উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

৪ লাখ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগের প্রস্তাব: রাইজিং নর্থ ইস্ট সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন

রাইজিং নর্থ ইস্ট সম্মেলনে প্রায় ৪.৩ লাখ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে যা নর্থ ইস্টকে ভারতের পরবর্তী অর্থনৈতিক শক্তি কেন্দ্রে পরিণত করতে প্রস্তুত করেছে, বলেছেন শ্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া

Posted On: 25 MAY 2025 4:49PM by PIB Agartala

নয়াদিল্লী, ২৫ মে ২০২৫, পিআইবি।। বিশাল বিনিয়োগের ঘোষণার মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছে রাইজিং নর্থ ইস্ট ইনভেস্টরস সামিট, যা ২৩-২৪ মে ২০২৫ তারিখে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার (২৪ মে) এর সমাপ্তি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি ২৩ মে এই সামিটের উদ্বোধন করেছিলেন। বিদায়ী ভাষণে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন্দ্রীয় যোগাযোগ এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রকের (এমডোনার) দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী শ্রী জ্যোতিরাদিত্য এম. সিন্ধিয়া বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চল একটি বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব এবং পারস্পরিক স্বার্থের কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তিনি জানান, রাইজিং নর্থ ইস্ট ইনভেস্টরস সামিট ২০২৫, এ ৪.৩ লাখ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করেছে, যা উত্তর-পূর্বাঞ্চল (এনইআর) কে ভারতের পরবর্তী অর্থনৈতিক শক্তির কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য মঞ্চ তৈরি করেছে।

মন্ত্রী বলেন, " জাপান থেকে ইউরোপ এবং আসিয়ান দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে আমরা ৮০টিরও বেশি দেশের প্রতিনিধিদের এখানে স্বাগত জানিয়েছি, এবং সেখানে একটি সর্বসম্মত মত ছিল: ভারতের ভবিষ্যৎ উত্তর-পূর্বে।"

শ্রী জ্যোতিরাদিত্য এম. সিন্ধিয়া এরজন্যে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীর প্রশংসা করেছেন। শুধুমাত্র উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ব্যাপক সম্ভাবনাকে স্বীকার করার জন্যই নয়, বরং একে আলিঙ্গন করার জন্যও। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীর সরকারের উদ্যোগ ছাড়া এটি সম্ভব হতো না এবং এই এলাকার প্রতি তাঁর গভীর ও আন্তরিক সংযোগ রয়েছে। স্বাধীনতার পর ছয় দশক ধরে, সরকারগুলো এই ভূমির বিরাট সম্ভাবনাকে স্বীকার করতে ব্যর্থ হয়েছে। এটি একটি ভূমি যা একসময় ভারতের জিডিপিতে প্রায় ২০% অবদান রেখেছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শুধু এই সম্ভাবনাকে বুঝতেই নয়, তিনি এটিকে গ্রহণ করেছেন।”

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদির নেতৃত্বে, আমরা একটি "সমগ্র সরকারি" পন্থা গ্রহণ করেছি। ডোনার মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রক প্রধান ক্ষেত্রগুলিতে আটটি উচ্চস্তরের কর্মশক্তি গঠন করেছে। এগুলি হলো : কৃষি, ক্রীড়া, বিনিয়োগ প্রচার, পর্যটন, অর্থনৈতিক করিডোর, পরিকাঠামো, বস্ত্র ও হস্তশিল্প, এবং পশুপালন, যেগুলি প্রতিটি রাজ্যকে তাদের নিজস্ব রোডম্যাপ তৈরি করার সুযোগ করে দিচ্ছে।

বিভিন্ন অংশীদারদের নিয়ে এই অঞ্চলে বিনিয়োগ টানতে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজে বের করতে, তাদেরকে উৎসাহিত করতে, বিদেশী কূটনীতিক এবং রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ডোনার মন্ত্রক । গত এক বছরে, মন্ত্রক এই বিষয়ে একটি ব্যাপক জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সংযোগ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । এসব প্রধান উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে ভারতের প্রধান শহরগুলোতে নয়টি স্থানীয় রোডশো'র আয়োজন, ৯৫টিরও বেশি দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে রাষ্ট্রদূতদের বৈঠক, ছয়টি রাজ্যে গোলটেবিল বৈঠক, ছয়টি -নির্দিষ্ট শিল্পের সঙ্গে যোগাযোগ এবং পাবলিক সেক্টর ইউনিটস, শিল্প চেম্বার এবং কর্পোরেটদের সঙ্গে অসংখ্য পরামর্শমূলক কর্মসূচি।

শ্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বলেছেন, “ ৪.৩০ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রস্তাব এর মাধ্যমে এই আলোচনা সত্যি সত্যি ফলপ্রসূ হয়েছে।”

উত্তর-পূর্ব সম্মেলন ২০২৫ সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে মন্ত্রী বলেছেন, ডোনার মন্ত্রক -এর সূচনা থেকে এমন বড় আকারের একটি বিনিয়োগ সম্মেলনের আয়োজন প্রথমবার হল । শুক্রবার, শিল্প নেতারা, যাদের মধ্যে রয়েছেন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি, আদানি গ্রুপ এর চেয়ারম্যান গৌতম আদানি, এবং  বেদান্ত গ্রুপ এর চেয়ারম্যান  অনিল আগরওয়াল। সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উত্তরপূর্বাঞ্চলে বিনিয়োগ সম্ভাবনা অন্বেষণের জন্য শিল্পপতিরা একত্রিত হয়ে ১,৫৫,০০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করার কথা ঘোষণা করেছেন।

এই অনুষ্ঠানে শ্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ডোনারের রাষ্ট্রমন্ত্রী  শ্রী সুকান্ত মজুমদার, পররাষ্ট্র মন্ত্রকের ব্রাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী পবিত্র মার্গেরেট, ত্রিপুরা সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী শ্রীমতি শান্তনা চাকমা, এমডোনার সচিব শ্রী চঞ্চল কুমার, ,এমডোনার এর যুগ্ম সচিব শ্রী অংশুমান দে, ডোনার এর স্ট্যাটাসটিক্যাল এডভাইসর শ্রী ধর্মবীর ঝা এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা।

শুক্রবার, মুকেশ আম্বানি আগামী পাঁচ বছরে কৃষি, টেলিযোগাযোগ, ডিজিটাল পরিষেবা এবং স্থানীয় উদ্যোগ উন্নয়নের জন্য ৭৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি আগামী এক দশকের জন্য অতিরিক্ত ৫০, ০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করেছেন, এবং বেদান্ত গ্রুপের চেয়ারম্যান অনিল আগরওয়াল উত্তর-পূর্বে ৩০, ০০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগের ঘোষণা করেছেন।

পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শ্রী পবিত্র মার্ঘেরিটা বলেছেন, “ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জির দৃষ্টিভঙ্গীর নেতৃত্বে গত এক দশকে উত্তর পূর্বের যে অসাধারণ রূপান্তর ঘটেছে, তা দেখে আমার মনে অশেষ গর্ব ও আনন্দ হয়।”

ঊত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত পনেরো দিনের সফর সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত ৭০০টির বেশি এ ধরনের সফর অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা আমাদের শাসন ব্যবস্থার  আরও কার্যকর, ফলাফল-নির্দেশিত এবং সত্যিকার অর্থে জনকেন্দ্রিক মডেলকে প্রতিফলিত করে।

ডোনার এর রাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, উত্তর-পূর্ব সম্মেলনকে দারুণ সফল করে তোলার জন্য তিনি কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, “গত দুই দিনে ভারত মণ্ডপম একটি জাতীয় মঞ্চে পরিণত হয়েছে, যা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কণ্ঠস্বর, দৃষ্টিভঙ্গি এবং বিশাল সম্ভাবনাকে জোরালোভাবে তোলে ধরেছে ।”

তিনি বলেন, “গুয়াহাটি থেকে মুম্বাই, হায়দ্রাবাদ থেকে কলকাতা, নয়টি বিনিয়োগকারী রোড শো, দুটি অ্যাম্বাসেডর মিট এবং ১৩১টিরও বেশি বিনিয়োগকারী এবং ২৪ জন শিল্প সদস্যের সাথে আলোচনা উত্তর-পূর্বের উন্নয়নের বর্ণনাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করছে।”  উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাম্প্রতিক বছরগুলিতে দেখা উন্নয়নের উপর একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিতে গিয়ে মন্ত্রী বলেছেন, “এই অঞ্চলের জাতীয় হাইওয়ে ২০১৪ সালে ১০,৯০৫ কিলোমিটার থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ১৬,২০৭ কিলোমিটারে বেড়ে গেছে। মোট ৬৯৪.৫ মেগাওয়াট শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা এবং ১০,০০০ কিলোমিটারেরও বেশি সঞ্চালন এবং বিতরণ লাইন যুক্ত করা হয়েছে। ত্রিশটি বড় বিমান প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে, এবং ২০১৪ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিমানবন্দরগুলি ৯ থেকে বেড়ে ১৭ হয়েছে।”

ডোনার সচিব শ্রী চঞ্চল কুমার বলেছেন, উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি শুধুমাত্র তাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত নয়, বরং প্রাকৃতিক সম্পদ, পর্যটন, ক্রীড়া এবং সঙ্গীতের ক্ষেত্রে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, এই সমস্ত বিষয়কে দেখে বলা যায় যে ভবিষ্যত উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির। আমরা উত্তর-পূর্বের বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নের জন্য আটটি রাজ্যের বিভিন্ন শহরে রোড শো, রাষ্ট্রদূতদের গোল টেবিল এবং রাজ্য গোল টেবিলের আয়োজন করেছি। তিনি আরও যোগ করেন যে, গত মাসে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রদূতদের সভায় প্রায় ৭৬টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন এবং মন্ত্রক ৪ লাখ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগের প্রস্তাব পেয়েছে।

স্ট্যাটাসটিক্যাল এডভাইসর শ্রী ধর্মবীর ঝা বিনিয়োগকারীদের এই অঞ্চলে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখানোর জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, “আজ, আমরা রাইজিং নর্থ ইস্ট সামিটের মাধ্যমে আমাদের কঠোর পরিশ্রমের চূড়ায় পৌঁছেছি।” তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ৪.৩০ লাখ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া গেছে।

উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রক কর্তৃক সংগঠিত বিনিয়োগ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদের অধিবেশন, সরকারি বৈঠক, ব্যবসায়ীদের বৈঠক, স্টার্টআপ এবং বিনিয়োগ প্রচারের জন্য রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রক কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন নীতিমালা ও সংশ্লিষ্ট উদ্যোগের প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।

শুক্রবার অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে, প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছিলেন যে, গত এক দশকে উত্তর-পূর্বে ২১,০০০ কোটি টাকা শিক্ষাক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা হয়েছে। তিনি কিছু গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নের কথা উল্লেখ করেছিলেন, যার মধ্যে ৮০০ এর বেশি নতুন স্কুল প্রতিষ্ঠা, এই অঞ্চলের প্রথম এইমস, নয়টি নতুন মেডিকেল কলেজ এবং দুটি নতুন আইআইআইটিঅন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন যে উত্তর-পূর্ব বর্তমানে বিভিন্ন খাতে শীর্ষ মানের প্রতিভা উঠে আসছে এবং শিল্প ও বিনিয়োগকারীদের এই অঞ্চলের বিশাল সম্ভাবনার সদ্ব্যবহার করতে উৎসাহিত করেছিলেন তিনি।

শনিবার তার সমাপনী মন্তব্যে কেন্দ্রীয় ডোনার মন্ত্রী শ্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বলেছেন, “আমরা বি২জি এবং বি২বি আলোচনা  চালিয়ে যাব, যেখানে ডোনার মন্ত্রক বিনিয়োগকারীদের এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে একটি সেতুর ভূমিকা পালন করবে — যাতে এটা নিশ্চিত করা যায় যে প্রতিটি অনুমোদিত প্রকল্প দ্রুত বাস্তবে রূপ নেবে। আজ এখানে দাঁড়িয়ে, আমি আমাদের প্রতিশ্রুতির কথা পুনরায় উল্লেখ করছি: এখানে আলোচনা করা প্রতিটি মৌ, প্রতিটি প্রস্তাব ধারাবাহিকভাবে অনুসন্ধান করা হবে। উত্তর-পূর্বাঞ্চল, আমাদের এনইআর, এখন একটি নতুন অর্থনৈতিক বিপ্লবের এবং একটি নতুন অর্থনৈতিক পুনরুত্থানের যাত্রা শুরু করছে — যেখানে এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য ভারতের আন্তর্জাতিক গেটওয়েরূপে আবির্ভূত হবে।”



***


KMD/DM


(Release ID: 2131179)
Read this release in: English