প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানকারী বিশ্বনেতৃবৃন্দকে ভারতের তরফে উপহার
Posted On:
12 SEP 2023 3:45PM by PIB Kolkata
শ্রীজাতা সাহা সাহু
বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় করার গুরুত্বপূর্ণ একটি পন্থা হল উপহার সামগ্রী বিনিময়। নতুন দিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের সময় ভারত সম্মেলনে আগত বিশ্বনেতৃবৃন্দের হাতে বিভিন্ন উপহার সামগ্রী তুলে দিয়েছে। এইসব উপহার সামগ্রীতে দেশের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ছোঁয়া রয়েছে। এখানে হস্তশিল্পীদের সুন্দর সুন্দর শিল্পকর্ম যেমন রয়েছে পাশাপাশি, সেই শিল্পকর্মে এদেশের চিরায়ত ঐতিহ্য-ও স্থান পেয়েছে। এগুলি আগামীদিনে এই সম্মেলন সম্পর্কে স্মৃতিচারণার অন্যতম প্রতিপাদ্য বিষয় হয়ে উঠবে।
যে সব উপহার সামগ্রী অতিথিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে সুন্দরবনের মধু, দার্জিলিং-এর অরেঞ্জ পিকো চা, নীলগিরির চা, আরাকু উপত্যকার কফি, কাশ্মীর উপত্যকার জাফরান এবং রাষ্ট্রনেতাদের স্ত্রীদের জন্য বিভিন্ন রাজ্যের সুন্দর নক্সার স্টোল।
বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবন গড়ে উঠেছে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র এবং মেঘনা নদীর অববাহিকায়, বঙ্গোপসাগরের তীরে। এই বনে মৌমাছি চাক বানায়। মৌ-চাষের আগে এই অঞ্চলের মানুষ জঙ্গলে ঢুকে মৌচাক ভেঙে মধু সংগ্রহ করতো। এঁরা মৌলি নামে পরিচিত।

সুন্দরবনের লোভনীয় মধু এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্যের প্রতিফলন। এখানে খালিসা, বানি, গড়ান - সহ বিভিন্ন ফুলের মধু পাওয়া যায়। ১০০ শতাংশ প্রাকৃতিক সুন্দরবনের মধুর গুণ এক কথায় বলা যায় অপরিসীম।
দার্জিলিং-এর অরেঞ্জ পিকো চা এবং নীলগিরির চা ভারতের চা শিল্পের দুটি মূল্যবান রত্ন। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের চা চাষের বৈশিষ্ট্যের কারণে এই দুই ধরনের চা কিছুটা পৃথক।
দার্জিলিং-এর চা বিশ্বে অত্যন্ত সমাদৃত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩ হাজার বা ৫ হাজার ফুট উচ্চতায় কুয়াশা ঘেরা পাহাড়ে এই চায়ের চাষ হয়। এই অঞ্চলের মাটির বিশেষ গুণের কারণে দার্জিলিং-এর সুগন্ধী চা যখন আপনার টেবিলে পৌঁছায়, তখন সেই চায়ে দ্রুত চুমুক না দিয়ে থাকা যায় না।

নীলগিরির চা দক্ষিণ ভারতের পার্বত্য অঞ্চলে পাওয়া যায়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এক হাজার ফুট বা তিন হাজার ফুট উচ্চতায় এই চায়ের চাষ হয়। নীলগিরির চা মাঝারি মাপের কড়া স্বাদের। তবে, এর এক অদ্ভূদ সুন্দর গন্ধ রয়েছে। মূলত আইস টি-তে লেবুর রস দিয়ে এই চা খেতে অনবদ্য।
অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে আরাকু কফি, তার অতুলনীয় মশলাদার স্বাদের জন্য বিখ্যাত। প্রকৃতির সঙ্গে সুন্দর সহাবস্থানে আরাকু উপত্যকার কৃষকরা এই কফির চাষ করেন। এখানে কোন রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগ করা হয় না। পুরো কফি উৎপাদন হয় যন্ত্রের সাহায্য ছাড়াই। বিশেষ ধরনের জৈব গুণসম্পন্ন এই কফি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে চাষ করা হয়।

কাশ্মীর উপত্যকার জাফরানকে অনেক সময়ই ‘লোহিত সোনা’ বলা হয়। হাজার হাজার ফুলের থেকে মাত্র কয়েক গ্রাম জাফরান পাওয়া যায়। এক ধরনের অ্যাসিড এবং ক্রোসিনের সংমিশ্রণে তৈরি ক্রোসেটিনের কারণে লালচে কমলা রঙের জাফরান বছরে খুব কম সময়ে চাষ হয়। স্বাদে এবং গন্ধে অতুলনীয় এই জাফরানের অক্টোবরের শেষে চাষ শুরু হয়। নভেম্বরে জাফরান ফুল তুলে ফেলতে হয়। ষোড়শ শতাব্দীর কবি হাব্বা খাতুন যিনি কাশ্মীরের নাইটিঙ্গেল নামে পরিচিতা, জাফরানকে তাঁর কবিতায় ঠাঁই দিয়েছিলেন। রান্না ব্যবহৃত জাফরানের অনেক গুণ আছে। জাফরান থেকে পাওয়া তেল ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে। জাফরানে পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, লোহা, ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়াম, তামা, দস্তা এবং ম্যাগনেসিয়াম-সহ বিভিন্ন উপাদান রয়েছে। এছাড়াও এতে ফলিক অ্যাসিড, নিয়াসিন, রিবোফ্লেবিন, ভিটামিন এ এবং সি রয়েছে, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী।
SSS/CB/AS
(Release ID: 1956658)