প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

কোভিড-১৯-এর মোকাবিলায় সার্ক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর মতবিনিময়


সার্ক রাষ্ট্রগুলির জন্য প্রধানমন্ত্রীর কোভিড-১৯ সঙ্কটকালীন তহবিল গড়ার প্রস্তাব

Posted On: 15 MAR 2020 11:46PM by PIB Kolkata

নতুনদিল্লি, ১৫ মার্চ, ২০২০

 

 

সার্ক অঞ্চলে কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত রাষ্ট্রগুলির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করেন। বৈঠকে  একটি অভিন্ন কৌশল গ্রহণ নিয়ে আলোচনা হয়।

 

অভিন্ন ইতিহাস- সমষ্টিগত ভবিষ্যৎ  

 

প্রধানমন্ত্রী অল্পসময়ের মধ্যে এই সম্মেলনে যোগদানের জন্য   সবাইকে ধন্যবাদ জানান। সার্ক দেশগুলির মানুষদের মধ্যে প্রাচীন কাল থেকে যোগাযোগ, সামাজিক ক্ষেত্রে নিবিড় সংযোগ থাকার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একসঙ্গে সব দেশগুলির  চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ।            

আগামীর পথঃ  

সমষ্টিগত উদ্যোগের এই আবহে প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ সঙ্কটকালীন তহবিল গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন। স্বেচ্ছায় সব দেশ মিলে এই তহবিলে অনুদান দেবে। প্রাথমিকভাবে ভারত এই তহবিলে ১কোটি মার্কিন ডলার দেবার কথা জানিয়েছে। জরুরী প্রয়োজনে অংশীদার দেশগুলি এই তহবিলের থেকে অর্থ ব্যয় করতে পারবে। তিনি জানান, ভারত চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি দ্রুত ব্যবস্থাপনা দল তৈরি করেছে।  দরকার মত এই দল পরীক্ষার সরঞ্জাম সহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি নিয়ে যে কোন দেশে যেতে পারবে।  

 

প্রধানমন্ত্রী প্রতিবেশী দেশগুলি আপতকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যদের অনলাইনে প্রশিক্ষণের আমন্ত্রণ জানান। যারা এই ভাইরাস বহন করছেন এবং তাঁরা যাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, তাঁদের খুঁজে বার করার জন্য ভারতের সুসংহত ব্যধি নজরদারীর পোর্টালটির সফটওয়্যার ব্যবহারের প্রস্তাবও তিনি দেন। তিনি বলেন, আরো ভালোভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য সার্ক বিপর্যয় মোকাবিলা কেন্দ্রটিকে যথাযথ ব্যবহার করা যায়।    

দক্ষিন এশিয়ায় সংক্রামিত ব্যধি নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি সাধারণ গবেষণা মঞ্চ গড়ে তোলার প্রস্তাবও প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। যেখানে একযোগে এই সংক্রান্ত গবেষণা করা যাবে। কোভিড-১৯ এর কারণে দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক প্রভাব নিয়ে আলোচনা করতে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি চিন্তন বৈঠকেরও তিনি পরামর্শ দিয়েছেন। যেখানে এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও স্থানীয় ব্যবসাগুলিকে রক্ষা করার বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করা যাবে।

এই উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সব নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আবারো পরিস্থিতির মোকাবিলায় একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেছেন সারা বিশ্বের কাছে সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির প্রতিবেশীসুলভ সহযোগিতা উদাহরণ হয়ে উঠুক ।

 

অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া  

প্রধানমন্ত্রী জানান,“তৈরি থাকুন, আতঙ্কিত হবেন না” এই ভাবনা নিয়ে ভারত কাজ করছে। তিনি জানান,সম্মিলিতভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে , প্রতিটি স্তরে সাড়া দেওয়া হচ্ছে, যারা দেশে প্রবেশ করছেন তাঁদের পরীক্ষা করা হচ্ছে।  টিভি, মুদ্রণ মাধ্যম, স্যোসাল মিডিয়াতে জনসচেতনতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে, যারা সুরক্ষিত নন, তাঁদের কাছে পৌঁছানোর জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, রোগ নির্ণয়ের পরিকাঠামো বাড়ানো হয়েছে, মহামারি আটকাতে প্রতিটি স্তরে নিয়মনীতি তৈরি করা হয়েছে ।

তিনি জানান, ভারত শুধু সফল ভাবে বিভিন্ন দেশ থেকে ১৪০০জন যাত্রীকে নিয়ে আসেনি, ‘প্রতিবেশী প্রথম নীতি’ অনুযায়ী প্রতিবেশী দেশের কিছু নাগরিককেও ফিরিয়ে এনেছে।     

রাষ্ট্রপতি আসরাফ ঘনি জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের বিপদের সবথেকে বড় জায়গা হল, ইরানের সঙ্গে খোলা সীমান্ত। তিনি বলেন, আসা যাওয়ার পদ্ধতি বদল, টেলিমেডিসিনের অভিন্ন পরিকাঠামো গড়ে তোলা এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে আরো সহযোগিতা গড়ে তুলতে হবে।      

উহান থেকে নয়জন মালদ্বীপের নাগরিককে ফিরিয়ে আনা এবং কোভিড-১৯ এর মোকাবিলায় চিকিৎসা সংক্রান্ত সহায়তার জন্য রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সেদেশের পর্যটন শিল্পে এবং অর্থনীতিতে কোভিড-১৯ এর নেতিবাচক প্রভাবের দিকটিও তিনি তুলে ধরেন। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে জরুরী অবস্থায় দেশগুলির মধ্যে নিবিড় সহযোগিতা , আর্থিক সহায়তার প্যাকেজ তৈরি ও পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য এই অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার তিনি প্রস্তাব দেন।   

এই কঠিন সময়ে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দিতে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপাক্সা সার্ক নেতৃবৃন্দকে একযোগে কাজ করার ডাক দেন। কোভিড-১৯ এর মোকাবিলায় সার্ক মন্ত্রী গোষ্ঠি তৈরি করে ইতিবাচক দিকগুলি ভাগ করে নেওয়া এবং আঞ্চলিক নানা বিষয়ে সহযোগিতার পরামর্শও তিনি দেন।   

কোয়ারান্টিনে থাকার সময় ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে ২৩ জন বাংলাদেশী ছাত্রছাত্রীকে উহান থেকে নিয়ে আসায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এই অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও সচিবদের মধ্যে কারিগরি পর্যায়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা চালিয়ে যাবার তিনি প্রস্তাব দেন।  

কোভিড-১৯ এর মোকাবিলায় নেপালের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি সার্ক নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেন। তিনি বলেন, এই মহামারীর মোকাবিলায় কার্যকর কৌশল গ্রহনে, সব সার্ক দেশগুলির সংঘবদ্ধ জ্ঞান এবং উদ্যোগ সাহায্য করবে।

ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডঃ লোটে শেরিং বলেন, মহামারী কোন ভৌগলিক গন্ডি মানে না। তাই সব দেশের একসঙ্গে কাজ করাটা খুব জরুরী। কোভিড-১৯ এর আর্থিক প্রভাবের বিষয়ে তিনি বলেন, মহামারী, সুরক্ষিত নয় এবং ছোট এরকম অর্থনীতিকে প্রচন্ড আঘাত করে।   

সঠিক সময়ে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য, তথ্যের আদানপ্রদান এবং সহযোগিতার লক্ষ্যে সার্ক সচিবালয়ের একটি কর্মীগোষ্ঠী গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন ডঃ জাফর মির্জা। প্রয়োজনে ব্যধি সংক্রান্ত নজরদারীর তথ্য ভাগ করে নেওয়ার জন্য সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের সম্মেলনের ব্যবস্থা করা এবং এই বিষয়ে একটি আঞ্চলিক সহযোগিতা গড়ে তোলার প্রস্তাবও তিনি দেন।

 

 

CG/CB



(Release ID: 1606491) Visitor Counter : 146


Read this release in: English