প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী পরীক্ষা পে চর্চা ২০২৫ অনুষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে মত বিনিময় করেন

ভারতের প্রস্তাবের ভিত্তিতে রাষ্ট্রসঙ্ঘ ২০২৩ সালকে ‘আন্তর্জাতিক বাজরা বর্ষ’ (ইন্টারন্যাশনাল মিলেট ইয়ার) হিসেবে ঘোষণা করে এবং সারা বিশ্বে এর প্রসার ঘটায়: প্রধানমন্ত্রী

মরশুমি ফল অবশ্যই খেতে হবে, খাবার অবশ্যই সঠিকভাবে চিবিয়ে খেতে হবে, সঠিক খাবার অবশ্যই সঠিক সময়ে খেতে হবেঃ প্রধানমন্ত্রী

রুগ্নতা নেই এর অর্থ এই নয় যে আমরা স্বাস্থ্যবান, সুস্থতার ওপর নজর দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

আমাদের আরও উত্তম চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে, নিজেদের লড়াই নিজেদেরকেই চালিয়ে যেতে হবে, আপনার মধ্যে প্রশান্তি খুঁজতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠো, সম্মানের দাবি করবে না, সম্মান আদায় করতে হবে, চাওয়ার বদলে নিজে কার্য করে নেতৃত্ব দিয়ে যাও: প্রধানমন্ত্রী

শিক্ষার্থীরা রোবট নয়, পড়াশোনা সামগ্রিক বিকাশের জন্য, তাদের মনোজাগতিক ইচ্ছে অনুযায়ী অনুশীলনের স্বাধীনতা থাকা উচিতঃ প্রধানমন্ত্রী


পরীক্ষা সবকিছু নয়, জ্ঞান ও পরীক্ষা এক জিনিস নয়ঃ প্রধানমন্ত্রী

লেখার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবেঃ প্রধানমন্ত্রী

প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর অনুপম প্রতিভাকে আবিষ্কার ও পরিপোষণ করতে হবে, ইতিবাচকতার সন্ধান করতে হবে: প্রধান

Posted On: 10 FEB 2025 3:14PM by PIB Agartala

নয়াদিল্লি, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫: আজ নতুন দিল্লির সুন্দর নার্সারিতে পরীক্ষা পে চর্চা (পিপিসি)-র অষ্টম পর্বে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় মিলিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে একটি অনানুষ্ঠানিক আলাপচারিতায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এদিন ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তিল (তিল) দিয়ে তৈরি মিষ্টি বিতরণ করেছেন যা শীতকালে শরীর উষ্ণ রাখতে ঐতিহ্যগতভাবে পরিবেশন করা হয়।

বিকশিত হতে পুষ্টি জোগান

পুষ্টি প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন, রাষ্ট্রসঙ্ঘ ২০২৩ সালকে 'আন্তর্জাতিক বাজরা বর্ষ' হিসেবে ঘোষণা করে এবং ভারতের প্রস্তাবে রাষ্ট্রসঙ্ঘ সারা বিশ্বে এই কর্মসূচির প্রচার করেছে। তিনি আরও বলেন, ভারত সরকার পুষ্টি সম্পর্কে ব্যাপক সচেতনতা অবলম্বন করার জন্য জোরালোভাবে অনুরোধ করেছে, কারণ উপযুক্ত পুষ্টি অনেক রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বাজরা ভারতে একটি সুপারফুড হিসাবে পরিচিত। ভারতে শস্য, ফলের মতো অধিকাংশ বিষয়ই আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, একথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি নতুন শস্য ও মরশুম ঈশ্বরের উদ্দেশে উৎসর্গ করা হয় এবং ভারতের বেশিরভাগ জায়গায় এ নিয়ে উৎসব আয়োজিত হয়। তিনি বলেন, ঈশ্বরের কাছে নৈবেদ্য প্রসাদ হিসাবে বিতরণ করা হয়। শ্রী মোদী শিশুদের মরশুমি ফল খাওয়ার আহ্বান জানান। তিনি শিশুদের জাঙ্ক ফুড, তৈলাক্ত খাবার এবং ময়দা দিয়ে তৈরি খাদ্যদ্রব্য এড়িয়ে চলতে উৎসাহিত করেন। কিভাবে সঠিকভাবে খাবার খেতে হবে তার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শিশুদের খাবার গিলে ফেলার আগে অন্তত ৩২ বার চিবিয়ে খেতে উৎসাহিত করেন। তিনি শিশুদেরকে জলের গ্লাসে ছোট ছোট চুমুক দেওয়ার জন্য এবং যখনই তারা জল পান করবে তখন এর স্বাদ গ্রহণ করার টিপসও ভাগ করে নেন। কৃষকদের দৃষ্টান্ত টেনে সঠিক সময়ে সঠিক খাবার খাওয়ার বিষয়ে শ্রী মোদী বলেন, তাঁরা সকালে ক্ষেতে যাওয়ার আগে প্রাতঃরাশ করেন এবং সূর্যাস্তের আগেই রাতের খাবার সম্পূর্ণ করেন। তিনি ছাত্রছাত্রীদেরও একই ধরনের স্বাস্থ্যকর অভ্যাস অনুসরণের জন্য উৎসাহিত করেন।

পুষ্টি এবং সুস্থতা

স্বাস্থ্যতা সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুস্থতার অর্থ এই নয় যে সবাই স্বাস্থ্যসম্পন্ন৷  শিশুদের তিনি সুস্থতার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, শরীরের ফিটনেস এবং সুস্থতা নিশ্চিত করতে সঠিক পরিমাণে ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি উল্লেখ করেন যে, মানুষের সুস্থতার জন্য ঘুমের গুরুত্ব নিয়ে অনেক গবেষণা হচ্ছে। মানবদেহের জন্য সূর্যালোকের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে শ্রী মোদী শিশুদের সকালের সূর্যের আলোতে কয়েক মিনিটের জন্য দাঁড়ানোর একটি দৈনিক অভ্যাস গড়ে তুলতে উৎসাহিত করেন। সূর্যোদয়ের পরপরই গাছের নিচে দাঁড়িয়ে গভীর নিঃশ্বাস নিতে বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী সংক্ষেপে বলেন, একজন ব্যক্তির জীবনে উন্নতি করতে হলে কী, কখন, কীভাবে এবং কেন খাবেন তার মধ্যেই পুষ্টির গুরুত্ব নিহিত রয়েছে।

চাপের পরিমাপ

ছাত্রছাত্রীদের মানসিক চাপের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, দশম বা দ্বাদশের মতো স্কুলের পরীক্ষায় বেশি নম্বর না পাওয়া মানেই জীবন নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভাবনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তিনি বলেন, এতে শিশুদের ওপর চাপ বাড়ে। একটি ক্রিকেট ম্যাচে বলের প্রতি ব্যাটসম্যানের মনোনিবেশের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী শিশুদের ব্যাটসম্যানের মতো বাইরের চাপ এড়িয়ে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে উৎসাহিত করেন, যা তাদের চাপ কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে।

নিজেকে চ্যালেঞ্জ করুন

ছাত্রছাত্রীদের ভালোভাবে প্রস্তুত হতে এবং প্রতিবার নিজেদেরকেই চ্যালেঞ্জ নিতে বলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই নিজের বিরুদ্ধে নিজে লড়াই করেন না। আত্ম-প্রতিবিম্বের গুরুত্ব সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, ব্যক্তিদের প্রায়শই নিজেকে জিজ্ঞাসা করা প্রয়োজন যে তারা কী হতে পারে, কি অর্জন করতে পারে এবং কোন কাজগুলি তাদের সন্তুষ্টি এনে দিতে পারে। তিনি বলেন, সংবাদপত্র বা টেলিভিশনের মতো দৈনন্দিন বাহ্যিক প্রভাবের দ্বারা কারও দৃষ্টি নিবদ্ধ করা উচিত নয়, বরং সময়ের সাথে সাথে অবিচ্ছিন্নভাবে নিজেকে প্রতিপালন করা উচিত। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, অনেক সময় অনেকে তাদের মনকে দিশা ছাড়াই ঘুরে বেড়াতে দেন। তিনি তাদের সিদ্ধান্তে তুচ্ছ না হওয়ার পরামর্শ দেন এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাদের সহায়তা করবে এমন কিছুতে স্থির থাকার জন্য মনস্থির করার পরামর্শ দেন।

নেতৃত্বদানের কৌশল

দক্ষ নেতৃত্ব সম্পর্কে এক ছাত্রের প্রশ্নের প্রেক্ষিতে পরামর্শ দিতে গিয়ে শ্রী মোদী বলেন, বাহ্যিক চেহারা একজন নেতাকে সংজ্ঞায়িত করে না, বরং একজন নেতা হলেন তিনি, যিনি অন্যদের জন্য উদাহরণ স্থাপন করে নেতৃত্ব দেন। তিনি বলেন, নেতৃত্ব অর্জনের জন্য, ব্যক্তিদের অবশ্যই নিজেকে পরিবর্তন করতে হবে এবং তাদের আচরণে এই পরিবর্তনটি প্রতিফলিত হওয়া উচিত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'নেতৃত্ব চাপিয়ে দেওয়া হয় না, বরং আপনার চারপাশের মানুষ তাকে গ্রহণ করে। তিনি বলেন, অন্যের কাছ থেকে প্রচার করা গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করবে না; এটা একজনের আচরণ যা গ্রহণযোগ্য। স্বচ্ছতা নিয়ে কেউ যদি ভাষণ দেন, কিন্তু তা পালন না করেন, তা হলে তিনি নেতা হতে পারেন না। শ্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন, নেতৃত্বের জন্য দলবদ্ধভাবে কাজ করা এবং ধৈর্য রাখার বিষয়টি একান্ত জরুরি। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, কাজগুলি অর্পণ করার সময়, দলের সদস্যরা যে চ্যালেঞ্জগুলির মুখোমুখি হন তা বোঝাটা গুরুত্বপূর্ণ এবং অসুবিধার মধ্য দিয়ে তাদের সহায়তা করা নেতৃত্বের প্রতি তাদের আস্থা ও বিশ্বাস তৈরি করবে। মেলায় এক শিশুর অভিভাবকের হাত ধরে ছোটবেলার একটি গল্প শেয়ার করে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন সুরক্ষা এবং বিশ্বাসের অনুভূতি নিশ্চিত করে বলে শিশুটি পিতামাতাকে তাদের হাত ধরতে পছন্দ করে। এই আস্থা নেতৃত্বের একটি উল্লেখযোগ্য শক্তি বলে তিনি বলেন।

বইয়ের ৩৬০ ডিগ্রী’র বাইরে

পড়াশোনার সঙ্গে শখের ভারসাম্য বজায় রাখার বিষয়ে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষ মনে করেন যে পড়াশোনাই সাফল্যের একমাত্র পথ৷ তিনি বলেন, ছাত্রছাত্রীরা রোবট নয়, বরং তাদের সার্বিক বিকাশের গুরুত্বের ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি উল্লেখ করে বলেন যে, শিক্ষা কেবল পরবর্তী শ্রেণিতে অগ্রসর হওয়ার জন্য নয়, বরং ব্যাপক ব্যক্তিগত বিকাশের জন্য। অতীতের কথা চিন্তা করে তিনি তুলে ধরেন যে কীভাবে বাগান করার মতো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠগুলি অপ্রাসঙ্গিক বলে মনে হতে পারে, তবে তা সামগ্রিক বিকাশের ক্ষেত্রে অবদান রাখে। শিশুদের লেখাপড়া কঠোর পরিবেশের মধ্যে আবদ্ধ না রাখার জন্য অভিভাবক ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, শিশুদের একটি খোলামেলা পরিবেশ এবং কার্যক্রমের প্রয়োজন যা তারা উপভোগ করে, যার ফলস্বরূপ তাদের পড়াশোনার উন্নতি হয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে পরীক্ষাই জীবনের সবকিছু নয়৷ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই মানসিকতা পরিবার এবং শিক্ষকদেরকেই সন্তুষ্ট করতে সহায়তা করবে। প্রধানমন্ত্রী এটাও স্পষ্ট করে দেন যে, তিনি বই পড়ার বিরুদ্ধে ওকালতি করছেন না; বরং, তিনি যতটা সম্ভব জ্ঞান অর্জনের গুরুত্বের উপর জোর দিচ্ছেন। তিনি বলেন, পরীক্ষাই সবকিছু নয় এবং জ্ঞান এবং পরীক্ষা দুটি পৃথক জিনিস।

ইতিবাচকতাকে  সন্ধান করা

প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন যে, মানুষ প্রায়ই তাদের দেওয়া উপদেশ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, বিস্ময় প্রকাশ করেন যে কেন এটা বলা হয়েছে এবং এটি তাদের মধ্যেকার কোনও ত্রুটিকে তুলে ধরছে। এই মানসিকতা অন্যকে সাহায্য করার ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করে। পরিবর্তে, তিনি অন্যদের মধ্যে ভাল গুণাবলী চিহ্নিত করার পরামর্শ দিয়েছেন, যেমন ভাল গান গাওয়া বা ভাল পোশাক পরা এবং এই ইতিবাচক বৈশিষ্ট্যগুলি নিয়ে আলোচনা করা। এই পদ্ধতিটি সত্যিকারের আগ্রহ গড়ে তুলে এবং পারস্পরিক সম্পর্ক তৈরি করে। অন্যদেরও একসঙ্গে পড়াশোনার আমন্ত্রণ জানিয়ে সহযোগিতা করার পরামর্শ দেয়। লেখালেখির অভ্যাস গড়ে তোলার গুরুত্বের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি উল্লেখ করেন যে, যারা লেখার অভ্যাস গড়ে তোলেন তারা তাদের চিন্তাভাবনাগুলিকে কার্যকরভাবে ধারণ করতে পারেন।

স্বকীয়তাকে সন্ধান করা

আমেদাবাদের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মনোযোগের অভাবে একটি শিশুকে একসময়ে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছিল। এরপর সেই শিশুটিই একটি টিঙ্কারিং ল্যাবে দক্ষতা এবং অনন্য শক্তি প্রদর্শন করে একটি রোবোটিক্স প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, শিশুদের অনন্য প্রতিভা ও শক্তিকে স্বীকৃতি দেওয়া ও তার বিকাশ ঘটানোই হল শিক্ষকের কাজ। শ্রী মোদী আত্ম-প্রতিফলন এবং সম্পর্ককে বোঝার জন্য একটি পরীক্ষার প্রস্তাব দেন। তিনি শৈশবের ২৫-৩০ জন বন্ধুকে ফিরিয়ে এনে তাদের বাবা-মায়ের নামসহ পুরো নাম লেখার পরামর্শ দেন। এই অনুশীলনটি এটাই প্রমাণ করবে যে আমরা যাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলে মনে করি তাদের সম্পর্কে আমরা কতটা কম জানি। প্রধানমন্ত্রী এদিন জনসাধারণের মধ্যে ইতিবাচক বৈশিষ্ট্যগুলি চিহ্নিত করা এবং অন্যদের মধ্যে ইতিবাচকতা খুঁজে বের করার অভ্যাস গড়ে তোলার বিষয়ে উৎসাহিত করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, এই অনুশীলন ব্যক্তিগত বিকাশের জন্য উপকারী হবে।

সময়কে আয়ত্ত করা, জীবনকে আয়ত্ত করা

সময় কে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর  সম্পর্কে একজন ছাত্রের তরফে শ্রী মোদীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, প্রত্যেকের কাছে ২৪ ঘণ্টা থাকে৷ এই সময়ের মধ্যে কিছু মানুষ অনেক কিছু অর্জন করেন আবার কেউ কেউ মনে করেন যে কিছুই অর্জন হয় নি। তিনি সময় ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, কীভাবে সময়কে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যায় সে সম্পর্কে অনেকেরই বোঝার অভাব রয়েছে। এই প্রসঙ্গে তিনি সময়ের প্রতি সচেতন থাকতে, সুনির্দিষ্ট কাজ স্থির করতে এবং দৈনন্দিন কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করার জন্য পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি চ্যালেঞ্জিং বিষয়গুলি এড়িয়ে যাওয়ার পরিবর্তে সেগুলিতে আরো বেশি নজর দেবার উপর জোর দিয়েছেন। একটি উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, কীভাবে বিষয়টি প্রথমে কঠিন মনে হয় এবং এটিকে সামনাসামনি মোকাবেলা করতে হয়। দৃঢ় সংকল্পের সাথে এই চ্যালেঞ্জগুলি গ্রহণ করে মানুষ বাধাগুলি কাটিয়ে উঠতে এবং সাফল্য অর্জন করতে পারে। পরীক্ষার সময় বিভিন্ন ধারণা, সম্ভাবনা এবং প্রশ্নগুলি থেকে সৃষ্ট বিভ্রান্তির বিষয়টি সম্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, ছাত্ররা প্রায়শই সত্যিকার অর্থে নিজেদেরকে জানে না এবং বন্ধুদের সাথে আলাপচারিতায় লিপ্ত হয়, পড়াশোনা না করার অজুহাত দেখায়। সাধারণ অজুহাতগুলির মধ্যে থাকে খুব ক্লান্ত হয়ে পড়া বা মেজাজ ভাল না থাকার মত বিষয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফোনের বিভ্রান্তি মনোযোগ এবং পড়াশোনায় সাফল্যের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে।

বর্তমান মুহূর্তে বাঁচো:

প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব দিয়ে বলেন, সবচেয়ে মূল্যবান বিষয় হলো বর্তমান মুহূর্ত। একবার এই মুহূর্ত চলে গেলে, তা আর ফিরে আসে না। কিন্তু এই মুহূর্তকে যদি সম্পূর্ণভাবে উপভোগ করা যায়, তবে সেটিই জীবনের অংশ হয়ে যায়। তিনি মনোযোগী থাকার এবং মুহূর্তের সৌন্দর্য, যেমন হালকা বাতাসের স্পর্শ অনুভব করা, এরকম সৌন্দর্যের অনুভবের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

ভাগ করে নেওয়ার শক্তি:

পড়াশোনার পাশাপাশি উদ্বেগ ও হতাশা সামলানোর প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন, হতাশার সূচনা হয় পরিবার থেকে বিচ্ছিন্নতা অনুভব করা এবং ধীরে ধীরে সামাজিক মেলামেশা থেকে সরে আসার মাধ্যমে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, মনের দ্বন্দ্ব খোলাখুলিভাবে প্রকাশ করা অত্যন্ত জরুরি, যাতে তা আরও গভীর হয়ে না ওঠে। প্রধানমন্ত্রী ঐতিহ্যবাহী পারিবারিক কাঠামোর কথা তুলে ধরেন, যেখানে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খোলামেলা যোগাযোগ বজায় থাকার বিষয়টি আবেগের চাপমুক্তি এবং মানসিক ভারসাম্য রক্ষার একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করত। প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিচারণ করে বলেন, তাঁর শিক্ষকরা তাঁর হাতের লেখার উন্নতির জন্য কঠোর পরিশ্রম করতেন| এই বিষয়টি তাঁর অনুভূতিকে গভীরভাবে ছুঁয়ে গিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের আন্তরিক যত্নের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, এই যত্ন ও মনোযোগ একজন শিক্ষার্থীর সুস্থতা এবং শিক্ষাগত উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।

নিজের আগ্রহকে অনুসরণ করো:

শ্রী মোদি সন্তানদের ওপর অভিভাবকদের ক্যারিয়ার সংক্রান্ত চাপের বিষয়ে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, অভিভাবকদের প্রত্যাশা প্রায় সময়েই অন্যদের সঙ্গে তাদের সন্তানদের  তুলনা করার প্রবণতা থেকে আসে, যা তাদের আত্মসম্মানবোধ ও সামাজিক অবস্থানকে আঘাত করতে পারে। তিনি পরামর্শ দেন যে, অভিভাবকদের উচিত তাদের সন্তানদের সব জায়গায় মডেল হিসেবে তুলে ধরার প্রচেষ্টার পরিবর্তে তাদের শক্তিগুলোকে ভালোবাসতে জানা ও তা গ্রহণ করা। এই প্রসঙ্গে তিনি একটি উদাহরণ তুলে ধরেন, যেখানে এক শিক্ষার্থী স্কুল থেকে বহিষ্কারের অবস্থায় ছিল, কিন্তু পরে সে রোবটিক্সে অসাধারণ দক্ষতা অর্জন করে। এর মাধ্যমে তিনি বোঝান যে, প্রতিটি শিশুর মধ্যেই স্বতন্ত্র প্রতিভা লুকিয়ে থাকে। তিনি ক্রিকেট কিংবদন্তি সচিন তেন্ডুলকরের কথাও উল্লেখ করেন, যিনি প্রথাগত শিক্ষার বাইরে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাঁদের সন্তান যদি শিক্ষাগত ক্ষেত্রে পারদর্শী না-ও হয়, তবু তাঁরা যেন তাঁদের সন্তানদের শক্তিগুলোকে চিনতে শিখেন এবং সেগুলোকে লালন-পালন করেন। তিনি দক্ষতা উন্নয়নের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, যদি তিনি প্রধানমন্ত্রী না হতেন, তাহলে তিনি মন্ত্রী হিসেবে "দক্ষতা উন্নয়ন বিভাগ" বেছে নিতেন। তিনি বলেন, সন্তানদের সহজাত ক্ষমতার ওপর জোর দিলে তাদের ওপর চাপ কমবে এবং তারা আরও ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারবে।

থামো, ভাবো, নতুন করে শুরু করো:

কীভাবে বিভিন্ন ধরণের শব্দ চিহ্নিত করার অনুশীলন মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করতে পারে তার ব্যাখ্যা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, বিশেষ করে প্রাণায়াম, শরীরে এক ভিন্ন ধরনের শক্তি উৎপন্ন করতে পারে, যা উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। তিনি একটি কৌশল ব্যাখ্যা করেন, যার মাধ্যমে দুই নাসারন্ধ্র দিয়ে শ্বাস নেওয়ার ভারসাম্য বজায় রাখা যায়, যা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে শরীরকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধ্যান ও শ্বাস-নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে সচেতনতা চাপ কমাতে এবং মনোযোগ ধরে রাখতে সহায়ক হতে পারে।

নিজের সম্ভাবনাকে বুঝে লক্ষ্য অর্জন করো:

সদর্থক মনোভাব বজায় রাখা এবং ছোট ছোট সাফল্যে আনন্দ খুঁজে পাওয়ার প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন, অনেক সময় মানুষ নিজেদের চিন্তা কিংবা অন্যদের প্রভাবের কারণে নেতিবাচক হয়ে পড়ে। একজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসে যে, ওই শিক্ষার্থী দশম শ্রেণিতে ৯৫% নম্বরের লক্ষ্য স্থির করেছিল, কিন্তু ৯৩% অর্জন করায় হতাশ হয়ে পড়ে। প্রধানমন্ত্রী এটিকে সাফল্য হিসেবে দেখেন এবং শিক্ষার্থীকে উচ্চতর লক্ষ্য স্থির করার জন্য অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, লক্ষ্য অবশ্যই উচ্চাভিলাষী হওয়া উচিত, তবে তা বাস্তবসম্মতও হতে হবে। শ্রী মোদী সাফল্যকে ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার, নিজের সক্ষমতা বোঝার এবং লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছানোর প্রচেষ্টাকে মূল্যায়ন করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

প্রতিটি শিশুই অনন্য:

পরীক্ষার সময় সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমস্যার মূল কারণ শিক্ষার্থীদের চেয়ে তাদের পরিবারেই বেশি নিহিত। তিনি উল্লেখ করেন, অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের ইঞ্জিনিয়ারিং বা চিকিৎসাবিদ্যার মতো নির্দিষ্ট পেশায় যেতে বাধ্য করেন| অথচ সেই শিক্ষার্থীর আগ্রহ থাকতে পারে শিল্পকলা বা অন্য কোনো ক্ষেত্রে। এই চাপ শিক্ষার্থীদের জীবনকে অতিরিক্ত মানসিক চাপে ফেলে দেয়। প্রধানমন্ত্রী অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, তাঁরা যেন সন্তানের আগ্রহ ও সক্ষমতাকে বোঝেন, তাদের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করেন এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা দেন। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, যদি কোনো শিশু খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী হয়, তাহলে অভিভাবকদের উচিত তাকে উৎসাহিত করা এবং খেলাধুলার ইভেন্টে নিয়ে যাওয়া। তিনি শিক্ষকদের প্রতি বার্তা দিয়ে বলেন, তাঁরা যেন এমন পরিবেশ তৈরি না করেন, যেখানে শুধু মেধাবী শিক্ষার্থীরাই গুরুত্ব পায় এবং অন্যদের অবহেলা করা হয়। তিনি ছাত্রদের তুলনা না করার গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং প্রতিটি শিক্ষার্থীর স্বতন্ত্র প্রতিভাকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি পুনরায় উল্লেখ করেন যে, শিক্ষার্থীরা যেন উন্নতির চেষ্টা করে এবং ভালো ফলাফল অর্জনের জন্য কাজ করে, তবে এটাও মনে রাখতে হবে যে, শিক্ষাগত সাফল্যই জীবনের সবকিছু নয়।

আত্ম-অনুপ্রেরণা:

আত্ম-প্রেরণার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর পরামর্শ, কখনোই নিজেকে বিচ্ছিন্ন করা উচিত নয়। তিনি মনে করিয়ে দেন, নিজের ভাবনা অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া এবং পরিবার বা বয়স্কদের থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, নিজেকে চ্যালেঞ্জ জানানোর জন্য ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করা যেতে পারে, যেমন—প্রতিদিন ১০ কিলোমিটার সাইকেল চালানো। এই ধরনের পদক্ষেপ আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলে এবং সাফল্যের আনন্দ উপভোগ করতে সাহায্য করে। শ্রী মোদী ব্যাখ্যা করেন, এ ধরনের ছোট ছোট পরীক্ষার মাধ্যমে নিজস্ব সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করা সম্ভব, যা বর্তমানকে উপভোগ করতে শেখায় এবং অতীতকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ১৪০ কোটি ভারতবাসীর মধ্য থেকেই নিজের অনুপ্রেরণা খুঁজে পান। তিনি শেয়ার করেন, যখন তিনি ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ বইটি লিখেছিলেন, তখন গ্রামের অজয়দের মতো অনেক মানুষ সেটিকে কবিতার মাধ্যমে রূপান্তরিত করেছেন। এই ধরনের উদ্যোগ তাঁকে এই ধরনের কাজ চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে, কারণ আমাদের চারপাশে অসংখ্য উৎসাহদাতা রয়েছেন। ‘অভ্যন্তরীণ উপলব্ধি’র বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু পরামর্শ শোনা বা চিন্তা করলেই চলবে না, তা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করাও জরুরি। যেমন, ‘ভোরে ওঠা ভালো’—এটি জানাই যথেষ্ট নয়, বরং বাস্তবে তা অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। তিনি বলেন, আত্ম-উন্নয়নের জন্য নিজেকেই পরীক্ষাগার বানিয়ে জীবনচর্চার বিভিন্ন নিয়ম-কানুন প্রয়োগ ও বিশ্লেষণ করা উচিত। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বেশিরভাগ মানুষ নিজের পরিবর্তে অন্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে এবং প্রায়ই নিজের তুলনা করে এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে, যারা তুলনামূলকভাবে কম দক্ষ। এটি হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, প্রকৃত আত্মবিশ্বাস তৈরি হয় তখনই, যখন কেউ নিজের সঙ্গে নিজে প্রতিযোগিতা করে। অন্যদের সঙ্গে তুলনা করলে হতাশা বাড়তে পারে, কিন্তু আত্ম-প্রতিযোগিতা ব্যক্তিকে অপরাজেয় আত্মবিশ্বাসী করে তোলে।

ব্যর্থতাকে শক্তি হিসেবে তৈরি করা:

ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদি দশম বা দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ৩০-৪০% শিক্ষার্থী অকৃতকার্যও হয়, তবুও জীবনের সমাপ্তি ঘটে না। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আসল কথা হল—জীবনে সফল হতে চাও, নাকি শুধুমাত্র পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেতে চাও? তিনি ব্যাখ্যা করেন, ব্যর্থতাকে শিক্ষক হিসেবে গ্রহণ করা উচিত। ক্রিকেটের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, খেলোয়াড়েরা তাদের ভুল পর্যালোচনা করে এবং উন্নতির জন্য কাজ করে। প্রধানমন্ত্রী জীবনকে শুধু পরীক্ষার ফলাফলের নিরিখে না দেখে সামগ্রিকভাবে মূল্যায়ন করতে সবাইকে আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তিরাও অনেক ক্ষেত্রেই অসাধারণ দক্ষতা প্রদর্শন করেন, যা প্রমাণ করে যে প্রত্যেক মানুষেরই কোনো না কোনো অনন্য যোগ্যতা থাকে। তাই শুধু একাডেমিক ফলাফলের ওপর নির্ভর না করে নিজেদের শক্তির জায়গায় কাজ করা উচিত। তিনি বলেন, দীর্ঘ মেয়াদে নম্বরের পরিবর্তে জীবনের প্রকৃত দক্ষতা ও যোগ্যতাই সফলতা নির্ধারণ করে।

প্রযুক্তিকে আয়ত্ত করা:

প্রযুক্তির বিস্তৃতি ও প্রভাব সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, আমরা অত্যন্ত সৌভাগ্যবান যে এমন এক সময়ে বাস করছি, যেখানে প্রযুক্তি সহজলভ্য ও পরিবর্তনশীল। তিনি বলেন, প্রযুক্তিকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, বরং নিজেকে প্রশ্ন করা উচিত—আমরা সময় অপচয় করছি, নাকি প্রযুক্তির গভীরে গিয়ে এর সদ্ব্যবহার করছি? তিনি ব্যাখ্যা করেন, যদি প্রযুক্তিকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়, তবে তা ধ্বংসাত্মক নয়, বরং এক শক্তিশালী হাতিয়ার হয়ে ওঠে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গবেষক ও উদ্ভাবকেরা সমাজের কল্যাণে প্রযুক্তি তৈরি করেন, তাই সেটিকে বোঝা এবং যথাযথভাবে কাজে লাগানো উচিত। কোনো কাজে নিজের সর্বোচ্চ কীভাবে দেওয়া যায়, এক শিক্ষার্থীর এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী মোদী  বলেন, অবিরত উন্নতির মনোভাব সবচেয়ে জরুরি। তিনি বলেন, নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার প্রথম শর্ত হলো—প্রতিদিন নিজেকে গতকালের চেয়ে ভালো করে গড়ে তোলা।

কীভাবে অভিভাবকদের রাজি করানো যায়?

পরিবারের পরামর্শ অনুসরণ করা ও ব্যক্তিগত আগ্রহের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিবারের পরামর্শকে স্বীকার করা গুরুত্বপূর্ণ, তবে একই সঙ্গে কৌশলীভাবে তাদেরকে বোঝানোও প্রয়োজন। শ্রী মোদী উল্লেখ করেন যে, পরিবারের পরামর্শকে স্বীকার করা গুরুত্বপূর্ণ এবং তারপর তাদের পরামর্শ অনুসারে কীভাবে এগোনো যায়, তা জানতে চাওয়া ও তাদের সহায়তা চাওয়া উচিত। এতে পরিবার অনুভব করবে যে, তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, ফলে তারা ধীরে ধীরে সন্তানের ইচ্ছা ও স্বপ্নকে বুঝতে ও সমর্থন করতে পারেন।

পরীক্ষার চাপ সামলানো:

পরীক্ষার সময় উত্তরপত্র শেষ করতে না পারা এবং সেখান থেকে সৃষ্ট মানসিক চাপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে থেকে বিগত বছরের প্রশ্নপত্রের অনুশীলন করলে সময় ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বৃদ্ধি পায় এবং সংক্ষিপ্তভাবে উত্তর লেখা শেখা যায়। তিনি বলেন, যেসব প্রশ্নের উত্তর দিতে বেশি মনোযোগ ও পরিশ্রমের প্রয়োজন, সেগুলোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত, তবে অতি কঠিন বা অজানা প্রশ্নে অতিরিক্ত সময় নষ্ট করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, নিয়মিত অনুশীলনই পরীক্ষায় ভালোভাবে সময়ের ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারে।

প্রকৃতির প্রতি যত্নশীল হওয়া:

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী তরুণ প্রজন্মের সচেতনতা ও উদ্বেগের প্রশংসা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের ফলে এক ধরনের শোষণের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, যেখানে ব্যক্তিগত লাভকে পরিবেশ রক্ষার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ‘মিশন লাইফ’ (পরিবেশের জন্য জীবনধারা)-এর কথা বলেন, যা প্রকৃতিকে সংরক্ষণ ও লালন করার জীবনধারাকে উৎসাহিত করে। তিনি ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে মা বসুন্ধরার কাছে ক্ষমা চাওয়া, গাছপালা ও নদীর পূজা করা প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বিবেচিত হয়। তিনি "এক পেড় মা কে নাম" নামের অভিযানের কথা বলেন, যেখানে মানুষ তাদের মায়ের স্মরণে গাছ লাগাতে উৎসাহিত হচ্ছেন। এভাবে প্রকৃতির সঙ্গে এক গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং মানুষ গাছপালা রক্ষায় আরও মনোযোগী হয়।

নিজস্ব সবুজ স্বর্গ গড়ে তোলা:

প্রধানমন্ত্রী মোদি শিক্ষার্থীদের নিজস্ব গাছ লাগানোর জন্য উৎসাহিত করেন এবং গাছের যত্ন নেওয়ার সহজ ও কার্যকর উপায় শেয়ার করেন। তিনি পরামর্শ দেন, একটি মাটির পাত্রে জল ভরে গাছের পাশে রেখে দিলে এবং তা প্রতি মাসে একবার করে পুনরায় পূরণ করে দিলে, কম জলে গাছ দ্রুত বেড়ে উঠতে পারে। প্রধানমন্ত্রী সবাইকে অভিনন্দন জানান এবং অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

 

***

SKC/DM/AKD/KD


(Release ID: 2101595) Visitor Counter : 6


Read this release in: English