প্রতিরক্ষামন্ত্রক

দেশে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনে উৎসাহ

Posted On: 19 SEP 2020 4:59PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লী, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০

 

 

           সরকার প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে মেক ইন ইন্ডিয়া প্রসারে নিম্নলিখিত নীতিগত উদ্যোগ নিয়েছে :

  • মূলধনী সরঞ্জাম সংগ্রহের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে একটি নতুন শ্রেণী তৈরি করা হয়েছে। এটার নাম বি ইউ আই বাই। এর লক্ষ্য দেশজ নকশা এবং দেশেই প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নির্মাণে উৎসাহদান।
  • মূলধনী সরঞ্জাম সংগ্রহের মেক প্রক্রিয়ার সরলীকরণ। একটি সংস্থান আছে যে তৈরি করার খরচের ৯০ শতাংশই সরকার দেবে মেক ওয়ান শ্রেণীতে ভারতীয় শিল্পকে। এছাড়া মেক প্রক্রিয়ার অধীনে ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের জন্য নির্দিষ্ট সংরক্ষণের ব্যবস্থা আছে।
  • মেক টু শ্রেণীর জন্য আলাদা প্রক্রিয়া প্রজ্ঞাপিত করা হয়েছে ডিপিপি-র অধীনে যাতে দেশেই প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরি হয়। বেশকিছু শিল্পবান্ধব সংস্থানের প্রস্তাব দিয়েছে শিল্প মহল এবং ব্যক্তি ইত্যাদি। সেগুলি এই প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যেমন- যোগ্যতামানে ছাড়, ন্যূনতম নথিপত্র ইত্যাদি। এ পর্যন্ত তিন বাহিনী সংক্রান্ত ৪৯টি প্রকল্পে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে যার মধ্যে ৯টি প্রকল্প ইতিমধ্যেই প্রকল্প অনুমোদন নির্দেশ পেয়ে গেছে উৎপাদনের জন্য।
  • ভারত সরকারের আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের অধীনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ১০১টি দ্রব্যের একটি তালিকা তৈরি করেছে যেগুলি আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে। এতে ভারতীয় প্রতিরক্ষা শিল্প বিশাল সুবিধা পাবে। নিজের নকশা ব্যবহার করতে পারবে এবং ভবিষ্যতে সশস্ত্র বাহিনীর প্রয়োজন মেটাতে নিজের সক্ষমতা দেখাতে পারবে। এই তালিকায় আছে বেশকিছু উচ্চপ্রযুক্তির অস্ত্র যেমন- আর্টিলারি গান, অ্যাসল্ট রাইফেল, কর্ভেট, সোনার ব্যবস্থা, মালবাহী বিমান, হাল্কা যুদ্ধ হেলিকপ্টার, রাডার এবং প্রতিরক্ষা পরিষেবার প্রয়োজন মেটানোর জন্য অন্য অনেক দ্রব্য।
  • প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নির্মাণে উদ্ভাবনার পরিবেশ তৈরি করতে ২০১৮র এপ্রিলে ডিফেন্স এক্সেলেন্স বা আইডেক্সের সূচনা হয়েছে। আইডেক্সের লক্ষ্য, এরকম একটি পরিবেশ তৈরি করা যাতে প্রতিরক্ষা এবং নভো বিজ্ঞানে উদ্ভাবনা এবং প্রযুক্তির উন্নতি করা যায়। এতে যুক্ত করা হবে অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ, স্টার্টআপ, ব্যক্তি উদ্ভাবক, গবেষণা এবং উন্নয়ন সংস্থা ও শিক্ষাক্ষেত্র। এদের অনুদান, অর্থ সাহায্য এবং অন্যান্য সহায়তা দেওয়া হবে যাতে তারা গবেষণা এবং উন্নয়ন করতে পারে যা ভবিষ্যতে ভারতীয় প্রতিরক্ষা এবং নভো বিজ্ঞানের উপযোগী হয়ে উঠে। আইডেক্স কর্মসূচীর অধীনে একটি প্রোটোটাইপ তৈরি করতে দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত দেওয়া হতে পারে। ৭০০র বেশি স্টার্টআপ ১৮টি বিষয়ে অংশ নেয়। ডিফেন্স ইন্ডিয়া স্টার্ট আপ চ্যালেঞ্জের তিনটি রাউন্ডের পর কঠোর বিচার বিবেচনা করে ৫৮টিকে বিজয়ী ঘোষণা করে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন মনোনয়ন কমিটি। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন বিজয়ীর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
  • স্বচ্ছ এবং প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভারতীয় শিল্প সংস্থার সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত অংশীদারিত্ব করতে সরকার স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ প্রজ্ঞাপিত করেছে ২০১৭র মে তে। ভারতীয় শিল্প সংস্থাগুলি আন্তর্জাতিক সরঞ্জাম নির্মাতাদের কাছ থেকে প্রযুক্তি হস্তান্তর করে দেশে উৎপাদন পরিকাঠামো এবং সরবরাহ শৃঙ্খল গড়তে পারবে।
  • ২০১৯-এর মার্চে ‘পলিসি ফর ইন্ডিজেনাইজেশন অফ কম্পোনেন্ট অ্যান্ড স্পেয়ারর্স ইউজড ইন ডিফেন্স প্ল্যাটফর্ম’ প্রজ্ঞাপিত করেছে সরকার। এর লক্ষ্য এমন শিল্পের পরিবেশ তৈরি করা যা আমদানিকৃত যন্ত্রাংশের দেশীকরণ এবং ভারতেই প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম যুক্তিকরণ।
  • ২০১৯এর সেপ্টেম্বরে ভারত-রুশ বিংশতিতম দ্বিপাক্ষিক শিখর সম্মেলনে একটি আন্তঃসরকারি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এটির লক্ষ্য ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীতে যেসমস্ত রুশ সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয় তার বিক্রয়োত্তর পরিষেবা এবং যন্ত্রাংশের দেখভাল সম্ভব হয়। যন্ত্রাংশ এবং সরঞ্জাম ভারতের মাটিতে ভারতীয় শিল্প সংস্থা যাতে তৈরি করে তার জন্য মেক ইন ইন্ডিয়া উদ্যোগের কাঠামোর অধীনে রুশ সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ বা অংশীদারি স্থাপন।
  • ২০১৮র ফেব্রুয়ারীতে সরকার ২টি প্রতিরক্ষা শিল্প করিডর গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় যাতে দেশে প্রতিরক্ষা শিল্পের বৃদ্ধি ঘটে। এটি ছড়ানো তামিলনাড়ুর চেন্নাই, হোসুর, কোয়েমবাটোর, সালেম এবং তিরুচিরাপল্লী ও উত্তরপ্রদেশের আলিগড়, আগ্রা, ঝাঁসি, কানপুর, চিত্রকূট এবং লক্ষ্মৌতে।
  • নীতি নির্দেশিকা আরও নমনীয় করা হয়েছে যাতে অংশীদার এবং যন্ত্রাংশ পরিবর্তন করা যায়। এমনকি স্বাক্ষরিত চুক্তিতেও। বিদেশী সরঞ্জাম নির্মাতাদের বর্তমানে অনুমতি দেওয়া হয়েছে চুক্তি স্বাক্ষরের পর ভারতীয় অংশীদার এবং দ্রব্যের বিস্তারিত বিবরণ দেওয়ার। আরও স্বচ্ছতা ও দক্ষতা আনতে ২০১৯এর মে মাসে অফসেট পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে।
  • প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ২০১৮র ফেব্রুয়ারিতে ডিফেন্স ইনভেস্টার সেল তৈরি করা হয়েছে যেখানে প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য পাওয়া যাবে। কোথায় কোথায় লগ্নির সুবিধা, প্রক্রিয়া এবং বিধি নিয়ম ইত্যাদি ব্যাপারে।
  • প্রতিরক্ষা দ্রব্যের তালিকা যার শিল্প লাইসেন্স প্রয়োজন সেগুলি সরলীকৃত করা হয়েছে এবং যন্ত্রাংশ নির্মাতাদের অনেককেই আর শিল্প লাইসেন্স করানোর প্রয়োজন নেই। শিল্প লাইসেন্সের প্রাথমিক মেয়াদ আইডিআর আইনে ৩ বছর থেকে বাড়িয়ে ১৫ বছর করা হয়েছে এছাড়া বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে আরও ৩ বছর বাড়ানোর সংস্থান রাখা হয়েছে।
  • প্রতিরক্ষা উৎপাদন দপ্তরের সাম্প্রতিক ২০১৭র পাবলিক প্রোকিওরমেন্ট অর্ডারের অধীনে ২৪টি দ্রব্যের তালিকা প্রজ্ঞাপিত করা হয়েছে যেগুলি স্থানীয়ভাবে তৈরি করা যাবে, স্থানীয় সরবরাহকারীর কাছ থেকেই সংগ্রহ করতে হবে সে যে দামই লাগুক না কেন।
  • সৃজন নামে একটি দেশজ পোর্টাল গত ১৪ই আগস্ট শুরু করা হয়েছে। এটি আমদানির বিকল্প হিসেবে ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্প, স্টার্টআপ এবং শিল্প ক্ষেত্রকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেবে।
  • প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নকশা, উন্নয়ন এবং উৎপাদন ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে-
  • ২০০১এর মে মাসে প্রতিরক্ষা শিল্পক্ষেত্র যা এ যাবৎ সরকারের হাতে ছিল তা ১০০ শতাংশই ভারতীয় বেসরকারী সংস্থার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে ২৬ শতাংশ পর্যন্ত প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ থাকতে পারে, তবে দুটির জন্যই লাইসেন্স দরকার। এছাড়া ৫ নম্বর প্রেস নোটের মাধ্যমে বাণিজ্য শিল্প মন্ত্রকের শিল্পনীতি এবং অন্তঃদেশীয় বাণিজ্য দপ্তর স্বয়ংক্রিয় পথে ৪৯ শতাংশ পর্যন্ত এবং সরকারি পথে ৪৯ শতাংশের বেশি প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগে অনুমোদন দিয়েছে। এছাড়া ৪টি প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে সরকারি-বেসরকারী ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নির্মাণের জন্য।
  • দেশে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ প্রসারে উল্লেখযোগ্য সংস্কার করেছে সরকার যাতে অভ্যন্তরীণ লগ্নি দিশা পা। প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশীয় কোম্পানীগুলি মূলধন পা, আধুনিক প্রযুক্তি পা, আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে পরিচয় ঘটে। ফলে কর্মসংস্থান হয় এবং এই ক্ষেত্রের বৃদ্ধি ঘটে। প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ নীতি পর্যালোচনা নিয়মিত চলতে থাকে। প্রয়োজনে পরিবর্তন করা হয় যাতে ভারত লগ্নির গন্তব্য হিসেবে আকর্ষণীয় রয়ে যায়। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ানো হয়েছে স্বয়ংক্রিয় ক্ষেত্রে ৭৪ শতাংশ পর্যন্ত, যেসব সংস্থা নতুন প্রতিরক্ষা শিল্প লাইসেন্স চাইছে তাদের জন্য। সরকারি পথে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত যেখানে আধুনিক প্রযুক্তি বা অন্য কোন কারণ আছে।

 

প্রতিরক্ষা উৎপাদনে ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্প উদ্যোগের প্রসারে সহায়তা দিতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

  • মেক প্রক্রিয়াকে সরলীকরণ করা হয়েছে। ৯০ শতাংশ খরচই দেবে ভারত সরকার। মেক ওয়ানের সেইসব প্রকল্প যেখানে কারখানা গড়তে ১০ কোটি টাকার বেশি লাগবেনা এবং সংগ্রহের খরচ বার্ষিক ৫০ কোটি টাকার বেশি নয়। আর মেক টু প্রকল্পে তৈরির খরচ ৩ কোটি টাকার বেশি নয় এবং বার্ষিক সংগ্রহের খরচ ৫০ কোটা টাকার বেশি নয় সেগুলি ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগের জন্য সংরক্ষিত রাখা আছে। এছাড়া প্রায় ১১ হাজার ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগকে বড় কারখানায় সরবরাহকারী হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে।
  • এমএসএমই-গুলি যাতে প্রতিরক্ষা সরবরাহ শৃঙ্খলে যুক্ত হয় এবং আত্মনির্ভর ভারত গড়ে ওঠে তার জন্য একটি কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচির অধীনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সম্মেলনের আয়োজন করা হয়ে থাকে।
  • ডিআরডিও প্রকল্পে এমএসএমই-গুলিকে অংশীদার হচ্ছে। ডিআরডিও প্রযুক্তি তাদের হস্তান্তর করা হচ্ছে।
  • ঠিক সময়ে বকেয়া প্রদানের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ মেটাতে বিভিন্ন আলাপ-আলোচনা করা হয়। ডিফেন্স ইনভেস্টর সেল খোলা হয়েছে।
  • এমএসএমই মন্ত্রক বিভিন্ন কর্মসূচি ও পরিকল্পনা নিয়েছে যাতে ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলির উন্নতি ঘটে। বিশেষ করে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নির্মাতা উদ্যোগগুলির।
  • ডিফেন্স বা অফসেট নীতি-নির্দেশিকা এমএসএমই-দের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।

সরকারি এবং বেসরকারী ক্ষেত্রগুলির মধ্যে সমতা রাখতে প্রয়াস নেওয়া হচ্ছে। যদিও নির্ধারিত কোন অনুপাত নেই।

আজ রাজ্যসভায় প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী শ্রী শ্রীপাদ নায়েক শ্রী মহেশ পোদ্দারকে দেওয়া এক লিখিত জবাবে একথা জানান।

 

 

CG/AP/NS



(Release ID: 1656988) Visitor Counter : 177


Read this release in: English