প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

মরু অঞ্চলের প্রসার রোধে রাষ্ট্রসঙ্ঘের কনফারেন্স অফ্ পার্টিজ-এর চর্তুদশ সম্মেলনের এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 11 SEP 2019 4:39PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

 

 

 

     প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সোমবার উত্তরপ্রদেশের গ্রেটার নয়ডায় মরু অঞ্চলের প্রসার রোধে রাষ্ট্রসঙ্ঘের কনফারেন্স অফ্ পার্টিজ বা সিওপি-এর চর্তুদশ সম্মেলনের অঙ্গ হিসেবে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে ভাষণ দেন।

 

     প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিওপি-র সহ-সভাপতি হিসেবে ভারত দু-বছরের জন্য দায়িত্বগ্রহণ করতে চলেছে। এই দায়িত্বগ্রহণ করে সিওপি-তে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার ব্যাপারে ভারত অত্যন্ত আশাবাদী। বহু যুগ ধরে ভারত সর্বদাই ভূমির গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে আসছে। ভারতীয় সংস্কৃতিতে সমগ্র বিশ্বকে মায়ের মতো পবিত্র হিসেবে গণ্য করা হয়।

 

     “আপনারা এই তথ্যে বিস্মিত হবেন যে, বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ দেশে মরু অঞ্চলের প্রভাবজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্হ। বিশ্বজুড়ে জল সংকট সমস্যার সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি মরু অঞ্চলের প্রসার রোধেরও উপযুক্ত ব্যবস্হা নিতে হবে। জমির চারিত্রিক পরিবর্তন রোধের পাশাপাশি জলের ঘাটতি জনিত সমস্যাগুলিও দূর করতে হবে। এজন্য জলের জোগান বাড়াতে হবে, ভূ-গর্ভস্হ জল বৃদ্ধিতে উদ্যোগ নিতে হবে, জলশূন্যতা রোধ করতে হবে এবং মাটির আর্দ্রতা বজায় রাখতে হবে। জমির চারিত্রিক পরিবর্তন প্রতিহত করার বিষয়টিকে কেন্দ্রবিন্দুতে রেখে বিশ্বব্যাপি জল সংকট জনিত পরিস্হিতি মোকাবিলার জন্য আমি রাষ্ট্রসঙ্ঘের মরু অঞ্চলের প্রসাররোধ বিষয়ক নেতৃবৃন্দের কাছে আবেদন জানাই।

 

     প্রধানমন্ত্রী, প্যারিসে আয়োজিত সিওপি-র সম্মেলনে ভারতের পক্ষ থেকে পেশ করা প্রস্তাবের কথা স্মরণ করে বলেন, জমি, জল, বায়ু, গাছপালা ও সমস্ত জীবন্ত প্রাণীর মধ্যে এক সুসম ভারসাম্য বজায় রাখার বিষয়টি ভারতের সংস্কৃতির গভীরে প্রোথিত। বন্ধুগণ একথা জেনে আপনারা আনন্দিত হবেন যে, ভারত তার ভূ-খন্ডে গাছে ছেয়ে থাকা অঞ্চলের পরিমাণ বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। ভারতে ২০১৫-১৭তে বৃক্ষবেষ্টিত ও অরণ্য অঞ্চলের পরিমাণ ৮০ হাজার হেক্টর বেড়েছে।

 

     প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে কৃষক সমাজের আয় দ্বিগুন করার লক্ষ্যে এক কর্মসূচির সূচনা করেছে। গৃহিত পদক্ষেপগুলির মধ্যে রয়েছে জমির উর্বরতা বজায় রাখা এবং ক্ষুদ্র কৃষি সেচ। এখন দেশজুড়ে প্রত্যেক জলের ফোঁটায় আরও বেশি শস্য উৎপাদনের লক্ষ্যে কাজ চলছে। শ্রী মোদী বলেন, আমরা কৃষিকাজে জৈব সারের ব্যবহার বাড়াচ্ছি এবং রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমানোর চেষ্টা করছি। জল সম্পর্কিত যাবতীয় সমস্যার সমাধানে আমরা জলশক্তি মন্ত্রক গঠন করেছি। আগামী বছরগুলিতে আমরা একবার ব্যবহার যোগ্য প্লাস্টিক বর্জনের লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছি।

 

     প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিবেশের সঙ্গে মানুষের ক্ষমতায়ণের বিষয়টি নিবিড়ভাবে জড়িত। জলসম্পদের সুদক্ষ ব্যবহারই হোক বা একবার ব্যবহার যোগ প্লাস্টিক বর্জন- সবক্ষেত্রেই মানসিকতায় পরিবর্তনের প্রয়োজন। তবে, সমাজের সবশ্রেণীর মানুষের ইচ্ছাশক্তি ছাড়া প্রত্যাশিত ফল পাওয়া সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, আমরা যতই পরিকল্পনা গ্রহণ করি না কেন, বাস্তবিক পরিণাম একমাত্র ঐক্যবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমেই সম্ভব।স্বচ্ছ ভারত মিশনের ক্ষেত্রে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন, স্বাস্হ্যকর পরিবেশ গড়ে তুলতে অবদান রেখেছেন। এগুলি সবই স্বচ্ছ ভারত মিশনকে সফল করে তুলতে সাহায্য করেছে। ভারতের শৌচাগারের ব্যবহার ২০১৪-র ৩৮ শতাংশ বেড়ে বর্তমানে ৯৯ শতাংশে পৌঁছেছে।

 

     বিশ্বজুড়ে জমির চারিত্রিক পরিবর্তন রোধে ভারতের অঙ্গিকারের কথা পুনরায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জমির চারিত্রিক পরিবর্তন রোধে যে সমস্ত কৌশল ভারতে সফল হয়েছে, সেগুলি অন্যান্য দেশকে দিয়ে ভারত সাহায্য করতে প্রস্তুত। এই মঞ্চে আমি এ কথা ঘোষণা করতে চাই যে, বর্তমান সময় থেকে ২০৩০এর মধ্যে ২ কোটি ১০ লক্ষ হেক্টর থেকে ২ কোটি ৬০ লক্ষ হেক্টর জমির চারিত্রিক পরিবর্তন রোধে ভারত এক উচ্চাকাঙ্খী পরিকল্পনা নিচ্ছে।

 

     প্রধানমন্ত্রী বলেন, জমির চারিত্রিক পরিবর্তন সংক্রান্ত সমস্যাগুলির মোকাবিলায় বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর প্রয়োজন। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর ফরেস্ট রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন প্রতিষ্ঠানে জমির চারিত্রিক পরিবর্তন রোধে একটি উৎকর্ষ কেন্দ্র স্হাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই উৎকর্ষ কেন্দ্রটি দক্ষিণ-দক্ষিণ দক্ষিণ সহযোগিতা প্রসারে যুক্ত থাকবে এবং জমির চারিত্রিক পরিবর্তন সংক্রান্ত সমস্যাগুলির মোকাবিলায় জ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ পদ্ধতির পারস্পরিক আদান-প্রদান করবে।

 

     প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী তাঁর ভাষণ আকাশে শান্তি, মহাকাশে শান্তি-এই শব্দবন্ধগুলি উল্লেখ করে শেষ করেন। শান্তি শব্দের অর্থ ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই শব্দটি কেবল হিংসার বিপরীত অর্থই নয়, এরসঙ্গে শৃঙ্খলা ও উদ্দেশ্যের বিষয়টিও যুক্ত রয়েছে। প্রত্যেককে এই উদ্দেশ্য পূরণ করতে হবে। এই উদ্দেশ্য পূরণ হলেই সমৃদ্ধি আসবে।

 

 

 

CG/BD/NS



(Release ID: 1584733) Visitor Counter : 84


Read this release in: English