প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর

প্রধানমন্ত্রীর মন কি বাত - পর্ব- ১০৭

(অনুষ্ঠানের বাংলা অনুবাদ সংস্করণ)
সম্প্রচার তারিখ- ২৬-১১-২০২৩

Posted On: 26 NOV 2023 1:35PM by PIB Agartala

আমার প্রিয় দেশবাসী, নমস্কার। 'মন কি বাত'-এ আপনাদের স্বাগত। কিন্তু আজ যে ২৬ নভেম্বর! আমরা কখনোই এই দিনকে ভুলতে পারব না। এই দিনেই দেশে সবচেয়ে জঘন্য সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়। মুম্বাইসহ গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল সন্ত্রাসবাদীরা। কিন্তু ভারতের এটাই শক্তি যে, আমরা সেই হামলার ক্ষত কাটিয়ে উঠে পূর্ণ উদ্যমে সন্ত্রাস দমন করছি। মুম্বাইতে জঙ্গি হানায় প্রাণ হারানো সবার প্রতি আমি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করছি। এতে শহিদ হওয়া আমাদের দুঃসাহসী দামাল সেনানীদের দেশ আজ সগর্বে স্মরণ করছে!
আমার পারিবারিক স্বজন, আজকের ২৬ নভেম্বর দিনটি অন্য এক কারণেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৪৯-এর আজকের দিনেই সংবিধান সভা ভারতের সংবিধানকে গ্রহণ করেছিলো। আমার মনে আছে, ২০১৫ সালে যখন বাবা সাহেব আম্বেদকরের ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী উদযাপন করছিলাম, সেই সময়ই ভাবা হয়েছিলো ২৬ নভেম্বরকে ‘সংবিধান দিবস’ হিসেবে পালন করা হোক! আর সেই সময় থেকেই আজকের এই দিনটি ‘সংবিধান দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে। আমি সমস্ত দেশবাসীকে সংবিধান দিবসের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি! আর আমরা সবাই মিলে নাগরিক কর্তব্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিকশিত ভারত গঠনের  সংকল্পকে অবশ্যই বাস্তবায়িত করবো।
বন্ধুরা, আমরা সবাই জানি যে, সংবিধান তৈরিতে দু’ বছর এগারো মাস আঠারো দিন সময় লেগেছিলো। শ্রী সচ্চিদানন্দ সিনহা মহোদয় ছিলেন সংবিধান সভার সবচেয়ে প্রবীণ সদস্য। ষাটটিরও বেশি দেশের সংবিধান পাঠ এবং দীর্ঘ আলোচনা বিচার বিশ্লেষণ করার পর আমাদের সংবিধানের খসড়া রচিত হয়েছিলো। খসড়া রচিত হওয়ার পর একে চূড়ান্ত চেহারা দেওয়ার আগে এতে আবারও দু’হাজারের বেশি সংশোধনী আনা হয়েছিলো। ১৯৫০-এ সংবিধান কার্যকর হওয়ার পরেও এখন পর্যন্ত একশো ছয়বার সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে। সময়, পরিস্থিতি, দেশের চাহিদা অনুসারেই পৃথক পৃথক সরকারের পক্ষে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে এই সংশোধনী আনা হয়। কিন্তু এটাই দেশের দুর্ভাগ্য যে, সংবিধানের প্রথম সংশোধনী ফ্রিডম অফ স্পিচ, বাকস্বাধীনতা এবং ফ্রিডম অফ এক্সপ্রেশন, মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে কাটছাট করার জন্যই আনা হয়ছিলো। সেই সংবিধানেরই চুয়াল্লিশতম সংশোধনীর মাধ্যমে ইমার্জেন্সি বা জরুরি অবস্থার সময় করা ভুল সংশোধন করা হয়েছিলো।  
বন্ধুগণ, এটাও অত্যন্ত অনুপ্রেরণাদায়ক যে, সংবিধান সভার যে কয়েকজন সদস্য মনোনীত করা হয়েছিল, এর মধ্যে ১৫ জন মহিলা ছিলেন। এমনই একজন সদস্য, হংস মেহতাজি মহিলাদের অধিকার এবং ন্যায়বিচারের জন্য আওয়াজ তুলেছিলেন। সেই সময়ে, ভারত ছিল এমন কয়েকটি দেশের মধ্যে একটি, যেখানে সংবিধানের মাধ্যমে মহিলাদের ভোট দেওয়ার অধিকার প্রদান করা হয়েছিল। জাতি গঠনে সবাই অংশগ্রহণ করলেই সকলের উন্নয়ন সম্ভব। আমি সন্তুষ্ট যে, সংবিধান প্রণেতাদের একই দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করে ভারতের সংসদ এখন 'নারী শক্তি বন্দন আইন' পাস করেছে। ‘নারী শক্তি বন্দন অধিনিয়ম’ আমাদের গণতন্ত্রের সংকল্প শক্তির উদাহরণ। এক উন্নত ভারতের জন্য আমাদের সংকল্পকে প্রেরণা জোগাতেও তা সমানভাবে সহায়ক হবে।
আমার পরিবারজন, জনগণ যখন জাতি গঠনের দায়িত্ব নেবে, তখন বিশ্বের কোনো শক্তি সেই দেশকে এগিয়ে যেতে বাধা দিতে পারবে না। আজ, ভারতে এটি স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান যে, দেশের ১৪০ কোটি জনগণের নেতৃত্বে অনেক পরিবর্তন হচ্ছে। এর প্রত্যক্ষ উদাহরণ আমরা এই উৎসবের মরশুমে দেখেছি। গত মাসে ‘মন কি বাত’ এ ‘মনের কথা’-য় আমি ‘ভোকাল ফর লোকাল’ অর্থাৎ স্থানীয় পণ্য কেনার ওপর জোর দিয়েছিলাম। গত কয়েকদিনের মধ্যে, দীপাবলি, ভাই দুজ বা ভ্রাতৃদ্বিতীয়া এবং ছট উৎসবে দেশে চার লক্ষ কোটি টাকারও বেশি ব্যবসা হয়েছে। আর এই সময়ে ভারতে তৈরি পণ্য কেনার জন্য মানুষের মধ্যে প্রচণ্ড উৎসাহ দেখা গেছে। এখন বাড়ির বাচ্চারাও দোকানে কিছু কেনার সময় দেখে নিতে শুরু করেছে, তাতে ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ ‘ভারতে তৈরি’ লেখা আছে কি না। শুধু তাই নয়, এখন মানুষ অনলাইনে পণ্য কেনার সময় ‘কান্ট্রি অফ অরিজিন’ মূলতঃ কোন দেশের জিনিস তা দেখে নিতে ভুলবেন না।
বন্ধুরা, পরিচ্ছন্ন ভারত অভিযানের সফলতাই যেভাবে এর প্রেরণা হয়ে উঠছে, একইভাবে ভোকাল ফর লোকালের সাফল্য বিকশিত ভারত-সমৃদ্ধ ভারতের দ্বার উন্মোচিত করছে। ভোকাল ফর লোকালের অভিযাত্রা গোটা দেশের আর্থিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করছে। স্থানীয় উৎপাদনের জন্য সরব হওয়ার অভিযাত্রা রোজগারের নিশ্চয়তা দেয়! এ হলো বিকাশের নিশ্চয়তা, গোটা দেশের ভারসাম্যযুক্ত বিকাশের নিশ্চয়তা! এতে শহর এবং গ্রাম দু’য়ের জন্যই সমান সুযোগ থাকে। এর ফলে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্য সামগ্রীর ভ্যালু এডিশন বা মূল্য সংযোজনেরও পথ তৈরি হয়। আর কখনো যদি বিশ্ব অর্থব্যবস্থাতে উত্থান পতনের পরিস্থিতি সামনে আসে, তাহলে ভোকাল ফর লোকালের মন্ত্র আমাদের আর্থিক ব্যবস্থাকে সুরক্ষিতভাবে আগলেও রাখতে পারে।
বন্ধুরা, ভারতীয় পণ্য নিয়ে এই ভাবনা বা আবেগ শুধুমাত্র উৎসবের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়। বিয়ের মরশুমও শুরু হয়ে গেছে। কোন কোন বাণিজ্যিক সংস্থার অনুমান যে, এই বিয়ের মরশুমে প্রায় ৫ লক্ষ কোটি টাকার ব্যবসা হতে পারে। বিয়ের জন্য কেনাকাটার সময়, আপনাদের সকলকে শুধুমাত্র ভারতে তৈরি পণ্যগুলিতে গুরুত্ব দিতে হবে। আর হ্যাঁ, বিয়ের প্রসঙ্গ যখন উঠে এসেছে, একটা বিষয় মাঝে মাঝে আমাকে অনেকদিন ধরেই কষ্ট দিচ্ছে। আর মনের মধ্যে এই যে কষ্ট, তা যদি আমি আমার পরিবারের সদস্যদের না বলি, তাহলে কাকে বলব? একটু ভেবে দেখুন, আজকাল কিছু পরিবারে বিদেশে গিয়ে বিয়ে করার নতুন প্রবণতা তৈরি হচ্ছে। এটা কি খুব প্রয়োজনীয়? আমরা যদি ভারতের মাটিতে, ভারতের মানুষের মধ্যে বিয়ের অনুষ্ঠান উদযাপন করি, তাহলে দেশের টাকা দেশেই থাকবে। আপনার বিয়েতে দেশের মানুষ কিছু সেবা করার সুযোগ পাবে, এমনকি ছোট ছোট গরীবরাও তাদের সন্তানদের কাছে আপনার বিয়ের কথা বলবে। আপনি কি স্থানীয় পণ্যের জন্য সরব হওয়ার এই মিশন বা অভিযানকে সম্প্রসারিত করতে পারেন না? আমরা আমাদের দেশেই এমন বিয়ের অনুষ্ঠান কেন করি না? এটা হতেই পারে, আপনি যে ধরনের সিস্টেম বা ব্যবস্থা চান, আজ সেটা এখানে না-ও থাকতে পারে, কিন্তু আমরা যদি এই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন এখানেই করি, তবে সেই ব্যবস্থাটিও যথারীতি বিকাশ লাভ করবে। এটা অনেক সম্পন্ন বড়সড় পরিবারের সঙ্গে সম্পৃক্ত এক বিষয়। আমি আশা করি যে আমার যন্ত্রণার কথা অবশ্যই সেই বড় পরিবারগুলিতে পৌঁছাবে।
আমার পারিবারিক স্বজন, উৎসবের এই মরশুমে আরও একটি বড় ট্রেন্ড বা প্রবণতাও কিন্তু চোখে পড়ছে! ….এটা টানা দ্বিতীয় বছর হলো, আমরা দেখতে পাচ্ছি দীপাবলী উপলক্ষে কোনো কিছু কেনাকাটার সময় নগদ টাকায় লেনদেনের ব্যাপারটা আস্তে আস্তে কমে আসছে! মানে, এখন সাধারণ মানুষ যত বেশি সম্ভব ডিজিট্যাল লেনদেনই করছেন! এটাও খুবই উৎসাহব্যঞ্জক বিষয়! আপনারা আরও একটি কাজ করতে পারেন! এটা ঠিক করে নিন, কোনো এক মাস ধরে আপনারা ইউপিআই বা এরকমই কোন ডিজিট্যাল মাধ্যম ব্যবহার করেই লেনদেন করবেন। নগদ লেনদেন একদমই করবেন না! ভারতে ডিজিট্যাল বিপ্লব এটাকে খুব ভালোভাবেই সম্ভব করে তুলেছে। কাজেই যখন এক মাস পেরিয়ে যাবে, এরপর আপনারা আমাকে আপনাদের অভিজ্ঞতা এবং ছবি অবশ্যই শেয়ার করবেন। আমি এখন থেকেই আপনাদের অগ্রিম শুভকামনা জানিয়ে রাখছি!
আমার পরিবারজন, আমাদের যুব বন্ধুরা দেশের জন্য আরও এক বড়সড় খুশির খবর বহন করে এনেছেন, যা নাকি আমাদের সবাইকে গর্বে ভরিয়ে তোলার মত বিষয়! ইন্টিলিজেন্স বা বুদ্ধিমত্তা, আইডিয়া বা ধারণা এবং ইনোভেশন বা উদ্ভাবনই আজ ভারতীয় যুব প্রজন্মের পরিচিতি হয়ে উঠেছে। এতে প্রযুক্তি সংযোজনের মাধ্যমে তাদের মেধা সম্পদের ক্রমাগত বৃদ্ধি হতে থাকলে, সেটা নিজে থেকেই দেশের সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির প্রতীক হয়ে ওঠে! আপনারা জেনে খুশি হবেন, ২০২২-এ ভারতীয়দের প্যাটেন্ট সংক্রান্ত আবেদনের মাত্রা ৩১ শতাংশের বেশি বেড়েছে! ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশন, বিশ্ব মেধা সম্পত্তি সংগঠন এক দারুণ আকর্ষণীয় প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে! এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্যাটেন্ট জমা করার ক্ষেত্রে বিশ্বের দশটি শীর্ষ দেশের ক্ষেত্রেও আগে কখনো এমনটা হয়নি। এই অসাধারণ অভিজ্ঞতা উপহার দেওয়ার জন্য আমাদের যুব বন্ধুদের আমি অনেক অনেক অভিনন্দন জানাচ্ছি! আমি আমাদের যুব বন্ধুদের এই আশ্বাস দিতে চাই, প্রতিটি পদক্ষেপে দেশ আপনাদের পাশে আছে। বর্তমান সরকার প্রশাসনিক ও আইনগত যে সমস্ত সংশোধনী এনেছে, এতে আমাদের যুব প্রজন্ম নতুন উদ্দীপনায় ব্যাপক সংখ্যায় উদ্ভাবনের কাজে যুক্ত হয়েছেন। দশ বছর আগের পরিসংখ্যানের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায় যে, আজ  আমাদের প্যাটেন্টের আবেদন দশ গুন বেশি অনুমোদন পাচ্ছে। আমরা সবাই জানি, প্যাটেন্টের মাধ্যমে শুধু দেশের মেধা সম্পদ বৃদ্ধি পায়, তা-ই নয়, বরং এতে নতুন নতুন সুযোগেরও দরজা খুলে যায়! শুধু কি তাই! এতে আমাদের স্টার্ট-আপগুলির শক্তি এবং ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয়। আজ আমাদের স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যেও উদ্ভাবনের ভাবনাকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। অটল টিংকারিং ল্যাব, অটল ইনোভেশন মিশন, কলেজগুলিতে ইনকিউবেশন সেন্টার, স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়া অভিযানের মত নিরন্তর প্রয়াসের সুফল দেশবাসী আজ পাচ্ছেন। এটাও ভারতের যুব শক্তি, ভারতের উদ্ভাবনী ক্ষমতার প্রত্যক্ষ উদাহরণ! এই উদ্দীপনা নিয়ে সামনে এগোতে এগোতে আমরা বিকশিত ভারতের সংকল্প সফল করে দেখাবো। আর এজন্যই আমি বার বার বলি ‘জয় জওয়ান, জয় কিসান, জয় বিজ্ঞান, জয় অনুসন্ধান!’
আমার প্রিয় দেশবাসী, আপনাদের মনে আছে কিছুকাল আগে 'মন কি বাত'-এ আমি ভারতে বিপুল সংখ্যক মেলার আয়োজন নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। তারপর এমন একটি প্রতিযোগিতার ধারণাও আসে, যেখানে লোকেরা মেলা সম্পর্কিত ছবি শেয়ার করবে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এ নিয়ে ‘মেলা মোমেন্টস’ মেলার মুহূর্তমালা শীর্ষক প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল। আপনি জেনে খুশি হবেন যে, হাজার হাজার মানুষ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন এবং অনেকে পুরস্কারও জিতে নিয়েছিলেন। কলকাতার বাসিন্দা রাজেশ ধরজি, “চরক মেলা”তে বেলুন এবং খেলনা বিক্রেতার দারুণ বর্ণময় ছবির জন্য পুরস্কার জিতে নিয়েছেন। গ্রাম বাংলায় এই মেলা খুবই জনপ্রিয়। বারাণসীর হোলি উৎসবের ছবি তুলে ধরার জন্য অনুপম সিংজি মেলা পোর্ট্রেট পুরস্কার পেয়েছেন। অরুণকুমার নলিমেলাজিকে 'কুলসাই দশেরা' আয়োজনের একটি আকর্ষণীয় দিক দেখানোর জন্য পুরস্কৃত করা হয়েছিল। একইভাবে, পন্ধরপুরের ভক্তি দেখানো আলোকচিত্রটি সর্বাধিক পছন্দ করা ছবির আওতায় প্রশংসিত হয়েছিলো, যা শ্রী রাহুলজি নামে মহারাষ্ট্রের এক ভদ্রলোক  পাঠিয়েছিলেন।
এই প্রতিযোগিতায় ‘মেলায় দেশীয় খাবারে’র অনেক ছবি এসেছিলো। এতে পুরুলিয়ার বাসিন্দা অলোক অবিনাশজির ছবি পুরস্কার জিতেছে। মেলায় তিনি বাংলার গ্রামাঞ্চলের খাবার দেখিয়েছিলেন।
প্রণব বসাকজির সেই ছবি, যেখানে মহিলারা ভাগোরিয়া উৎসবের সময় কুলফি উপভোগ করছেন, সেটিও পুরস্কৃত হয়েছিল। ছত্তিশগড়ের জগদলপুরে একটি গ্রামের মেলায় মহিলাদের তেলেভাজা খাওয়ার ছবি রুমেলাজি পাঠিয়েছিলেন-এটাকেও পুরস্কৃত করা হয়েছিল।
বন্ধুগণ, ‘মন কি বাত’-এর মাধ্যমে আজ প্রতিটি গ্রাম, স্কুল, পঞ্চায়েতে প্রতিনিয়ত এই ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করার আগ্রহ তৈরি হয়েছে। আজকাল তো সোশ্যাল মিডিয়ার এতটাই শক্তি যে, প্রযুক্তি ও মোবাইল প্রতিটি ঘরে পৌঁছে গেছে। আপনাদের লোকাল বা স্থানীয় পরব হোক, আর পণ্যই হোক, সেগুলোকে আপনারা এভাবেই গ্লোবাল করতে পারেন।
বন্ধুগণ, গ্রামে গ্রামে হওয়া মেলার মতই আমাদের এখানে বিভিন্ন শৈলীর নৃত্যেরও নিজস্ব ঐতিহ্য রয়েছে। ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের জনজাতীয় এলাকাগুলোতে এক বিখ্যাত নৃত্য আছে, যাকে ‘ছৌ’ নামে বলা হয়ে থাকে। ১৫ থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারতের ভাবনার সঙ্গে শ্রীনগরে ‘ছৌ’ পরবের আয়োজন করা হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানে সবাই ‘ছৌ’ নৃত্যশৈলী উপভোগ করেন। শ্রীনগরের তরুণ-তরুণীদের ছৌ নৃত্যের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য একটি কর্মশালারও আয়োজন হয়েছিল। এভাবেই, কয়েক সপ্তাহ আগে কাঠুয়া জেলায় ‘বসোহলি উৎসব’ আয়োজিত হয়েছিল। এই জায়গাটি জম্মু থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে। এই উৎসবে স্থানীয় সংস্কৃতি, লোকনৃত্য আর পরম্পরাগত রামলীলা’র আয়োজন হয়েছিল।
বন্ধুরা, ভারতীয় সংস্কৃতির সৌন্দর্য সৌদি আরবেও অনুভূত হয়েছিল। এই মাসেই সৌদি আরবে ‘সংস্কৃত উৎসব’ নামে এক অনুষ্ঠান হয়েছিল। যা ছিল এক অনন্য বিষয়, কেননা এই সম্পূর্ণ কর্মসূচিটিই ছিল সংস্কৃতে। সংলাপ, সঙ্গীত, নৃত্য সবকিছুই ছিল সংস্কৃতে। এতে সেখানকার স্থানীয় মানুষদের অংশ গ্রহণও দেখা গেছে।
আমার পরিজনেরা, ‘স্বচ্ছ ভারত’ এখন তো গোটা দেশের প্রিয় বিষয় হয়ে গেছে। এটা আমার তো প্রিয় বিষয়ই, আর যখনই আমি এর সঙ্গে যুক্ত কোনো খবর পাই, আমার মন সেদিকেই  চলে যায়। আর স্বাভাবিক ভাবেই সেই বিষয়টা মন কি বাতে স্থান পেয়েই যায়। ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ সাফ-সাফাই আর সর্বজনীন স্বচ্ছতাকে নিয়ে মানুষের চিন্তাধারাই বদলে দিয়েছে। এই উদ্যোগ আজ জাতীয় চেতনার প্রতীক হয়ে উঠেছে। যা কোটি কোটি দেশবাসীর জীবনকে উন্নত করেছে। এই অভিযান নানা জায়গার মানুষ বিশেষ করে যুবদের সর্বজনীন অংশ গ্রহণের জন্যও অনুপ্রাণিত করেছে। এরকমই একটি প্রচেষ্টা সুরাটে দেখতে পাওয়া গেছে। যুবদের একটি দল সেখানে ‘প্রজেক্ট সুরাট’-এর সূচনা করেছে। যার লক্ষ্য হচ্ছে, সুরাটকে এমন একটি মডেল শহর হিসেবে তৈরি করা, যা পরিচ্ছন্নতা আর দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের যেন এক অসাধারণ উদাহরণ হতে পারে। ‘সাফাই সানডে’ নামে শুরু হওয়া এই পদক্ষেপের মাধ্যমে সুরাটের যুবরা আগে সর্বজনীন জায়গাগুলো আর ডুমাস সৈকতে সাফাই অভিযান করতেন। পরবর্তীতে তারা তাপি নদীর তীরভূমিরও সাফাই অভিযান শুরু করেন। আর আপনারা জেনে খুশি হবেন যে, দেখতে না দেখতেই, এর সঙ্গে সংযুক্ত মানুষের সংখ্যা ৫০ হাজারেরও বেশি হয়ে গেছে। মানুষের সহযোগিতা পেয়ে দলের আত্মবিশ্বাস আরও বৃদ্ধি পায়। যার ফলে তারা আবর্জনা একত্রিত করার কাজও শুরু করেন। আপনারা জেনে অবাক হবেন যে, এই টিম লক্ষ লক্ষ কেজি আবর্জনা অপসারণ করেছে। বাস্তব ক্ষেত্রে হওয়া এই ধরনের প্রচেষ্টা অনেক বড় পরিবর্তন নিয়ে আসবে।
বন্ধুগণ, গুজরাট থেকেই আরও একটি তথ্য এসেছে। কয়েক সপ্তাহ আগে সেখানে অম্বাজিতে ‘ভাদরবি পুনম মেলা’র আয়োজন হয়েছিল। এই মেলায় ৫০ লক্ষের বেশি মানুষ এসেছিলেন। এই মেলা প্রতি বছর হয়ে থাকে। এই মেলার বিশেষত্ব হচ্ছে যে, মেলায় আসা লোকেরা ‘গব্বর হিল’-এর একটা বড় অংশে সাফাই অভিযান চালিয়েছেন। মন্দিরের আশেপাশের গোটা এলাকাকে পরিচ্ছন্ন রাখার এই অভিযান অনেক অনুপ্রেরণাদায়ী।
বন্ধুগণ, আমি সবসময় বলে থাকি যে, পরিচ্ছন্নতা কোনো একটি দিন বা একটি সপ্তাহের অভিযান নয়, বরঞ্চ তা জীবনের সঙ্গে জারিত করার কাজ। আমরা আমাদের আশেপাশে এই ধরনের মানুষকে দেখতেও পাই, যাঁরা নিজেদের সম্পূর্ণ জীবনকে স্বচ্ছতার সঙ্গে যুক্ত বিষয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করে দিয়েছেন। তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুরের বাসিন্দা লোগানাথনজিও এরকমই অতুলনীয়। ছোটবেলা গরিব ছেলেমেয়েদের ছেঁড়া কাপড় দেখে তিনি প্রায় সময় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়তেন। তারপর তিনি এই ধরনের ছেলেমেয়েদের সহায়তা করার জন্য সংকল্প গ্রহণ করে নিজের আয়ের একটা অংশ তাদেরকে দান করা শুরু করেন। টাকা-পয়সার অভাব দেখা দিলে লোগানাথনজি শৌচালয় পর্যন্ত পরিষ্কার করেছেন, যাতে অভাবগ্রস্ত ছেলেমেয়েদের সহায়তা করতে পারেন। তিনি গত ২৫ বছর ধরে সম্পূর্ণ সমর্পিত মনোভাব নিয়ে এই কাজে যুক্ত আছেন, আর এখন পর্যন্ত ১৫০০ এর বেশি এরকম ছেলেমেয়েদের সহায়তা করেছেন। আমি আরও একবার এই ধরনের প্রচেষ্টার প্রশংসা করছি। দেশজুড়ে হওয়া এই ধরনের অনেক প্রচেষ্টা আমাদেরকে শুধুমাত্র অনুপ্রাণিতই করে না, বরঞ্চ কিছু নতুন করার ইচ্ছাশক্তিকে জাগিয়ে তুলে।
আমার পরিবারজন, একবিংশ শতাব্দীর নানা প্রতিকূলতার মধ্যে একটি হচ্ছে—‘জল সুরক্ষা’। জলের সংরক্ষণ করা, জীবন রক্ষা করার চেয়ে কম নয়। যখন আমরা সর্বজনীনতার কোনো ভাবনা থেকে কোনো কাজ করি, তাতে সফলতাও আসে। দেশের প্রতিটি জেলায় হওয়া ‘অমৃত সরোবর’ও এর একটি উদাহরণ। ‘অমৃত মহোৎসবে’র সময় ভারত ৬৫ হাজারের বেশি যে ‘অমৃত সরোবর’ তৈরি করেছে, সেগুলোতে আগামী প্রজন্মের সুবিধা হবে। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, যেখানে যেখানে ‘অমৃত সরোবর’ তৈরি হয়েছে, সেগুলোর নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ যাতে হয়। সেগুলো যেন জল সংরক্ষণের প্রধান উৎস হয়ে থাকে।
বন্ধুগণ, জল সংরক্ষণের এই আলোচনার মধ্যে গুজরাটের আমারেলিতে হওয়া ‘জল উৎসব’-এর সম্পর্কেও আমি জানতে পারি। গুজরাটে বারো মাস বয়ে চলা নদীরও অভাব রয়েছে, তাই মানুষকে বেশিরভাগ সময়েই বৃষ্টির জলের উপরেই নির্ভর করতে হয়। গত ২০-২৫ বছরে সরকার আর সামাজিক সংস্থাগুলোর প্রচেষ্টায় সেখানকার পরিস্থিতিতে অবশ্যই পরিবর্তন এসেছে। আর সেজন্য সেখানে জল উৎসবের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। আমরেলিতে হওয়া জল উৎসবের সময় ‘জল সংরক্ষণ’ আর জলাশয়ের সংরক্ষণ নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা করা হয়েছে। সেখানে ‘ওয়াটার স্পোর্টস’-এরও প্রচার করা হয়, জল সুরক্ষার বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনারও ব্যবস্থা হয়। অনুষ্ঠানে শামিল হওয়া মানুষদের তেরঙ্গাওয়ালা ওয়াটার ফাউন্টেন খুব পছন্দ হয়েছে। সুরাটের ডায়মন্ড বিজনেসে খুব নাম করা সাওজিভাই ঢোলকিয়ার ফাউন্ডেশন এই জল উৎসবের আয়োজন করে। এতে যুক্ত হওয়া প্রত্যেককে অভিনন্দন জানাই। জল সংরক্ষণের জন্য এই ধরনের কাজ করার জন্য শুভ কামনা জানাই।
আমার পরিবারজন, আজ বিশ্বজুড়ে দক্ষতা উন্নয়নের গুরুত্বকে স্বীকার করা হচ্ছে। কাউকে যখন কোনো স্কিল শেখানো হয়, তখন তাকে শুধুমাত্র দক্ষতাই দেয়া হয় না, সেই সঙ্গে তাকে উপার্জনেরও একটা মাধ্যম দেওয়া হয়ে থাকে। আমি যখন জানতে পারি যে, একটি সংস্থা গত চার দশক ধরে স্কিল ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করছে, তো আমার খুব ভালো লেগেছে। এই সংস্থা অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলম এলাকায়, আর তার নাম হচ্ছে ‘বেল্জিপুরম ইয়ুথ ক্লাব’। দক্ষতা উন্নয়নের উপর গুরুত্ব দিয়ে এই ‘বেল্জিপুরম ইয়ুথ ক্লাব’ প্রায় ৭০০০ মহিলাকে ক্ষমতায়ন করেছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ মহিলাই আজ নিজেদের প্রচেষ্টায় নিজেদের কিছু কাজ করছেন। এই সংস্থার পক্ষ থেকে শিশু শ্রমের সঙ্গে যুক্ত ছোট ছেলেমেয়েদেরকেও কোনো না কোনো স্কিল শিখিয়ে দিয়ে তাকে সেই দুষ্টচক্র থেকে বাইরে বেরিয়ে আসার ক্ষেত্রে সহায়তা করা হচ্ছে। বেল্জিপুরম ইয়ুথ ক্লাবের টিম কৃষক উৎপাদন সংঘ অর্থাৎ এফ.পি.ও.’র সঙ্গে যুক্ত কৃষকদেরও নতুন স্কিল শিখিয়েছে, যার ফলে প্রচুর কৃষকেরও ক্ষমতায়ন হয়েছে। স্বচ্ছতাকে নিয়েও এই ইয়ুথ ক্লাব গ্রামে গ্রামে সচেতনতা বৃদ্ধি করছে। তারা অনেক শৌচালয়ের নির্মাণেও সহায়তা করেছে। দক্ষতা উন্নয়নের জন্য এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত সবাইকে আমি অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই। আমি তাদের প্রশংসা করছি। আজ দেশের গ্রামে গ্রামে স্কিল ডেভেলপমেন্ট-এর জন্য এই ধরনের সর্বজনীন উদ্যোগের বিশেষ প্রয়োজন।
বন্ধুগণ, যখন কোনো একটি লক্ষ্যের জন্য সর্বজনীন প্রচেষ্টা হয়ে থাকে, তখন সফলতার উচ্চতাও অনেক বেশি হয়ে থাকে। আমি আপনাদের সঙ্গে লাদাখের একটি অনুপ্রেরণাদায়ক উদাহরণ আলোচনা করতে চাই। আপনারা পশমিনা শালের সম্পর্কে তো অনেক শুনেছেন। কিছুদিন থেকে লাদাখের পশমিনার অনেক আলোচনা হচ্ছে। লাদাখি পশমিনা ‘লুমস অফ লাদাখ’ নামে বিশ্বের নানা বাজারে পৌঁছাচ্ছে। আপনারা এটা জেনে অবাক হয়ে যাবেন যে, এগুলো তৈরি করার সঙ্গে ১৫টি গ্রামের ৪৫০ জনের বেশি মহিলা যুক্ত আছেন। আগে তারা তাদের এই উৎপাদন সেখানে যাওয়া পর্যটকদের কাছেই বিক্রি করতেন। কিন্তু এখন ডিজিটাল ভারতের এই যুগে, তাঁদের তৈরি জিনিস দেশ-দুনিয়ার নানা বাজারে পৌঁছে যাচ্ছে। অর্থাৎ আমাদের লোকাল এখন গ্লোবাল হচ্ছে, আর এতে ওই মহিলাদের উপার্জনও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বন্ধুগণ, নারীশক্তির এই ধরনের সফলতা দেশের নানা প্রান্তে রয়েছে। এই ধরনের বিষয়গুলোকে আরও বেশি করে সামনে নিয়ে আসা প্রয়োজন। আর সেগুলোকে বলার জন্য ‘মন কি বাত’-এর চেয়ে আরও ভালো মাধ্যম কী হতে পারে? তো, আপনারাও এই ধরনের উদাহরণকে আমার সঙ্গে যত বেশি সম্ভব শেয়ার করুন। সেগুলোকে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য আমিও সম্পূর্ণ প্রচেষ্টা করবো।
আমার পরিবারজন, ‘মন কি বাত’-এর মধ্যে আমরা সমাজে বড় বড় পরিবর্তন নিয়ে আসা এই ধরনের সর্বজনীন প্রচেষ্টার আলোচনা করেই থাকি। ‘মন কি বাত’-এর আরও একটি বড় প্রাপ্তি হচ্ছে, এর মাধ্যমে ঘরে ঘরে এখন রেডিও আরও বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ‘মাই গভ’-এর মধ্যে উত্তরপ্রদেশের আমরোহার রাম সিংহ বৌদ্ধজি’র একটি চিঠি আমি পেয়েছি। রাম সিংহজি গত কয়েক দশক থেকে রেডিও সংগ্রহ করার কাজে যুক্ত আছেন। তাঁর বক্তব্য হচ্ছে, ‘মন কি বাত’-এর পরে তাঁর এই রেডিও মিউজিয়ামের প্রতি মানুষের আগ্রহ আরও বৃদ্ধি পেয়ে গেছে। এরকমই ‘মন কি বাত’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আহমেদাবাদের কাছে তীর্থধাম প্রেরণা তীর্থ এক অসাধারণ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেছে। সেখানে দেশ-বিদেশের একশটির বেশি এন্টিক রেডিও রাখা হয়েছে। যেখানে ‘মন কি বাত’-এর এখন পর্যন্ত হওয়া প্রত্যেকটি এপিসোড বা পর্ব শোনা যায়। আরও অনেক উদাহরণ রয়েছে, যা থেকে জানা যায় মানুষ কীভাবে ‘মন কি বাত’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেদের কাজ শুরু করেছেন। এরকমই একটি উদাহরণ কর্ণাটকের চামরাজনগরের বর্ষাজির রয়েছে। ‘মন কি বাত’ যাঁকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য অনুপ্রাণিত করেছে। এই অনুষ্ঠানের একটি পর্ব থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি কলা থেকে জৈব সার তৈরি কাজ শুরু করেন। প্রকৃতির প্রতি ভালবাসা থেকে বর্ষাজি’র এই প্রচেষ্টা অন্যদেরও রোজগারের সুযোগ এনে দিয়েছে।
আমার পরিবারজন, আগামীকাল ২৭ নভেম্বর কার্তিক পূর্ণিমার পরব। এই দিনে ‘দেব দীপাবলি’ও উদযাপন করা হয়। আর আমার তো মন পড়ে থাকে, যেন আমি কাশীর ‘দেব দীপাবলি’ অবশ্যই দেখি। তবে এইবার তো আমি কাশী যেতে পারছি না, কিন্তু ‘মন কি বাত’-এর মাধ্যমে বেনারসের মানুষদের আমি আমার শুভকামনা অবশ্যই পাঠাচ্ছি। এইবারও কাশীর ঘাটগুলোতে লক্ষ লক্ষ প্রদীপ জ্বালানো হবে। জাকজমকপূর্ণ আরতি হবে, লেজার শো হবে, দেশ-বিদেশ থেকে আসা লক্ষ লক্ষ মানুষ ‘দেব দীপাবলি’র আনন্দ উপভোগ করবেন।
বন্ধুগণ, আগামীকাল পূর্ণিমার দিনেই গুরুনানক দেবজি’রও প্রকাশ পরব। গুরুনানকজি’র অমূল্য বাণী শুধুমাত্র ভারতেই নয়, বিশ্বজুড়ে আজও অনুপ্রেরণাদায়ী আর প্রাসঙ্গিক। এই বাণীগুলো আমাদেরকে সরল, সম্প্রীতিপূর্ণ এবং অন্যের প্রতি নিবেদিত হতে অনুপ্রাণিত করে। গুরুনানক দেবজি সেবা ভাবনা, সেবাকার্যের যে শিক্ষা দিয়েছেন, তার প্রতিপালন, আমাদের শিখ ভাই-বোনেদেরকে গোটা বিশ্বজুড়ে করতে দেখা যায়। আমি ‘মন কি বাত’-এর সমস্ত শ্রোতাদের গুরুনানক দেবজি’র প্রকাশ পরবের অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।
আমার পরিবারজন, ‘মন কি বাত’-এ এইবার আমার সঙ্গে এইটুকুই। দেখতে দেখতে ২০২৩ সাল সমাপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আর প্রত্যেক বারের মতই আমি-আপনারা সবাই এটাই ভাবছি যে, আরে... এত তাড়াতাড়ি বছরটি চলে গেল। কিন্তু এটাও ঠিক যে, এই বছরটি ভারতের জন্য অনেক অর্জন আর সাফল্যের বছর ছিল। আর ভারতের অর্জন হচ্ছে প্রত্যেক ভারতীয়ের অর্জন। আমি খুশি যে, ‘মন কি বাত’ ভারতীয়দের এইসব অর্জন ও সফলতাকে সামনে নিয়ে আসার এক শক্তিশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। আগামী বার দেশবাসীর অনেক সফলতা নিয়ে আপনাদের সঙ্গে পুনরায় কথা হবে। তখন পর্যন্ত আমাকে বিদায় দিন।

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

নমস্কার   


SKC/PIB/Agt



(Release ID: 1979923) Visitor Counter : 229


Read this release in: English