বৈদ্যুতিন ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক
স্মার্টফোন থেকে ল্যাপটপ: তথ্যপ্রযুক্তি হার্ডওয়্যার উৎপাদনে এগিয়ে যাচ্ছে ভারত
চেন্নাইয়ে ভারতীয় কোম্পানি সির্মা এসজিএস-এর অত্যাধুনিক ল্যাপটপ আসেম্বলি লাইন উদ্বোধন করলেন শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব
Posted On:
11 JAN 2025 2:20PM by PIB Agartala
নয়াদিল্লি, ১১ জানুয়ারি ২০২৫: কেন্দ্রীয় বৈদ্যুতিন ও তথ্য-প্রযুক্তি, রেলওয়ে এবং তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব চেন্নাইয়ে সির্মা এসজিএস টেকনোলজির অত্যাধুনিক ল্যাপটপ আসেম্বলি লাইনের উদ্বোধন করলেন। যার মধ্য দিয়ে ভারতে বৈদ্যুতিন বা ইলেকট্রনিকস উৎপাদন খাতে একটি মাইলফলক অর্জিত হল। মাদ্রাজ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (এমইপিজেড)-এ অবস্থিত এই আসেম্বলি লাইনটি, ভারতের 'মেক ইন ইন্ডিয়া'র অভিযাত্রার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন সূচিত করছে, যে অভিযাত্রা মোবাইল ফোন থেকে তথ্যপ্রযুক্তি হার্ডওয়্যার উৎপাদন, বিশেষ করে ল্যাপটপের দিকে তার আধিপত্য প্রসারিত করছে।
‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগে একটি মাইলফলক:
নতুন আসেম্বলি লাইনটি প্রাথমিকভাবে প্রতি বছর ১,০০,০০০ ল্যাপটপ উৎপাদন করবে, এবং আগামী ১-২ বছরের মধ্যে এর ক্ষমতা ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়ে ১০ লাখ ইউনিটে পৌঁছাতে সক্ষম হবে। সির্মা এসজিএস বর্তমানে চেন্নাইয়ে চারটি উৎপাদন ইউনিট পরিচালনা করছে, যার মধ্যে ‘ইউনিট-৩’ এখন ল্যাপটপ উৎপাদন শুরু করেছে।
উদ্বোধনী ভাষণে শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, "আমাদেরকে যত্নসহকারে কাজ করতে হবে, যাতে আগামী দিনে ইলেকট্রনিক বিভিন্ন যন্ত্রাংশ-সামগ্রীর একটা বাস্তুতন্ত্র গড়ে উঠতে পারে। এটি শুধুমাত্র একটি বড় উত্থানের কাহিনি সৃষ্টি করবে না, বরং আমাদের আত্মনির্ভর ভারত গঠনের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে তা সঙ্গতিপূর্ণ হবে| এই উদ্যোগ আত্মনির্ভরতাকে সুনিশ্চিত করবে এবং বৈশ্বিক ইলেকট্রনিক্স উৎপাদন ক্ষেত্রেও আমাদের অবস্থানকে শক্তিশালী করবে।"
এই উদ্যোগটি তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) হার্ডওয়্যারের ক্ষেত্রে পিএলআই—২.০ প্রকল্পের অংশ, যা ভারতের উচ্চমূল্যমান ইলেকট্রনিক্স উৎপাদনে বাড়তি সক্ষমতা এবং আইটি হার্ডওয়্যারে দেশের আত্মনির্ভরতাকে আরও শক্তিশালী করছে।
আসেম্বলি লাইনের প্রধান আকর্ষণীয় দিক:
বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্ব: সির্মা এসজিএস, তাইওয়ানের শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানি ‘মাইক্রো-স্টার ইন্টারন্যাশনাল’ (এমএসআই)-এর সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ভারতের অভ্যন্তরীণ এবং বৈশ্বিক বাজারের জন্য উচ্চমানের ল্যাপটপ উৎপাদন করবে।
স্থানীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা: এই উদ্যোগটি অর্থবর্ষ-২০২৬ -এর মধ্যে ইলেকট্রনিকস উৎপাদন খাতে ১৫০-২০০টি ক্ষেত্রে বিশেষায়িত কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে, যা তামিলনাড়ুর আঞ্চলিক এবং ভারতের জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।
বিশ্বমানের মানদণ্ড: উৎপাদিত ল্যাপটপগুলো আন্তর্জাতিক গুণমান সম্পন্ন হবে, যা ভারতের উন্নত প্রযুক্তি এবং উৎপাদন ক্ষমতাকে প্রদর্শন করবে।
ভারতের উদীয়মান ইলেকট্রনিক্স উৎপাদন ক্ষেত্র:
গত দশকে ভারতের ইলেকট্রনিক্স উৎপাদন খাত ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে| এই ক্ষেত্রে মোট উৎপাদন ২০১৪ সালের ২.৪ লক্ষ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৪ সালে ৯.৮ লক্ষ কোটি টাকা হয়েছে। শুধুমাত্র মোবাইল উৎপাদনই ৪.৪ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, এবং ২০২৪ সালে মোবাইলের রফতানি হয়েছে ১.৫ লক্ষ কোটি টাকা। বর্তমানে ভারতে ব্যবহৃত ৯৮% মোবাইল ফোন দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে এবং ভারত থেকে রফতানিজাত পণ্যগুলোর মধ্যে চতুর্থ বৃহত্তম স্থানে আছে এই স্মার্টফোন।
তামিলনাড়ু: একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদানকারী:
কেন্দ্রীয় বৈদ্যুতিন ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রকের বিভিন্ন প্রকল্পের অধীনে তামিলনাড়ুতে ৪৭টিরও বেশি উৎপাদন ইউনিট রয়েছে। রাজ্যটি বৃহৎ আকারের ইলেকট্রনিক্স উৎপাদনের জন্য উৎপাদন সংযুক্ত প্রণোদনা (পিএলআই) প্রকল্পের অন্যতম বৃহত্তম উপকারভোগী| ‘পিএলআই—২.০’-এর অধীনে অনুমোদিত ২৭টি ইউনিটের মধ্যে সাতটি ইউনিট এখানে অবস্থিত। যার প্রথম ইউনিটটি শুক্রবার উদ্বোধন করা হল।
ল্যাপটপ উৎপাদনে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত:
সির্মা এসজিএস-এর ল্যাপটপ আসেম্বলি লাইনের উদ্বোধন ভারতের ইলেকট্রনিকস পণ্য তৈরির অভিযাত্রায় একটি নতুন অধ্যায় সূচিত করেছে| এই উদ্যোগ আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর, কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানোর এবং বিশ্বমানের উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করেছে। তাছাড়া উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে, ভারত তথ্যপ্রযুক্তি হার্ডওয়্যার উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্বস্থানীয় একটি শক্তি হয়ে উঠতে প্রস্তুত হচ্ছে।
আইটি হার্ডওয়্যারের ক্ষেত্রে পিএলআই-২.০-এর অবস্থান:
আইটি হার্ডওয়্যারের জন্য ‘উৎপাদন সংযুক্ত প্রণোদনা’ পিএলআই-২.০, যা ২০২৩ সালের ২৯ মে চালু করা হয়েছিল, এই ইনসেনটিভটি ভারতীয় ইলেকট্রনিক্স উৎপাদন বাস্তুতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়ে যোগ্য কোম্পানিগুলিকে ৫% প্রণোদনা প্রদান করছে।
এই প্রকল্পের অধীনে ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, অল-ইন-ওয়ান পিসি, সার্ভার এবং অতিরিক্ত ছোট আকারের ডিভাইসগুলোও রয়েছে। ‘পিএলআই-২.০’ প্রকল্পের মাধ্যমে ৩,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ৩.৫ লক্ষ কোটি টাকার উৎপাদন এবং দেশব্যাপী ৪৭,০০০ কর্মসংস্থান সৃষ্টির আশা করা হচ্ছে।
প্রকল্পটি ইতোমধ্যেই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে| এখন পর্যন্ত এই প্রকল্পে ৫২০ কোটি টাকা মোট বিনিয়োগের মাধ্যমে ১০,০০০ কোটি টাকার উৎপাদন এবং ৩,৯০০টি নতুন চাকরি সৃষ্টি হয়েছে (ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত)।
***
SKC/ADK/KMD
(Release ID: 2092169)
Visitor Counter : 18