নতুন দিল্লি, ১৫ আগষ্ট, ২০২৫।। ৭৯তম স্বাধীনতা দিবসে, প্রধানমন্ত্রী মোদী জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে গিয়ে, ভারতের আত্মনির্ভরতা এবং রূপান্তরের যাত্রার কথা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, গত এক দশক ধরে ভারত সংস্কার, কর্মক্ষমতা এবং রূপান্তরের দিকে এগিয়ে চলেছে, কিন্তু এখন আরও বেশি শক্তির সাথে এগিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, সরকার একটি আধুনিক, দক্ষ এবং নাগরিক-বান্ধব বাস্তুতন্ত্র তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেখানে আইন, বিধি এবং প্রক্রিয়াগুলি সরলীকৃত করা হবে, উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করা হবে এবং প্রত্যেক ভারতীয় একটি বিকশিত ভারত গঠনে অবদান রাখতে পারবে।

আইন সরলীকরণ এবং সম্মতি
প্রধানমন্ত্রী মোদী তার ভাষণের শুরুতে বলেন, গত কয়েক বছর ধরে সরকার সংস্কারের একটি ঐতিহাসিক ধারা গ্রহণ করেছে৷ ৪০,০০০-এরও বেশি অপ্রয়োজনীয় সম্মতি বাতিল করেছে এবং ১,৫০০-এরও বেশি পুরনো আইন বাতিল করেছে। নাগরিকদের স্বার্থকে সর্বদা অগ্রাধিকার দিয়ে সংসদে আরও কয়েক ডজন আইন সরলীকরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র সাম্প্রতিক অধিবেশনেই, ২৮০টিরও বেশি বিধান অপসারণ করা হয়েছে, যার ফলে প্রতিটি ভারতীয়ের জন্য প্রশাসন সহজ এবং সহজলভ্য হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন যে, সংস্কার কেবল অর্থনীতির বিষয় নয়, এটি নাগরিকদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার রূপান্তরের একটি বিষয়ও।

তিনি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্যগুলির বিষয় তাঁর ভাষণে তুলে ধরেন৷ এগুলি যেমন, আয়কর সংস্কার এবং উপস্থিতিহীন মূল্যায়ন, ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ এবং দক্ষ করে তোলা, ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক আয়ের জন্য শূন্য কর এর এমন একটি সুবিধা যা অনেকেই কয়েক বছর আগেও কল্পনা করতে পারেননি ও ভারতীয় ন্যায় সংহিতার সাথে পুরানো ফৌজদারি আইন প্রতিস্থাপন, ন্যায়বিচার এবং আইনি পদ্ধতি সহজীকরণ৷

তিনি বলেন, এই সংস্কারগুলি একটি আধুনিক, নাগরিক-কেন্দ্রিক সরকারের ইঙ্গিত, যেখানে সাধারণ মানুষ স্বাচ্ছন্দ্য, ন্যায্যতা এবং ক্ষমতায়নকে উপভোগ করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন যে, ভারত কাঠামোগত, নিয়ন্ত্রক, নীতি, প্রক্রিয়া এবং পদ্ধতিগত সংস্কারের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷ সরকার এমন একটি দেশ গড়ে তুলছে যেখানে শাসন জনগণের জন্য কাজ করে, বিপরীতভাবে নয়।

উদ্যোক্তা এবং এমএসএমই-দের ক্ষমতায়ন

সরকারের সংস্কারের লক্ষ্য হল স্টার্টআপ, এমএসএমই এবং উদ্যোক্তাদের জন্য সম্মতি খরচ কমানো, একই সাথে পুরনো আইনি বিধানের ভয় থেকে মুক্তি নিশ্চিত করা। এটি ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির জন্য আরও অনুকূল পরিবেশ তৈরি করবে এবং উদ্ভাবন এবং অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতাকে উৎসাহিত করবে।

পরবর্তী প্রজন্মের সংস্কার এবং টাস্ক ফোর্স

প্রধানমন্ত্রী মোদী পরবর্তী প্রজন্মের সংস্কারের জন্য একটি টাস্ক ফোর্স গঠনের কথা ঘোষণা করেছেন, যা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পর্কিত সমস্ত বর্তমান আইন, নিয়ম এবং পদ্ধতিকে মূল্যায়ন করবে। টাস্ক ফোর্স একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি নিয়ে কাজ করবে, যেমন-
* স্টার্টআপ, এমএসএমই এবং উদ্যোক্তাদের জন্য সম্মতি খরচ কমানো৷
* স্বেচ্ছাচারী আইনি পদক্ষেপের ভয় থেকে মুক্তি প্রদান৷
* ব্যবসা সহজ করার জন্য আইনগুলিকে সুবিন্যস্তকরণ নিশ্চিত করা৷
এই সংস্কারগুলির লক্ষ্য হল উদ্ভাবন, উদ্যোক্তা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য একটি সহায়ক বাস্তুতন্ত্র তৈরি করা।

পরবর্তী প্রজন্মের জিএসটি সংস্কার

প্রধানমন্ত্রী মোদী এই দীপাবলির মধ্যে পরবর্তী প্রজন্মের জিএসটি সংস্কার চালু করার কথা ঘোষণা দিয়েছেন, যার লক্ষ্য হবে নিত্যব্যবহার্য জিনিসপত্রের উপর কর কমানো। তিনি বলেন, সরকার পরবর্তী প্রজন্মের জিএসটি সংস্কার নিয়ে আসবে, যা সাধারণ মানুষের উপর করের বোঝা কমিয়ে আনবে। এটি আপনার জন্য একটি দীপাবলি উপহার হবে৷ প্রধানমন্ত্রীর মতে, এই সংস্কারগুলি নাগরিকদের সরাসরি উপকৃত করবে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে উদ্দীপিত করবে।

ভবিষ্যতের জন্য দৃষ্টিভঙ্গি

প্রধানমন্ত্রী মোদী পুনরায় একথা উল্লেখ করেন যে, অন্যদের সীমাবদ্ধতার উপর মনোযোগ দেওয়ার পরিবর্তে, ভারতকে তার নিজস্ব অগ্রগতির রেখা প্রসারিত করতে হবে। ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক স্বার্থের বিশ্বে, ভারতের সক্ষমতা শক্তিশালীকরণ, সুযোগ সম্প্রসারণ এবং নাগরিকদের ক্ষমতায়নের উপর মনোযোগ দিতে হবে। এই সংস্কারগুলি প্রশাসনিক রূপান্তরের একটি ত্বরান্বিত পর্যায়ের সূচনা করে, ভারতকে আরও স্থিতিস্থাপক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতে নিশ্চিত করবে৷

 
*** 

KMD/DM

(Release ID: 2156990)