স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্নের ‘নতুন ভারতে’ উগ্র বামপন্থার কোন জায়গা নেই : শ্রী অমিত শাহ


দেশ থেকে উগ্র বামপন্থা দূর করতে কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয় জরুরি : কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী

উগ্র বামপন্থী সংগঠনগুলিকে তহবিল যোগানে নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন : শ্রী অমিত শাহ

উগ্র বামপন্থার সঙ্গে যুক্ত ঘটনার সংখ্যা ২০০৯-এর ২,২৫৮ থেকে কমে ২০১৮-তে ৮৩৩ : কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী

Posted On: 27 AUG 2019 4:54PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৬ অগাস্ট, ২০১৯

 

 

 

উগ্র বামপন্থার সমস্যা নিয়ে সোমবার নতুন দিল্লিতে এক পর্যালোচনা বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ বলেছেন, দেশ বিগত কয়েক দশকে উগ্র বামপন্থার মতো অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাগত বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্নের ‘নতুন ভারতে’ উগ্র বামপন্থার কোন স্থান নেই বলেও তিনি জানান।

 

শ্রী শাহ আরও বলেন, উগ্র বামপন্থী সংগঠনগুলি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির বিরুদ্ধে এবং তৃণমূল স্তরে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করতে হিংসার আশ্রয় নেয়। দেশের অপেক্ষাকৃত কম উন্নত এলাকাগুলিতে উন্নয়নের ধারা ব্যাহত করতে তারা সক্রিয়ভাবে সচেষ্ট রয়েছে। এদের কৌশলই হল সাধারণ মানুষকে ভুল পথে চালিত করা এবং তাঁদেরকে অজ্ঞ রেখে দেওয়া। প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের ‘নতুন ভারতে’র ভিত্তি হল সার্বিক, সুষম উন্নয়ন এবং উন্নয়নের সুফল প্রতিটি কোণায় পৌঁছে দেওয়া। তাই, এই স্বপ্ন পূরণের জন্য উগ্র বামপন্থার ভীতি দূর করা প্রয়োজন বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। শ্রী শাহ জোর দিয়ে বলেন, হিংসার আশ্রয় নিয়ে যারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চাইছে, তাদের বিরুদ্ধে দেশের লড়াই অব্যাহত থাকবে।

 

উগ্র বামপন্থার সঙ্গে যুক্ত হিংসার বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীগুলির সাফল্যের কথা উল্লেখ করে শ্রী শাহ বলেন, বিগত কয়েক বছরে এ ধরনের হিংসার ঘটনা জেলাগুলিতে হ্রাস পেয়েছে। এক পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি জানান, ২০০৯-এ হিংসার ঘটনা ২,২৫৮ থেকে কমে ২০১৮-তে ৮৩৩ হয়েছে। এমনকি, হিংসার ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ২০০৯-এর ১,০০৫ থেকে কমে ২০১৮-তে ২৪০-এ পৌঁছেছে। উগ্র বামপন্থা প্রভাবিত জেলার সংখ্যা ২০১০-এ ৯৬ থেকে কমে ২০১৮-তে ৬০ হয়েছে বলেও তিনি জানান।

 

শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় রাজ্যগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, উগ্র বামপন্থার সমস্যা কার্যকরভাবে মোকাবিলার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে সমন্বয় অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, উগ্র বামপন্থার সঙ্গে যুক্ত হিংসার ঘটনা হ্রাস পেলেও এ ধরনের ঘটনা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে এবং এজন্য যাবতীয় প্রচেষ্টায় কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে সমন্বয় বজায় রাখা জরুরি।

 

উগ্র বামপন্থার ঘটনা ও জীবনহানি রুখতে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়, ৬৬ নং ভারতীয় সংরক্ষিত বাহিনী গঠনের মতো একাধিক বহুমুখী রণকৌশল গ্রহণ করা হয়েছে বলে শ্রী শাহ জানান। তিনি জোর দিয়ে বলেন, স্থানীয় বাহিনীগুলির দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন, কারণ এ ধরনের বাহিনীগুলি উগ্র বামপন্থা সংগঠনগুলিকে বিনাশ করতে কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে। এ প্রসঙ্গে শ্রী শাহ বলেন, জঙ্গি প্রভাবিত রাজ্যগুলিতে স্থানীয় পুলিশের নজরদারি ও দক্ষতা বৃদ্ধি ছাড়া উগ্র বামপন্থার সমস্যা দূর করা সম্ভব নয়। এ সমস্ত বিষয় বিবেচনায় রেখেই স্থানীয় বাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি রাজ্যগুলিকে পুলিশবাহিনীর আধুনিকীকরণের জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের পরামর্শ দেন।

 

উগ্র বামপন্থী সংগঠনগুলিকে তহবিল যোগান নিয়ন্ত্রণ করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী তহবিল যোগান রুখতে রাজ্যগুলি যে পদক্ষেপ নিয়েছে তার প্রশংসা করেন। উগ্র বামপন্থার সঙ্গে যুক্ত হিংসার ঘটনায় যারা নিজেদের অজ্ঞাতেই জড়িয়ে পড়েছেন, এমন নিরীহ সাধারণ ব্যক্তিদের সমাজের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনতে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের নীতি আরও সরল করার জন্যও শ্রী শাহ রাজ্যগুলিকে অনুরোধ জানান।

 

উগ্র বামপন্থা প্রভাবিত এলাকাগুলির জন্য বিভিন্ন মন্ত্রকের ফ্ল্যাগশিপ কর্মসূচি রূপায়ণের পাশাপাশি, এলাকা-ভিত্তিক পৃথক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও শ্রী শাহ জানান। এই সমস্ত উদ্যোগের মাধ্যমে সড়ক ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার মানোন্নয়ন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ, দক্ষতা উন্নয়ন ও শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। একলব্য আদর্শ বিদ্যালয় কর্মসূচির আওতায় নতুন বিদ্যালয় স্থাপনের কাজ ত্বরান্বিত হচ্ছে এবং প্রভাবিত এলাকাগুলির সাধারণ মানুষকে ৫ কিলোমিটারের মধ্যে ব্যাঙ্কিং-এর সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

 

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজ্য সরকারগুলিকে আশ্বাস দিয়ে বলেন যে, উগ্র বামপন্থা চিরতরে দূর করতে কেন্দ্র সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবে। নিরাপত্তা বাহিনীগুলিকে উগ্র বামপন্থার সমস্যা মোকাবিলায় আরও কার্যকর রণকৌশল গ্রহণ করতে হবে বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী যে কোন মূল্যে উগ্র বামপন্থার সঙ্গে যুক্ত ঘটনা রুখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। আইইডি বিস্ফোরণ প্রতিরোধে উদ্ভাবনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও তিনি জানান। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে আইইডি বিস্ফোরণের ফলে হতাহতের সংখ্যা লক্ষ্যণীয়ভাবে বেড়েছে।

 

উগ্র বামপন্থা দমনে ২০১৫ সালে যে জাতীয় রণকৌশল গ্রহণ করা হয়েছিল, সে প্রসঙ্গে শ্রী শাহ বলেন, এই বহুমুখী প্রয়াসে নিরাপত্তা, উন্নয়ন, প্রশাসনের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং স্থানীয় আদিবাসী মানুষের অধিকারের বিষয়গুলিতে প্রাধান্য দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, এই রণকৌশলে স্থানীয় মানুষের অধিকার সুরক্ষার বিষয়টি সর্বদাই অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে। শ্রী শাহ রাজ্যগুলিকে উগ্র বামপন্থা চিরতরে দূর করতে সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি, প্রভাবিত এলাকাগুলির সার্বিক উন্নয়নের কথা বলেন।

 

পর্যালোচনা বৈঠকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী, সড়ক পরিবহণ ও জাতীয় মহাসড়ক মন্ত্রী, কৃষি মন্ত্রী, গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী, আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীরা ছাড়াও অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

 

 

CG/BD/DM



(Release ID: 1583154) Visitor Counter : 122


Read this release in: English