স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক

কলকাতায় এনএসজি-র পূর্বাঞ্চলীয় সদর দপ্তরের উদ্বোধন করলেন শ্রী অমিত শাহ্‌

Posted On: 01 MAR 2020 11:03PM by PIB Kolkata

নতুনদিল্লি, ১ মার্চ, ২০২০
 

 

 

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ্‌ আজ কলকাতায় জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা- ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ডের (এনএসজি) পূর্বাঞ্চলীয় সদর দপ্তরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পৌরহিত্য করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সাহসী এনএসজি জওয়ানদের প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধে দেবার লক্ষ্যে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তিনি এনএসজির বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের শিলান্যাস-ও করেন। এগুলি কোলকাতা, মানেসর, চেন্নাই ও মুম্বাইতে গড়ে উঠবে। এ কাজে ব্যয় হবে দুশোপয়তাল্লিশ কোটি টাকারও বেশি। 

কলকাতায় আঞ্চলিক কেন্দ্রে ৪৬০ জন যাতে তাঁদের পরিবার নিয়ে থাকতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা হবে। এখানে অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণের নানা ব্যবস্থা ছাড়াও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধে নিশ্চিত করা হবে। এনএসজি কমান্ডোদের পেশাদারী দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশ বাহিনীর সদস্যদেরও এখানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খন্ড এবং সমগ্র উত্তরপূর্ব ভারতের কাজ এখান থেকে করা হবে। এতদিন কলকাতা হাবের কাজ বিমানবন্দর থেকে হত। এখন এই কাজ স্থায়ী এই পরিকাঠামোর থেকে করা হবে। সারা দেশে এর আগে মুম্বাই, চেন্নাই ও হায়দ্রাবাদে এ ধরণের স্থায়ী পরিকাঠামো ছিল। 

এই আঞ্চলিক হাবের উদ্বোধন করা ছাড়াও শ্রী শাহ্‌ মানেসরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ১২০টি ফ্যামিলি কোয়াটার, হায়দ্রাবাদ কেন্দ্রের বিষ্ফোরক সংক্রান্ত দপ্তরের উদ্বোধন করেন। এছাড়া চেন্নাই ও মুম্বাই-এর ফ্যামিলি কোয়াটারের প্রকল্পেরও তিনি শিলান্যাস করেন। নতুন এই পরিকাঠামোর ফলে এনএসজি কম্যান্ডোদের আবাসন সমস্যা মেটার পাশাপাশি পেশাদারী প্রশিক্ষনের নতুন সুযোগ তৈরি হল।   .

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় শ্রী শাহ্‌ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার এনএসজির সব প্রত্যাশা আগামী ৫ বছরে পূরণ করবে। তিনি বলেন, দ্রুত প্রযুক্তির বিকাশের যুগে জঙ্গীতৎপরতা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় কৌশল গ্রহণের জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে কেন্দ্র চায় এনএসজি যেন দুই কদম এগিয়ে থাকে। আর সেই লক্ষ্যে খুব শীঘ্রই পৌঁছানো সম্ভব হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এনএসজির শুরু থেকে বাহিনীর জওয়ানরা সব রকম জঙ্গি কার্যকলাপ থেকে দেশকে বাঁচাতে আত্মত্যাগ করে আসছেন। মানুষের মধ্যে আস্থা অর্জনে তাঁরা সফল। আজ ভারতীয়দের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ এবং এনএসজির কম্যান্ডো সমার্থক হয়ে উঠেছে। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কোন সহিষ্ণুতা না দেখিয়ে এবং তাদের নিশ্চিনহ করার সময় ন্যূনতম ক্ষয়ক্ষতি নিশ্চিত করার যে বিষয়টির ওপর প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে আসছেন, এনএসজির সেই লক্ষ্যে প্রস্তুতির বিষয়টি শ্রী শাহ্‌ প্রশংসা করেন। যে কোন বিপদ দূর করার ক্ষেত্রে কম সময়ে সেটি করার উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের নীতি, পরিকাঠামো, সাড়া দেওয়ার কৌশল, প্রযুক্তি সহ গুরুত্বপূর্ণ সব ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার প্রয়োজনের কথা তিনি উল্লেখ করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা সন্ত্রাস ছড়াতে চায়, দেশের ঐক্য ও সংহতিকে বিনষ্ট করতে চায়౼ এনএসজির উপস্থিতিতেই তাদের সেই উদ্যোগ বাধাপ্রাপ্ত হয়।      

তিনি বলেন, “ঐতিহাসিকভাবে বিচার করলে বলা যায়, ভারত কখনোই আক্রমণকারীর ভূমিকা নেয় নি, আমরা বিশ্বশান্তির পক্ষে। কিন্তু ভারতের শান্তি, একতা, অখন্ডতা নষ্ট করতে আমরা কাউকে সুযোগ দেব না।“ এই প্রসঙ্গে তিনি সারজিক্যাল আক্রমণ বা বালাকোটে বিমান অভিযানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। যার মাধ্যমে এটি সারা বিশ্ব বুঝেছে, ভারতের শক্তিশালী নেতৃত্ব দেবার মত লোক আছেন, যারা সৈনিকদের একফোঁটা রক্তও নষ্ট হতে দেবেন না। তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইস্রায়েলের পর প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর যোগ্য নেতৃত্বে ভারত শত্রুর এলাকায় ঢুকে সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় অভিযান চালানোর ক্ষমতা প্রদর্শন করলো। এই সরকারই দেশকে সুনির্দিষ্ট একটি সক্রিয় নিরাপত্তা নীতি দেখিয়েছে, যার ফলে  দীর্ঘ দিনের চাহিদা মেটানো গেছে। এই নীতি বিদেশ নীতির থেকে আলাদা। 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বাহিনীকে আশ্বস্ত করে জানান, সৈনিক এবং তাঁদের পরিবারবর্গের কল্যাণ নিশ্চিত করা মোদী সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরই ‘এক পদ এক পেনশন’ এর মতো নিরাপত্তাবাহিনীর কল্যাণে গৃহীত নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জওয়ানরা যাতে বছরে কমপক্ষে ১০০ দিন তাঁদের পরিবারের সঙ্গে কাটাতে পারেন, সরকার সেটি বিবেচনা করছে। জওয়ানরা যেভাবে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংকল্পবদ্ধ, সেইভাবে দেশও   তাঁদের প্রতিদান দেবে বলে শ্রী শাহ্‌ প্রতিশ্রুতি দেন। তাঁর ভাষণের শেষে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করার জন্য তিনি প্রত্যেক সেনা এবং তাঁদের পরিবারকে অভিবাদন জানান।

অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণে এনএসজির মহানির্দেশক শ্রী অনুপ কুমার সিং প্রধান অতিথিকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই বাহিনী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের সঙ্গে যৌথ মহড়া চালিয়েছে। এনএসজি ১১৫ জন জঙ্গীকে মোকাবিলা করেছে। এই বাহিনীর সদস্যদের ৩টি অশোক চক্র, ২টি কীর্তি চক্র, ৪টি শৌর্য চক্র, ১১৫টি পুলিশ পদক প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে তাঁদের ক্ষমতা প্রমাণ হয়। এনএসজি খুব কম সময়ে নির্ভুল ভাবে শত্রুপক্ষের উপর অভিযান চালানোর ক্ষমতা রাখে। সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ, ছিনতাই-এর মোকাবিলা করার মত বহু ধরণের সমস্যার মোকাবিলা করতে সক্ষম এই বাহিনী ভারতীয় সেনা বাহিনী ও কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে গঠিত। নতুন এই হাব প্রশিক্ষণের মাধ্যমে রাজ্যের পুলিশ বাহিনীগুলির ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে বলে শ্রী সিং জানান।
 

 

CG/CB


(Release ID: 1604804) Visitor Counter : 165


Read this release in: English