আমাদের, ১৩০ কোটি দেশবাসীর মহাশক্তি জাগিয়ে তুলতে হবে।
১৩০ কোটি দেশবাসীর মহাসঙ্কল্পকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে।
৫ই এপ্রিল রবিবার রাত ৯টায় আপনাদের সবার ৯ মিনিট চেয়ে নিচ্ছি।
মনোযোগ দিয়ে শুনুন, ৫ই এপ্রিল রাত ৯টা, বাড়ির সমস্ত আলো নিভিয়ে দিয়ে বাড়ির দরজা কিংবা ব্যালকনি-তে দাঁড়িয়ে থেকে, ৯ মিনিটের জন্য মোমবাতি, প্রদীপ, টর্চ কিংবা মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালান।
আমি আরেকবার বলছি, মোমবাতি, প্রদীপ, টর্চ কিংবা মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট ৫ই এপ্রিল রাত ৯টায় ৯ মিনিট ধরে জ্বালাবেন।
আর সেই সময়ে যদি বাড়ির সমস্ত আলো বন্ধ রাখেন, চারপাশে যখন প্রত্যেক ব্যক্তি এক একটি প্রদীপ জ্বালাবেন, তখন আলোর সেই মহাশক্তি অনুভূত হবে, যা থেকে একটাই উদ্দেশ্য নিয়ে যে আমরা সবাই লড়াই করছি, তা পরিস্ফূট হবে।
সেই আলোতে, এই রোশনাইয়ে, সেই উজ্জ্বলতায় আমরা নিজের মনে এই সঙ্কল্প করবো যে আমরা একা নই, কেউ-ই একা নয়! ১৩০ কোটি দেশবাসী একটাই শপথ নিয়ে কৃতসঙ্কল্প।
বন্ধুগণ,
আমার আরেকটি অনুরোধ, এই কর্মসূচির সময়ে আপনারা কেউ, কোথাও একত্রিত হবেন না।
পথে, গলিতে কিংবা পাড়ায় বেরিয়ে পড়বেন না। নিজের বাড়ির দরজায়, ব্যালকনিতে দাঁড়িয়েই এটা করতে হবে।
সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং – এর লক্ষ্মণরেখা কখনও অতিক্রম করবেন না। আবার সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং কোনও অবস্থাতেই ভাঙবেন না।
করোনার শৃঙ্খলা ভাঙতে এটাই ব্রহ্মাস্ত্র চিকিৎসা। সেজন্য ৫ই এপ্রিল রাত ৯টায়, কিছুক্ষণ একা বসে ভারতমাতার কথা ভাবুন, ১৩০ কোটি দেশবাসীর চেহারা কল্পনা করুন।
১৩০ কোটি দেশবাসীর এই সামগ্রিকতা, এই মহাশক্তিকে অনুভব করুন।
এটা আমাদের সঙ্কটের এই সময়ে, লড়াইয়ের শক্তি যোগাবে আর জয়ের আত্মবিশ্বাসও।
আমাদের শাস্ত্রে বলা হয়েছে -
উৎসাহো
বলবান আরিয়া,
ন অস্তি উৎসাহ পরম্ বলম্।
স উৎসাহস্য লোকেষু,
ন কিঞ্চিত অপি দুর্লভম।
অর্থাৎ, আমদের উৎসাহ, আমাদের প্রাণশক্তি থেকে বড় শক্তি আর কিছু নেই।
বিশ্বে এমন কিছুই নেই, যা আমাদের এই শক্তির মাধ্যমে জয় করতে পারবো না।
আসুন,
একত্রিত হই,
একসঙ্গে মিলেমিশে করোনাকে হারাই, ভারতকে বিজয়ী করে তুলি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
CG/SB/SB
(Release ID: 1610624)
Visitor Counter : 279