পরিবেশওঅরণ্যমন্ত্রক

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের বার্ষিক পর্যালোচনা

Posted On: 06 JAN 2020 12:51PM by PIB Kolkata

 নয়াদিল্লি, ০৩ জানুয়ারী, ২০১৯

 

 

     প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে পরিবেশ সংক্রান্ত ক্ষেত্রে ভারতের নেতৃত্বদান এবং প্রতিশ্রুতি রক্ষায় এক উল্লেখযোগ্য সাফল্য এসেছে। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে সাফল্যের নিরিখে ভারত এই প্রথম বিশ্বের ১০টি দেশের মধ্যে স্হান করে নিয়েছে। আগামীদিনে এই সাফল্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে গত এক বছরে একাধিক উদ্যোগও নিয়েছে কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক।

     বর্তমানে বায়ুদূষণ বিশ্বের সবথেক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারত বায়ুদূষণ রোধে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সারা দেশে যাতে ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণ রোধ করা যায় এরজন্য গত বছরের ১০ই জানুয়ারী ন্যাশনাল ক্লিন এয়ার প্রোগ্রাম বা জাতীয় স্বচ্ছ বাতাস কর্মসূচির সূচনা করা হয়েছে

     নতুন দিল্লীতে গত বছর ফেব্রুয়ারী মাসে ভারত, জামার্নীর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে পরিবেশ বিষয়ে ক্লিনার এয়ার গ্রীনার ইকোনমি শীর্ষক সম্মেলনের আয়োজন করে। এখানে পরিবেশ দূষণের বিভিন্ন কারণ, তার সমাধান এবং দূষণ রোধে উপযুক্ত পরিকাঠামো গঠনের বিষয়ে আলাপ-আলোচনার করা হয়গতবছর ১১-১৫ই মার্চ নাইরোবিতে ইউনাইটেড নেশনন্স এনভাইরনমেন্ট অ্যাসেম্বলি (ইউএনইএ) বা রাষ্ট্রসঙ্ঘের পরিবেশ বিষয়ক দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত সম্মেলনে ভারত একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক এবং সুস্হায়ী নাইট্রোজেন ব্যবস্হাপনা বিষয়ে দুটি প্রস্তাব নিয়ে আসে। পরবর্তী সময় এই দুটি প্রস্তাব গ্রহণ করে ইউএনইএ। গতবছর মার্চ মাসে ভারতে কুলিং অ্যাকশন প্লানের সূচনা হয়শব্দ দূষণের হাত থেকে বাঁচতে কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক ২০১৬ সালের আইনকে আরও শক্তিশালী করেছে। নতুন এই আইন ২০১৯এর পয়লা মার্চ থেকে বলবৎ হয়েছে।

     বিশ্ব পরিবেশ দিবসে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শ্রী প্রকাশ জাভড়েকর বৃক্ষ সংরক্ষণের উদ্দেশে সাধারণ মানুষের মধ্যে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হ্যাশ ট্যাগ চারাগাছের সঙ্গে সেল্ফি শীর্ষক প্রচারাভিযানের সূচনা করেছেন। এই প্রচারাভিযানে যেকোন ব্যক্তি চারাগাছ রোপন করে তার সাথে সেল্ফি তুলে সোসাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে পারেন। পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টিকে জন ভাগিদারিবা জন অংশীদারিত্বের মাধ্যমে জন আন্দোলনের রূপ দিতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।

     মরু অঞ্চলের প্রসার রোধের ওপর রাষ্ট্রসঙ্ঘের উদ্যোগে ১৪তম কনফারেন্স অফ পার্টিস বা সিওপি ১৪ সম্মেলন গত বছর ২-১৩ সেপ্টেম্বর গ্রেটার নয়ডাতে আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ২১ মিলিয়ন থেকে ২৬ মিলিয়ন হেক্টর অকৃষিকাজ যোগ্য জমিকে কৃষিযোগ্য জমিতে রূপান্তর করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে ভারত।

     যানবাহন বাহিত দূষণ রোধে ২০২০ সালের পয়লা এপ্রিল থেকে ভারত স্ট্যান্ডার্ড VI চালু করা হয়েছে। বন-পালন বিদ্যা বিজ্ঞান বিষয়ে গবেষণার নতুন দিক উন্মেষণে কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ১০ বছরের জন্য একটি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর করেছে। সমঝোতা অনুযায়ী ভারতের বন-পালন বিদ্যা বিজ্ঞান গবেষণা এবং শিক্ষা পর্ষদ, ভারতের বন্যপ্রাণ প্রতিষ্ঠান, ফরেস্ট সার্ভে অফ ইন্ডিয়া, ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল ফরেস্ট অ্যাকাডেমি অফ ফরেস্ট এডুকেশন এবং কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে এই কাজ করবে।

     এশিয়া সিংহ সংরক্ষণ প্রকল্প গড়ে তোলা হয়েছে। এরজন্য কেন্দ্রীয় সরকার ৯৭.৮৫ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ করেছে। গত বছর ফেব্রুয়ারী মাসে এই প্রকল্প জাতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়। ২৯ জুলাই আন্তর্জাতিক ব্যাঘ্র দিবসে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৮ সালে ভারতে বাঘের পরিসংখ্যান বিষয়ক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী দেখা গেছে ২০১৮ সালে ভারতে বাঘের সংখ্যা ২ হাজার ৯৬৭তে পৌঁছেছে।

     গত বছর শেষের দিকে কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শ্রী প্রকাশ জাভড়েকর নতুন দিল্লীতে ভারতে রাজ্যভিত্তিক বনাঞ্চল বিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী দেখা গেছে দেশে ২৪.৫৬ শতাংশ ভৌগলিক এলাকা বনাঞ্চলে আবৃত। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন বিশ্বের কয়েকটি দেশের মধ্যে ভারত-ই হল অন্যতম দেশ যেখানে বনাঞ্চল ক্রমশই বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে বনাঞ্চল, গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং সবুজায়নের লক্ষ্যে মন্ত্রক ৪৭ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকা কমপেনশেটরি অ্যাফরেসটেশন ফান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড প্লানিং অথরিটি (সিএএমপিএ)-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। জীববৈচিত্র ব্যবস্হাপনা এবং জীববৈচিত্র সম্পদ, অরণ্য বিষয়ে গবেষণা, বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ, মৃত্তিকা ক্ষয় রোধ, প্রাকৃতিক সম্পদ বৃদ্ধি, দাবানল প্রতিরোধ, বৃক্ষরোপন সহ একাধিক ক্ষেত্রে এই অর্থ খরচ করা হবে। দেশে তুষার চিতাবাঘের সংরক্ষণ এবং সুরক্ষার্থে প্রথম জাতীয় নিয়মনীতি চালু করা হয়েছে গত বছর অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক তুষার চিতাবাঘ দিবসে।

     জলবায়ু পরিবর্তন রোধেও ভারত একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। গত বছর ফেব্রুয়ারী মাসে ইন্ডিয়া- স্পিয়ারহেডিং ক্লাইমেট সলিউশন বিষয়ে জলবায়ু পরিবর্তন রোধের ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এই প্রতিবেদনে ভারত জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে সে বিষয়গুলি তুলে ধরা হয়েছে।

     ২০২২ সালের মধ্যে ভারতে অ-জীবাশ্ম জ্বালানী থেকে ১৭৫ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। আগামীদিনে তা বৃদ্ধি করে ৪৫০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা স্হির করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কম কার্বণ নিঃসরণ যুক্ত শিল্প গড়ে তুলতে একাধিক পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।

     আন্তর্জাতিক সৌরজোটে আরও একাধিক দেশকে যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গত বছর ২-১৫ই ডিসেম্বর স্পেনের মাদ্রিদে জলবায়ু পরিবর্তন রোধের ওপর ইউএনএফসিসিসি আয়োজিত কফ২৫ সম্মেলনে ভারত অংশ নিয়েছিল।

     বায়ু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্র মন্ত্রক একাধিক উদ্যোগ নিয়েছেএই ক্ষেত্রে বিনিয়োগে গতি আনতে উদ্যোগী হয়েছে মন্ত্রক। যাতে কম খরচে বায়ু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হয় তারজন্য একাধিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

     ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত এবং চীন- বেসিক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির ২৮ তম মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক গত বছরের আগস্টে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। জলবায়ু পরিবর্তন রোধের ওপর আলোচনা হয় এই বৈঠকে।

     এই প্রথম ভারতে কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক সেন্টার ফর মিডিয়া স্টাডিজের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে পরিবেশের ওপর বাতাবরণ- ২০১৯ শীর্ষক স্বল্প দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল।

     গত বছর ১৩ই সেপ্টেম্বর জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশ বিষয়ে প্রযুক্তিগত সহযোগিতার লক্ষ্যে ভারতের কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক এবং সুইৎজারল্যান্ডে বিদেশ বিষয়ক দপ্তরের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। ৫ বছরের জন্য এই চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। এই সময়সীমার মধ্যে দুই দেশ জলবায়ু পরিবর্তন, সুস্হায়ী জল ব্যবস্হাপনা, সুস্হায়ী বনাঞ্চল ব্যবস্হাপনা, পার্বত্য অঞ্চলের স্হায়ী উন্নয়ন, জল-ভূমি এবং বায়ুদূষণ রোধ পুনর্নবীকরণ শক্তি বিষয়ে প্রযুক্তিগতভাবে একে অপরকে সাহায্য করবে।

     উপকূল অঞ্চলে সমুদ্রতট পরিচ্ছন্ন করে তুলতে এবং জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতেও মন্ত্রক এগিয়ে এসেছে। এই লক্ষ্যে গত বছর ১১-১৭ নভেম্বর পর্যন্ত ৫০টি সমুদ্রতট এলাকায় স্বচ্ছ নির্মল তট অভিযান চালানো হয়।

     মন্ত্রক পরিবেশ বান্ধব পণ্য উৎপাদনের উৎসাহদানে পানিপথে টু-জি ইথানল প্ল্যান্ট স্হাপনের জন্য ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন লিমিটেডকে পরিবেশ বিষয়ক ছাড়পত্র দিয়েছেজাতীয় সবুজ শস্য ইকো ক্লাব কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সমস্ত রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের নিয়ে গুজরাটের কেভাডিয়ায় ২০ এবং ২১ ডিসেম্বর বার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল

 

 

CG/SS/NS 



(Release ID: 1598501) Visitor Counter : 2452


Read this release in: English