বিদ্যুৎমন্ত্রক
বর্ষশেষ পর্যালোচনা ২০১৮ – শক্তি মন্ত্রক
Posted On:
12 DEC 2018 6:33PM by PIB Kolkata
চলতি বছরে দেশের ন’টি রাজ্যে ১০০ শতাংশ পরিবারে ‘সৌভাগ্য’ প্রকল্পের আওতায় ১০০ শতাংশ বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এর ফলে, বর্তমানে দেশের ১৬টি রাজ্যে ১০০ শতাংশ পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ‘সৌভাগ্য’ যোজনায় এ বছর ২ কোটিরও বেশি বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। দেশে বিদ্যুতের ঘাটতি সম্পূর্ণ কমিয়ে ফেলা সম্ভব হয়েছে। ভারত এখন নেপাল, বাংলাদেশ ও মায়ানমারে বিদ্যুৎ রপ্তানি করছে। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য সারা দেশে ‘উজালা’ যোজনায় ৩১.৬৮ কোটি এলইডি বাল্ব বিতরণ করা হয়েছে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে ৭৪.৭৯ লক্ষ এলইডি স্ট্রিট লাইট লাগানো হয়েছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের ‘সহজে ব্যবসার সুযোগ’-এর মধ্যে ‘বিদ্যুৎ প্রাপ্তি’র ক্ষেত্রে ভারতের স্থান ২০১৪ সালের ১৩৭ থেকে ২০১৮-য় ২৪-এ পৌঁছেছে।
দেশের মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক বিকাশের জন্য অন্যতম প্রয়োজনীয় শর্ত হিসাবে সুলভে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার কথা বলা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকার ২০১৯-এর ৩১ মার্চের মধ্যে ‘সবার জন্য ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ’-এর অঙ্গীকার করেছে। এই লক্ষ্যে ‘দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রাম জ্যোতি যোজনা’র আওতায় অনেকগুলি রাজ্যে ১০০ শতাংশ পরিবারেই বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। বাকিগুলিতে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য কাজ চলেছে।
বিদ্যুতের বর্ধিত চাহিদা মেটাতে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০১৪-র এপ্রিল থেকে ২০১৮-র অক্টোবর মাস পর্যন্ত মোট ১ লক্ষ ৭ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সংযুক্ত করা হয়েছে। ৩১ মার্চ, ২০১৪ থেকে ৩১ অক্টোবর, ২০১৮-র মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৩৯ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়ে ৩ লক্ষ ৪৬ হাজার ৪৮ এমইউ পৌঁছেছে। ২০১৭-১৮ অর্থ বর্ষে ভারত নেপাল, বাংলাদেশ এবং মায়ানমারকে ৭,২০৩ এমইউ বিদ্যুৎ রপ্তানি করেছে। এ বছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত এই তিনটি দেশে রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪,৬২৮ এমইউ।
সারা দেশের জন্য বিদ্যুৎ পরিবহণের একটি গ্রিড ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০১৪-১৫ থেকে ২০১৮-১৯-এর মধ্যে দেশের বিদ্যুৎ গ্রিডে ১ লক্ষ ১১ হাজার ৪৩৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বিদ্যুৎ পরিবহণের লাইন সংযুক্ত হয়েছে। এছাড়া, ৬৫,৪২৪ কোটি টাকা বরাদ্দের ১,৩৭৮টি শহরে অখণ্ড শক্তি উন্নয়ন প্রকল্প রূপায়ণ করা হয়েছে। এর সঙ্গে, আরও ১,৯০০ শহরে এই কাজ চালানো হচ্ছে। রাজ্যের বিদ্যুৎ পর্ষদগুলিকে স্বয়ম্ভর করে তোলার লক্ষ্যে ‘উদয়’ কর্মসূচিতে দু’বছরের মধ্যে প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকার মতো সুদ সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে। ২২টি রাজ্যে দু’বছরের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে বিদ্যুতের অপচয় বহুলাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির বিদ্যুতের চাহিদা মেটানোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সিকিম সহ এই অঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলার লক্ষ্যে ৯,৮৬৫.৭৫ কোটি টাকার প্রকল্প রূপায়ণ করা হচ্ছে। এই অঞ্চলের রাজ্যগুলির প্রত্যন্ত গ্রাম এবং শহরগুলিতে বিদ্যুতায়নের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার মধ্যে ২০১৪-১৮ পর্যন্ত ৪,৩৭৬ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সংযুক্ত হয়েছে। সারা দেশে বিদ্যুতের অপচয় বন্ধ করা এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে ব্যাপকভাবে এলইডি বাল্ব ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে, একদিকে যেমন বিদ্যুতের সাশ্রয় হয়েছে, অন্যদিকে তেমনই কার্বন নির্গমনের পরিমাণও বহুলাংশে কমানো সম্ভব হয়েছে। সারা দেশের বিভিন্ন রাজ্যে রাস্তায় আলো দিতে ব্যাপকভাবে এলইডি বাল্ব ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সারা দেশে পরিবহণ ক্ষেত্রে বিদ্যুৎচালিত যানবাহনের ব্যবহার বাড়াতে জাতীয় পর্যায়ের ই-মবিলিটি কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ সাশ্রয়কারী শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করার লক্ষ্যে ব্যুরো অফ এনার্জি এফিশিয়েন্সির পক্ষ থেকে স্টার রেটিং-এর ব্যবস্থা হয়েছে। বড় শিল্পেও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের উদ্যোগের ফলে বছরে প্রায় ৯.৫ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। সারা দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বিদ্যুতের বিল জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘ভিম’, ‘বিবিপিএস’, ‘ভারত কিউআর’-এর মতো অনলাইন ব্যবস্থায় ২৪ কোটিরও বেশি ডিজিটাল লেনদেন হয়েছে। সমগ্র বিদ্যুৎ উৎপাদন, সরবরাহ ও পরিবহণ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে শক্তি মন্ত্রকের পক্ষ থেকে ‘প্রাপ্তি’ একটি ওয়েব পোর্টাল ও অ্যাপ চালু করা হয়েছে। www.praapti.in থেকে গ্রাহকরা বিদ্যুতের বিল সংক্রান্ত যাবতীয় খোঁজখবর পাবেন। সারা দেশের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি থেকে যে বিশাল পরিমাণ ছাই উৎপাদিত হয়, তা যথাযথভাবে ব্যবহারের জন্য একটি ওয়েব-ভিত্তিক মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাশ ট্র্যাক) চালু করা হয়েছে।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে দূষণ হার কমানোর লক্ষ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলিতে ব্যবহৃত কয়লার সঙ্গে ৫-১০ শতাংশ হারে গোবর জাতীয় জৈব পদার্থ মিশ্রণের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে দেশের সবক’টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থা, বন্টন সংস্থা এবং বিদ্যুৎ সংক্রান্ত যন্ত্রাংশ উৎপাদন সংস্থাগুলিকে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। অনেক জায়গাতেই ফসল তোলার পর বর্জ্য অংশকে কয়লার সঙ্গে মিশিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দেশের পুনর্নবীকরণযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে সংস্কারের লক্ষ্যে শক্তি মন্ত্রক সৌর এবং বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প রূপায়ণের জন্য বেশ কিছু ছাড়ের ব্যবস্থা করেছে। ২০২২ সালের মধ্যে পুনর্নবীকরণযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতাকে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার মেগাওয়াটে পৌঁছে দিতে সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের সমস্যাগুলি মোকাবিলার লক্ষ্যে সরকার ২০০৩-এর বিদ্যুৎ আইনে সংশোধন এবং ২০১৬-র বিদ্যুৎ মাশুলের নীতি সংশোধন করার উদ্যোগ নিয়েছে।
SSS/PB/DM
(Release ID: 1555760)
Visitor Counter : 241