প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী গান্ধীনগরে বন্য পরিযায়ী পশু-প্রাণী সংরক্ষণ সংক্রান্ত ত্রয়োদশ সিওপি সম্মেলনের উদ্বোধন করলেন

Posted On: 17 FEB 2020 5:21PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

 

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গান্ধীনগরে বন্য পরিযায়ী পশু-প্রাণী সংরক্ষণ সংক্রান্ত ত্রয়োদশ কনফারেন্স অফ পার্টিজ (সিওপি) সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।

 

এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ভারত বিশ্বের অন্যতম বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশ। বিশ্বের মোট ভৌগোলিক এলাকার ২.৪ শতাংশ ভারতীয় ভূখণ্ডের অংশ হলেও এখানে বিশ্বের জীববৈচিত্র্যের প্রায় ৮ শতাংশের বসবাস। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যুগ যুগ ধরে বন্যপ্রাণী ও তাদের বাসস্থানের সংরক্ষণ ভারতের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের অঙ্গ। এই মূল্যবোধই করুণা ও সহাবস্থানে প্রেরণা যোগায়। তিনি বলেন, “গান্ধীজির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে অহিংসার নীতি তথা পশু-প্রাণী ও প্রকৃতির সুরক্ষার বিষয়টি ভারতের সংবিধান এবং একাধিক আইনে যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।”

 

ভারতের অরণ্য অঞ্চলের পরিধি বৃদ্ধি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের মোট ভৌগোলিক এলাকার ২১.৬৭ শতাংশ অংশই অরণ্যভূমি। সংরক্ষণ, সুস্থায়ী জীবনশৈলী এবং আদর্শ সবুজায়নের মাধ্যমে ভারত কিভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে তা শ্রী মোদী উল্লেখ করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বৈদ্যুতিক যানবাহন, স্মার্ট সিটি ও জল সংরক্ষণে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ভারত হাতেগোনা কয়েকটি দেশের অন্যতম যারা ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে বজায় রাখতে প্যারিস চুক্তির উদ্দেশ্যগুলি মেনে চলছে।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পশু-প্রাণী সংরক্ষণমূলক কর্মসূচিগুলিতে অগ্রাধিকার দেওয়ায় তার পরিণাম মিলতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, “ভারত ২০২২ সালে ধার্য লক্ষ্যমাত্রা পূরণের দু’বছর আগেই বন্য পরিবেশে বাঘের সংখ্যা ২০১০-এর ১,৪১১ থেকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে বর্তমানে ২,৯৬৭-তে পৌঁছতে পেরেছে।” বন্য পরিবেশে বাঘের অস্তিত্ব রয়েছে সম্মেলনে উপস্থিত এমন দেশগুলি ছাড়াও, অন্যান্য দেশকে ব্যাঘ্র সংরক্ষণের প্রয়াস আরও জোরদার করতে শ্রী মোদী আহ্বান জানান। এশীয় প্রজাতির হাতি সংরক্ষণে ভারত যেসব প্রয়াস নিয়েছে তার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তুষার চিতা, এশীয় প্রজাতির সিংহ, একশৃঙ্গ-বিশিষ্ট গণ্ডার এবং গ্রেট ইন্ডিয়ান বাস্টার্ড পাখির সংরক্ষণ ও সংখ্যা বৃদ্ধিতেও কর্মসূচি রূপায়িত হচ্ছে। গ্রেট ইন্ডিয়ান বাস্টার্ড পাখির প্রতি সম্মানের নিদর্শনস্বরূপ ‘জিবি-দ্য গ্রেট’ ম্যাসকট তৈরি করা হয়েছে।

 

দক্ষিণ ভারতের পরম্পরাগত ‘কোলাম’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এবারের ত্রয়োদশ সিওপি সম্মেলনের প্রতীক তৈরি করা হয়েছে। এই প্রতীক প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সহাবস্থানের তাৎপর্যকে প্রতিফলিত করে। তিনি বলেন, ত্রয়োদশ সম্মেলনের ভাবনার সঙ্গে ভারতের ‘অতিথি দেব ভবঃ’ মন্ত্রের আদর্শ প্রতিফলিত হয়।

 

সিওপি-র এই সম্মেলনের আগামী তিন বছর সভাপতির পদে দায়িত্ব পালনের সময় ভারতের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলির কথাও প্রধানমন্ত্রী ব্যাখ্যা করেন।

 

পরিযায়ী পাখির যাতায়াতের ক্ষেত্রে ভারতকে মধ্য এশিয়ার একটি এলাকা বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মধ্য এশিয়া অঞ্চলে পরিযায়ী পাখি ও তাদের বাসস্থানের সুরক্ষায় ভারত মধ্য এশিয়া এলাকা বরাবর পরিযায়ী পাখির সংরক্ষণে জাতীয় স্তরের একটি পরিকল্পনা প্রস্তুত করছে। “মধ্য এশিয়া অঞ্চলের অন্যান্য দেশের সক্রিয় সহযোগিতায় পরিযায়ী পাখির সংরক্ষণে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছতে আমরা আগ্রহী” বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসিয়ান ও পূর্ব এশীয় দেশগুলির সঙ্গে সহযোগিতা আরও নিবিড় করার প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। ভারত ২০২০ নাগাদ সামুদ্রিক কচ্ছপ নীতি এবং সামুদ্রিক স্থিতাবস্থা ব্যবস্থাপনা নীতি গ্রহণ করবে বলে জানিয়ে শ্রী মোদী বলেন, এই নীতি সমুদ্রে মাইক্রো প্লাস্টিকজনিত দূষণ প্রতিরোধেও কার্যকর ভূমিকা নেবে। পরিবেশের সুরক্ষায় একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিককে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ভারতে আমরা মিশন মোড ভিত্তিতে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জনের অভিযান গ্রহণ করেছি।”

 

ভারতের এমন অনেক সংরক্ষিত এলাকা রয়েছে যেগুলির সীমানা প্রতিবেশী দেশগুলির সংরক্ষিত এলাকা লাগোয়া। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সীমান্তপারের সুরক্ষা নীতি ইতিবাচক ভূমিকা নিতে পারে।

 

সুস্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের অঙ্গীকারের কথা পুনরায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাস্তুতান্ত্রিক দিক থেকে অত্যন্ত স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে উন্নয়নের জন্য আমরা যথোপযুক্ত পরিকাঠামো নীতি-নির্দেশিকা গ্রহণ করেছি।”

 

অরণ্য লাগোয়া অঞ্চলে বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ মানুষকে যৌথ বনাঞ্চল পরিচালনা কমিটি ও ইকো ডেভেলপমেন্ট কমিটি গঠনের মাধ্যমে সামিল করা হয়েছে। এই উদ্যোগ ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস’-এর মানসিকতাকেই প্রতিফলিত করে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, অরণ্য ও বন্য জীবনের সুরক্ষায় সাধারণ মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ আরও বাড়ানোই এই উদ্যোগগুলির উদ্দেশ্য।

 

 

CG/BD/DM


(Release ID: 1603442) Visitor Counter : 138


Read this release in: English