বিজ্ঞানওপ্রযুক্তিমন্ত্রক

ধ্বংস হওয়া নক্ষত্রের থেকে গামা রশ্মির বিস্ফোরণ প্রত্যক্ষ করলেন ভারতীয় সহ বিভিন্ন দেশের জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা

Posted On: 27 JUL 2021 5:18PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লী, ২৭ জুলাই, ২০২১

জ্যোর্তিবিজ্ঞানীদের একটি দল অত্যন্ত স্বল্প সময়ের জন্য উচ্চশক্তি বিকিরণযুক্ত একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ প্রত্যক্ষ করেছেন। মাত্র কয়েক সেকেন্ড সময়ে এই বিস্ফোরণ হয়েছে। নাসার ফার্মি গামা রক্ষ্মি মহাকাশ টেলিস্কোপ ২০২০র ২৬শে আগস্ট এই বিস্ফোরণ দেখতে পায়। একটি বৃহৎ নক্ষত্রের পতনের কারণে অত্যন্ত স্বল্প সময়ে গামা রশ্মির বিস্ফোরণটি হয়েছিল।
গামা রশ্মির বিস্ফোরণ বিশ্ব ব্রহ্মান্ডে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। কোটি কোটি আলোকবর্ষ ধরে এই বিস্ফোরণ চলতে থাকে । জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা সাধারণত দু-ধরণের বিস্ফোরণ চিহ্নিত করেন- দীর্ঘ সময় ধরে ঘটা বিস্ফোরণ এবং স্বল্প সময় চলা বিস্ফোরণ। যখন একটি বৃহৎ নক্ষত্র ধ্বংস হয়ে যায় তখন বিস্ফোরণের সময়সীমা অনেক বেশি থাকে। তবে স্বল্প সময়ের বিস্ফোরণ অন্য নানা কারণে হয়ে থাকে।
এই ধরণের একটি স্বল্প সময়ের গামা রশ্মির বিস্ফোরণ বিশ্বের বেশ কয়েকজন জ্যোর্তিবিজ্ঞানী প্রত্যক্ষ করেছেন। এঁদের সঙ্গে ভারতের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের স্বায়ত্ত্ব শাসিত সংস্থা আর্যভট্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউট অফ অবজারভেশনাল সায়েন্সেস-এর ডঃ শশীভূষণ পান্ডে ছাড়াও পুনের ইন্টার ইউনির্ভাসিটি সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রো ফিজিক্স, টাটা ইন্সটিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চের ন্যাশনাল সেন্টার ফর রেডিও অ্যাস্ট্রো ফিজিক্স এবং বম্বে আইআইটি-র বিজ্ঞানীরাও এই মহাজাগতিক বিস্ফোরণটির সাক্ষী ছিলেন।
ডঃ পান্ডে জানান, গামা রশ্মির বিস্ফোরণ নিয়ে তৈরি হওয়া দীর্ঘদিনের প্রশ্নের উত্তর এই ধরণের বিস্ফোরণ দেখলে পাওয়া যায়। জিআরবি ২০০৮২৬- হিসেবে পরিচিত এই বিস্ফোরণটির খবর নেচার অ্যাস্ট্রোনমি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। যখন একটি নক্ষত্রের ওজন পৃথিবীর থেকেও বেশি হয় এবং সেই নক্ষত্রের জ্বালানী শেষ হয়ে যায় সেইসময় নক্ষত্রটির পতন ঘটে। এক্ষেত্রে একটি কৃষ্ণ গহ্বরের দিকে নক্ষত্রের উপাদানগুলি ধাবিত হয়। কিন্তু সেইসময় কিছু বিপরীতমুখী উপাদান প্রবল বেগে কৃষ্ণ গহ্বর থেকে বেরিয়ে আসে। জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা গামা রশ্মির বিস্ফোরণ তখনই শনাক্ত করতে পারেন যখন এ ধরণের উচ্চগতি সম্পন্ন উপাদানগুলি পৃথিবীর অভিমুখে এগিয়ে আসে। উচ্চগতি সম্পন্ন কণাগুলি যখন কোনো নক্ষত্রের মধ্যে ঢোকে তখন সেখান থেকে গামা রশ্মি উৎপন্ন হয়। গামা রশ্মি আসলে আলোর উচ্চশক্তি সম্পন্ন একটি উপাদান, যার স্থায়িত্ব মাত্র কয়েক মিনিট। বিস্ফোরণের পর ওই নক্ষত্রটি ক্রমশ প্রসারিত হতে থাকে। গামা রশ্মির বিস্ফোরণের সময়কাল কম হলে বোঝা যায় নক্ষত্রের ধ্বংসের পর সেটি কোটি কোটি বছর ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং অন্য কোন উপাদানের সঙ্গে তার সংঘর্ষ হয়েছে।
২০২০-র এই মহাজাগতিক দৃশ্যপট দেখার ফলে বিজ্ঞানীদের কাছে অনেক প্রশ্নের উত্তর এসেছে। দীর্ঘসময় ধরে গামা রশ্মির বিস্ফোরণের ফলে একটি নক্ষত্র আর একটি নক্ষত্রের ওপর ধাবিত হয় অর্থাৎ যাকে আমরা সুপারনোভা বলে থাকি। জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা দীর্ঘসময় ধরে গামা রশ্মির বিস্ফোরণের চাইতেও আরও বেশি সংখ্যায় সুপারনোভাকে শনাক্ত করতে পারেন। তবে যখন উচ্চগতি সম্পন্ন উপাদান ধ্বংস হয়ে যাওয়া নক্ষত্র থেকে বেরিয়ে আসে তখন ওই উপাদানের প্রকৃত উৎসের সম্পর্কে ধারণা নাও মিলতে পারে।

CG/CB/NS


(Release ID: 1739516) Visitor Counter : 253


Read this release in: English