বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক

সরকার গোপনীয়তার অধিকারকে সম্মান জানায় এবং সেটি লঙ্ঘন করার কোনও ইচ্ছে সরকারের নেই, হোয়াটসঅ্যাপের থেকে নির্দিষ্ট তথ্যেরই উৎস সম্পর্কে জানতে চাওয়া হবে

Posted On: 26 MAY 2021 8:53AM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৬ মে, ২০২১

. সরকার গোপনীয়তার অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়, এটি একটি মৌলিক অধিকার এবং প্রতিটি নাগরিকের জন্য এই অধিকার নিশ্চিত করা হয়।
. এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছেন যে কেন্দ্র প্রতিটি নাগরিকের গোপনীয়তার অধিকার রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ, কিন্তু একইসঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা ও জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বও সরকারের রয়েছে।
. মন্ত্রী শ্রী প্রসাদ আরও জানিয়েছেন, ভারত যে সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে তাতে হোয়াটসঅ্যাপের সাধারণ পরিচালন পদ্ধতিতে কোনও প্রভাব পড়বে না। সাধারণ ব্যবহারারীরা আগের মতোই এটি ব্যবহার করতে পারবেন।
. প্রচলিত বিচারবিভাগীয় অনুশাসন অনুযায়ী গোপনীয়তার অধিকার সহ কোনও মৌলিক অধিকারই ১০০ শতাংশ নিশ্চিত হয় না, সবক্ষেত্রেই কিছু বিধি-নিষেধ থাকে। মধ্যস্থতাকারীর নীতি-নির্দেশিকা সংক্রান্ত চাহিদা অনুযায়ী কখনও-সখনও তথ্যের প্রথম উৎস সম্পর্কে জানতে হয় যা যুক্তিসঙ্গত বিধি-নিষেধের মধ্যে পড়ে।
. মধ্যস্থতাকারী নীতি-নির্দেশিকার ৪(২) নিয়ম অনুসারে, কোনও পাঠ্যের আনুপাতিক পরীক্ষা করা যেতেই পারে। এক্ষেত্রে এই পরীক্ষার মূল ভিত্তি হল অন্য কোনও বিকল্পের অভাব। মধ্যস্থতাকারী নীতি-নির্দেশিকা অনুযায়ী, তথ্যের মূল উৎসের তখনই খোঁজ করা হবে যখন অন্য কোনও বিকল্প কার্যকর হবে না। এই ধরনের তথ্য তখনই চাওয়া হবে যখন আইন অনুসারে যথেষ্ট পরিমাণ আইনি রক্ষাকবচ থাকবে।
জনস্বার্থের জন্য নিয়ম
. এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল প্রথম উৎসটিকে খুঁজে বের করা। উল্লিখিত নীতি-নির্দেশিকার ৪(২) নিয়ম অনুযায়ী প্রতিরোধ, অনুসন্ধান, শাস্তির জন্য এই উৎসের সন্ধানের প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ভারতের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা ও নিরাপত্তার প্রশ্নে অথবা ধর্ষণ, যৌন হেনস্থা, শিশুদের যৌন হেনস্থার কোনও ঘটনার (এক্ষেত্রে শাস্তির মেয়াদ ন্যূনতম পাঁচ বছর) অনুসন্ধানের সময়েই এই উদ্যোগ নেওয়া হবে।
. জনস্বার্থে যখন কোনও অপরাধকে শনাক্ত করে শাস্তি দিতে হয়, তখন এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। গণ-পিটুনি, দাঙ্গার মতো ঘটনার পোস্ট হোয়াটসঅ্যাপে প্রচার করলে তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। সেক্ষেত্রে এই পোস্টের মূল উৎস খোঁজা অত্যন্ত জরুরি।
দেশের আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় নিয়ম
. মধ্যস্থতাকারী নীতি-নির্দেশিকার ৪(২) নিয়মটি কোনও বিচ্ছিন্ন নিয়ম নয়। সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার এবং সোশ্যাল মিডিয়ার সংস্থার সঙ্গে (যেখানে হোয়াটসঅ্যাপও রয়েছে) আলোচনার পরই এই নিয়ম চূড়ান্ত হয়েছিল।
. ২০১৮ সালের অক্টোবরের পর হোয়াটসঅ্যাপ ভারত সরকারকে পোস্টের প্রথম উৎস জানতে চাওয়ার বিষয়ে কোনরকমের আপত্তি জানায়নি। এক্ষেত্রে গুরুতর অপরাধ হলেই এ ধরনের তথ্য জানানোর জন্য বলা হয়ে থাকে। হোয়াটসঅ্যাপ সাধারণত এ ধরনের প্রস্তাব আসলে আইন প্রণয়নকারী সংস্থার কাছে সময় চেয়ে নেয়, কিন্তু কখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানায় না যে এ বিষয়ে কোনও কাজ করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
. হোয়াটসঅ্যাপের আপত্তি একদম শেষ মুহূর্তে আসে। এর আগে তাদেরকে অনেক সময় ও সুযোগ দেওয়া হয়। আইন অনুযায়ী, মধ্যস্থতাকারী নিয়ম প্রয়োগ করা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক পদক্ষেপ। এর ফলে অনুসন্ধানের কাজে ব্যাঘাত ঘটে।
. যেহেতু ভারতে এই পোস্টগুলি করা হয়, তাই এ দেশের আইন মেনে চলতে হবে। হোয়াটসঅ্যাপের এক্ষেত্রে আপত্তি স্পষ্টতই নীতি-বিরুদ্ধ এবং এর পেছনে অন্য কোনও অভিসন্ধি অবশ্যই আছে।
. হোয়াটসঅ্যাপ গোপনীয়তার প্রসঙ্গে তুলে কোনও তথ্য জানাতে চায় না অথচ এই সংস্থা তার মূল কোম্পানি ফেসবুককে মার্কেটিং এবং বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহারকারীর সমস্ত তথ্য সরবরাহ করে।
. হোয়াটসঅ্যাপ অন্তর্বর্তীকালীন মধ্যস্থতাকারী শর্তাবলী মেনে চলার ক্ষেত্রে সবসময়ই আপত্তি জানায় অথচ দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে এবং ভুয়ো খবর প্রচার রুখতে এই শর্তাবলী মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি।
. হোয়াটসঅ্যাপ এই প্ল্যাটফর্মের এনক্রিপটেড তথ্য প্রকাশ করা তাদের নীতি-বিরুদ্ধ – এই কথা বলে আপত্তির সপক্ষে যুক্তি তৈরি করে।
. এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য যে, সোশ্যাল মিডিয়াগুলি যে ভাবেই পরিচালিত হোক না কেন, সেক্ষেত্রে তার প্রথম তথ্যের উৎস সম্পর্কে ধারণা রাখার প্রয়োজন রয়েছে।
. মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, এনক্রিপশন বজায় রাখা হবে, না সেটির অপব্যবহার হবে – এই প্রসঙ্গ নিয়েই পুরো বিতর্ক। গোপনীয়তার অধিকার সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যস্থতার প্রসঙ্গে এনক্রিপশন প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করে। কেন্দ্র গোপনীয়তার অধিকার বজায় রাখার জন্য বদ্ধপরিকর। একইসঙ্গে জাতীয় সুরক্ষা এবং প্রচলিত নিয়মকানুন মেনে চলার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যের পরীক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ। এনক্রিপশন বা অন্য কোনও পদ্ধতিতে তথ্য যাচাইয়ের বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সমাধান খুঁজে বের করা হোয়াটসঅ্যাপের দায়িত্ব।
. তাৎপর্যপূর্ণভাবে সামাজিক মাধ্যমের মধ্যস্থতার প্রসঙ্গে বলা যায়, হোয়াটসঅ্যাপ তথ্যপ্রযুক্তি আইনের আওতায় একটি নিরাপদ সুরক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে থাকতে চায়। অন্যদিকে, হতবুদ্ধির কারণে তারা এই একই নিয়মের জাতাকল থেকে বেরিয়ে আসতে চায়, যে নিয়ম আপত্তিকর কোনও পোস্টের বিষয়ে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা দিয়ে থাকে।
আন্তর্জাতিক রীতিনীতি
. ভারত সরকার জনস্বার্থে যে নিয়মগুলি চালু করেছে সেটি কোনও বিচ্ছিন্ন নিয়ম নয়। সারা বিশ্বজুড়েই এই নিয়মগুলি মেনে চলা হয়।
. ২০১৯-এর জুলাই মাসে ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং কানাডা এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, প্রযুক্তি সংস্থাগুলি তাদের এনক্রিপটেড তথ্য জানাতে বাধ্য। সরকার যথাযথ আইনি কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এইসব তথ্য পরীক্ষা করতে পারে।
. ব্রাজিলের আইন প্রণয়নকারী সংস্থাগুলি সন্দেহজনক আইপি অ্যাড্রেস দেখলে, সেই গ্রাহক সম্পর্কে খোঁজখবর শুরু করে। গ্রাহক কোথায় থাকেন এবং কোন কোন বার্তা তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে এসেছে, সে বিষয়ে হোয়াটসঅ্যাপ সে দেশের কর্তৃপক্ষকে জানাবে।
. ভারত খুব সামান্য তথ্যই জানতে চায় যেখানে অন্য দেশগুলি প্রচুর তথ্য জানতে চায়।
. তাই, হোয়াটসঅ্যাপ ভারতের মধ্যস্থতাকারী নিয়মাবলীগুলিকে গোপনীয়তার অধিকার ভঙ্গ বলে যে প্রচার চালাচ্ছে তা বিভ্রান্তিকর।
. ভারতের গোপনীয়তা বজায় রাখার নীতি একটি মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। তবে, এক্ষেত্রে যথাযথ বিধি-নিষেধ মেনে চলতে হবে। ৪(২) নিয়মাবলী অনুসারে, ভারতের মধ্যস্থতাকারী নিয়মগুলি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে।
. এক্ষেত্রে সবরকমের রক্ষাকবচ বিবেচনা করা হবে। এই উদ্যোগের অর্থ এই নয় যে, যে কোনও ব্যক্তিবিশেষের কাছে তথ্যটির উৎসের খবর চলে যাবে। তবে, আইন অনুযায়ী প্রয়োজন হলে সেই তথ্যের উৎস জানা যেতে পারে। তবে, এই ব্যবস্থাটি একদম শেষ নিতে হবে।

CG/CB/DM



(Release ID: 1722028) Visitor Counter : 741


Read this release in: English