সামাজিকন্যায়ওক্ষমতায়নমন্ত্রক

কোভিড-১৯ পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তায় রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে সুসংবদ্ধ নির্দেশিকা জারি করলো ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের ক্ষমতায়ন সংক্রান্ত দপ্তর

Posted On: 27 MAR 2020 8:57PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৭ মার্চ, ২০২০

কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় বিচার ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের অধীন ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের ক্ষমতায়ন সংক্রান্ত দপ্তর কোভিড-১৯ মহামারীর প্রেক্ষিতে দিব্যাঙ্গ জনদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তায় রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে এক সুসংবদ্ধ নীতি-নির্দেশিকা জারি করেছে। এই মহামারীর প্রেক্ষিতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনস্বার্থে সমূহ বিপদ দেখা দিয়েছে। কোভিড-১৯ সংক্রমণ মোকাবিলায় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার কোভিড-১৯ উদ্ভূত পরিস্থিতিকে জাতীয় বিপর্যয় হিসাবে ঘোষণা করে জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৫ অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় নীতি-নির্দেশিকা জারি করেছে।

কেন্দ্রীয় স্তরে নোডাল দপ্তর হিসাবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক সাধারণ মানুষের পাশাপাশি, স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রুখতে নীতি-নির্দেশিকা জারি করেছে। কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য ও সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতীয় স্তরে তিনটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। এগুলি হ’ল – 1075, 011 – 2397 8046 এবং 9013151515.

কোভিড-১৯ – এর প্রভাব যেহেতু সমগ্র দেশবাসীর ওপর পড়েছে, তাই এই পরিস্থিতিতে দিব্যাঙ্গজনরা তাঁদের শারীরিক, মানসিক ও অন্যান্য সীমিত গতিবিধির কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই, এ ধরনের মানুষের জন্য অক্ষমতা-ভিত্তিক প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সময় মতো উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে। জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জেলা, রাজ্য, জাতীয় পর্যায়ে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। গত ২৪শে মার্চ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এক নির্দেশ জারি করে কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে ২৫শে মার্চ থেকে ২১ দিন সারা দেশে লকডাউনের কথা ঘোষণা করেছে।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জারি করা নীতি-নির্দেশিকাগুলি সমস্ত নাগরিকদের ক্ষেত্রেই সমানভাবে প্রযোজ্য। এই প্রেক্ষিতে ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তায় বিশেষ নজর দেওয়ার জন্য রাজ্য ও জেলা কর্তৃপক্ষগুলিকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

কোভিড-১৯ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পরিষেবা এবং আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা সম্পর্কিত তথ্য সহজে স্থানীয় ভাষায় অর্থাৎ ব্রেইল পদ্ধতিতে এবং শ্রবণযোগ্য উপায়ে দিব্যাঙ্গদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এই কাজে ওয়েবসাইটের সাহায্য এবং প্রয়োজন-ভিত্তিতে সাব-টাইটেল ব্যবহার করা যেতে পারে। আপৎকালীন পরিষেবা প্রদানের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত ব্যক্তিকে দিব্যাঙ্গজনদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। একই সঙ্গে, যাবতীয় সচেতনতামূলক অভিযানের অঙ্গ হিসাবে দিব্যাঙ্গজনদের উপযোগী প্রাসঙ্গিক তথ্য প্রদান করতে হবে।

কোয়ারেন্টাইনে থাকার সময় দৃষ্টিশক্তিহীন ব্যক্তি, মানসিক বিকারগ্রস্ত ব্যক্তিদের স্বার্থে অত্যাবশ্যক পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া সুনিশ্চিত করতে হবে। এমনকি, দিব্যাঙ্গজন ব্যক্তিরা প্রয়োজনে তাঁদের ব্যবহৃত হুইল চেয়ার ও অন্যান্য সহায়ক সরঞ্জামের মেরামতিতে সহায়তাও চাইতে পারেন।

দিব্যাঙ্গজনদের পরিচর্যার কাজে যুক্ত ব্যক্তিদের লকডাউন চলাকালীন সময়ে প্রযোজ্য নীতি-নির্দেশিকা থেকে ছাড় দেওয়া হবে।

দিব্যাঙ্গজনদের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আবাসিক কল্যাণ সংগঠনগুলিকে আরও সংবেদনশীল করে তুলতে হবে, যাতে দিব্যাঙ্গজনদের পরিষেবার কাজে যুক্ত ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট আবাসন চত্বরে প্রবেশের অনুমতি মেলে। দিব্যাঙ্গজনরা যাতে নিজের বাড়িতেই বা কোয়ারেন্টাইনে থাকার সময় সংশ্লিষ্ট ঠিকানায় প্রয়োজনীয় খাবার, জল, ওষুধপত্র ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পেতে পারেন, তা সুনিশ্চিত করতে হবে।

সুপার মার্কেটগুলিতে দিব্যাঙ্গজনদের স্বার্থে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে তাঁরা সহজেই কেনাকাটা করতে পারেন। ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইনে থাকার সময় রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। চিকিৎসার ক্ষেত্রেও দিব্যাঙ্গজনদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। শিশু ও মহিলাদের জন্য বিশেষ পরিচর্যা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে হবে। স্বল্প দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন অন্যান্য ও অন্যান্য দিক থেকে শারীরিক অক্ষমতা রয়েছে, এমন কর্মচারীদের জরুরি পরিষেবা সংক্রান্ত কাজকর্ম নির্বাহ থেকে ছাড় দিতে হবে। এছাড়াও, দিব্যাঙ্গজনদের জন্য কোয়ারেন্টাইনে থাকার অনলাইন কাউন্সেলিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ এবং ভিডিও কলিং সুবিধা সহ দিব্যাঙ্গজনদের জন্য রাজ্যস্তরে ২৪x৭ হেল্পলাইন নম্বর চালু করতে হবে। রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসনগুলি কোভিড-১৯ সংক্রান্ত তথ্য দিব্যাঙ্গজনদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের কল্যাণে গঠিত সংগঠনগুলিকে কাজে লাগানোর কথা বিবেচনা করতে পারে।

লকডাউন চলাকালীন সময়ে দিব্যাঙ্গজনদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা :

ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য স্টেট কমিশনার – স্টেট কমিশনারদের ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে রাজ্যস্তরীয় নোডাল আধিকারিক হিসাবে ঘোষণা করতে হবে। আধিকারিকরা এই চ্যালেঞ্জের সময়ে দিব্যাঙ্গজনদের সমস্যা নিরসনে সার্বিক দায়িত্বে থাকবেন। প্রয়োজনে এই আধকারিকরা রাজ্য বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, স্বাস্থ্য বিভাগ, পুলিশ ও অন্যান্য দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় বজায় রাখবে। একইভাবে, কোভিড-১৯ সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য যাতে স্থানীয় ভাষায় সহজে দিব্যাঙ্গদের কাছে পৌঁছয়, তা সুনিশ্চিত করবে।

দিব্যাঙ্গজনদের ক্ষমতায়নের সঙ্গে যুক্ত জেলাস্তরীয় আধিকারিক :

দিব্যাঙ্গজনদের ক্ষমতায়নের সঙ্গে যুক্ত জেলাস্তরীয় আধিকারিককে দিব্যাঙ্গজনদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে জেলা পর্যায়ের নোডাল কর্তৃপক্ষ হিসাবে ঘোষণা করতে হবে। জেলায় কতজন দিব্যাঙ্গ রয়েছেন, তার তালিকা জেলা আধিকারিকের কাছে থাকবে এবং তিনি নিয়মিতভাবে দিব্যাঙ্গজনদের চাহিদার বিষয়গুলিই নজরে রাখবেন। জেলাস্তরীয় এই আধিকারিক প্রাপ্ত সম্পদ কাজে লাগিয়ে সমস্যার নিরসনে চেষ্টা করবেন এবং প্রয়োজন-সাপেক্ষে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, নাগরিক সমিতি বা আবাসিক কল্যাণ সংগঠনগুলির সহায়তা নেবে।

CG/BD/SB


(Release ID: 1608664) Visitor Counter : 265


Read this release in: English