প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
সরকার সন্ত্রাসবাদের যোগ্য জবাব দেবে, শ্রীনগরে বললেন প্রধানমন্ত্রী
Posted On:
04 FEB 2019 3:19PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, জম্মু-কাশ্মীরে যারা সন্ত্রাসবাদকে মদত দিচ্ছে, সরকার তাদের যোগ্য জবাব দেবে।শ্রীনগরে আজ এক জনসভায় ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা প্রত্যেক জঙ্গিকে উপযুক্ত জবাব দেব।আমরা জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদের শিরদাড়া ভেঙে দেব এবং আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে এর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব।”
জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রাণ উৎসর্গকারী শহীদ নাজির আহমেদ ওয়ানির প্রতি যথাযোগ্য শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “শহীদ নাজির আহমেদ ওয়ানি সহ সমস্ত সাহসী সৈনিক, যাঁরা দেশ এবং শান্তির জন্য প্রাণ দিয়েছেন, তাঁদের সকলকে আমার শ্রদ্ধা।” উল্লেখ করা যেতে পারে, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অসম সাহসিকতা প্রদর্শনের জন্য নাজির আহমেদ ওয়ানিকে সর্বোচ্চ সাহসিকতা পুরস্কার ‘অশোক চক্র’দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছে।তাঁর বীরত্ব ও সাহসিকতা জম্মু-কাশ্মীরের যুবসম্প্রদায় সহ সমগ্র জাতিকে দেশের স্বার্থে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করবে।
এরপর, প্রধানমন্ত্রী নব-নির্বাচিত পঞ্চায়েত প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।রাজ্যে বেশ কয়েক বছর বাদে স্থানীয় সংস্থাগুলির নির্বাচন হওয়ায় তিনি খুশি বলে শ্রী মোদী উল্লেখ করেন।প্রতিকূল পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা সত্ত্বেও বিপুল সংখ্যায় ভোটদানের জন্য তিনি সাধারণ মানুষকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এটা থেকে প্রমাণিত হয়, গণতন্ত্রের প্রতি এখানকার মানুষের আস্থা যেমন রয়েছে, তেমনই রাজ্যের উন্নয়নেও তাঁদের আগ্রহ রয়েছে।
এই রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নে তাঁর অগ্রাধিকারের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি এখানে ৬,০০০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধনের জন্য এসেছি।শ্রীনগর ও আশপাশের অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে এই প্রকল্পগুলি গ্রহণ করা হয়েছে।”
এরপর প্রধানমন্ত্রী শ্রীনগরে রাজ্যের জন্য একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা করেন।তিনি পুলওয়ামার অবন্তীপুরায় নতুন এইম্স-এর শিলান্যাস করেন।রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতিতে এই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্বাস্থ্য পরিচর্যা আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচির সঙ্গে এই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানটিকে জুড়ে দেওয়া হবে।এর ফলে, কেবল জম্মু-কাশ্মীরেরই প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন।উল্লেখ করা যেতে পারে, আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর এখনও পর্যন্ত প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ উপকৃত হয়েছেন।
এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বান্দিপোরাতে প্রথম গ্রামীণ বিপিও উদ্বোধন করেন।অভিন্ন এই পরিষেবা প্রদান কেন্দ্রের মাধ্যমে বান্দিপোরা ও আশপাশের জেলাগুলির বহু যুবক-যুবতীর জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।শ্রী মোদী বলেন, বান্দিপোরার এই গ্রামীণ বিপিও-টি সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের যুবসম্প্রদায়ের জন্য কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে এক নতুন জানালা খুলে দেবে।
কাশ্মীরি উদ্বাস্তু, যাঁরা নিজ ভূমিতে এসে বসবাস করতে চান, তাঁদের পূর্ণ নিরাপত্তা দিতে তাঁর সরকার প্রস্তুত জানিয়ে শ্রী মোদী বলেন, কাজের খোঁজে এক জায়গা থেকে অন্যত্র যাওয়া কাশ্মীরি কর্মীদের সাময়িক বিশ্রামের জন্য ৭০০টি বিশ্রামাগার নির্মাণ করা হচ্ছে।ভূমিহারা কাশ্মীরিদের জন্য ৩,০০০ পদে নিয়োগের কাজ চলছে বলেও তিনি জানান।
এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী দেশের বিভিন্ন অংশের কলেজ পড়ুয়াদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
রাষ্ট্রীয় উচ্চতর শিক্ষা অভিযানের আওতায় ডিজিটাল উপায়ে একাধিক প্রকল্পের সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের কিস্তোয়ার, কুপওয়াড়া ও বারামুলায় তিনটি আদর্শ ডিগ্রি কলেজের শিলান্যাস করেন।জম্মু বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি উদ্ভাবন ও কর্মসংস্থানমুখী এক হাব বা কেন্দ্রেরও সূচনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী জম্মু-কাশ্মীরে বিদ্যুৎ গ্রিড ব্যবস্থার উন্নতিতে ৪০০ কিলোভল্ট ক্ষমতাসম্পন্ন জলন্ধর-সাম্বা-রাজৌরি-সোপিয়ান-অমরগড় বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের সূচনা করেন।
এই উপলক্ষে এক জনসভায় ভাষণে শ্রী মোদী বলেন, বিগত সরকারের আমলে দিল্লির বিজ্ঞান ভবন থেকে একাধিক বড় মাপের প্রকল্পের সূচনা করা হয়েছিল।বর্তমান এনডিএ সরকার সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে গিয়ে সেখানকার প্রকল্পগুলি উদ্বোধন করছে।তিনি বলেন, “আমাদের সরকার ঝাড়খণ্ড থেকে আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচি, উত্তরপ্রদেশ থেকে উজ্জ্বলা যোজনা, পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিমা কর্মসূচি, তামিলনাড়ু থেকে বস্ত্রবয়ন অভিযান, হরিয়ানা থেকে ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’অভিযানের সূচনা করেছে।”
প্রকাশ্য স্থানে শৌচকর্ম বর্জিত রাজ্য হয়ে ওঠায় শ্রী মোদী জম্মু-কাশ্মীরের মানুষকে অভিনন্দন জানান।উল্লেখ করা যেতে পারে, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসেই জম্মু-কাশ্মীর প্রকাশ্য স্থানে শৌচকর্ম বর্জিত রাজ্যের স্বীকৃতি পায়।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, উদ্ভাবন, ইনক্যুবেশন এবং স্টার্ট-আপ বা নতুন শিল্পোদ্যোগ স্থাপনের কাজে নতুন গতি সঞ্চারিত হয়েছে।বিগত ৩-৪ বছরে দেশে ১৫ হাজারেরও বেশি স্টার্ট-আপ গড়ে উঠেছে।এর বেশিরভাগই গড়ে উঠেছে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর শহরগুলিতে।এরপর প্রধানমন্ত্রী গান্দেরবালের সেফোরাতে ইন্ডোর স্পোর্টস কেন্দ্র উদ্বোধন করেন।এই কেন্দ্রটি যুবসম্প্রদায়কে ইন্ডোর স্পোর্টসে আরও বেশি সংখ্যায় আকৃষ্ট করবে।তিনি আরও জানান, জম্মু-কাশ্মীরের ২২টি রাজ্যের সবক’টিকে ‘খেলো ইন্ডিয়া’অভিযানের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।রাজ্যে প্রতিভার সন্ধান তথা ক্রীড়া পরিকাঠামোর উন্নয়নেই এই উদ্যোগ।
এরপর প্রধানমন্ত্রী নয়নাভিরাম ডাল হ্রদ ঘুরে দেখেন এবং সেখানকার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
জম্মু-কাশ্মীরে একদিনের এই সফরে প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের তিনটি অঞ্চল –লেহ্, জম্মু ও শ্রীনগরে যান।
CG/BD/DM
(Release ID: 1562508)
Visitor Counter : 220