স্বাস্থ্যওপরিবারকল্যাণমন্ত্রক
তরল চিকিৎসা অক্সিজেন : ব্যাখ্যা
Posted On:
06 MAY 2021 3:36PM by PIB Kolkata
মুম্বাই , ০৬ মে, ২০২১
আমাদের জানি যে মানব দেহে ৬৫ শতাংশ অক্সিজেন থাকে। হ্যাঁ, নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের জন্য অক্সিজেন অপরিহার্য। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্লুকোজ থেকে কোষে শক্তির সঞ্চার হয়। আসলে আমাদের দেহের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন দরকার। যখন আমরা বাতাস থেকে শ্বাস নিই তখন অক্সিজেনের অণুকনাগুলি ফুসফুসে প্রবেশ করে এবং তা আমাদের ফুসফুসের প্রকোষ্ঠের মধ্য দিয়ে রক্তে অতিবাহিত হয়।
সঙ্কটপূর্ণ কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য অক্সিজেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই রোগটি ফুসফুসের কার্যকলাপের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। সঙ্কটপূর্ণ কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়। যার ফলে শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন সরবরাহের ক্ষেত্রে বিঘ্ন ঘটে। তাই এই ধরণের রোগীদের ক্ষেত্রে অক্সিজেন থেরাপির প্রয়োজন। এক্ষেত্রে চিকিৎসা অক্সিজেন ব্যবহার করা হয়।
তরল চিকিৎসা অক্সিজেনের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। তরল চিকিৎসা অক্সিজন হলো চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত একটি উচ্চ পরিশুদ্ধ অক্সিজেন ছাড়া আর কিছুই নয়। এটি মানব শরীরের উন্নতিসাধনে ব্যবহার করা হয়।
কেন এটি তরল অবস্থায় থাকে?
এটির গলনাঙ্ক এবং স্ফুটনাঙ্ক মাত্রা কম থাকায় অক্সিজেন ঘরের তাপমাত্রায় বায়বিয় অবস্থায় থাকতে পারে। এমনকি তরল অক্সিজেন বৃহৎ পরিমাণে সঞ্চয় এবং পরিবহণ করাও সহজ।
কিভাবে তরল চিকিৎসা অক্সিজেন উৎপাদন করা হয়?
এটির বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। সবচেয়ে সাধারণ উৎপাদন পদ্ধতি হলো এয়ার সেপারেশন ইউনিট বা এএসইউ পদ্ধতি। এছাড়াও ফ্র্যাকশনাল ডিস্টিলেশন পদ্ধতিও রয়েছে। এই পদ্ধতিতে বায়ুমণ্ডল থেকে প্রাপ্ত গ্যাসগুলি তরল অবস্থায় ঠাণ্ডা করার পরে বিভিন্ন উপাদানে আলাদা করা হয় এবং তার পরে সেখান থেকে তরল অক্সিজেন বের করা হয়।
ক্রায়োজেনিক কন্টেনার কি?
ক্রায়োজেনিক হলো খুব কম তাপমাত্রায় এই অক্সিজেন উৎপাদনের একটি পদ্ধতি। এক ধরণের তরল যার স্বাভাবিক স্ফুটনাঙ্কের মাত্রা -৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে থাকে, তাকে ক্রায়োজেনিক তরল বলে। ক্রায়োজেনিক তরল কন্টেনারগুলি বিশেষত এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে নিরাপদে এবং খুব কম খরচে পরিবহণ করা সম্ভবপর হয়। এমনকি -৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে ক্রায়োজেনিক তাপমাত্রায় তরল গ্যাস হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়। এই কন্টেনারগুলি এমনভাবে তৈরি করা হয় যার মধ্যে খুব কম তাপমাত্রায় তরল গ্যাস সংরক্ষণ করা যায়।
প্রেসার সুইং অ্যাবর্স্পশন প্রযুক্তি কি?
নন ক্রায়োজেনি কপদ্ধতিতেও অক্সিজেন উৎপাদন করা যায়। নির্দিষ্ট মাত্রায় উচ্চ চাপ প্রয়োগ করে এই পদ্ধতিতে অক্সিজেন উৎপাদন করা যায়। হাসপাতালগুলি এই পদ্ধতি ব্যবহার করে অক্সিজেন উৎপাদন করতে পারে। এতে হাসপাতালগুলির অক্সিজেন পরিবহণের জন্য খরচ কমবে।
চিকিৎসা অক্সিজেনের এই উৎসগুলি ছাড়াও অক্সিজেন কনসেনট্রেটর নামে পরিচিত বহনযোগ্য অক্সিজেন জেনেরেটরও রয়েছে, যা বাড়িতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
নিরাপত্তা সংক্রান্ত সতর্কতা?
তাপমাত্রা পর্যাপ্ত পরিমাণের বেশি হলে যে কোনো বস্তু অক্সিজেনের সংস্পর্শে এলে জ্বলে যেতে পারে। সুতরাং, কোভিড-১৯ সময়কালে যেসব হাসপাতালে অতিরিক্ত পরিমাণে অক্সিজেন সঞ্চিত রয়েছে সেইসব স্থানে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সতর্কতা অবলম্বন করা অবশ্যই প্রয়োজন। যথাযথ অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা এবং কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়াও দরকার। এছাড়াও চিকিৎসা অক্সিজেন ব্যবহারের জন্যও অন্যান্য প্রয়োজনীয়তা এবং নিয়ম রয়েছে। চিকিৎসা অক্সিজেন খুঁজছেন এমন একজন ব্যক্তির অবশ্যই একটি প্রেসক্রিপশন থাকতে হবে।
অক্সিজেন বিচার্যভাবে ব্যবহার করুন -
সাধারণ মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পণ্যগুলি বিশেষত জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রে জরুরী অবস্থার সময়ে এই ধরণের পণ্যগুলির যথাযথভাবে বিচার বিবেচনা করে ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এগুলির অপব্যবহার বা অতিরিক্ত মজুত এবং কালোবাজারি রোধ করতে হবে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে এআইআইএমএস-এর অধিকর্তা অধ্যাপক রণদীপ গুলেরিয়া জানিয়েছেন অক্সিজেনের যথার্থ ব্যবহার প্রয়োজন। অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলির অপব্যবহার এই সময়ে উদ্বেগের বিষয়। কিছু লোক অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলি ঘরে বসে মজুত করে রেখেছে এই আশঙ্কায় যে, পরে এটি প্রয়োজন হতে পারে। যদি কারোর শরীরে অক্সিজেন স্যাচুরেশনের মাত্রা ৯৪ শতাংশ বা তার বেশি হয় তা হলে তার শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন রয়েছে। অযথা আতঙ্কের প্রয়োজন নেই বলে তিনি জানিয়েছেন। অধ্যাপক গুলেরিয়া আরও জানান, কারোর শরীরে অক্সিজন স্যাচুরেশনের মাত্রা ৯২ অথবা ৯৩ থাকলে কখনই সেটিকে সঙ্কটপূর্ণ বলে ধরা হবে না। তবে, এই স্যাচুরেশনের মাত্রা কমে গেলে বা বার বার ওঠানামা করলে রোগীকে সময় মতো হাসপাতালে ভর্তি করা দরকার।
SC/SS/SKD
(Release ID: 1716486)
Visitor Counter : 6238