প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
‘সমগ্র দেশ জানতে চায় থেকে দেশ সর্বাগ্রে’ ভারতের রূপান্তর ঘটেছে : প্রধানমন্ত্রী
দেশ সর্বাগ্রে হলে বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব : প্রধানমন্ত্রী
Posted On:
27 NOV 2019 1:14PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৬ নভেম্বর, ২০১৯
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লিতে রিপাবলিক সামিট – এ মূল ভাষণ দেন। এবারের এই সম্মেলনের মূল ভাবনা ছিল – ভারতের গুরুত্ব দেশ সর্বাগ্রে। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমগ্র দেশ জানতে চায়’ এখন দেশ সর্বাগ্রের ভাবনায় রূপান্তরিত হয়েছে। তিনি বলেন, দশকের পর দশক ধরে যেসব সমস্যার সমাধান সম্ভব ছিল না, তার এখন সমাধান সম্ভব হয়েছে। ভারতের এই রূপান্তর ঘটেছে দুটি কারণে – ১৩০ কোটি মানুষ এখন ভারতের গুরুত্বের কথা ভাবেন, দেশ সর্বাগ্রের কথা চিন্তা করেন।
কাশ্মীরে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসের পেছনে বড় কারণগুলি ভারত দূর করেছে। ৩৭০ ধারা জম্মু ও কাশ্মীরকে যে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিল, তা সংবিধানের অস্থায়ী ব্যবস্থা মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কয়েকটি পরিবার’ জম্মু ও কাশ্মীরে এই ধারাকে স্থায়ী সংস্থান বলে মেনে নিয়েছিল।
শ্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন, দেশ সর্বাগ্রে – এই মানসিকতা বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে সাহায্য করে। সমগ্র দেশ যখন এই সিদ্ধান্ত মেনে নেয়, তখন সমগ্র জাতি অগ্রসর হয়। তিনি জানান, কিছু মানুষ মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, যাতে আধার আইনি স্বীকৃতি না পায়। এই মানসিকতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা আধার আইনত কার্যকর না করতে দেওয়ার জন্য যাবতীয় শক্তি প্রয়োগ করেছিলেন। কিন্তু আধার এই সমস্ত মানুষের প্রকৃত প্রত্যাশা ফাঁস করে দিয়েছে। আধার কার্যকর হওয়ার ফলে ১ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকা বেহাত হওয়া থেকে সাশ্রয় করা গেছে। শ্রী মোদী আরও জানান, প্রতি বছর প্রায় ঐ একই পরিমাণ টাকা বেহাত হ’ত এবং তা বন্ধ করার কোনও রাস্তাই ছিল না। ‘আমরা এই বিপুল পরিমাণ এই টাকা অপচয় হওয়া রোধ করেছি। কারণ, আমরা মনে করি দেশ সর্বাগ্রে’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে এর আগে অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা কর বা জিএসটি কার্যকর করা হয়নি। আজ সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে যুক্ত ৯৯ শতাংশ পণ্যসামগ্রীর ওপর কর লাগু হয়েছে, যা আগের তুলনায় অর্ধেকেরও বেশি। একটা সময় ছিল, যখন রেফ্রিজারেটর, মিক্সচার, জুস বানানোর যন্ত্র, ভ্যাকুম ক্লিনার, গিজার, মোবাইল ফোন, ওয়াশিং মেশিন, ঘড়ি প্রভৃতির ওপর ৩১ শতাংশেরও বেশি কর আরোপ করা হ’ত। আজ এই সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলির ওপর থেকে করের বোঝা কমিয়ে ১০ – ১২ শতাংশ করা হয়েছে।
দিল্লিতে অস্বীকৃত কলোনীগুলির স্বীকৃতিদান প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন, বিগত কয়েক দশক ধরে লক্ষ লক্ষ কালোনীবাসী পরিবারের জীবনে অনিশ্চয়তার ছায়া ছিল। সাধারণ মানুষ কষ্টার্জিত অর্থে এখানে বাড়িঘর ক্রয় করতেন। কিন্তু, এই সমস্ত বাড়িঘরে তাঁদের সম্পূর্ণ মালিকানা থাকতো না। মালিকানার এই সমস্যা থেকেই গিয়েছিল। আমাদের সরকার এই সমস্যা নিরসনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন দিল্লির কলোনীবাসী ৫০ লক্ষেরও বেশি মানুষ তাঁদের নিজের বাড়ি ও উন্নত জীবনযাপনের ব্যাপারে নিশ্চয়তা, আশা ও আস্থা পেয়েছেন। আমাদের এই সিদ্ধান্তে নিশ্চিতভাবেই মধ্যবিত্ত শ্রেণী লাভবান হয়েছেন এবং তাদের নিজের বাড়ির স্বপ্ন পূরণে সহায়ক হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, বর্তমান ভারতে যে গতি ও দ্রুততার সঙ্গে কাজকর্ম রূপায়িত হচ্ছে, তা অপ্রত্যশিত। শৌচাগারের সুযোগ-সুবিধা কেবল ৬০ মাসেই প্রায় ৬০ কোটি ভারতীয়র কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের পরিকল্পনা ও কর্মসূচি তখনই প্রণয়ন তথা বাস্তবায়িত করা সম্ভব, যখন ‘দেশ সর্বাগ্রে’ – এই মানসিকতা থাকে।
তিনি বলেন, আপনি যখন নিঃস্বার্থভাবে প্রত্যেকের সাহায্যে এগিয়ে আসবেন, তখন প্রত্যেকের উন্নয়ন ও আস্থাই নীতি পরিকল্পনা ও রাজনীতির ভিত্তি হয়ে ওঠে। এখন আমরা উন্নয়নের দৌড়ে এ ধরনের মানসিকতা ত্যাগ করে দেশের ১১২টি উন্নয়নে আগ্রহী জেলার সার্বিক বিকাশে কিভাবে একজোট হয়ে কাজ করা যায়, তা শেখার ও উপলব্ধি করার চেষ্টা করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ সর্বাগ্রে – এই মানসিকতার ফলেই দরিদ্র মানুষকে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সঙ্গে সামিল করতে ৩৭ কোটিরও বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। দেশ সর্বাগ্রে – এই ভাবনাকে সামনে রেখেই জল জীবন মিশন শুরু করা হয়েছে। আগামী দিনগুলিতে এই কর্মসূচিতে প্রায় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হবে, যাতে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ বিশুদ্ধ পানীয় জলের সুবিধা পান এবং প্রত্যেক বাড়িতে জল পৌঁছে দেওয়া যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের আয় বাড়াতে দেশের অর্থ ব্যবস্থাকে ৫ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য স্থির হয়েছে। তিনি বলেন, দেশ সর্বাগ্রে – এই মানসিকতা নিয়ে কাজ করলে প্রতিটি সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সুফললাভ ও প্রতিটি লক্ষ্য পূরণ সম্ভব বলে তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই মানসিকতাকে সম্বল করেই রিপাবলিক সামিটে নতুন ভারতের নতুন সম্ভাবনা ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা হবে।
CG/BD/SB
(Release ID: 1593693)
Visitor Counter : 140