প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
প্রধানমন্ত্রী ভিভাটেকের পঞ্চম সম্মেলনে মূল ভাষণ দিয়েছেন
আমাদের বিশ্বকে ভবিষ্যতে কোনো মহামারীর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে
মহামারীর সময়ে ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের পরিস্থিতির মোকাবিলা, পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে তোলা, স্বস্তি এবং সান্ত্বনা যুগিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
বিঘ্ন ঘটার অর্থ এই নয়, আমরা হতাশায় ভুগছি, আমরা আসলে মেরামত করা এবং প্রস্তুত করার ভিত দুটির উপর গুরুত্ব দিয়েছি : প্রধানমন্ত্রী
আমাদের গ্রহ যে সব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন, সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে হলে সমষ্টিগত উদ্যোগ এবং জনমুখী ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন : প্রধানমন্ত্রী
এই মহামারী আমাদের প্রাণশক্তিকে কেবল পরীক্ষা করছে না, একই সঙ্গে আমাদের কল্পনাশক্তিরও পরীক্ষা নিচ্ছে।
সকলের জন্য আরো সমন্বিত, যত্নবান ও স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার একটি সুযোগ আজ এসেছে : প্রধানমন্ত্রী
ভারতে বিশ্বের বৃহত্তম স্টার্টআপ ব্যবস্থাপনা রয়েছে, উদ্ভাবক এবং বিনিয়োগকারীরা যা যা চান, সেগুলি সবই এখানে পাওয়া যাবে : প্রধানমন্ত্রী
মেধা, বাজার, মূলধন, পারিপার্শ্বিক ব্যবস্থা এবং মুক্ত চিন্তা – এই পাঁচটি স্তম্ভের উপর ভিত্তি করে সারা বিশ্বকে আমি ভারতে বিনিয়োগে আহ্বান জানাচ্ছি : প্রধানমন্ত্রী
ফ্রান
Posted On:
16 JUN 2021 9:17AM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ১৬ই জুন, ২০২১
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভিভাটেকের পঞ্চম সম্মেলনে মূল ভাষণ দিয়েছেন। ২০২১-এর ভিভাটেকে সম্মানীয় অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। প্যারিসে ২০১৬ সাল থেকে প্রতিবছর ইউরোপের সব থেকে বড় ডিজিটাল ও স্টার্টআপের এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে বলেছেন, ভারত ও ফ্রান্স বিভিন্ন বিষয়ে একযোগে কাজ করে চলেছে। সহযোগিতার এই ক্ষেত্রগুলির মধ্যে রয়েছে প্রযুক্তি ও ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা। সংকটের এই সময়ে এ ধরণের সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে আমাদের দেশগুলি উপকৃত যেমন হবে পাশাপাশি সারা বিশ্বও এর মাধ্যমে লাভবান হবে। শ্রী মোদী বলেছেন, ফরাসী ওপেন টুর্নামেন্টে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে ভারতীয় সংস্থা ইনফোসিস। একইভাবে ভারতে দ্রুততম সুপার কম্পিউটার তৈরির কাজে ফরাসী সংস্থা অ্যাটোস যুক্ত। ফ্রান্সের ক্যাপজেমিনি অথবা ভারতের টিসিএস ও উইপ্রোতে আমাদের আইটি ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা এই সমস্ত সংস্থাগুলিতে কাজ করছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যখন কোনো নিয়ম ব্যর্থ হয় সেই সময়ের পরিস্থিতি সামাল দিতে উদ্ভাবন সাহায্য করে। মহামারীর সময় ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের পরিস্থিতির মোকাবিলা করা, পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে তোলা, স্বস্তি এবং সান্ত্বনা জুগিয়েছে। ভারতের সর্বজনীন ও অনন্য বায়োমেট্রিক ডিজিটাল পরিচিতি ব্যবস্থা আধার দরিদ্রদের সঠিক সময়ে আর্থিক সাহায্য নিশ্চিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, “আমরা ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য সরবরাহ করেছি। প্রচুর বাড়িতে রান্নার জ্বালানী ভর্তুকি পৌঁছে দিয়েছি। ভারতে স্বয়ম এবং দীক্ষা নামে দুটি ডিজিটাল জনশিক্ষা ব্যবস্থা শুরু করেছি। যার ফলে ছাত্রছাত্রীদের সুবিধা হয়েছে।“
প্রধানমন্ত্রী স্টার্টআপ সংস্থাগুলির ভূমিকার প্রশংসা করে মহামারীর সময়ে তারা কিভাবে চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করেছে, সেবিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন। মাস্ক, পিপিই, নমুনা পরীক্ষার সরঞ্জাম সহ বিভিন্ন উপাদানের ঘাটতি মেটাতে বেসরকারী সংস্থাগুলি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের বেসরকারী সংস্থাগুলি এই ঘাটতি দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। চিকিৎসকরা কোভিড এবং কোভিড নয় এ ধরণের রোগের চিকিৎসা করতে ভার্চুয়ালি টেলি-মেডিসিন ব্যবস্থাকে কাজে লাগায়। ভারতে ইতিমধ্যে দুটি টিকা তৈরি হয়েছে। আরও অনেকগুলি টিকা পরীক্ষা-নিরীক্ষার স্তরে আছে। প্রধানমন্ত্রী আরো জানিয়েছেন, সংক্রমিতদের সংস্পর্শে কারা কারা এসেছেন তাদের শনাক্ত করতে, দেশীয় তথ্য প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনা আরোগ্য সেতু সাহায্য করেছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ যাতে টিকা পান সেই কাজে সাহায্য করতে আমাদের কোইউন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিশ্বের বৃহত্তম স্টার্টআপ ব্যবস্থাপনা আমাদের দেশে রয়েছে। সম্প্রতি আমাদের দেশের বেশ কিছু সাফল্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উদ্ভাবক এবং বিনিয়োগকারীরা যা যা চান ভারতে সেগুলি সবই পাওয়া যাবে। মেধা, বাজার, মূলধন, পারিপার্শ্বিক ব্যবস্থা এবং মুক্ত চিন্তা- এই ৫টি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে সারা বিশ্বকে তিনি ভারতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে ভারতের মেধা শক্তির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেছেন, দেশে বহু মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। ৭৭ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ ইন্টারনেট পরিষেবার সুযোগ গ্রহণ করেছেন। ভারতে বিশ্বের মধ্যে সব থেকে বেশি তথ্য প্রযুক্তি ব্য়বহার করা হয় এবং এই ব্যবস্থাটি খুব সস্তা। ভারতীয়রা সব চাইতে বেশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন।
প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ভারতে ডিজিটাল ব্যাপ্তি অত্যাধুনিক ডিজিটাল পরিকাঠামো গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। দেশে ১ লক্ষ ৫৬ হাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে ৫ লক্ষ ২৩ হাজার কিলোমিটার ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। দেশজুড়ে ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। তিনি দেশে উদ্ভাবনী সংস্কৃতিকে উৎসাহিত করার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন। ৭ হাজার ৫০০ বিদ্যালয়ে অটল ইনোভেশন মিশনের আওতায় অত্যাধুনিক গবেষণাগার গড়ে উঠেছে।
বিগত এক বছর ধরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কিভাবে কাজে বিঘ্ন ঘটেছে, সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিঘ্ন ঘটার অর্থ এই নয় আমরা হতাশায় ভুগছি, আসলে আমরা মেরামত করা এবং প্রস্তুত করার ভিত দুটির ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। শ্রী মোদী বলেছেন, “গত বছর এই সময় সারা পৃথিবী টিকার খোঁজ করছিল। আজ আমাদের কাছে বেশ কিছু টিকা এসেছে। একইভাবে আমরা স্বাস্থ্য পরিকাঠামো এবং অর্থনীতির মেরামতের কাজ করছি। ভারতে আমরা খনিশিল্প, মহাকাশ, ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা, আণবিক শক্তি এবং আরও বহু ক্ষেত্রে প্রচুর সংস্কার বাস্তবায়িত করছি। এর মাধ্যমে মহামারীর সময়েও ভারতের কর্মতৎপরতা অনুভূত হচ্ছে।“
প্রধানমন্ত্রী, বিশ্বকে ভবিষ্যতে কোনো মহামারীর হাত থেকে রক্ষা করার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, স্থিতিশীল জীবন-যাপনের মধ্যে দিয়ে বাস্তুতন্ত্রে ক্ষয় প্রতিহত করার ওপর আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য সহযোগিতাকে আমরা শক্তিশালী করেছি। আমাদের গ্রহ যেসব চ্যালেঞ্জগুলির সম্মুখীন হচ্ছে সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে হলে সমষ্টিগত উদ্যোগ এবং জনমুখী ব্যবস্থাপনা গ্রহণের প্রয়োজন। শ্রী মোদী বলেছেন, “স্টার্টআপ জগৎটিতে তরুণ-তরুণীদের প্রাধান্যই বেশি। এরা অতীতের সংস্কার থেকে মুক্ত। বিশ্বের পরিবর্তন আনার ক্ষমতা এদের মধ্যে সবথেকে বেশি। স্বাস্থ্য পরিষেবা, বর্জ্য পদার্থ পুর্নব্যবহারের মতো পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি, কৃষি, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার শেখার মতো ক্ষেত্রগুলিতে আমাদের স্টার্টআপ বা নতুন উদ্যোগীরা অবশ্যই কাজ করবেন।“
ফ্রান্স এবং ইউরোপ ভারতে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ম্যাক্রোঁর সঙ্গে এবং মে মাসে পোর্তোয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সম্মেলনে কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, তাদের মধ্যে আলোচনায় ডিজিটাল অংশীদারিত্ব, স্টার্টআপ, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং স্থান পেয়েছে, কারণ এই বিষয়গুলি এখন অগ্রাধিকার পাচ্ছে। শ্রী মোদী বলেছেন, “নতুন প্রযুক্তি যে আর্থিক শক্তি, কর্মসংস্থান ও সমৃদ্ধিকে নিশ্চিত করে তা ইতিহাসে প্রমাণিত। তবে আমাদের অংশীদারিত্ব মানব জাতির কল্যাণে কাজ করবে। এই মহামারী আমাদের প্রাণশক্তিকে খালি পরীক্ষা করছে না, একইসঙ্গে আমাদের কল্পনা শক্তিরও পরীক্ষা নিচ্ছে। সকলের জন্য আরও সমন্বিত, যত্নবান ও স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার একটি সুযোগ আজ এসেছে।“
CG/CB/SFS
(Release ID: 1727775)
Visitor Counter : 197