তথ্যওসম্প্রচারমন্ত্রক
সংবাদ ও প্রচারমাধ্যম শিল্পে ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে আইন ও নিয়মনীতির যথাযথ প্রয়োগের ওপর জোর দিলেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী
Posted On:
11 MAY 2018 12:57PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১০ মে, ২০১৮
সংবাদ ও প্রচারমাধ্যম শিল্পে ভারসাম্য রক্ষার প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট আইন ও নিয়মনীতিকে যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে হবে যাতে একটিমাত্র সংবাদবা প্রচারমাধ্যম অন্যগুলির ওপর কোনরকম আধিপত্য বিস্তার না করতে পারে।
নতুন দিল্লীতে বুধবার ১০ই মে পঞ্চদশ এশীয় সংবাদ ও প্রচারমাধ্যম শীর্ষ বৈঠকের উদ্বোধন করে এই অভিমত প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী শ্রীমতী স্মৃতি জুবিন ইরানি। তিনি তাঁর ভাষণে বলেন যে আগামী ২০২১ সালের মধ্যে ভারতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৯৬৯ মিলিয়নে গিয়ে পৌঁছবে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের সংবাদ ও প্রচারমাধ্যম শিল্প ডিজিটাল দুনিয়াকে একটি চ্যালেঞ্জ হিসাবে গ্রহণ না করে, বরং একটি বিশেষ সুযোগ বলেই মনে করে। শুধুমাত্র রাজস্ব অর্জনের ঘেরাটোপের মধ্যে আবদ্ধ না রেখে, সৎ তথ্য ও সংবাদ পরিবেশনকে স্বাধীন ও অবাধ করে তুলতে মেধাশক্তিকে কিভাবে আকর্ষণ করা যায় এবং তার আরও বিকাশ ঘটিয়ে সংবাদ ও প্রচারমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার কাজ সম্ভব করে তোলা যায়, সে সম্পর্কে আমাদের চিন্তাভাবনা করা প্রয়োজন।
ভারতের সংবাদ ও প্রচারমাধ্যম শিল্পের ক্রমবিকাশ ও ক্রমপ্রসারের এক সংক্ষিপ্ত প্রেক্ষাপট তুলে ধরে শ্রীমতী ইরানি বলেন, বিজ্ঞাপন বিপণনের ক্ষেত্রে ভারত দ্রুততম গতিতে বিকাশশীল একটি দেশ। এ বছরের শেষের দিকে দেশের বিজ্ঞাপনের বাজার ও বিপণন ১০.৫৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার স্পর্শ করতে চলেছে বলে জানান তিনি। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন যে ভারতের সংবাদ ও প্রচারমাধ্যম শিল্প যথেষ্ট সম্ভাবনাময়। প্রাতিষ্ঠানিক দিক থেকে এবং প্রত্যক্ষভাবে এর মূল্যমান ১.৩৫ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। অন্যদিকে, পরোক্ষভাবে এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ৪.৫ লক্ষ কোটি টাকার সুযোগসুবিধা। এছাড়া, এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ৪০ লক্ষ কর্মী। এশীয় সংবাদ ও প্রচারমাধ্যমবৈঠক থেকে এমন কিছু নতুন নতুন চিন্তাভাবনার সন্ধান পাওয়া যেতে পারে যা মানবজাতির উন্নতির স্বার্থে সংবাদ ও প্রচারমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলিকে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।
শীর্ষ বৈঠকের উদ্বোধনী পর্বে ভাষণ দেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী মিঃ হাসানুল হক ইনু-ও। তিনি তাঁর বক্তব্যে দারিদ্র্য, লিঙ্গ বৈষম্য, সন্ত্রাস, তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি বিপ্লব, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বিশ্বায়নের ক্ষেত্রে ভারসাম্যহীনতাকে বর্তমান বিশ্বের জটিলতম চ্যালেঞ্জ বলে বর্ণনা করেন। সাইবার অপরাধের ঘটনা যেভাবে দিন দিন বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে, তাতে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন যে সাইবার অপরাধীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে সংবাদ ও প্রচারমাধ্যমকে সুরক্ষিত রাখা প্রয়োজন।
কম্বোডিয়ার তথ্যমন্ত্রী ডঃ খিউ কানহারিথ তাঁর ভাষণে জানান যে কম্বোডিয়ার সংবাদ ও প্রচারমাধ্যমকে উন্নত করে তুলতে তাঁর দেশ নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ইউনেস্কো-র নয়াদিল্লিস্থিত নির্দেশক মিঃ শিগেরু আওয়াগি বিশ্বে শান্তি ও সহযোগিতার বাতাবরণ গড়ে তুলতে সংবাদ ও প্রচারমাধ্যমের বিশেষ ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। ইউনেস্কো-র সনদ তথা সংবিধান থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, মানুষের মনের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্বের যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। তাই আমাদের এখন কাজ হল মানুষের মনে প্রশান্তির ভাব জাগিয়ে তোলা। দায়িত্বশীলতার সঙ্গে গঠনমূলক তথ্য ও সংবাদ প্রচারেরও আহ্বান জানান তিনি।
ইরানের আইআরআইবি-র প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা তথা ইন্টারন্যাশনাল ডিপার্টমেন্ট-এর মহানির্দেশক ডঃ আব্বাস নাসেরি তাহেরি তাঁর ভাষণে অতীত এবং বর্তমানের সঙ্গে এক সফল মেলবন্ধন গড়ে তুলতে এশিয়ার সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে সামাজিক তথ্য পরিবেশনের ওপর জোর দেন।
রাষ্ট্রসঙ্ঘের উপ-মহাসচিব মিসেস আমিনা জে মহম্মদ বৈঠকে এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ডিজিটাল জগতের মধ্যে বিচ্ছিন্নতার অবসান ঘটাতে আহ্বান জানান। সমাজের প্রত্যেকেরই সক্রিয় অংশগ্রহণ যাতে অর্থবহ হয়ে উঠতে পারে, তা সম্ভব করে তোলার কথা বলেন তিনি। এছাড়াও, বিশ্বের স্বাভাবিক ও চলমান প্রক্রিয়াকে নিরন্তর করে তোলার স্বার্থে সংবাদ ও প্রচারমাধ্যমের ভূমিকার ওপরও তিনি বিশেষ জোর দেন।
কোরিয়ার যোগাযোগ কমিশনের কমিশনার মিঃ স্যাম সিয়োগ কো বলেন যে, বর্তমান বিশ্বে সংবাদ ও প্রচারমাধ্যমের এক বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তাই, এক উন্নততর পৃথিবী গড়ে তোলার স্বার্থে তার সদ্ব্যবহার প্রয়োজন।
ক্রেতা সাধারণের কল্যাণে একটি ন্যায্য বিপণন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে নিয়ন্ত্রণমূলক সংস্কার প্রচেষ্টা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করেন টাইম্স গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর শ্রী বিনীত জৈন। তথ্য ও পরিসংখ্যান সংরক্ষণের ওপর বিশেষ জোর দিয়ে তিনি বলেন যে দেশের বিভিন্ন তথ্য ও পরিসংখ্যান যাতে বিদেশে পাচার হয়ে না যায়, তা নিশ্চিত করতে আমাদের উচিৎ জাতীয় স্বার্থকে সুরক্ষিত রাখা। এজন্য প্রয়োজনীয় তথ্য ও পরিসংখ্যানকে ভারতে যথেষ্ট গোপনীয়তার সঙ্গেই সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।
ভারতের ২৩টি প্রধান প্রধানভাষা এবং ৭২০টির মতো উপ-ভাষায় তথ্য ও সংবাদ পরিবেশনের বলিষ্ঠ ঐতিহ্যের কথা এদিন স্মরণ করিয়ে দেন পিআইবি-র মহানির্দেশক শ্রী সীতাংশু কর।তিনি তাঁর স্বাগত ভাষণে বলেন, নতুন নতুন প্রযুক্তির কল্যাণে আমরা এক বৈপ্লবিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছি। তারই সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আবর্তিত হচ্ছে আমাদের চিন্তাভাবনা এবং তথ্য পরিবেশনের আঙ্গিক ও পন্থাপদ্ধতি।
কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক আয়োজিত পঞ্চদশ এশীয় সংবাদ ও প্রচারমাধ্যম শীর্ষ বৈঠকে এ বছরের মূল বিষয় ছিল ‘আমাদের তথ্য ও সংবাদ পরিবেশন ব্যবস্থা - এশিয়া এবং বহির্বিশ্বে’। সার্ক, আসিয়ান, পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা, ওশেনিয়া, ইউরোপ, সিরিয়া, উজবেকিস্তান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চিন সহ বিভিন্ন প্রান্তের মোট ৩৯টি দেশের ২২০ জনেরও বেশি বিদেশি প্রতিনিধি যোগ দেন এই শীর্ষ বৈঠকে।
এই শীর্ষ বৈঠক সম্পর্কিত বিশদ তথ্য ও খবরাখবর পাওয়া যাবে এই লিঙ্কগুলিতে –
Hashtag: #AsiaMediaSummit
YouTube: https://www.youtube.com/pibindia (for LIVE WEBCAST of Important Sessions)
Facebook: https://www.facebook.com/pibindia
Twitter: https://twitter.com/asiamediasummit
CG/SKD/DM/….
(Release ID: 1531868)
Visitor Counter : 70