প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

ঝাড়খন্ডের রাঁচিতে বিবিধ উন্নয়নমূলক প্রকল্প উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 18 SEP 2019 7:33PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

 

 

 

 

ভারতমাতার জয়

ভারতমাতার জয়

ভারতমাতার জয়

 

মঞ্চে উপস্থিত সকল সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ, দূর-দূরান্ত থেকে বিপুল সংখ্যায় সমাগত আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা।

 

নতুন সরকার গঠনের পর আমার যে রাজ্যগুলিতে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে, তার মধ্যে ঝাড়খন্ড অন্যতম। এই প্রভাত তারা ময়দানে সকালবেলা আমরা যখন যোগাভ্যাস করছিলাম, আমাদের উপর বৃষ্টির আশীর্বাদ বর্ষিত হচ্ছিল। আজ এই ময়দানে এসে অনেক পুরনো স্মৃতি জেগে উঠেছে। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে এই ময়দান থেকেই সারা দেশের জন্য ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন হয়েছিল। দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ, যাঁরা অর্থের অভাবে কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতে পারতেন না, এখন তাঁদের চিকিৎসা সম্ভব হয়েছে, তাঁরা আজ আশীর্বাদ করছেন। তাঁদের আশীর্বাদ ঝাড়খন্ডকে ধন্য করেছে।

 

আজ গোটা দেশের কোটি কোটি কৃষকদের জন্য সুনিশ্চিত পেনশন চালু করতে প্রধানমন্ত্রী ‘কিষাণ মানধন যোজনা’র উদ্বোধনও এই বীরসা মুন্ডার ভূমি থেকেই করার সৌভাগ্য হ’ল। শুধু তাই নয়, সারা দেশের কোটি কোটি ব্যবসায়ী এবং স্বনির্ভর ব্যক্তিদের জন্য ‘রাষ্ট্রীয় পেনশন যোজনা’র সূত্রপাতও আজ এই ঝাড়খন্ডের মাটি থেকে হচ্ছে। আমি এই মহান পবিত্র ভূমি থেকে সারা দেসের কৃষক ও ব্যবসায়ীদের অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই।

 

আমরা আগে দেশের অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের জন্য পেনশন প্রকল্প শুরু করেছি, এবার কৃষক, ব্যবসায়ী ও স্বরোজগারীদের জন্য পেনশন প্রকল্প শুরু করলাম। অর্থাৎ, দেশ নির্মাণে যাঁরা প্রত্যক্ষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, তেমন সকল নাগরিক যেন বৃদ্ধাবস্থায় আর্থিক সমস্যায় না পড়তে হয়, তা সুনিশ্চিত করতে এই পেনশন প্রকল্পগুলি চালু করা হয়েছে।

 

বন্ধুগণ, আজ আমার সাহেবগঞ্জ মাল্টি-মডেল টার্মিনাল উদ্বোধনের সৌভাগ্য হয়েছে। আমার মন্ত্রী শ্রী মনসুখ মান্ডবিয়া এখানে বসে আছেন। সাঁওতাল পরগনার অনেক মানুষ আজ এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের সাক্ষী। আর এই প্রকল্প শুধু ঝাড়খন্ডেই নয়, সারা দেশের, সারা পৃথিবীতে এই প্রকল্প ঝাড়খন্ডের নতুন পরিচয় তুলে ধরবে। এই প্রকল্প সমগ্র অঞ্চলের জন্য নতুন বিকল্প তুলে ধরবে। এই টার্মিনাল ‘ন্যাশনাল ওয়াটারওয়ে ওয়ান’ হলদিয়া – বেনারস জলপথ উন্নয়ন প্রকল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই জলপথ ঝাড়খন্ডকে শুধু দেশ নয়, বিদেশের সঙ্গেও যুক্ত করবে। এর মাধ্যমে ঝাড়খন্ডের জনগণের জীবনে উন্নয়নের অপার সম্ভাবনা উন্মোচিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে এখানকার জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ, এখানকার কৃষকরা নিজেদের উৎপাদিত ফসল ও পণ্য সহজেই গোটা দেশের বাজারে পৌঁছে দিয়ে লাভবান হবেন। এভাবে জলপথে, উত্তর ভারত থেকে ঝাড়খন্ড-সহ উত্তর-পূর্বের আসাম, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম ও মেঘালয়ের মতো রাজ্যগুলিতে ঝাড়খন্ডের ফসল ও পণ্য সহজে পৌঁছে দেওয়া যাবে। এই টার্মিনাল অনেক নতুন কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করবে। উন্নয়নের দৃষ্টিতে দেখুন কিংবা পরিবেশ সুরক্ষার দৃষ্টিতে এই জলপথ অত্যন্ত লাভজনক হবে। সড়কপথে পণ্য পরিবহণে যত খরচ হয় জলপথে তারচেয়ে অনেক কম খরচ হয়। প্রত্যেক উৎপাদনকারী, ব্যবসায়ী ও ক্রেতা লাভবান হবেন।

 

ভাই ও বোনেরা, নির্বাচনী প্রচারের সময় আমি আপনাদের ফলপ্রসূ ও সাহসী সরকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। এমন একটি সরকার, যা আগের থেকে দ্রুতগতিতে কাজ করবে, আপনাদের আকাঙ্খা পূরণের জন্য পূর্ণশক্তি প্রয়োগ করে কাজ করবে। বিগত ১০০ দিনে দেশ এর ট্রেলার দেখেছে, এখনও সিনেমা দেখানো বাকি রয়েছে।

 

আমরা প্রত্যেক বাড়িতে জল পৌঁছনোর সঙ্কল্প নিয়েছি, ইতিমধ্যেই দেশে ‘জল জীবন মিশন’ বাস্তবায়নের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। ১০০ দিনের মধ্যেই আমরা ‘তিন তালাক’ – এর বিরুদ্ধে কড়া আইন প্রণয়ন করেছে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সুফলদায়ক লড়াইয়ের অনুকূল ‘সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আইন’কে আরও শক্তিশালী করেছি। জম্মু, কাশ্মীর এবং লাদাখের উন্নয়নকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে বিগত ১০০ দিনে আমরা সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছি।

 

জনগণের সম্পত্তি লুন্ঠনকারীদের যথাস্থানে পৌঁছে দেওয়ার কাজও আমরা দ্রুতগতিতে করছি। কয়েকজনকে ইতিমধ্যেই জেলে ঢোকানো হয়েছে।

ভাই ও বোনেরা, আমি বলেছিলাম যে, নতুন সরকার গঠন করার পরই দেশের সমস্ত কৃষক পরিবার ‘পিএম-কিষাণ সম্মান নিধি’র মাধ্যমে উপকৃত হবেন। আমরা ইতিমধ্যেই এই প্রতিশ্রুতি পূরণে ঝাঁপিয়ে পড়েছি, দেশের অধিকাংশ কৃষক পরিবারকে এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই দেশের সাড়ে ছয় কোটি কৃষক পরিবারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২১ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ পাঠানো হয়েছে। আজ আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে বলছি যে, ইতিমধ্যেই ঝাড়খন্ডের ৮ লক্ষ কৃষক পরিবার এর মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন। তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা জমা হয়েছে। মাঝে কোনও দালাল কিংবা সুপারিশের প্রয়োজন হয়নি। পশ্চিমবঙ্গের মতো কোথাও কাটমানি দিতে হয়নি, সরাসরি কৃষকদের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হচ্ছে।

 

ভাই ও বোনেরা, আজকের দিনটি ঝাড়খন্ডের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। আজ এখানে ঝাড়খন্ড বিধানসভার নতুন ভবনের উদ্বোধন এবং সচিবালয়ের নতুন ভবনের শিলান্যাস হয়েছে। রাজ্য গঠনের প্রায় দু’দশক পর আজ ঝাড়খন্ডে গণতন্ত্রের মন্দির উদ্বোধন হচ্ছে। এই ভবন নিছকই একটি দালাল নয়, এটি একটি পবিত্র স্থান, যেখানে ঝাড়খন্ডের জনগণের সোনালি ভবিষ্যতের ভিত্তিস্থাপন করা হবে। এই ভবন গণতন্ত্রে বিশ্বাসী প্রত্যেক নাগরিকের জন্য তীর্থস্থান। গণতন্ত্রের এই মন্দিরে ঝাড়খন্ডের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। আমি চাই যে, ঝাড়খন্ডের প্রতিভাবান তরুণরা অবশ্যই নতুন বিধানসভা ভবন দেখতে আসবেন। যখনই সময় পান, চার মাস – ছয় মাস পরে হলেও আসবেন।

 

বন্ধুগণ, আপনারা হয়তো এবারের সংসদ অধিবেশন নিয়ে অনেক কথা শুনছেন, দেখছেন। যেভাবে নতুন সরকার গঠনের পর, আমাদের লোকসভা এবং রাজ্যসভা কাজ করছে, তা দেখে দেশের প্রত্যেক নাগরিক খুশি হয়েছেন। কারণ, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে কার্যকরী অধিবেশন ছিল এটি। সারা দেশ দেখেছে যে, কিভাবে এবার সংসদের বাদল অধিবেশনে সময়ের সার্থক সদুপযোগ হয়েছে। অনেক রাত পর্যন্ত সংসদ চলেছে। ঘন্টার পর ঘন্টা তর্ক-বিতর্ক, অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রণয়ন হয়েছে।

 

বন্ধুগণ, এই সাফল্যের কৃতিত্ব আমি দলমত-নির্বিশেষে সমস্ত নেতা দেশের সমস্ত সাংসদকে দিতে চাইবো। আমার পক্ষ থেকে সমস্ত সাংসদদের এবং দেশবাসীকে অভিনন্দন জানাই।

 

বন্ধুগণ, উন্নয়ন আমাদের অগ্রাধিকার এবং দায়বদ্ধতাও বটে। উন্নয়ন আমাদের প্রতিশ্রুতি – এগুলি পূরণে আমাদের ইচ্ছাশক্তি অটল। আজ দেশ যত দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে, তা আগে কখনও হয়নি। আজ দেশে যে ধরনের পরিবর্তন আসছে, এমন আগে কখনও ভাবনাতেও আসেনি। যাঁরা ভেবেছিলেন যে, তাঁরা দেশের আইন-আদালতের ঊর্ধ্বে উঠে গেছেন, তাঁরা এখন জামানত পাওয়ার জন্য আদালতের চক্কর কাটছেন।

 

ভাই ও বোনেরা, আপনারা তো এরকম দ্রুত কাজ করতে পারা সরকারই চেয়েছিলেন, ১০০ দিনের কাজে আপনারা খুশি তো? সব ঠিক করেছি, সঠিক লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি, আপনারাদের আশীর্বাদে – এসব তো সবে শুরুর দিনগুলিতে দেখছেন, পাঁচ বছর বাকি, অনেক সংকল্প বাকি, সেজন্য অনেক প্রচেষ্টা ও পরিশ্রম আমরা করবো। এই প্রক্রিয়াতেই একটু আগে ছোট কৃষক, দোকানদার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ঐতিহাসিক প্রকল্পসমূহের সূত্রপাত হয়েছে। আমি ঝাড়খন্ড-সহ সমগ্র দেশের ক্ষুদ্র কৃষক, দোকানদার ও ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করবো যে, আপনারা অবশ্যই এই প্রকল্পগুলিতে অংশগ্রহণ করে উপকৃত হন।

 

ভাই ও বোনেরা, আমাদের সরকার প্রত্যেক ভারতবাসীকে সামাজিক সুরক্ষা কবচ প্রদানের চেষ্টা করছি। যাঁদের সবচাইতে বেশি সাহায্যের প্রয়োজন, সরকার তাঁদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। এ বছর মার্চ মাসে চালু হওয়া এমনই শ্রমজীবী মানধন পেনশন যোজনার সঙ্গে ইতিমধ্যেই ৩২ লক্ষেরও বেশি শ্রমিক যুক্ত হয়েছেন।

 

বন্ধুগণ, পাঁচ বছর আগে পর্যন্ত দেশের গরিবরা কোনও জীবন বিমা কিংবা দুর্ঘটনা বিমার কল্পনাও করতে পারতেন না। প্রথমত, সচেতনতার অভাব আর সচেতন থাকলে বেশি টাকার কিস্তি দেখে পিছিয়ে পড়তেন। তাঁরা ভাবতেন যে, এখন রুটি-রুজিকে গুরুত্ব দেবো নাকি বার্ধক্য নিয়ে ভাববো; আমরা এই পরিস্থিতি বদলানোর চেষ্টা করছি।

 

প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি যোজনা এবং প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনা দেশের সাধারণ মানুষের সামনে এনেছে, যথাক্রমে প্রতিদিন মাত্র ৯০ পয়সা কিস্তি এবং মাসে মাত্র ১ টাকা কিস্তির সুবিধা। ইতিমধ্যেই ২২ কোটিরও বেশি জনগণ এই দুই বিমা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে – ৩০ লক্ষেরও বেশি ঝাড়খন্ডের মানুষ। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যে  এই দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকারও বেশি বিমান টাকা জনগণ পেয়েছেন।

 

ভাই ও বোনেরা, বিমার মতো দূরারোগ্য রোগের চিকিৎসাও গরিব মানুষদের জন্য প্রায় অসম্ভব ছিল। আমরা আয়ুষ্মান ভারত যোজনার মাধ্যমে ‘প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা’ এনেছি। এখানেই সম্মানের সঙ্গে উদ্বোধন করেছি। ইতিমধ্যেই এর মাধ্যমে ৪৪ লক্ষ গরিব রোগীর বিনামূল্যে চিকিৎসা হয়েছে। এই রোগীদের মধ্যে ৩ লক্ষাধিক এই ঝাড়খন্ড রাজ্যের মানুষ। এই বাবদ হাসপাতালগুলিকে ৭ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ প্রদান করা হয়েছে। ‘আয়ুষ্মান ভারত’ – এর মাধ্যমে গরিবরা চিকিৎসা পাচ্ছেন এবং ঋণগ্রস্থ হওয়া থেকে রক্ষা পাচ্ছেন। এখন তাঁদের আর সুদখোর মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে চিকিৎসা করাতে হচ্ছে না।

 

ভাই ও বোনেরা, গরিবের জীবনে দুশ্চিন্তা কমলে, দৈনন্দিন জীবনের সংঘর্ষ কমলে তাঁরা নিজেরাই নিজেদের দারিদ্র্যসীমার উপরে তুলে আনার চেষ্টা শুরু করেন। আমাদের সরকার কেন্দ্রে কিম্বা রাজ্যে গরিবের জীবনকে সহজ করে তুলতে, জনজাতির মানুষদের জীবনকে সহজ করে তুলতে সততার সঙ্গে অনেক প্রচেষ্টা জারি রেখেছে।

 

একটা সময় ছিল, যখন টিকাকরণের সময় দরিদ্র শিশুরা ছাড়া পড়ে যেত আর বয়স বাড়তেই নানা কঠিন রোগের শিকার হতো। আমরা মিশন ইন্দ্রধনুষ শুরু করে দেশের দূর-দূরান্তের শিশুদের টীকাকরণ সুনিশ্চিত করেছি।

 

একটা সময় ছিল, যখন গরিবদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে সমস্যা হতো। আমরা জনধন যোজনা শুরু করে দেশের ৩৭কোটি গরিবের ব্যাংক আকাউন্ট খুলিয়েছি।

 

একটা সময় ছিল, যখন গরিবদের সুলভে সরকারি আবাসন পেতে অনেক ঝক্কি পোহাতে হতো। আমরা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে ২কোটিরও বেশি দরিদ্র পরিবারের জন্য বিনামূল্যে গৃহনির্মাণ করে দিয়েছি, আরও দু’কোটি এমনি গৃহ নির্মিত হচ্ছে।

 

বন্ধুগণ, একটা সময় ছিল যখন গরিবের জন্য শৌচালয়ের সুবিধা ছিল না। আমরা ১০ কোটি থেকেও বেশি শৌচালয় বানিয়ে, গরিব মা–বোনেদের জীবনের অনেক কষ্ট দূর করেছি।

 

একটা সময় ছিল, যখন গরিব মা- বোনেদের জীবন রান্নাঘরের ধোঁয়ায় যন্ত্রণাক্লিষ্ট ছিল। আমরা বিনামূল্যে ৮কোটি রান্নার গ্যাস সংযোগ প্রদান করে, তাঁদের স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা বাড়িয়েছি, তাঁদের জীবন সহজ করেছি।

 

ভাই ও বোনেরা, গরিবদের গরিমা ও মর্যাদা, তাঁদের স্বাস্থ্য, চিকিৎসা ও ঔষধ, তাঁদের বিমা সুরক্ষা, তাঁদের পেনশন, তাঁদের সন্তানদের লেখাপড়া, তাঁদের কর্মসংস্থান – এমন কোনও ক্ষেত্র নেই যা নিয়ে আমাদের সরকার কাজ করেনি! এরকম প্রকল্পগুলি গরিবদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে তাঁদের জীবনকে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর করে তোলে। জনজাতি গোষ্ঠীগুলির ছেলেমেয়েদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে জনজাতি পরিবারগুলির আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করা হয়েছে। সারা দেশে ৪৬২টি একলব্য মডেল আবাসিক বিদ্যালয় খোলার অভিযান আজ এখানে ঝাড়খণ্ডের এই মাটি থেকে, ভগবান বীরসা মুণ্ডার ভূমি থেকে শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে ঝাড়খণ্ডের নানা জনজাতির ছেলেমেয়েরা বিশেষভাবে উপকৃত হবে। এই একলব্য মডেল আবাসিক বিদ্যালয়গুলিতে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার পাশাপাশি, নানারকম ক্রীড়াশিক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। প্রাকৃতিকভাবেই এখানকার ছেলেমেয়েদের ক্রীড়া সামর্থ্য বেশি। এছাড়া, বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে তাঁদের পেশাদার করে তোলার পাশাপাশি, স্থানীয় হস্তশিল্প, কলা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণে সাহায্য করা হবে। আপনারা শুনে অবাক হবেন যে, এই স্কুলগুলিতে সরকার প্রত্যেক শিশুর পেছনে বছরে ১ লক্ষ টাকারও বেশি খরচ করবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, এই স্কুলগুলিতে পড়ে যে ছেলেমেয়েরা পাশ করে বেরোবে, তাঁরা নতুন ভারত নির্মাণে অনেক বড় ভূমিকা পালন করবে।

 

বন্ধুগণ, যাতায়াতের অন্যান্য মাধ্যম নিয়েও ঝাড়খন্ডে দ্রুতগতিতে কাজ হচ্ছে। যে অঞ্চলগুলিতে সন্ধ্যার পর বাইরে বেরোনো মুশকিল ছিল, সেখানে এখন সড়কপথ তৈরি হয়েছে, সেই সড়কপথে মানুষের নিয়মিত যাতায়াত পরিলক্ষিত হচ্ছে। শুধু হাইওয়ের জন্য ৯ হাজার কোটি টাকারও বেশি প্রকল্প শুধু ঝাড়খন্ডের জন্য মঞ্জুর করা হয়েছে। এগুলির মধ্যে বেশি কিছু সড়কের কাজ ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়েছে। আগামী দিনে ভারতমালা প্রকল্পের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় মহাসড়কগুলি আরও সম্প্রসারিত হবে। সড়কপথ, মহাসড়ক, জলপথ, রেলপথ এবং আকাশপথে যাতায়াত ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার কাজ চলছে।

 

বিগত পাঁচ বছরে যত উন্নয়নের কাজ হয়েছে, তার পেছনে আমার বন্ধু রঘুবীর দাসজী এবং তাঁর টিমের পরিশ্রম এবং আপনাদের সকলের আশীর্বাদই অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। আগে যে ধরনের দুর্নীতি ও কেলেঙ্কারি হ’ত, প্রশাসনে যেমন স্বচ্ছতার অভাব ছিল রঘুবীর দাসজীর নেতৃত্বাধীন সরকার তা পরিবর্তনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে।

 

ভাই ও বোনেরা, এত কিছু যখন হচ্ছে, আমি ঝাড়খন্ডের জনগণকে, আপনাদের আরেকটি দায়িত্ব দিতে চাই। গতকাল থেকেই দেশে ‘স্বচ্ছতা হি সেবা অভিযান’ শুরু হয়েছে। এই অভিযানের মাধ্যমে আগামী ২ অক্টোবরের মধ্যে আমরা বাড়িতে, বিদ্যালয়ে, দপ্তরে সাফাই অভিযানের পাশাপাশি, গ্রাম ও পাড়ার জঞ্জাল পরিষ্কারের পাশাপাশি, আরেকটি বিশেষ কাজ করতে হবে। আমাদের সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিকগুলিকে এক জায়গায় জড়ো করতে হবে। এই প্লাস্টিক একবার ব্যবহারের পর নষ্ট হয়ে যায়। সেই নষ্ট হয়ে যাওয়া প্লাস্টিক পরিবেশ দূষণের কারণ হয়ে ওঠে। আমরা সেই প্লাস্টিক এক জায়গায় জড়ো করলে, পুরসভা বা পঞ্চায়েতের গাড়ি এসে সেগুলি নিয়ে যাবে।

 

২ অক্টোবর মহাত্মা গান্ধীর ১৫০তম জন্মজয়ন্তীর আগে আমাদের প্রত্যেকের পরিবেশকে প্লাস্টিক মুক্ত করতে হবে। সরকারের সমস্ত বিভাগ একত্রিত হয়ে এই প্লাস্টিক অপসারণ এবং সেগুলিকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার কাজে লেগে পড়েছে। প্রকৃতিপ্রেমী ঝাড়খন্ডবাসীদের প্রতি আমার আবেদন যে, এই অভিযানে অংশগ্রহণ করে আপনারা দেশকে সিঙ্গল ইয়ুজ প্লাস্টিক থেকে মুক্তি প্রদানের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিন, আর আমার সঙ্গে এগিয়ে চলুন।

 

বন্ধুগণ, এখন ‘নতুন ঝাড়খন্ড’ এবং ‘নতুন ভারত’ গড়ে তুলতে আমাদের সবাইকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে, একসঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে, মিলেমিশে এগিয়ে যেতে হবে। আগামী ৫ বছরের জন্য ঝাড়খন্ড আবার ডবল ইঞ্জিন লাগিয়ে উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে – এই বিশ্বাস নিয়ে আমি বক্তব্য সম্পূর্ণ করছি।

 

আজ যেসব উপহার ও অভ্যর্থনা পেয়েছি, সেগুলির জন্য ঝাড়খন্ডবাসীদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই, আমার পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। সবাই আমার সঙ্গে মুষ্ঠিবদ্ধ দুই হাত তুলে পূর্ণ শক্তি দিয়ে বলুন, ভারতমাতার জয় – আপনাদের আওয়াজ যেন ঝাড়খন্ডের প্রত্যেক গ্রামে পৌঁছয় –

 

ভারতমাতার জয়।

ভারতমাতার জয়।

ভারতমাতার জয়।

 

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 

 

 

SSS/SB/SB



(Release ID: 1585497) Visitor Counter : 79


Read this release in: English