কৃষিমন্ত্রক

পিএম-কিষাণ কর্মসূচির আওতায় অষ্টম কিস্তির আর্থিক সুবিধা প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী এই প্রথমবার পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরাও এই কর্মসূচির সুবিধা পাবেন ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে গম সংগ্রহের পরিমাণে এ বছর নতুন রেকর্ড সরকার সর্বশক্তি দিয়ে কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াই করছে গ্রামাঞ্চল, গরীব মানুষ এবং কৃষক কল্যাণে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানালেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী

Posted On: 14 MAY 2021 6:33PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ১৪ মে, ২০২১

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ নিধি (পিএম-কিষাণ) কর্মসূচির আওতায় ৯ কোটি ৫০ লক্ষ ৬৭ হাজার ৬০১ জন সুফলভোগীকে অষ্টম কিস্তিতে ২০,৬৬৭ কোটি ৭৫ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকার হস্তান্তরিত করেছেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী সুফলভোগী কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি-র সুফলভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় প্রধানমন্ত্রী নবীন কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য উত্তরপ্রদেশে উন্নাও-এর কৃষক অরবিন্দের ভূমিকার প্রশংসা করেন। অরবিন্দ তাঁর নিজের এলাকায় জৈব পদ্ধতিতে কৃষিকাজ এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে যথেষ্ট পারদর্শীতা দেখিয়েছেন। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কার নিকোবরের কৃষক প্যাট্রিক জৈব পদ্ধতিতে ব্যাপক কৃষিকাজের প্রসার ঘটিয়েছেন। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী তাঁর উদ্যোগের প্রশংসা করেন। ১৭০ জনেরও বেশি আদিবাসী কৃষককে সঠিক কৃষি পদ্ধতির ব্যাপারে সচেতন করে তুলতে অন্ধ্রপ্রদেশের অনন্তপুরের কৃষক এন ভেনুরামা যে প্রয়াস গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী তার ভূয়সী প্রশংসা করেন। মেঘালয়ের কৃষক রেভিস্টার পার্বত্য এলাকাতেও আদা, হলুদ, দারুচিনি প্রভৃতি মশলা উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। এরপর প্রধানমন্ত্রী শ্রীনগরের কৃষক খুরশিদ আহমেদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তিনি সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে ক্যাপসিকাম, কাঁচালঙ্কা ও কুমরোর মতো শাকসব্জি উৎপাদনে সক্ষম হয়েছেন। মহারাষ্ট্রের লাতুর থেকে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নিয়ে বালাসাহেব নারারে প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, কিভাবে কিষাণ কেডিট কার্ড ব্যাঙ্ক ঋণ সহায়তার ক্ষেত্রে তাঁকে সাহায্য করেছে এবং কিভাবে তার কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি হয়েছে।
এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রথমবার পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরাও পিএম-কিষাণ কর্মসূচির সুবিধা পেতে চলেছেন। করোনা মহামারীর সময় বিভিন্ন প্রতিকূলতা সত্ত্বেও খাদ্যশস্য ও উদ্যানজাত ফসল উৎপাদনের যে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে তার জন্য প্রধানমন্ত্রী কৃষক সমাজের প্রশংসা করেন। তিনি আরও বলেন, সরকার প্রতি বছর ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে খাদ্যশস্য সংগ্রহের রেকর্ড গড়ছে। ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান সংগ্রহে এবার নতুন রেকর্ড হয়েছে। গম সংগ্রহের ক্ষেত্রেও নতুন রেকর্ড তৈরি হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে প্রায় ১০ শতাংশ বেশি গম সংগৃহীত হয়েছে। এমনকি, ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে গম সংগ্রহবাবদ কৃষকদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা জমা পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষিক্ষেত্রে নতুন পন্থা-পদ্ধতি ও বিকল্প প্রয়োগ রীতি কার্যকর করার লক্ষ্যে সরকার নিরন্তর চেষ্টা চালাচ্ছে। এই লক্ষ্যে জৈব পদ্ধতিতে কৃষি কাজের সম্প্রসারণে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, জৈব পদ্ধতিতে কৃষিকাজে মুনাফা বেশি। তাই, দেশের নবীন কৃষকরা এই কৃষিকাজ পদ্ধতি অনুসরণ করছেন। গঙ্গার দুই তীরে জৈব পদ্ধতিতে কৃষিকাজ করা হচ্ছে। পাঁচ কিলোমিটার ব্যাসার্ধ জুড়ে জৈব পদ্ধতিতে কৃষিকাজ করা হচ্ছে যাতে পবিত্র গঙ্গাকে শুদ্ধ রাখা যায়।
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীর সময় কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের পরিশোধযোগ্য অর্থের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। কৃষকরা আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত তাঁদের কিস্তি মেটাতে পারবেন। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ২ কোটির বেশি কিষাণ ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয়েছে বলে শ্রী মোদী জানান।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান মহামারীজনিত পরিস্থিতি একটি শতাব্দীতে একবারই হয়ে থাকে। তাই এরকম পরিস্থিতি সমগ্র বিশ্বের কাছেই চ্যালেঞ্জের কারণ, সকলকেই অজানা শত্রুর বিরুদ্ধে লড়তে হয়। তিনি বলেন, সরকার সর্বশক্তি দিয়ে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির মোকাবিলা করছে। দেশবাসীর দুঃখ-যন্ত্রণা দূর করতে সরকারের প্রতিটি দপ্তর দিবারাত্রি কাজ করে চলেছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি সমস্ত রাজ্য সরকার সমবেতভাবে নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে যাতে যত দ্রুত সম্ভব আরও বেশি সংখ্যক দেশবাসীর টিকাকরণ করা যায়। তিনি বলেন, এখনও পর্যন্ত সারা দেশে ১৮ কোটির বেশি টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে। সারা দেশে সরকারি হাসপাতালগুলিতে বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেককে টিকা নেওয়ার পাশাপাশি কোভিড আদর্শ আচরণবিধি সর্বদাই মেনে চলার পরামর্শ দেন। শ্রী মোদী বলেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই টিকা একটি সুরক্ষা কবচ, যা গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকির সম্ভাবনা কমাবে।
সেনাবাহিনী চরম প্রতিকূল এই পরিস্থিতিতে অক্সিজেনের যোগান অব্যাহত রাখতে সর্বশক্তি দিয়ে নিরন্তর কাজ করে চলেছে। রেল অক্সিজেন যোগানের জন্য বিশেষ ট্রেন চালাচ্ছে। দেশের ওষুধ উৎপাদনকারী সংস্থাগুলি আরও অধিক সংখ্যায় ওষুধ উৎপাদন যাতে তা দ্রুত আরও বেশি সংখ্যক রোগীর কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়। ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর কালোবাজারি রুখতে রাজ্যগুলিকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন যে ভারত এমন একটি দেশ যে কখনও কঠিন সময়েও নিজের ওপর আস্থা হারায় না। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সমগ্র দেশবাসীর দৃঢ়সঙ্কল্প ও নিষ্ঠার ওপর ভর করে বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। গ্রামাঞ্চলে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আগাম প্রস্তুতি হিসেবে প্রতিটি পঞ্চায়েতকে নিজেদের এলাকায় উপযুক্ত সচেতনতা ও সার্বিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি সুনিশ্চিত করতে হবে।
এই উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষক কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র সিং তোমর বলেন, প্রধানমন্ত্রী সর্বাদাই সুপ্রশাসন, জীবনযাপনের মানোন্নয়ন এবং কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে এসেছেন। শ্রী তোমর আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীর সুদক্ষ নেতৃত্বে কৃষি ক্ষেত্রে উপার্জন কেন্দ্রিক নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মাননিধি যোজনাকে এক সুসংবদ্ধ প্রয়াস হিসেবে উল্লেখ করে শ্রী তোমর গ্রামাঞ্চল, গরীব মানুষ এবং কৃষক সমাজের কল্যাণে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দেন। তিনি আরও জানান, পিএম কিষাণ কর্মসূচির আওতায় প্রায় ৯ কোটি ৫০ লক্ষ কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি হস্তান্তরিত করা হচ্ছে। কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, পিএম কিষাণ কর্মসূচির আওতায় সার্বিক ভাবে ১০০ শতাংশ সাফল্য অর্জনে তাঁর মন্ত্রক সর্বাত্মক প্রয়াস নিচ্ছে।

CG/BD/AS


(Release ID: 1718651) Visitor Counter : 186


Read this release in: English