রেলমন্ত্রক
রেল মন্ত্রকের ২০১৯-এর বর্ষশেষ পর্যালোচনা
Posted On:
06 JAN 2020 5:20PM by PIB Kolkata
রেল মন্ত্রক এই প্রথম বিপুল পরিমাণ মূলধন বিনিয়োগ করেছে। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের বাজেটে ১,৬০,১৭৬ কোটি টাকা মূলধন বরাদ্দের সংস্থান রাখা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় যা ২০.১ শতাংশ বেশি। নভেম্বর মাসের মধ্যে ১,০২,০০৮ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে যা মোট বাজেট বরাদ্দের ৬৩.৭ শতাংশ। আরও ৫০ লক্ষ কোটি টাকা ২০৩০ সালের মধ্যে বরাদ্দের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই অর্থ পরিকাঠামো উন্নয়ন খাতে ব্যয় করা হবে।
২০১৯-এর এপ্রিল থেকে নভেম্বরের মধ্যে নতুন লাইন, ডবল লাইন এবং গেজ পরিবর্তনের পরিমাণ ১,১৬৫ কিলোমিটার। নভেম্বরের মধ্যে ৯০৪টি মনুষ্যচালিত লেভেল ক্রসিং তুলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে, ট্রেন চলাচলে গতি বেড়েছে। এপ্রিল থেকে নভেম্বরের মধ্যে রেল লাইনের ওপর ৮৬১টি উড়ালপুল তৈরি হয়েছে। ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ বৃদ্ধি পেয়েছে ৪৪ শতাংশ। এপ্রিল থেকে নভেম্বরের মধ্যে মোট ১০৭টি এ ধরনের ওভারব্রিজ তৈরি করা হয়েছে।
সেপ্টেম্বরে জয়পুর-রিংগাস-শিকার-চুরু – মোট ৩২০ কিলোমিটার রেললাইনের গেজ পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন দিল্লি এবং তিলক ব্রিজের মধ্যে রেল জট কমাতে ৭ কিলোমিটার রেলপথে পঞ্চম এবং ষষ্ঠ লাইন বসানো হয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষ্ণপত্তনম বন্দরের সঙ্গে ১১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন লাইন চালু হয়েছে। কয়লা খনি এলাকার খারসিয়া-কোরিছপাড়ের মধ্যে ৪২.৫ কিলোমিটার নতুন লাইন বসানোর কাজও শেষ হয়েছে। অক্টোবর মাসে রাজগীর-হিসুয়া-তিলাইয়ার মধ্যে ৬৭ কিলোমিটার নতুন লাইনের কাজ শেষ হয়েছে। এই সময়ে হাজিপুর থেকে রামদয়ালু নগর পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথের দ্বিতীয় লাইনটির কাজ শেষ হয়েছে। এনটিপিসি-র বাঢ় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লার যোগানের লক্ষ্যে ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ বখতিয়ারপুর-বাঢ় রেলপথের কাজ শেষ হয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে লামডিং থেকে হোজাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয় রেলপথ এবং আগরতলা থেকে সাব্রুমের মধ্যে ১১২ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথের কাজ শেষ হয়েছে।
এলাহাবাদ থেকে পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় জংশন পর্যন্ত তৃতীয় লাইন, শাজাহানওয়া থেকে দোরিঘাট এবং বৈভবওয়াড়ি থেকে কোলহাপুর নতুন রেলপথ ও নিউ বঙ্গাইগাঁও-আগথোরি রেলপথের দ্বিতীয় লাইন বসানোর প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
২০২২-২৩ সালের মধ্যে দিল্লি-মুম্বাই ও দিল্লি-হাওড়া রেলপথে ট্রেনের গতি বৃদ্ধি করে ঘন্টায় ১৬০ কিলোমিটার করার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এর ফলে, যাত্রীবাহী ট্রেনের গতি ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এক রাতের মধ্যেই রাজধানী এক্সপ্রেসে গন্তব্যে পৌঁছনো সম্ভব হবে।
আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে ভারতীয় রেল তার সিগন্যাল ব্যবস্থার উন্নতিতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে মোবাইল ট্রেন রেডিও কমিউনিকেশন সিস্টেম এবং মর্ডান ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম চালুর কাজ করা হবে। দেশ জুড়ে চারটি ব্যস্ততম রেলপথে রেল জট কমাতে ১,৮১০ কোটি টাকা ব্যয়ে সিগন্যাল ব্যবস্থার আধুনিকীকরণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার কাজ চলছে। এর ফলে, ৬৪০টি রুটের ট্রেন চলাচলে সুবিধা হবে।
এপ্রিল থেকে নভেম্বরের মধ্যে ২,০৪১ কিলোমিটার রেলপথে বিদ্যুতায়নের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। ডিজেলের ব্যবহার কমানোর লক্ষ্যে ৫০০টি ট্রেনে জ্বালানি ব্যবহারের পদ্ধতির পরিবর্তন করা হয়েছে। ৫ই নভেম্বরের মধ্যে ৪৩৬টি ট্রেনে এই পরিবর্তন করা হয়েছে। বর্তমানে ৩৯টি ওয়ার্কশপ, সাতটি নির্মাণকেন্দ্র, পাঁচটি ডিজেল শেড এবং একটি স্টোর ডিপো ‘গ্রিনকো’ শংসাপত্র পেয়েছে। পরিবেশগত ব্যবস্থাপনার কারণে ৮৫টি স্টেশন আইএসও:১৪০০১ শংসাপত্র পেয়েছে। ভারতীয় রেল ১ হাজার মেগাওয়াট সৌরশক্তি ও ২০০ মেগাওয়াট বায়ুশক্তি ২০২১-২২ সালের মধ্যে উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়েছে। ইতিমধ্যেই ৯৬.৮৪ মেগাওয়াট সৌরশক্তি উৎপাদক প্ল্যান্টের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর ফলে, কার্বন নিঃসরণ হ্রাস পাবে। আগামী ২৫ বছরের মধ্যে বিভিন্ন রেল ভবনের ছাদে ৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব হবে। ১৬টি স্টেশনকে ইতিমধ্যেই পরিবেশ-বান্ধব বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
রেলের জমিতে ৫০০ মেগাওয়াট সৌরশক্তি উৎপাদনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই রায়বেরিলির এমসিএফ-এ ৩ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। আগামী মার্চের মধ্যে ভেল-এর সহযোগিতায় বীণা সৌর প্রকল্পের (১.৭ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন) কাজ শেষ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। বায়ুশক্তির মাধ্যমে যে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করা হয়েছে তার মধ্যে ১০৩ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্র গড়ার কাজ শেষ হয়েছে।
‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির আওতায় রেল ৪৪টি বন্দে ভারত ট্রেনের রেক তৈরি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি এই কাজ করবে। বারাণসীর ডিজেল লোকোমোটিভ ওয়ার্কস সাতটি ডিজেল ইঞ্জিন শ্রীলঙ্কার রেলকে রপ্তানি করেছে। ভারতীয় রেল বাংলাদেশ রেলের জন্য ব্রডগেজ ও মিটার গেজ লাইনে চলাচলক্ষম ডিজেল ইঞ্জিন আগামী দু’বছরের মধ্যে সরবরাহ করবে। রেললাইনের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ব্যবহৃত যানবাহনগুলি এখন ভারতবর্ষেই তৈরি হচ্ছে। গত নভেম্বর মাসে গুজরাটের কার্জনে একটি নতুন কারখানায় কাজ শুরু হয়েছে যেখানে এই ধরনের যানবাহন তৈরি করা হয়। আগামী মাসেই ঐ কারখানা থেকে প্রথম মেশিনটি তৈরি কাজ শেষ হবে।
যাত্রী পরিষেবা আরও উন্নত করতে ভারতীয় রেল নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন চলাচলের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। গত এপ্রিল থেকে নভেম্বরের মধ্যে ৭৫.৬৭ শতাংশ মেল এবং এক্সপ্রেস ট্রেন সঠিক সময়ে চলেছে। ভারতীয় রেলের পরিবর্তে আইআরসিটিসি পরিচালিত প্রথম ট্রেনটি তার যাত্রা শুরু করেছে। ‘তেজস’ নামের এই ট্রেনটি দিল্লি থেকে লক্ষ্ণৌ-এর মধ্যে চলাচল করছে। দ্বিতীয় ‘তেজস’ ট্রেনটি মুম্বাই এবং আমেদাবাদের মধ্যে তার যাত্রা শুরু করেছে। নতুন দিল্লি থেকে কাটরার মধ্যে দ্বিতীয় বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের চলাচলও শুরু হয়েছে। ২০১৯-২০ সালে ১৯৪টি ট্রেনের মানোন্নয়ন ঘটিয়ে উৎকৃষ্ট শ্রেণীর করা হয়েছে। ৭৮টি নতুন রেল পরিষেবা চালু হয়েছে। ১২০ জোড়া ট্রেন আরও দ্রুতগতিতে চালানোর জন্য ১৫৬টি এলএইচবি রেক ব্যবহার করা হচ্ছে। আট কামরার ৬০টি মেমু রেক ১০৪টি প্যাসেঞ্জার ট্রেনে ব্যবহার করা হচ্ছে। যাত্রী বহন ক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এপ্রিল থেকে নভেম্বর, ২০১৯-এর মধ্যে ৬৫৬টি অতিরিক্ত কোচের যোগান দেওয়া হয়েছে। ‘হামসফর’ ট্রেনের টিকিট সহজলভ্য করতে ঐ ট্রেনগুলিতে অতিরিক্ত স্লিপার কোচ দেওয়া হয়েছে। এপ্রিল থেকে নভেম্বরের মধ্যে উৎসবের কারণে এবং ছুটির মরশুমে বিভিন্ন রুটে বিশেষ ট্রেনগুলি ২৮,৫০০ বার যাতায়াত করেছে।
এপ্রিল থেকে নভেম্বরের মধ্যে ৪৯৫টি ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিন ও ৩,৮৩৭টি এলএইচবি কোচ তৈরি করা হয়েছে। ২০১৯ সালে ৪৪৬টি ইঞ্জিন তৈরি করে চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে।
রেলযাত্রীদের ওপর থেকে ১৯৫৬ সালের টার্মিনাল ট্যাক্স রদ করা হয়েছে। মূলত মেলা ও প্রদর্শনীর জন্য কোন নির্দিষ্ট স্থানে তীর্থযাত্রীদের যাওয়া-আসার সময়েই এই কর নেওয়া হত। ২০১৯-এর এপ্রিল থেকে নভেম্বরের মধ্যে যাত্রী পরিবহণ খাতে রেলের আয় হয়েছে ৩৫,২৪৯ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা যা আগের বছরের এই সময়ের তুলনায় ৪.২ শতাংশ বেশি। অটোমেটিক টিকিট ভেন্ডিং মেশিন (এটিভিএম) থেকে অসংরক্ষিত টিকিট কাটার জন্য যাত্রীদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এই এটিভিএমগুলি থেকে টিকিট কাটার সময় যাত্রীদের সহায়তার জন্য অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মীদের স্বামী বা স্ত্রী এবং প্রাপ্তবয়স্ক সন্তান-সন্ততীদের কাজে লাগানো হচ্ছে। যাত্রীদের যাত্রা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্যের জন্য এসএমএস অ্যালার্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজধানী, শতাব্দী এবং দুরন্ত এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনগুলিকে আরও যাত্রীবান্ধব করে তোলার লক্ষ্যে ফ্লেক্সি ফেয়ার পদ্ধতির সংস্কার ঘটানো হয়েছে। আইআরসিটিসি-র ওয়েবসাইটে টিকিটের পিএনআর-এর মাধ্যমে টিকিট কনফার্ম হয়েছে কিনা তা জানানোর ক্ষেত্রে কৃত্রিম মেধাও ব্যবহার করা হচ্ছে। যদি কোন ট্রেনের যাত্রী সংযোগকারী ট্রেন দেরিতে চলার জন্য ঐ ট্রেনটি না পান, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট যাত্রী যে ট্রেনে চড়তে পারলেন না তার ভাড়া ফেরত দেওয়া হচ্ছে।
খাবারের গুণমান বজায় রাখতে আইআরসিটিসি-র ৪০টি রান্নাঘরে সিসিটিভি-র মাধ্যমে ওয়েব-ভিত্তিক লাইভ স্ট্রিমিং-এর সহায়তায় নজরদারি চালানো হচ্ছে। খাবারের প্যাকেটে কিউআর কোড এবং দাম মেটানোর জন্য পিওএস মেশিনের ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে। রাজধানী, শতাব্দী ও দুরন্তর মতো ট্রেনগুলির খাবারের দাম ছ’বছর পর বাড়ানো হয়েছে। অন্য ট্রেনের ক্ষেত্রে ২০১২ সালের পর এই পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে। তবে, জনতা মিলের দাম অপরিবর্তিত – ২০ টাকাই রয়েছে। বর্তমানে তিন রকমের খাবার পাওয়া যায়। এগুলি হল – স্ট্যান্ডার্ড নিরামিষ মিল, স্ট্যান্ডার্ড আমিষ মিল (দুটি ডিম সহ তরকারি) এবং স্ট্যান্ডার্ড আমিষ মিল (মুরগির মাংস সহ)। রেলের খাবার সরবরাহের জন্য ৪৯,৪৬৬ নতুন ভেন্ডার/কন্ট্র্যাক্টর বাছা হয়েছে।
‘স্বচ্ছ ভারত স্বচ্ছ রেল’ প্রকল্পের আওতায় গত বছর এপ্রিল থেকে নভেম্বরের মধ্যে ১১,৭০৩টি রেলের কামরায় ৩৮,৩৩১টি বায়ো-টয়লেট বসানো হয়েছে। দোসরা আগস্ট ১৫০তম গান্ধী জয়ন্তী থেকে ‘একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক’ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ৯৫০টি স্টেশনে সুসংহত যান্ত্রিক পদ্ধতিতে পরিচ্ছন্নতার কাজ করা হচ্ছে। ৭২০টি স্টেশনের পরিচ্ছন্নতা পরীক্ষার জন্য স্বাধীন তৃতীয় পক্ষের সমীক্ষা নিয়মিত করা হয়। রাজধানী, শতাব্দী, দুরন্ত সহ দূরপাল্লার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের কামরা, শৌচালয় পরিষ্কার করার লক্ষ্যে অনবোর্ড হাউজকিপিং সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
যাত্রী নিরাপত্তার বিষয়টিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার ফলে ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে কোনও যাত্রীর প্রাণহানি হয়নি। ৫০০-রও বেশি স্টেশনে সিসিটিভি-র মাধ্যমে নজরদারি চালানো হচ্ছে। ট্রেনগুলির একটি আসন আরপিএফ কর্মীদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ এবং নকশাল সমস্যার মোকাবিলায় ১৪ই আগস্ট, ২০১৯ থেকে রেলওয়েল কম্যান্ডো ব্যাটেলিয়ন ‘কোরাস’ তার কাজ শুরু করেছে। ২০১৮ সালে রেল সুরক্ষা বাহিনীর (আরপিএফ) ১,১২১ জন সাব-ইনস্পেক্টর এবং ৮,৬১৯ কনস্টেবলের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এখন এঁদের প্রশিক্ষণের কাজ চলছে। এনডিপিএস আইন অনুসারে কেন্দ্র আরপিএফ-কেও জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত এবং কোন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দিয়েছে। এর ফলে, আরপিএফ ২১১ জনকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে এবং জরিমানা বাবদ ৬,৭৪,৫৬,৩৪০ টাকা আদায় করেছে।
বন্যা সহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ২০১৯-এর নভেম্বর পর্যন্ত ১৫১ জন যাত্রীর প্রাণ রেল বাঁচিয়েছে। মানব পাচারকারীদের কাছ থেকে আরপিএফ ২১৪ জন বালক এবং ৪১ জন বালিকাকে উদ্ধার করেছে। এই ঘটনাগুলিতে মোট ৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাত্রীদের কোন নিরাপত্তাজনিত অভিযোগ থাকলে তাঁরা যে কোন সময় আরপিএফ-এর নিরাপত্তা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর ‘১৮২’ ডায়াল করতে পারেন।
পণ্য পরিবহণে গুরুত্ব আরোপ করে ২০২১ সালের মধ্যে ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর সম্পূর্ণভাবে চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে ৯,১৫৩টি নতুন ওয়াগন ব্যবহারের কাজ শুরু হয়েছে।
ডিজিটাল ইন্ডিয়া গড়ার লক্ষ্যে বর্তমানে ৫,৫০০টি স্টেশনে বিনামূল্যে দ্রুতগতির ওয়াই-ফাই পরিষেবা চালু করা হয়েছে। সঠিক সময়ে তথ্য সরবরাহের লক্ষ্যে রেল ও ইসরোর মধ্যে সমঝোতার ফলে ২,৭০০টি ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনে রিয়েল টাইম ট্রেন ইনফরমেশন সিস্টেম চালু করা সম্ভব হয়েছে। ৩,৮০০টি ডিজেল ইঞ্জিনে এই তথ্য সরবরাহের জন্য ‘র্যামলট’ প্রযুক্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ‘রেল মদত’ ব্যবস্থার মাধ্যমে রেলের যাত্রীদের বিভিন্ন অভিযোগের নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সহজে ঋণ পাওয়ার লক্ষ্যে সিআরআইএস এবং স্টেট ব্যাঙ্কের সহযোগিতায় রেল বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়িত করছে।
২০১৭ সালের সিজিএসটি এবং আইজিএসটি আইন অনুযায়ী রেল মন্ত্রকের আয়কর জমা দেওয়ার জন্য প্যান সংগ্রহ করা হয়েছে।
রেলের কর্মী বিন্যাসের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। গ্রুপ ‘এ’ ক্যাডারের আটটি সার্ভিসের অফিসারদের সংযুক্তিকরণ ঘটিয়ে ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস নামে একটি নতুন কৃত্যক চালু করা হবে। রেল বোর্ডেরও সংস্কার ঘটানো হবে। বর্তমানে যে চেয়ারম্যান পদটি রয়েছে, তার পরিবর্তে একজন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক থাকবেন যাঁর অধীনে চারজন সদস্য ছাড়াও কয়েকজন স্বাধীন সদস্য থাকবেন। ইন্ডিয়ান রেলওয়ে মেডিকেল সার্ভিসের পরিবর্তে ইন্ডিয়ান রেলওয়ে হেল্থ সার্ভিস চালু করা হবে।
বিশ্বে সবথেকে বেশি কর্মী নিয়োগ ভারতীয় রেলই করে থাকে। রেলের ৬৪ হাজার অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকো পাইলট ও টেকনিশিয়ান পদের জন্য ৪৭ লক্ষ ৪৫ হাজার জন, ৬৩ হাজার পূর্বতন চতুর্থ শ্রেণী বর্তমানে লেভেল-১ পদের জন্য ১ কোটি ১৯ লক্ষ এবং ১৩,৫০০টি জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার পদের জন্য ২৪ লক্ষ ৭৫ হাজার জন আবেদন করেছিলেন। রেলে ভিন্নভাবে সক্ষমদের কর্মসংস্থানের জন্য বর্তমান নিয়মের সংস্কার করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার আওতায় রেলের ৯১টি হাসপাতালে আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এর আওতায় সুবিধাভোগীরা চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন।
CG/CB/DM
(Release ID: 1598538)
Visitor Counter : 682