স্বাস্থ্যওপরিবারকল্যাণমন্ত্রক

কোভিড-১৯ এ মৃত্যু : অসত্য ও প্রকৃত তথ্য

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক রাজ্যগুলিকে তাদের হাসপাতালে মৃত্যুর সংখ্যা নিরূপণে পরামর্শ দিয়ে এসেছে এবং যে কোনও আক্রান্তের ঘটনা বা মৃত্যুর বিষয়ে কোনও কারণে নজর এড়িয়ে গেলে তা রিপোর্ট করে রাখার জন্য বলা হয়েছে
ভারতে আইসিএমআর - এর নীতি-নির্দেশিকা অনুসরণ করা হয়, এই নির্দেশিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃত
কোভিড-১৯ এ মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনা নথিভুক্ত করে রাখার জন্য ভারতে উপযুক্ত ব্যবস্থা রয়েছে

Posted On: 22 JUL 2021 2:37PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২২ জুলাই, ২০২১

সম্প্রতি এক শ্রেণীর সংবাদ মাধ্যমে কোভিড-১৯ এ মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি পরিসংখ্যানের তুলনায় কয়েক মিলিয়ন ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
এই সংবাদ প্রতিবেদনগুলিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলিতে বয়স-ভিত্তিক সংক্রমণের দরুণ মৃত্যুর হার নির্ণয়ে সম্প্রতি যে সমীক্ষা পরিচালিত হয়েছে, তার ভিত্তিতে ভারতেও সেরো-পজিটিভিটি অনুযায়ী মৃত্যুর সংখ্যায় অতিরিক্ত হিসাব করা হয়েছে। মৃত্যুর পরিসংখ্যানের ক্ষেত্রে সমীক্ষা-নির্ভর প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণ সবসময়ে সঠিক তথ্য দেয় না। অনেক ক্ষেত্রেই একটি দেশে অন্য কোনও সংক্রমণে ব্যক্তির মৃত্যু ঘটলে, সেই ঘটনাকেও নির্দিষ্ট একটি ভাইরাসের কারণে হয়েছে বলে মনে করা উচিৎ নয়। এ ধরনের মৃত্যুর ক্ষেত্রে একাধিক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কারণ থাকে। বিভিন্ন ধর্ম/জাতির মানুষের ক্ষেত্রে রোগ-প্রতিরোধক ক্ষমতা এবং রোগাক্রান্ত হওয়ার হার ভিন্ন ভিন্ন। তাই, ভারতেও মৃত্যুর ক্ষেত্রে এই বিষয়টি প্রযোজ্য।
সেরো-পজিটিভিটি সম্পর্কিত সমীক্ষাগুলি কেবল সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করতে উপযুক্ত রণকৌশল ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যই কাজে লাগানো হয় না, সেই সঙ্গে অসুরক্ষিত ও দুর্বল শ্রেণীর মানুষের মধ্যে সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং সংক্রমণজনিত মৃত্যুর সংখ্যার আগাম হিসাবের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়। সংবাদ মাধ্যমে সম্প্রতি প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, কোভিডের কারণে মৃত্যুর সংখ্যার সঠিক পরিসংখ্যান প্রকাশ না করার ব্যাপারে তথাকথিত যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন এবং সম্পূর্ণ অসত্য। অধিক সংখ্যায় মৃত্যু এই শব্দবন্ধ দুটি সব ধরনের অসুস্থতার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা নিরূপণে ব্যবহার করা হয়। তাই, সমস্ত মৃত্যুর জন্যই কোভিড-১৯ দায়ী এরকম বিবেচনা করা অযাচিত।
ভারতে আক্রান্তদের খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে উপযুক্ত কৌশল রয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে উপসর্গবিশিষ্ট বা স্বল্প উপসর্গবিশিষ্ট ব্যক্তিদের কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। তবে, কোনও ব্যক্তি নিশ্চিতভাবে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন, এটা তখনই জানা যায়, যখন আরটিপিসিআর পদ্ধতিতে নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। দেশে নমুনা পরীক্ষাগারের সংখ্যা ২ হাজার ৭০০-রও বেশি। তাই, যে কোনও স্বেচ্ছায় নমুনা পরীক্ষা করাতে পারেন। নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজন-সাপেক্ষে হাসপাতালে ভর্তি করা বা বাড়িতে থেকেই চিকিৎসার বন্দোবস্ত করায হয়।
মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সংক্রামক ও অসুখ-বিসুখ এবং এ ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও মোকাবিলা সম্পর্কিত নীতি অনুযায়ী ভারতে মৃত্যুর সংখ্যা নথিভুক্তিকরণে উপযুক্ত ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। তবে, কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঘটনা নথিভুক্তিকরণ অনেক সময় করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। পরিসংখ্যান দিয়ে মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর দেশে মৃত্যু হার ছিল ১.৪৫ শতাংশ। এরপর, চলতি বছরের এপ্রিল-মে মাসে মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ-এর সময় আক্রান্তের ঘটনা অভাবনীয় হারে বৃদ্ধি পেলেও বর্তমানে মৃত্যু হার ১.৩৪ শতাংশ। দেশে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত মৃত্যুর সংখ্যা নিরূপণ ও তা নথিভুক্তিকরণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃত পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।
সংসদের চলতি বাদল অধিবেশনে রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী শ্রী মনসুখ মান্ডভিয়া এক বিবৃতি দিয়ে কোভিড-১৯ এ মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা গোপন রাখা সম্পর্কিত যাবতীয় অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেছেন রাজ্য সরকারের পাঠানো তথ্য একত্রিত করেই কেন্দ্রীয় সরকার পরিসংখ্যান প্রকাশ করে থাকে। তিনি আরও জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃত নীতি-নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রতিটি মৃত্যুর ঘটনাই নথিভুক্তিকরণের জন্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একাধিকবার নির্দিষ্ট সময় অন্তর রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জেলা-ভিত্তিক আক্রান্তের ঘটনা ও মৃত্যুর সংখ্যার ওপর দৈনিক নজরদারির জন্য এক উপযুক্ত ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর মন্ত্রক লাগাতার গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে তাদের হাসপাতালে মৃত্যু বা আক্রান্তের কোনও ঘটনা নথিভুক্ত করা না হয়ে থাকলে তা পুনরায় খতিয়ে দেখার পরামর্শ দেওয়া হয়। মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ-এর বাড়বাড়ন্তের সময় সমগ্র স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করে তোলার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যাতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনা নথিভুক্ত করা যায়। তবে, মহারাষ্ট্র, বিহার ও মধ্যপ্রদেশের মতো কয়েকটি রাজ্যে সম্প্রতি মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ না করার মতোও ঘটনা ঘটেছে। এই প্রেক্ষিতে রাজ্যগুলিকে মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনা এড়িয়ে না গিয়ে প্রকৃত তথ্য প্রকাশের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

CG/BD/SB



(Release ID: 1737688) Visitor Counter : 238


Read this release in: English