নয়াদিল্লি, ৩ অক্টোবর, ২০২৫: যুব বিকাশের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী উদ্যোগ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল চৌঠা অক্টোবর সকাল ১১ টায় নতুন দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে ৬২,০০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের বিভিন্ন যুবমুখী উদ্যোগের সূচনা করবেন। এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী আয়োজিত জাতীয় দক্ষতা সমাবর্তনের চতুর্থ সংস্করণ কৌশল দীক্ষান্ত সমারোহও অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে দক্ষতা উন্নয়ন ও উদ্যোক্তা মন্ত্রকের অধীনে শিল্প প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের ৪৬ জন সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয়দের সম্মানিত করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী ৬০,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে পিএম-সেতু প্রধানমন্ত্রী দক্ষতা উন্নয়ন এবং উন্নত আইটিআই-এর মাধ্যমে কর্মসংস্থানের পরিবর্তন) প্রকল্পের সূচনা করবেন। এই কেন্দ্রীয় প্রকল্পে ২০০টি হাব আইটিআই এবং ৮০০টি স্পোক আইটিআই-এর সমন্বয়ে হাব-এন্ড-স্পোক মডেলে সারা দেশে ১,০০০টি সরকারি আইটিআই-এর মানোন্নয়নের পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রতিটি হাব গড়ে চারটি স্পোকের সঙ্গে যুক্ত হবে, উন্নত পরিকাঠামো, আধুনিক বাণিজ্য, ডিজিটাল লার্নিং সিস্টেম এবং ইনকিউবেশন সুবিধাগুলিতে সজ্জিত ক্লাস্টার তৈরি করবে। অ্যাঙ্কর ইন্ডাস্ট্রি পার্টনাররা বাজারের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ফলাফল-ভিত্তিক দক্ষতা নিশ্চিত করে এই ক্লাস্টারগুলি পরিচালনা করবে। হাবগুলিতে উদ্ভাবনী কেন্দ্র, প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণ সুবিধা, উৎপাদন ইউনিট এবং প্লেসমেন্ট পরিষেবাও থাকবে, অন্যদিকে স্পোকগুলি প্রবেশাধিকার সম্প্রসারণের দিকে মনোনিবেশ করবে। সম্মিলিতভাবে, পিএম-সেতু ভারতের আইটিআই বাস্তুতন্ত্রকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করবে, বিশ্ব ব্যাঙ্ক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্কের আর্থিক সহায়তায় এটিকে সরকারি মালিকানাধীন কিন্তু শিল্প-পরিচালিত করে তুলবে। এই প্রকল্প রূপায়ণের প্রথম পর্যায়ে পাটনা ও দারভাঙ্গায় আইটিআই-গুলির ওপর বিশেষ নজর দেওয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রী ৩৪টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ৪০০টি নবোদয় বিদ্যালয় এবং ২০০টি একলব্য মডেল আবাসিক বিদ্যালয়ে ১২০০টি বৃত্তিমূলক দক্ষতা পরীক্ষাগারের উদ্বোধন করবেন। এই পরীক্ষাগারগুলি প্রত্যন্ত ও উপজাতি এলাকার ছাত্রছাত্রীদের তথ্যপ্রযুক্তি, মোটরগাড়ি, কৃষি, ইলেকট্রনিক্স, লজিস্টিক এবং পর্যটনের মতো ১২টি উচ্চ চাহিদার ক্ষেত্রে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেবে। জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০২০ এবং সি. বি. এস. ই পাঠ্যক্রমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, এই প্রকল্পে ১,২০০ জন বৃত্তিমূলক শিক্ষককে শিল্প-প্রাসঙ্গিক শিক্ষা প্রদান এবং কর্মসংস্থানের জন্য একটি প্রাথমিক ভিত্তি তৈরি করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

এই কর্মসূচির একটি বিশেষ জোর বিহারের রূপান্তরকারী প্রকল্পগুলির উপর থাকবে, যা রাজ্যের সমৃদ্ধ উত্তরাধিকার এবং তারুণ্যের শক্তির প্রতিফলন দেখাবে। প্রধানমন্ত্রী বিহারের পুনর্গঠিত মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয় স্বয়ম সহায়তা ভাতা যোজনার সূচনা করবেন, যার অধীনে প্রতি বছর প্রায় পাঁচ লক্ষ স্নাতক যুবক-যুবতী বিনামূল্যে দক্ষতা প্রশিক্ষণের পাশাপাশি দুই বছরের জন্য মাসিক ১০০০ টাকা করে ভাতা পাবেন। তিনি বিহার স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড স্কিমেরও সূচনা করবেন, যা উচ্চ শিক্ষার আর্থিক বোঝা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে চার লক্ষ টাকা পর্যন্ত সম্পূর্ণ সুদমুক্ত শিক্ষা ঋণ প্রদান করবে। এই প্রকল্পের আওতায় তিন লক্ষ বিরানব্বই হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী ইতিমধ্যেই ৭৮৮০ কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে। রাজ্যে যুব ক্ষমতায়নকে আরও শক্তিশালী করতে প্রধানমন্ত্রী একটি বিধিবদ্ধ কমিশন বিহার যুব আয়োগ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন।, বিহারে ১৮ থেকে ৪৫বছর বয়সীদের কল্যাণে বিহার যুব আয়োগ উদ্বোধন করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী বিহারে জন নায়েক কর্পূরী ঠাকুর দক্ষতা বিশ্ববিদ্যালয়েরও উদ্বোধন করবেন, যা বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতামূলক কর্মশক্তি তৈরি করতে শিল্পমুখী কোর্স এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রদানের পরিকল্পনা করেছে।

উচ্চশিক্ষার সুযোগ আরও উন্নত করার লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পিএম- উষা (প্রধানমন্ত্রী উচ্চতর শিক্ষা অভিযান)'এর অধীনে বিহারের চারটি বিশ্ববিদ্যালয়-পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়, মাধেপুরার ভূপেন্দ্র নারায়ণ মণ্ডল বিশ্ববিদ্যালয়, ছাপড়ার জয় প্রকাশ বিশ্ববিদ্যালয় এবং পাটনার নালন্দা মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষা ও গবেষণা সুবিধার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এই প্রকল্পগুলির জন্য মোট বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১৬০ কোটি টাকা। এর ফলে ২৭,০০০ এরও বেশি ছাত্র-ছাত্রী উপকৃত হবে। এতে থাকবে আধুনিক একাডেমিক পরিকাঠামো, উন্নত পরীক্ষাগার, হোস্টেল এবং বহুমুখী শিক্ষার সুযোগ।

প্রধানমন্ত্রী পাটনার এনআইটি-র বিহতা ক্যাম্পাস জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। ৬,৫০০ জন শিক্ষার্থীর জন্য ক্যাম্পাসে একটি ৫জি ইউজ কেস ল্যাব, ইসরোর সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত স্পেসের জন্য একটি আঞ্চলিক একাডেমিক সেন্টার এবং একটি ইনোভেশন এবং ইনকিউবেশন সেন্টার সহ উন্নত সুবিধা রয়েছে যা ইতিমধ্যে নয়টি স্টার্ট-আপকে সমর্থন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বিহার সরকারের ৪ হাজারেরও বেশি নবনিযুক্ত প্রার্থীকে নিয়োগপত্র বিতরণ করবেন। মুখ্যমন্ত্রী বালক/বালিকা বৃত্তি প্রকল্পের আওতায় নবম ও দশম শ্রেণির ২৫ লক্ষ ছাত্রছাত্রীকে প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তরের মাধ্যমে ৪৫০ কোটি টাকার বৃত্তি প্রদান করবেন।

যে উদ্যোগগুলি চালু করা হবে তা ভারতের যুবকদের জন্য উল্লেখযোগ্য সুযোগ তৈরি করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সুসংহত শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্যোক্তা এবং উন্নত পরিকাঠামোকে একীভূত করে যা দেশের অগ্রগতির জন্য একটি দৃঢ় ভিত্তিকে সমর্থন করার লক্ষ্য রাখে। বিহারের উপর বিশেষ দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, রাজ্যটি দক্ষ কর্মশক্তির কেন্দ্র হিসাবে বিকশিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা আঞ্চলিক ও জাতীয় উভয় ক্ষেত্রেই বিকাশে অবদান রাখবে।

*****

PS/PKS/KMD