নতুনওপুনর্নবীকরণযোগ্যজ্বালানিমন্ত্রক

ভারতের পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির লক্ষ্য পূরণ হওয়া নিয়ে সন্দেহ খারিজ করে দিল এমএনআরই

Posted On: 10 OCT 2019 2:42PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১০ অক্টোবর, ২০১৯

 

 

ক্রাইসিল রিপোর্টের উল্লেখ করে এক শ্রেণীর সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে যে ২০২২-এর মধ্যে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার মেগাওয়াটের পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারবে না ভারত। নতুন এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রকের পক্ষ থেকে সেই দাবি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রকের পক্ষ থেকে যা বলা হয়েছে তা হল নিম্নরূপ :

“সম্প্রতি কিছু সংবাদপত্রে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে যে ২০২২-এর মধ্যে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার মেগাওয়াট পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনের যে লক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল তা পূরণ করা যাবে কি না। এই সংবাদপত্রগুলি সকলেই ক্রাইসিলের ২০১৯-এর সেপ্টেম্বরের একটি রিপোর্টের উল্লেখ করেছে।

তবে, এই সন্দেহ ভিত্তিহীন এবং বাস্তবোচিত নয়। ২০১৯-এর সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ ভারত ৮২,৫৮০ মেগাওয়াটের বেশি পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা অর্জন করেছে। এর মধ্যে ৩১,১৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্রগুলি নির্মাণের নানা অবস্থায় রয়েছে। সেজন্য ২০২১-এর প্রথম ত্রৈমাসিকের মধ্যে ভারত ১ লক্ষ ১৩ হাজার মেগাওয়াট পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্র স্থাপন করতে পারবে। এতে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৬৫ শতাংশই পূরণ হবে। এর পাশাপাশি, ৩৯ হাজার মেগাওয়াট পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্র আছে বিডিং-এর নানা স্তরে, যেগুলি ২০২১-এর সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্থাপন করা হবে এবং তাহলে লক্ষ্যমাত্রার ৮৭ শতাংশই পূরণ হয়ে যাবে। বাকি থাকবে মাত্র ২৩ হাজার মেগাওয়াট। ভারত আত্মবিশ্বাসী, ১ লক্ষ ৭৫ হাজার মেগাওয়াট পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদন শুধু করাই যাবে তা নয়, তা পেরিয়েও যেতে পারে।

মন্ত্রক সময়ে সময়ে ওঠা নানা ধরনের বিষয় সমাধানে পদ্ধতিগতভাবে কাজ করেছে। নানা নীতি গ্রহণ করা হয়েছে, কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে লক্ষ্যে পৌঁছতে। পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তিশিল্প, নির্মাণকারী, লগ্নিকারী এবং অন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষরা মন্ত্রকের উদ্যোগের প্রশংসা করেছে স্বচ্ছতার সঙ্গে নিলামের জন্য এবং প্রতিযোগিতামূলক হারে বিদ্যুৎ কেনার ব্যবস্থা করায়। এইসব উদ্যোগের ফলেই সৌর এবং বায়ু-বিদ্যুতের মাশুল কমেছে। বায়ু-বিদ্যুতের মাশুল ২০১৬ সালে ছিল ইউনিট প্রতি ৪.১৮ টাকা, তা গত বছর কমে দাঁড়ায় ইউনিট প্রতি ২.৪৩ টাকা। এমনকি এখনও পর্যন্ত তা ইউনিট প্রতি ২.৭৫ টাকার নিচেই আছে। একইভাবে, সৌরবিদ্যুতের মাশুল ইউনিট প্রতি ৪.৪৩ টাকা থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ২.৪৪ টাকা। ভারত সরকারের লক্ষ্যই বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থাগুলির জন্য মাশুলের হার কম রাখা।

২০১৪-র মার্চ থেকে ভারতের পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা ৩৪ হাজার মেগাওয়াট থেকে বেড়ে ৮২,৫৮০ মেগাওয়াটে দাঁড়িয়েছে। বৃদ্ধির হার ১৩৮ শতাংশ। গোটা বিশ্বে সৌরবিদ্যুতের ক্ষেত্রে ভারতের স্থান পঞ্চম, বায়ু-বিদ্যুতের ক্ষেত্রে চতুর্থ এবং স্থাপিত পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদন কেন্দ্রগুলি মিলিয়ে ভারতের স্থান চতুর্থ। ভারতের পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি কর্মসূচি শুধুমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনেই সীমাবদ্ধ নয়, আরও নানা বিষয়ে তার প্রয়োগ ঘটানো হচ্ছে। পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি সত্যিকারের বহুমুখী সুবিধাসম্পন্ন ব্যবস্থা হয়ে উঠেছে। পরিবেশগত প্রয়োজনীয়তার পাশাপাশি ঘরোয়া, অর্থনৈতিক এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ – এসবই রয়েছে এর মধ্যে।

এই লক্ষ্য পূরণ করতে নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার পাওয়ার পার্চেজ এগ্রিমেন্ট খতিয়ে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করলে মন্ত্রক দ্রুত জানিয়ে দেয়, যদি চুক্তিতে সেরকম কিছু থাকে বা প্রমাণযোগ্য দুর্নীতির ঘটনা ঘটে, তবেই একমাত্র তা খতিয়ে দেখা যেতে পারে।

মন্ত্রক বিভিন্ন রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই জমির বন্দোবস্ত করছে। ১ লক্ষ ৭৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রধান গ্রিডে সরবরাহ করার বিষয়েও কাজ চলছে। প্রয়োজনের ভিত্তিতে ২০২১-এর অক্টোবরের মধ্যে এই অতিরিক্ত বিদ্যুৎ পরিবহণ করা হবে। এছাড়াও, জমি সমস্যা মেটাতে আল্ট্রা মেগা রিনিউয়েব্‌ল এনার্জি পার্কস গঠনের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে মন্ত্রক। এ ধরনের প্রথম পার্কটি গুজরাটের ঢোলেরায় স্থাপন করবে এসইসিআই। ঝুঁকি কমাতে নির্মাণকারীদের প্রাপ্য নিয়মিত মেটানো হবে। বিতরণকারী সংস্থাগুলির বিদ্যুৎ কেনার জন্য লেটার অফ ক্রেডিট দেবে মন্ত্রক।

মন্ত্রকের পক্ষ থেকে তিনটি নতুন কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। প্রথমটি হল ১২ হাজার মেগাওয়াট গ্রিডযুক্ত এসপিভি শক্তি প্রকল্প স্থাপন করা। এর জন্য সহায়তা দেওয়া হবে ৮,৫৮০ কোটি টাকা। দ্বিতীয়টি হল, ‘পিএম-কুসুম’ কর্মসূচি যা আগামী চার বছরে রূপায়ণের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে যাতে কৃষিক্ষেত্রে ডিজেলের ব্যবহার কমে। এই কর্মসূচিতে ভারতের পরিকল্পনা ১০ লক্ষ ৭৫ হাজার সৌর কৃষি পাম্প সরবরাহ করা এবং ১০ লক্ষ গ্রিডযুক্ত কৃষি পাম্পের জন্য ২০২২-এর মধ্যে সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা করা। এই কর্মসূচিতে সরকার ছোট ছোট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন উপকরণ যেমন ৫০০ কিলোওয়াট থেকে ২ মেগাওয়াট পর্যন্ত স্থাপন করতে কৃষকদের উৎসাহ দিচ্ছে। এগুলি স্থাপন করা হবে অনাবাদী জমিতে এবং তাতে কৃষকদের আয় বাড়ে। এই তিনটি কর্মসূচি মিলিয়ে ২০২২-এর মধ্যে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা দাঁড়াবে ২৫,৭৫০ মেগাওয়াট। মোট কেন্দ্রীয় আর্থিক সাহায্যের পরিমাণ দাঁড়াবে ৩৪,৪২২ কোটি টাকা। তৃতীয় কর্মসূচিটি হল ছাদের ওপর দ্বিতীয় পর্যায়ের সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করা। এই কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় অর্থ সহায়তায় ৪ হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে, আর বিতরণকারী সংস্থাগুলি যাতে ২০২২-এর ভেতর ১৮ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন হতে পারে তার জন্য তাদের উৎসাহ ভাতা দেওয়া হবে।

সংবাদমাধ্যমগুলি যে ক্রাইসিল রিপোর্টের উল্লেখ করেছে তা তথ্যগতভাবে ভুল এবং নতুন ও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রকের উদ্যোগগুলিকেও আমল দেওয়া হয়নি তাদের রিপোর্টে। এমনকি, রিপোর্ট তৈরি করার আগে মন্ত্রকের বক্তব্য জানার চেষ্টাও করেনি ক্রাইসিল। অতএব, তাদের রিপোর্টের কোন বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।

২০২২-এর মধ্যে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার মেগাওয়াটই শুধু নয়, তার থেকে বেশি উৎপাদন করার ব্যাপারে মন্ত্রক আত্মবিশ্বাসী।”

 

 

CG/AP/DM



(Release ID: 1587692) Visitor Counter : 124


Read this release in: English