প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

আমেরিকার রাষ্ট্রপতির ভারত সফর উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস বিবৃতি

Posted On: 25 FEB 2020 5:32PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

 

 

আমার বন্ধু এবং আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প,

আমেরিকার প্রতিনিধিদলের সম্মানিত সদস্যগণ,

ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ,

নমস্কার।

 

রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প এবং তাঁর প্রতিনিধিদলকে আরেকবার ভারতে আন্তরিক স্বাগত জানাই। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, এবারের সফরে আপনি সপরিবারে এসেছেন। বিগত আট মাসে রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের সঙ্গে আমার এটি পঞ্চম সাক্ষাৎ।

 

গতকাল মোটেরা’তে রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের অভূতপূর্ব ও ঐতিহাসিক স্বাগত অনুষ্ঠান অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। গতকাল এটা আরেকবার স্পষ্ট হয়েছে যে, আমেরিকা ও ভারতের পারস্পরিক সম্পর্ক শুধুই দুটো সরকারের মধ্যে নয়, এই সম্পর্কের মূল চালিকাশক্তি হ’ল জনগণ। এই সম্পর্ক একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারিত্বের অন্যতম। আর এজন্য আজ রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প এবং আমি আমাদের সম্পর্ককে সর্বাঙ্গীণ আন্তর্জাতিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের স্তরে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই লক্ষ্য স্থির করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের অবদান অপরিসীম।

 

বন্ধুগণ,

 

আজ আমাদের আলোচনায় এই অংশীদারিত্বকে প্রত্যেক ক্ষেত্রে ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করেছি – তা সে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক হোক কিংবা শক্তি উৎপাদনে কৌশলগত অংশীদারিত্ব হোক কিংবা প্রযুক্তি সহযোগ, আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা কিংবা বাণিজ্যিক সম্পর্ক অথবা উভয় দেশের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক দৃঢ় করা। ভারত ও আমেরিকার মধ্যে ক্রমবর্ধমান প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অত্যাধুনিক প্রতিরক্ষা উপকরণ ও মঞ্চে সহযোগিতার ফলে ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের প্রতিরক্ষা উপকরণ নির্মাতাদের পরস্পরের সরবরাহ শৃঙ্খলের অংশ করে তোলা হয়েছে। আমেরিকার সশস্ত্র বাহিনীগুলির সঙ্গেই এখন ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীগুলি সবচেয়ে বেশি যৌথ মহড়া করছে। বিগত কয়েক বছরে উভয় দেশের সেনাবাহিনীগুলির মধ্যে অভূতপূর্ব বোঝাপড়া বৃদ্ধি পেয়েছে।

বন্ধুগণ,

 

এভাবে আমরা নিজেদের মাতৃভূমির সুরক্ষা ও আন্তর্জাতিক অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়িয়েছি। আজ মাতৃভূমি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তাতে এই সহযোগিতা আরও নিবিড় হবে। সন্ত্রাসের সমর্থকদের চিহ্নিতকরণ ও দায়ী করার ক্ষেত্রে আমরা নিজেদের চেষ্টা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প, ড্রাগস্‌ এবং আফিম চোরাচালানের বিরুদ্ধে লড়াইকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। আজ তিনি আমাদের মধ্যে ড্রাগস্‌ ও অন্যান্য মাদক চোরাচালান সন্ত্রাস এবং সংঘবদ্ধ অপরাধের বিরুদ্ধে জটিল সমস্যাগুলি সমাধানের লক্ষ্যে একটি নতুন যৌথ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহমত হয়েছেন।

 

বন্ধুগণ,

 

কিছুদিন আগে স্থাপিত আমাদের কৌশলগত শক্তি উৎপাদন অংশীদারিত্ব ইতিমধ্যেই সুদৃঢ় হয়ে উঠেছে। আর এক্ষেত্রে পারস্পরিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে। তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ক্ষেত্রে ভারতের জন্য আমেরিকা একটি প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে। বিগত চার বছরে আমাদের মোট শক্তি বাণিজ্য প্রায় ২০ লক্ষ কোটি ডলার। পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি বা পারমাণবিক শক্তি ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা নতুন প্রাণশক্তি সঞ্চার করেছে।

 

বন্ধুগণ,

 

এভাবেই ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ এবং একবিংশ শতাব্দীর অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারত – আমেরিকা অংশীদারিত্ব, উদ্ভাবন ও বাণিজ্যকে নতুন মাত্রা প্রদান করছে। ভারতীয় পেশাদারদের মেধা আমেরিকার কোম্পানিগুলির প্রযুক্তি নেতৃত্বকে শক্তিশালী করেছে।

 

বন্ধুগণ,

 

ভারত ও আমেরিকা আর্থিক ক্ষেত্রে উদারীকরণ এবং ন্যায়সঙ্গত ও ভারসাম্যযুক্ত বাণিজ্যে দায়বদ্ধ। বিগত তিন বছরে আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ‘ডাবল ডিজিট গ্রোথ’ তথা দুই সংখ্যার বিকাশ হয়েছে এবং এর ভারসাম্য আরও বেড়েছে। যদি শক্তি, অসামরিক বিমান, প্রতিরক্ষা এবং উচ্চ শিক্ষার কথা ধরি, তা হলে বিগত ৪-৫ বছরে শুধু এই চারটি ক্ষেত্রে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলারের কাজ হয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলিই রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের নীতি এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলেই সম্ভব হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আগামী দিনে এই পরিসংখ্যান আরও বৃদ্ধি পাবে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমাদের বাণিজ্য মন্ত্রীদের মধ্যে ইতিবাচক আলাপ-আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প এবং আমি সহমত, আমাদের বাণিজ্য মন্ত্রীদের মধ্যে যে বোঝাপড়া গড়ে উঠেছে, তাকে আমাদের টিমগুলি আইনি রূপ দেবে। আমরা একটি বড় বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের জন্য আলাপ-আলোচনা শুরু করানোর ব্যাপারে সহমত হয়েছি। আশা করি, এই পারস্পরিক সম্পর্ক সুফলদায়ক হবে।

 

বন্ধুগণ,

 

বিশ্ব স্তরে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং তার উদ্দেশ্যগুলির ভিত্তিতেই ভারত ও আমেরিকার সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ করে, ভারত – প্রশান্ত মহাসাগরীয় ক্ষেত্রে এবং বিশ্বে নীতি-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক শান্তি বজায় রাখার উদ্দেশ্যে এই সহযোগিতা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। উভয় দেশই বিশ্বে যোগাযোগ ব্যবস্থা পরিকাঠামো উন্নয়নে সুদূরপ্রসারী এবং স্বচ্ছ বিনিয়োগের গুরুত্ব নিয়ে সহমত পোষণ করে। আমাদের এই পারস্পরিক সহযোগিতা শুধু এই দুই দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, সমগ্র বিশ্বের হিতে সুফলদায়ক হবে।

 

বন্ধুগণ,

 

ভারত ও আমেরিকার এই বিশেষ বন্ধুত্ব এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হ’ল আমাদের দেশের মানুষের সঙ্গে ঐ দেশের মানুষের সম্পর্ক। পেশাদার থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রী কিংবা আমেরিকায় বসবাসকারী প্রবাসী ভারতীয়রা এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অবদান রাখছেন। নিজেদের মেধা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে ভারতের প্রকৃত এই রাজদূতরা আমেরিকার অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। নিজেদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক উপাদানে আমেরিকার সমাজকে সমৃদ্ধ করছেন। আমি রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পকে অনুরোধ করেছি যে, আমাদের পেশাদারদের সামাজিক সুরক্ষা অবদান নিয়ে সামুদ্রিক চুক্তি সম্পাদনের লক্ষ্যে উভয় পক্ষ আলাপ-আলোচনাকে ত্বরান্বিত করুক। এই চুক্তি উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হবে।

 

বন্ধুগণ,

 

এই সকল ক্ষেত্রে আমাদের সম্পর্ককে আরও মজবুত করে তুলতে রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের এই সফল ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে। আমি আরেকবার রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পকে ভারত সফরে এসে ভারত – আমেরিকা সম্পর্ককে নতুন উচ্চতা প্রদানের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

 

থ্যাঙ্ক ইউ।

 

 

CG/SB/SB



(Release ID: 1604316) Visitor Counter : 121


Read this release in: English