নয়াদিল্লি, ১৪ অক্টোবর ২০২৫: ১৩ অক্টোবর থেকে আসামের গুয়াহাটিতে শুরু হয়েছে মশলা ও রন্ধনসম্পর্কীয় ভেষজ সংক্রান্ত কোডেক্স কমিটির ৮ম অধিবেশন, যা বিশ্বব্যাপী মশলা খাতে ভারতের ভূমিকাকে তুলে ধরেছে। বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রকের অধীনে মশলা বোর্ড কর্তৃক আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ২৭টি দেশের ৮১ জন প্রতিনিধি উপস্থিত হয়ে মশলা ও রন্ধনসম্পর্কীয় ভেষজের জন্য আন্তর্জাতিক মান নিয়ে আলোচনা করেছেন৷

অধিবেশনের উদ্বোধন করে আসামের রাজ্যপাল শ্রী লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্য আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদের স্বাগত জানান এবং উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য এবং কৃষি ঐতিহ্য’র কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সিসিএসসিএইচ-এর ৮ম অধিবেশন সহযোগিতামূলক আলোচনার মাধ্যমে মশলার মান উন্নত করার জন্য নতুন পথ উন্মোচন করবে এবং নিরাপদ, সুস্থায়ী এবং সকলের জন্য উপকারী খাদ্য ব্যবস্থার ভিত্তিকে শক্তিশালী করবে। উদীয়মান মশলা কেন্দ্র হিসেবে আসাম এবং উত্তর-পূর্বের ক্রমবর্ধমান সম্ভাবনার উপরও জোর দেন রাজ্যপাল৷ তিনি জোর দিয়ে বলেন, বর্ধিত প্রক্রিয়াকরণ সুবিধা, মূল্য সংযোজন এবং রপ্তানি প্রচারণার উদ্যোগ কৃষকদের আয়কে উন্নত করছে এবং এই অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে।

শ্রী আচার্য ভারতের মশলা মূল্য শৃঙ্খলকে শক্তিশালী করার, দেশীয় মানকে বৈশ্বিক মানদণ্ডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার এবং বিশ্বব্যাপী ভোক্তাদের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা এবং গুণমান নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ভারত সরকার এবং মশলা বোর্ডের যৌথ প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।

সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে, মশলা বোর্ডের সচিব, শ্রীমতী পি. হেমলতা, আইএএস বলেন, মশলা দীর্ঘকাল ধরে বিশ্ব বাণিজ্য, সংস্কৃতি এবং রন্ধনসম্পর্কীয় ঐতিহ্যকে গড়ে তুলেছে। তিনি বলেন, কালো মরিচ, এলাচ, হলুদ, দারুচিনি এবং লবঙ্গের মতো মশলা কেবল স্বাদই নয় বরং সভ্যতার সাংস্কৃতিক সারমর্ম এবং ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে। খাদ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতির মধ্যে সুসংগত এবং বিজ্ঞান-ভিত্তিক বৈশ্বিক মানদণ্ডের ক্রমবর্ধমান প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে, তিনি বলেন, নিরাপত্তা, বাণিজ্যে ন্যায্যতা এবং ভোক্তাদের আস্থা নিশ্চিত করার জন্য একীভূত মানদণ্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বব্যাপী মশলা শিল্পে স্বচ্ছতা, দক্ষতা এবং স্থায়িত্ব নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কোডেক্স মানদণ্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বিশেষ ভাষণে, ভারতের খাদ্য নিরাপত্তা ও মান কর্তৃপক্ষ (এফএএসএসআই) এর সিইও শ্রী রজিত পুনহানি আলোচনা করতে গিয়ে অমশলা খাতের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ২০২৪ সালে ২৮.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের বিশ্বব্যাপী মশলা শিল্প ২০৩৩ সালের মধ্যে ৪১.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ ভোক্তা সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং ন্যায়সঙ্গত বাণিজ্য প্রচারের জন্য সুসংগত, বিজ্ঞান-ভিত্তিক খাদ্য মান নির্ধারণের গুরুত্বের উপর জোর দেন তিনি৷

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মশলা ও রন্ধনসম্পর্কীয় ভেষজ সংক্রান্ত কোডেক্স কমিটির চেয়ারপারসন ডঃ এম.আর. সুদর্শন; মশলা বোর্ডের পরিচালক (গবেষণা) এবং সিসিএসসিএইচ সচিবালয়ের প্রধান ডঃ এ.বি. রেমা শ্রী; মশলা বোর্ডের পরিচালক শ্রী বি.এন. ঝা; এবং মশলা বোর্ডের পরিচালক শ্রী ধর্মেন্দ্র দাস। ঊর্ধ্বতন বিজ্ঞানী, মশলা বোর্ড এবং এফএএসএসআই এর কর্মকর্তারা এবং কোডেক্স সদস্য দেশগুলির প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

ভারতের উদ্যোগে ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত, মশলা ও রন্ধনসম্পর্কীয় ভেষজ সংক্রান্ত কোডেক্স কমিটি এফএকিউ এবং হু-এর কোডেক্স অ্যালিমেন্টেরিয়াস কমিশনের অধীনে কাজ করে, ভারতীয় মশলা বোর্ড, এর সচিবালয় হিসেবে কাজ করে। এখন পর্যন্ত, কোডেক্স মরিচ, হলুদ, জিরা, জায়ফল, এলাচ এবং জাফরান সহ ১৬টি মশলার মানদন্ড চূড়ান্ত করেছে। চলমান অধিবেশনে বড় এলাচ, মিষ্টি মারজোরাম, দারুচিনি এবং শুকনো ধনে বীজের জন্য নতুন মান তৈরির উপর আলোকপাত করা হবে।

সিসিএসসিএইচ এর এই অধিবেশন সপ্তাহব্যাপী চলবে, যেখানে আন্তর্জাতিক মশলা খাতে বৈশ্বিক মান সামঞ্জস্য করা, স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং সুস্থায়ী বাণিজ্য অনুশীলন প্রচারের উপর আলোকপাত করা হবে।

*****

PS/DM

(रिलीज़ आईडी: 2179481) आगंतुक पटल : 13