প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর

সুরাট ডায়মন্ড বোর্সের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

"সুরাট শহরের মহিমায় নতুন হীরা যুক্ত হয়েছে"

"সুরাট ডায়মন্ড বোর্সে ভারতীয় ডিজাইন, ডিজাইনার, উপকরণ এবং ধারণাগুলির দক্ষতা তুলে ধরেছে৷ এই বিল্ডিংটি নতুন ভারতের সক্ষমতা ও সংকল্পের প্রতীক”

"আজ, সুরাট লক্ষ লক্ষ যুবকদের স্বপ্নের শহর"

Posted On: 17 DEC 2023 8:01PM by PIB Agartala

নয়াদিল্লি, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩৷৷ আজ গুজরাটের সুরাটে সুরাট ডায়মন্ড বোর্সের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। অনুষ্ঠানের আগে প্রধানমন্ত্রী পঞ্চত্ব গার্ডেন, সুরাট ডায়মন্ড বোর্স ও স্পাইন-৪ এর গ্রিন বিল্ডিং পরিদর্শন করেন এবং দর্শনার্থীদের পুস্তিকায় স্বাক্ষর করেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী সুরাট বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল ভবনেরও উদ্বোধন করেন।

এই উপলক্ষে একটি সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুরাট শহরের মহিমায় একটি নতুন হীরা যুক্ত হয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, "এটি কোনও সাধারণ হীরা নয়, বরং বিশ্বের সেরা", যা সুরাট ডায়মন্ড বোর্সের উজ্জ্বলতা বিশ্বের বৃহত্তম ভবনগুলিকে ঢেকে দিচ্ছে। তিনি শ্রী বল্লভভাই লাখানি এবং শ্রী লালজিভাই প্যাটেলের নম্রতা এবং এত বড় মিশনের সাফল্যের পিছনে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলার মনোভাবকে কৃতিত্ব দেন এবং এই উপলক্ষে সুরাট ডায়মন্ড বোর্সের গোটা দলকে অভিনন্দন জানান। তিনি জোর দিয়ে বলেন, " এখন বিশ্বে হীরার বাজার নিয়ে আলোচনার সময় ভারতের গর্বের পাশাপাশি সুরাট ডায়মন্ড বোর্স এর কথাও উঠে আসবে।" প্রধানমন্ত্রী বলেন, "সুরাট ডায়মন্ড বোর্সে ভারতীয় ডিজাইন, ডিজাইনার, উপকরণ এবং ধারণাগুলির দক্ষতাকে তুলে ধরেছে। এই বিল্ডিংটি নতুন ভারতের সক্ষমতা ও সংকল্পের প্রতীক। শ্রী মোদী সুরাট ডায়মন্ড বোর্সের উদ্বোধনের জন্য সমগ্র হীরা শিল্প, সুরাট, গুজরাট এবং ভারতের জনগণকে অভিনন্দন জানান। সুরাট ডায়মন্ড বোর্সে তাঁর পদচারণার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী গ্রিন বিল্ডিং-এর কথা উল্লেখ করেন, যা সারা বিশ্বের পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে৷ ভবনের সামগ্রিক স্থাপত্য ও কাঠামোগত দিক প্রকৌশলের শিক্ষার্থীদের শেখার হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে এবং পঞ্চত্ব গার্ডেন যা ল্যান্ডস্কেপিং পাঠের জন্য উদাহরণ হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি৷

সুরাটের জন্য আরও দুটি উপহারের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী সুরাটে একটি নতুন বিমানবন্দর টার্মিনালের উদ্বোধন এবং সুরাট বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসাবে উন্নীত করার কথা উল্লেখ করেন। দীর্ঘদিনের এই দাবি পূরণের জন্য সমবেত জনতা দাঁড়িয়ে তাঁকে অভিবাদন জানান। তিনি সুরাট দুবাই ফ্লাইট শুরু এবং শিগগিরই হংকংয়ের ফ্লাইট শুরু হওয়ার বিষয়ে অবহিত করেন। সুরাটের সঙ্গে গুজরাটে এখন তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রয়েছে।

সুরাট শহরের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সংযোগ ও শিক্ষার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী 'সবকা সাথ সবকা প্রয়াস'-এর চেতনার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, "সুরাটের মাটি এটিকে অন্যদের থেকে আলাদা করে রেখেছে৷" শ্রী মোদী বলেন, এই অঞ্চলের উৎপাদিত তুলা অতুলনীয়। সুরাটের উত্থান-পতনের যাত্রার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুরাটের মহিমা ব্রিটিশদের প্রথম ভারতে আসার সময় আকৃষ্ট করেছিল। তিনি সেই সময়ের কথা স্মরণ করেন যখন সুরাট বিশ্বের বৃহত্তম জাহাজের উৎপাদন কেন্দ্র ছিল এবং সুরাট বন্দর ৮৪ টি দেশের জাহাজের পতাকা উত্তোলন করত। এখন এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ১২৫টিতে। শহরের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী গুরুতর স্বাস্থ্যগত অসুস্থতা এবং বন্যার কথা উল্লেখ করেন এবং কীভাবে শহরের চেতনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছিল তার কথা স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী আজকের অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেন এবং উল্লেখ করেন যে সুরাট বিশ্বের শীর্ষ ১০ টি ক্রমবর্ধমান শহরগুলির মধ্যে একটি হয়ে উঠেছে। তিনি সুরাটের চমৎকার স্ট্রিট ফুড, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং দক্ষতা উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন। সুরাট, যা আগে সান সিটি নামে পরিচিত ছিল, তার জনগণের কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠার মাধ্যমে নিজেকে ডায়মন্ড সিটি, সিল্ক সিটি এবং ব্রিজ সিটিতে রূপান্তরিত করেছে। আজ সুরাট লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতীর স্বপ্নের শহর। আইটি সেক্টরে সুরাটের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুরাটের মতো একটি আধুনিক শহরে ডায়মন্ড বোর্সের আকারে এত চমৎকার ভবন পাওয়া ঐতিহাসিক।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'সুরাটের মানুষ মোদির গ্যারান্টি অনেক দিন ধরেই জানেন। তিনি বলেন, সুরাটের মানুষের জন্য মোদীর গ্যারান্টির একটি উদাহরণ হীরা বাজার। হীরা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে তাঁর আলাপচারিতা এবং ২০১৪ সালে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ডায়মন্ড কনফারেন্সের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই যাত্রার ফলে সুরাট ডায়মন্ড বোর্সের আকারে একটি বড় হীরা কেন্দ্র গড়ে উঠেছে, যার ফলে এক ছাদের নীচে হীরা বাণিজ্যের অনেক দিক সম্ভব হয়েছে। কারিগর, শ্রমিক ও ব্যবসায়ী সবার জন্য সুরাট ডায়মন্ড বোর্স ওয়ান স্টপ শপে পরিণত হয়েছে। তিনি জানান, এখানে আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্কিং, সেফ ভল্ট এবং জুয়েলারি মলের মতো সুবিধা থাকবে, যার ফলে ১.৫ লক্ষ মানুষের নতুন কর্মসংস্থান হবে। 

সুরাটের সামর্থ্যের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব অর্থনীতিতে ভারতের দশম স্থান থেকে পঞ্চম স্থানে উন্নীত হওয়ার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, 'এখন মোদি গ্যারান্টি দিয়েছেন যে, তৃতীয় ইনিংসে ভারত বিশ্বের শীর্ষ তিনটি অর্থনীতির মধ্যে থাকবে। আগামী ২৫ বছরের জন্য সরকারের একটি রোডম্যাপ রয়েছে এবং ৫ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতি এবং ১০ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সরকার।

রফতানি বৃদ্ধির প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের হীরা শিল্পের বড় ভূমিকা থাকবে। তিনি দেশের রফতানি বৃদ্ধিতে সুরাটের ভূমিকা বাড়ানোর উপায়গুলি অনুসন্ধান করার জন্য শিল্পের শীর্ষস্থানীয়দের আহ্বান জানান। হীরার গহনা, রৌপ্য কাটা হীরা এবং ল্যাবে উৎপাদিত হীরা রফতানিতে ভারতের শীর্ষস্থানীয় অবস্থানের কথা উল্লেখ করে তিনি উল্লেখ করেন যে সামগ্রিকভাবে আন্তর্জাতিক রত্ন-গহনা রফতানিতে ভারতের অংশ মাত্র ৩.৫ শতাংশ। সুরাট যদি সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে রত্ন-গহনা রফতানিতে আমাদের অংশীদারিত্ব ডাবল ডিজিটে পৌঁছাতে পারে," এই ক্ষেত্রে সরকারের সমর্থনের কথা পুনরায় তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বাজেটে রফতানি উন্নয়ন, পেটেন্ট ডিজাইনের প্রচার, রফতানি পণ্যের বহুমুখীকরণ, উন্নত প্রযুক্তির জন্য সহযোগিতা, ল্যাব-উৎপাদিত বা সবুজ হীরার প্রচার এবং সবুজ হীরার জন্য বিশেষ বিধানের মতো পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। ভারতের প্রতি ইতিবাচক বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং 'মেক ইন ইন্ডিয়া' ব্র্যান্ডের ক্রমবর্ধমান মর্যাদা থেকে এই খাত উপকৃত হতে বাধ্য বলে তিনি আস্থা প্রকাশ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার সুরাট শহরে আধুনিক পরিকাঠামো নির্মাণের উপর বিশেষ জোর দিয়ে জনগণের সম্ভাবনাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সুরাটের সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে। সুরাটের সংযোগের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী সুরাট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, মেট্রো রেল পরিষেবা এবং হাজিরা পোর্ট, গভীর জলের এলএনজি টার্মিনাল এবং মাল্টি কার্গো বন্দরসহ সুরাটের বন্দরগুলির কথা উল্লেখ করেন। সুরাট ক্রমাগত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্রগুলির সাথে সংযুক্ত হচ্ছে। বিশ্বের খুব কম শহরেই এ ধরনের আন্তর্জাতিক যোগাযোগ রয়েছে। বুলেট ট্রেন প্রকল্পের সঙ্গে সুরাটের সংযোগ এবং ওয়েস্টার্ন ডেডিকেটেড ফ্রেইট করিডোরের চলমান কাজের কথাও তিনি উল্লেখ করেন, যা সুরাটের উত্তর ও পূর্ব ভারতের সঙ্গে রেল যোগাযোগকে শক্তিশালী করবে। দিল্লি-মুম্বাই এক্সপ্রেসওয়ে সুরাটের ব্যবসায়ও নতুন সুযোগ দিতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী শহরের আধুনিক সংযোগের সর্বাধিক সুবিধা গ্রহণের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, "সুরাট যদি এগিয়ে যায় তবে গুজরাট এগিয়ে যাবে। গুজরাট যদি এগিয়ে যায় তাহলে দেশ এগিয়ে যাবে। ভাষণের শেষে প্রধানমন্ত্রী আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় ভাইব্রেন্ট গুজরাট শীর্ষ সম্মেলনের জন্য ও শুভেচ্ছা জানান।

এই অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গুজরাটের রাজ্যপাল শ্রী আচার্য দেবব্রত, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী মনসুখ মান্ডভিয়া এবং শ্রী পুরুষোত্তম রূপালা, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রীমতী দর্শনা জারদোশ, সুরাট ডায়মন্ড বোর্সের চেয়ারম্যান শ্রী সি আর পাতিল, ধর্মনন্দন ডায়মন্ড লিমিটেডের শ্রী বল্লভভাই লাখানি এবং শ্রী লালজিভাই প্যাটেল।

*****

SKC/DM



(Release ID: 1987516) Visitor Counter : 70


Read this release in: English