কৃষিমন্ত্রক

সয়েল হেলথ কার্ড কর্মসূচি ভারতকে উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্য উৎপাদনে সাহায্য করেছে : শ্রী নরেন্দ্র সিং তোমর

Posted On: 20 FEB 2020 3:40PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

 

 

কেন্দ্রীয় কৃষি, কৃষিকল্যাণ, গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র সিং তোমর বলেছেন, সয়েল কার্ড কর্মসূচি ভারতকে উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্য উৎপাদনে সাহায্য করছে। নতুন দিল্লিতে আজ সয়েল হেলথ কার্ড (এসএইচসি) শীর্ষক জাতীয় কর্মশালার উদ্বোধন করে তিনি বলেন, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে মাটির স্বাস্থ্য গুরুত্বপূর্ণ।

মন্ত্রী বলেন, আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা দেশের সামনে নতুন সমস্যা তুলে ধরেছে। অসময়ের বৃষ্টির জন্য গত বছর পেঁয়াজের দাম সাংঘাতিক বেড়েছে। কৃষি-বিজ্ঞানীরা এর সমাধান খুঁজতে নিয়ত ব্যস্ত। শ্রী তোমর বলেন, এই কর্মসূচিকে ফাইলে আটকে রাখলে চলবে না। এর থেকে কৃষকদের লাভ পাওয়া উচিৎ। তাঁর বিশ্বাস, কৃষি-বিজ্ঞানীদের পরামর্শ মেনে এবং মাটির বিশ্লেষণ করে কৃষকরা এই সমস্যার সমাধান করতে পারবেন। পাঁচ বছর আগে কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর থেকে দুই পর্বে ১১ কোটির বেশি এসএইচসি দেওয়া হয়েছে। সরকার চেষ্টা করছে আদর্শ গ্রামের ধরনে সয়েল টেস্টিং ল্যাব বসাতে। এজন্য অনেক কাজ এখনও বাকি।

শ্রী তোমর জানান, এই কর্মসূচিতে দু’বছর অন্তর সব কৃষককে সয়েল হেলথ কার্ড দেওয়া হয়। এই কার্ডে মাটির স্বাস্থ্য সম্পর্কে বিস্তারিত বিশ্লেষণ দেওয়া থাকে এবং শস্যের জন্য কোনটি প্রয়োজনীয় তার পরামর্শও দেওয়া হয়। তিনি কৃষকদের কাছে সয়েল হেলথ কার্ডের সুপারিশ মেনে ঠিকঠাক সার ব্যবহার করার আবেদন জানান যাতে কৃষিজাত আয় বাড়ে।

শ্রী তোমর বলেন, তৈলবীজ উৎপাদনে দেশকে স্বনির্ভর করে তুলতে সরকার শীঘ্রই ‘তিলাহান মিশন’ শুরু করবে। সাম্প্রতিককালে, ডালের ঘাটতির সময় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ডাল উৎপাদনের ওপর জোর দিতে বলেন এবং বর্তমানে ডাল উৎপাদনে ভারত স্বনির্ভরতা অর্জন করেছে।

অনুষ্ঠানে কৃষি ও কৃষককল্যাণ সচিব শ্রী সঞ্জয় আগরওয়াল বলেন, এসএইচসি বর্তমানে সরকারের অন্যতম বৃহত্তম কর্মসূচি। তিনি জানান, এসএইচসি কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করতে সাহায্য করবে।

সারা দিনের এই কর্মশালায় স্বাগত ভাষণ দেন বিশেষ সচিব। এরপর সয়েল হেলথ কার্ড কর্মসূচি সম্পর্কে অবগত করা হয় অংশগ্রহণকারীদের এবং বিভিন্ন রাজ্যে সেটি কিভাবে রূপায়িত হচ্ছে তাও জানানো হয়। মৃত্তিকা বিজ্ঞানীরা ছাড়াও, বিভিন্ন রাজ্যের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা মাটির স্বাস্থ্য এবং এই কর্মসূচি সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন। সার দপ্তরের সচিব ভাষণ দেন এই অনুষ্ঠানে। বিভিন্ন রাজ্যের প্রায় ৩০০ কৃষক অংশ নেন এই কর্মশালায়।

রাজস্থানের সুরতগড়ে ২০১৫-র ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সয়েল হেলথ কার্ড কর্মসূচির সূচনা করেছিলেন। সেজন্য ১৯ ফেব্রুয়ারি সয়েল হেলথ কার্ড দিবস পালন করা হয়। প্রথম পর্বে ১০ কোটি ৭৪ লক্ষ এবং দ্বিতীয় পর্বে ১১ কোটি ৭৪ লক্ষ সয়েল হেলথ কার্ড দেওয়া হয়েছে কৃষকদের। পাঁচ বছরে খরচ হয়েছে ৭০০ কোটি টাকারও বেশি। ৪২৯টি নতুন সয়েল টেস্টিং ল্যাব (এসটিএল) ছাড়াও ১০২টি নতুন মোবাইল এসটিএল, ৮,৭৫২টি মিনি-এসটিএল এবং ১,৫৬২টি গ্রামস্তরে এসটিএল বসানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ২০১৪-১৫ থেকে।

ভারতের কৃষি উৎপাদন থমকে যাওয়ার অন্যতম কারণ মাটির গুণাগুণের অবক্ষয়। এর জন্য কিভাবে ভারসাম্য রেখে সার ব্যবহার করা হবে এবং কি সার ব্যবহার করতে হবে তা সরকার নির্দিষ্ট করেছে।

২০১৯-২০-তে ‘আদর্শ গ্রাম গঠন’ নামে একটি পাইলট প্রকল্প হাতে নেওয়া হয় যেখানে প্রতিটি কৃষকের থেকে মাটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়। প্রতিটি ব্লকের একটি করে গ্রামকে বেছে নেওয়া হয় মৃত্তিকা পরীক্ষার জন্য এবং হাতে-কলমে কৃষকদের সেখানে বোঝানো হয় গোটা বিষয়টি সম্পর্কে। এ পর্যন্ত রাজ্যগুলির ৬,৯৫৪টি গ্রামকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২১ লক্ষ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, ১৪ লক্ষেরও বেশি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এবং ১৩ লক্ষেরও বেশি কার্ড দেওয়া হয়েছে কৃষকদের। এছাড়াও, প্রদর্শনী এবং মেলারও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

আগামী পাঁচ বছরে ৪ লক্ষ গ্রামে এই নমুনা সংগ্রহের অভিযান চলবে। বসানো হবে পরীক্ষাগার। সয়েল হেলথ কার্ডের মাধ্যমে ছ’টি শস্যের জন্য জৈব সার সহ দুই ধরনের সার ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে কৃষকরা এ ছাড়াও প্রয়োজনে অন্য শস্য চাষের জন্য পরামর্শ নিতে পারেন। তাঁরা এসএইচসি পোর্টাল থেকে নিজেদের কার্ড করিয়ে নিতে পারেন। এটি ২১টি ভাষায় পাওয়া যায়।

২০১৭-য় ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি কাউন্সিলের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে এসএইচসি কর্মসূচির জন্য কৃষি উৎপাদন বেড়েছে, কমেছে রাসায়নিক সারের ব্যবহার। সামগ্রিক উৎপাদনও বেড়েছে।

কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কৃষি সহায়তা ও কৃষিকল্যাণ দপ্তর সমন্বিত প্রয়াস নিয়েছে। এর জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা ও ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চের কৃষি-বিজ্ঞান কেন্দ্রগুলির সাহায্যও নেওয়া হয়েছে। কৃষকরা তাঁদের নমুনা সম্পর্কে জানতে বা কার্ড ছাপাতে পারেন কমন সার্ভিস সেন্টারগুলিতে এবং ফার্মার্স কর্ণারে। এই ওয়েবসাইটটি হল – www.soilhealth.gov.in। এর উদ্দেশ্য ‘সুস্থ ধরা টু ক্ষেত হরা’ (যদি মাটি সুস্থ থাকে, তবে মাঠও সবুজ হবে)।

 

 

CG/AP/DM



(Release ID: 1603839) Visitor Counter : 290


Read this release in: English