জলশক্তি মন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

সংসদে প্রশ্ন : জল জীবন মিশনের আওতায় নলবাহিত পানীয় জল

Posted On: 13 MAR 2025 11:56AM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৩ মার্চ, ২০২৫

 

দেশের প্রতিটি গ্রামীণ পরিবারে নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ভারত সরকার রাজ্য / কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে জল জীবন মিশন রূপায়ণ করছে। 

জল জীবন মিশনের সূচনায় ২০১৯ সালের আগস্টে দেশে ৩.২৩ কোটি (১৬.৮ শতাংশ) গ্রামীণ পরিবারে নলবাহিত জলের সংযোগ ছিল। ০৯.০৩.২০২৫ পর্যন্ত পাওয়া হিসাবে জল জীবন মিশনের আওতায় আরও প্রায় ১২.২৮ কোটি গ্রামীণ পরিবারে পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়া গেছে। সব মিলিয়ে দেশের ১৯.৪২ কোটি গ্রামীণ পরিবারের মধ্যে ১৫.৫১ কোটি (৭৯.৯১ শতাংশ) পরিবারে নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছেছে। 

বিভিন্ন স্বনামধন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান / ব্যক্তি জল জীবন মিশনের ইতিবাচক প্রভাবের কথা বলেছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মতো জল জীবন মিশনের আওতায় সব পরিবারে নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছে গেলে প্রতিদিন ৫.৫ কোটি ঘন্টার সাশ্রয় হবে। এই সময়টা জল সংগ্রহের কাজে ব্যবহৃত হত। এর ফলে মহিলারা বিশেষভাবে উপকৃত হবেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এও বলেছে যে, সব বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছলে পেটের অসুখে প্রায় ৪ লক্ষ মৃত্যু এড়ানো যাবে। এতে ১ কোটি ৪০ লক্ষ প্রতিবন্ধকতা উত্তীর্ণ জীবন বছর যুক্ত হবে। নোবেলজয়ী অধ্যাপক মিশেল ক্রেমার এক গবেষণাপত্রে বলেছেন, সব পরিবারে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে গেলে পাঁচ বছরের নিচে শিশুমৃত্যুর হার ৩০ শতাংশ কমবে। এতে বছরে ১ লক্ষ ৩৬ হাজার শিশুর জীবন বাঁচবে। ব্যাঙ্গালোরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন আইএলও-র সঙ্গে তৈরি করা এক প্রতিবেদনে বলেছে, জল জীবন মিশনের রূপায়ণের ফলে ৫৯.৯ লক্ষ প্রত্যক্ষ ব্যক্তি-বর্ষ এবং ২.২ কোটি পরোক্ষ ব্যক্তি-বর্ষ কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। এছাড়া, এই মিশনের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১৩.৩ লক্ষ ব্যক্তি-বর্ষ প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। 

এই মিশনের আওতায় যেসব পরিকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে, সেগুলি যাতে দীর্ঘদিন ধরে অক্ষত থাকে এবং সেগুলিতে যোগান দেওয়া উপাদানের গুণমান ভালো হয়, সেজন্য অর্থ প্রদানের আগে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। গ্রামস্তরে যাতে এই পরিকাঠামোগুলিকে সবাই নিজেদের সম্পদ বলে মনে করেন সেজন্য পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের সবস্তরে স্থানীয় মানুষের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে প্রায় ৫.৩০ লক্ষ সাব-কমিটি গড়ে তোলা হয়েছে। এতে এই কমিটির ৫০ শতাংশ সদস্য মহিলা। এই কমিটি গ্রামে জল সরবরাহের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে তার রূপায়ণ, তার পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকছে। প্রতিটি গ্রামে পাঁচজন করে মহিলাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে জলের গুণমান পরীক্ষা করার কাজ দেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত ২৪.৮১ লক্ষ মহিলাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং ৮৯.৫৫ লক্ষ জলের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। গোষ্ঠী অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করতে ১৪ হাজারেরও বেশি অ-সরকারি সংস্থা, মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী, ট্রাস্ট, ফাউন্ডেশন প্রভৃতিকে নিযুক্ত করা হয়েছে। পানীয় জলের স্থানীয় উৎসগুলিকে দূষণমুক্ত রাখার জন্য জল জীবন মিশনের সঙ্গে এমজিএনআরইজিএস-এর মতো অন্য প্রকল্পগুলিকে যুক্ত করা হচ্ছে। এই কাজে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ অর্থ, সাংসদ ও বিধায়ক তহবিল, জেলা খনিজ উন্নয়ন তহবিল, কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি তহবিল প্রভৃতি ব্যবহার করা হচ্ছে। 

জল সরবরাহ প্রকল্পগুলির পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রকল্পগুলির মূলধনী ব্যয়ের ১০ শতাংশ সংশ্লিষ্ট গ্রামের রক্ষণাবেক্ষণ তহবিলে পাঠানো হচ্ছে।

জল যেহেতু রাজ্যের বিষয়, সেজন্য রাজ্য / কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে নিয়মিতভাবে জলের গুণমান পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে। এজন্য অনলাইনে জল জীবন মিশনের ওয়াটার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (ডব্লিউকিউএমআইএস) পোর্টাল খোলা হয়েছে। 

গৃহস্থালির বর্জ্য জল নিকাশির জন্য গ্রামীণ এলাকায় গর্ত খোঁড়ার কথা বলা হয়েছে। এজন্য জল জীবন মিশন ও অন্যান্য প্রকল্পের তহবিল ব্যবহার করা যাবে। 

খরাপ্রবণ এলাকাগুলিতে পানীয় জলের সমস্যা দূর করতে ভারত সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এর আওতায় সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে ৫০ বছরের সুদমুক্ত ঋণ দেওয়া হচ্ছে। এই কাজের জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে সমন্বয়ের লক্ষ্যে নোডাল অফিসার নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে কারিগরি জ্ঞান ও দক্ষ শ্রমশক্তির অভাব মেটাতে ‘নল জল মিত্র’ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। সুস্থিত জল ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে বৃষ্টির জল সংরক্ষণের জন্য জলশক্তি অভিযানের সূচনা হয় ২০২৩ সালে। এর মূল ভাবনা ছিল, ‘পানীয় জলের উৎসের সুস্থিতি’। ২০২৪ সালেও এই অভিযান চালানো হয়। সে বছর এর মূল ভাবনা হয়, ‘নারীশক্তি সে জলশক্তি’। 

লোকসভায় আজ এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে কেন্দ্রীয় জলশক্তি প্রতিমন্ত্রী শ্রী ভি সোমান্না এই তথ্য জানিয়েছেন।

 

SC/SD/DM.


(Release ID: 2111263) Visitor Counter : 14