অর্থমন্ত্রক
পশ্চিমবঙ্গের ৪টি জিআই পণ্য মহোৎসবে বিশেষ আকর্ষণ
নাবার্ডের গ্রামীণ ভারত মহোৎসবে সমগ্র ভারত থেকে ১৫০-এরও বেশি কারিগর তাদের শিল্পকলা প্রদর্শন করতে কলকাতায় সমাগত
বর্জ্য থেকে চমৎকার শিল্প, মহোৎসবে পরিবেশবান্ধব কচুরিপানার ম্যাট ও ব্যাগ সমাদৃত হচ্ছে মেলায়
प्रविष्टि तिथि:
20 NOV 2025 5:55PM by PIB Kolkata
কলকাতা, ২০ নভেম্বর ২০২৫
বীরভূম জেলার শ্রী সুখ চন্দ গ্রামের অর্থনীতি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে যথার্থই এক প্রেরণাদায়ক উদাহরণ। তিনি সুতীর্থ গ্লোবাল প্রডিউসার কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে কাজ করে স্থানীয় মানুষের জন্য সুস্থায়ী জীবিকা গড়েছেন। ন্যাবার্ডের অফ-ফার্ম প্রডিউসার সংস্থা ও গ্রামীণ এমএসএমই বিভাগের সহায়তায় শুরু হওয়া এই উদ্যোগে সুরুলের ঐতিহ্যবাহী শিল্পকুশল পুনরুজ্জীবিত হয়েছে এবং গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশের ক্ষেত্রে উদাহরণস্বরূপ হউয়ে উঠেছে।
প্রথমে ওই অঞ্চলের গ্রামীণ নারী ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি ছোট পরিসরে কাজ করত। তাদের বাজার সংযোগ ছিল কম। আয়ও কম ছিল। ন্যাবার্ড এদের সম্ভাবনা অনুভব করেছে। নাবার্ড এই ওএফপিও-কে মোবাইল ভ্যান দিয়েছে। এতে নকশিকাঁথার কাজ এবং হাতে বানানো গয়নায় বাজার সম্প্রসারিত করেছে। ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মেলবন্ধন-ও এখানে স্পষ্ট।
সুতীর্থ গ্লোবাল প্রডিউসার কোম্পানি লিমিটেড গ্রামীণ ভারত মহোৎসব পশ্চিমবঙ্গ ২০২৫-এ তাদের পণ্য প্রদর্শন করছে এবার। এই মৃলাটি নাবার্ড আয়োজিত ১০ দিনের মেলা। এটি গ্রামের সজীবতা, উদ্ভাবন ও উদ্যোগী মানসিকতা কে তুলে ধরেছে নিপুণভাবে। মেলা শুরু হয়েছে কলকাতার নিউ টাউনৈ, ১৪ নভেম্বর ২০২৫-এ এবং চলবে ২৩ নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত।
মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৭০-এর বেশি স্টল রয়েছে। স্টলগুলি স্বনির্ভর গোষ্ঠী, কৃষক উৎপাদক সংস্থা, অফ-ফার্ম প্রডিউসার সংস্থা এবং গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের। কারিগররা প্রদর্শন করছেন নানা ধরণের ঐতিহ্যবাহী শিল্পকর্ম, জৈব পণ্য, বস্ত্র, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও পরিবেশবান্ধব উদ্ভাবন।
সমবায় উদ্যোগকে বিশেষ সম্মান জানিয়ে ন্যাবার্ড একটি সমবায় প্যাভিলিয়ন করেছে। এখানে আছে ১০-টি স্টল। এতে প্রাথমিক কৃষি ঋণ সমিতি, দুগ্ধ $সমবায় এবং বহুমুখী সমবায়ের অবদান তুলে ধরা হয়েছে। এই উদ্যোগটি আন্তর্জাতিক সমবায় বর্ষ উদযাপনের অংশ।
ন্যাবার্ডের চিফ জেনারেল ম্যানেজার শ্রী পি কে ভরদ্বাজ বলেছেন, গ্রামীন ভারত মহোৎসব শুধু প্রদর্শনী নয়, একটি আন্দোলন। ন্যাবার্ড গ্রামীণ ভারতের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, বাজার সংযোগ ও সমবায় শক্তিকে বাড়িয়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি সবাইকে এই পরিবর্তনকারীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি গ্রামীণ ভারত ও আত্মনির্ভর ভারতের ধারণার উদযাপনের কথাও বলেছেন।
দেশের ১৯-টি রাজ্যের ১৫০-এরও বেশি কারিগর অংশ নিচ্ছেন এই মেলায়। তাঁরা প্রদর্শন করেছেন কাঁথা সেলাই করা শাড়ি, তুষার রেশমের শাড়ি, কোসা সিল্ক, কলমকারি হাতে বোনা শাড়ি, কাঠ খোদাই, হস্তনির্মিত গয়না, সোহারাই শিল্প, পাট ও বাঁশজাত পণ্য, এবং হায়াসিন্থ ও শীতল পাতার কারিগরি পণ্য।
এই বছর মেলায় ১৪-টি স্বীকৃত জিআই পণ্যের প্রদর্শনী হয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের চারটি জিআই পণ্য রয়েছে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন রাজ্যের সাংস্কৃতিক ও কারিগরি ঐতিহ্য ফুটে ওঠে। এছাড়া, ন্যাবার্ড-সমর্থিত এবিআইএফ-আইআইটি খড়গপুর থেকে সমর্থন পাওয়া স্টার্টআপ এবং কেভিআইসি, টিআরআইএফইডি ও এছআরএলএম দ্বারা মনোনীত কারিগররা নির্বাচিত হাতে বোনা ও ঐতিহ্যবাহী পোশাক উপস্থাপন করছেন।
হুগলি জেলার সমাজিক পহল ফাউন্ডেশন একটি উদ্ভাবনী বেসরকারি সংস্থা। তারা গ্রামীণ ক্ষমতায়ন ও সুস্থায়ী জীবিকার ক্ষেত্রে কাজ করছেন। তারা কচুরিপানা থেকে পরিবেশবান্ধব পণ্য বানাযন। কচুরিপানাকে কে অনেক সময় বর্জ্য হিসেবে ধরা হত। এখন থেকে সেটি উৎপাদনের উপকরণ হয়ে উঠেছে। এই উদ্যোগ পরিবেশগত সমস্যা মেটাতে সাহায্য করেছে, এবং পাশাপাশি, গ্রামীণ নারীদের নতুন আয়ের সুযোগ করে দিয়েছে।
পরিবর্তনের এই যাত্রা শুরু হয় ন্যাবার্ডের বিভিন্ন প্রকল্পের সহায়তায়। এর মধ্যে রয়েছে জীবনযাপন ও উদ্যোগ উন্নয়ন প্রকল্প, 'মাইক্রো এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম' এবং প্রকল্পের নথীপত্র তৈরির সহায়তা। এর ফলে, কারিগরদের দক্ষতা উন্নয়ন, পণ্যের বৈচিত্র্যকরণ এবং উদ্যোগের শিক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়ছে। প্রথমে কারিগররা কচুরিপানা থেকে গৃহস্থালি সামগ্রী বানাতেন। নাবার্ডের সহায়তায় তারা এখন শহর ও রপ্তানি বাজারের চাহিদা মেটাতে ব্যাগ, ম্যাট, ঝুড়ি ও সজ্জাসামগ্রী তৈরি করছেন।
আরেকটি উদাহরণ পূর্ব বর্ধমান জেলার সফল কারিগর শ্রীমতি ওয়াসমিন বেগম। তিনি দৃঢ় সংকল্প ও দক্ষতায় ফ্যাশনে নিজের পরিচয় তৈরি করেছেন। সীমিত সম্পদ নিয়ে তিনি কাজ শুরু করেছিলেন। স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে বাইরের ক্রেতাদের কাছে পৌঁছানো তাঁর জন্য রীতিমত কঠিন ছিল। নাবার্ড-সমর্থিত রুরাল মার্টে জে কে ফ্যাশন বুটিকের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তিনি মেলার মাধ্যমে গ্রাহক পেয়েছেন। মেলায় অংশগ্রহনের ফলে তিনি চলতি নকশা ও গ্রাহকদের পছন্দ বোঝার প্রশিক্ষণ পান। এখন তাঁর বুটিকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কাছ থেকে সংগ্রহ করা সুন্দর পোশাক সরবরাহ করা হয়। নাবার্ডের সহায়তা তাঁর আয় বাড়িয়েছে এবং তাঁকে আত্মবিশ্বাস প্রদান করেছে।
এ ধরনের গল্প প্রমাণ করে যে, সঠিক সহায়তা ও বাজার সংযোগ থাকলে গ্রামীণ কারিগররা তাঁদের জীবন পরিবর্তন করতে পারেল এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারেন।


***
SSS/RS/20
(रिलीज़ आईडी: 2192370)
आगंतुक पटल : 14
इस विज्ञप्ति को इन भाषाओं में पढ़ें:
English