প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

বারাণসীতে ‘কাশী এক রূপ অনেক’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 18 FEB 2020 8:23PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

 

 

হর হর মহাদেব!!

 

এখানে বিপুল সংখ্যায় আগত তাঁতশিল্পী ও কারিগর ভাই ও বোনেরা,

 

কাশীতে আজ এটা আমার তৃতীয় কর্মসূচি। সবার আগে আমি আধ্যাত্মের কুম্ভে ছিলাম। এরপর আধুনিকতার কুম্ভে গিয়েছিলাম, বারাণসীর জন্য কয়েকশো কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধন এবং শিলান্যাসের সৌভাগ্য হয়েছে। আর এখন স্বরোজগারের এই কুম্ভে এসে পৌঁছেছি।

 

এখানে একই ছাদের নীচে বিভিন্ন শিল্পকৃতির নির্মাতা ও হস্তশিল্পীদের সঙ্গে সাক্ষাতের সৌভাগ্য হয়েছে। একেকটি সুতো জুড়ে কিংবা মাটির একেকটি কণা মেখে অসাধারণ সব শিল্পকৃতি যাঁরা গড়ে তোলেন, তাঁদের থেকে শুরু করে বিশ্বের বৃহত্তম কোম্পানির সঞ্চালকেরা এখানে একই ছাদের নীচে বসে আছেন। এমন দৃশ্য মনকে আনন্দিত করে, একটা নতুন বিশ্বাস গড়ে তুলে উৎসাহে ভরে দেয়। সত্যিই কাশী এক, কিন্তু তার রূপ অনেক।

 

আমি যোগীজী এবং তাঁর পুরো টিমকে এই আয়োজনের জন্য সাধুবাদ জানাই। উত্তর প্রদেশে উৎপাদিত পণ্য দেশ-বিদেশের বাজারগুলিতে পৌঁছে দিতে, বিশ্বের ব্যাপক অনলাইন বাজারে পৌঁছে দেওয়ার এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে গোটা দেশ লাভবান হবে। শুধু তাই নয়, আমাদের তাঁতি বন্ধুদের এবং অন্যান্য হস্তশিল্পীদের যে মেশিনগুলি দেওয়া হচ্ছে, ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ দেওয়া হচ্ছে, তাঁদের জীবন সহজ করতে অনেক সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। এসব কিছুই অনেক অনেক প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। আজও এখানে যাঁদের এ ধরনের সুবিধা প্রদান করা হ’ল, এমন সমস্ত বন্ধুকে আমি অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।

 

বন্ধুগণ, ভারত সর্বদাই এই শক্তিতে বলীয়ান, যেখানে প্রত্যেক অঞ্চল, প্রত্যেক জেলা কোনও না কোনও বিশেষ কলা ও পণ্যের জন্য পরিচিত। শতাব্দীর পর শতাব্দীকাল ধরে এটাই আমাদের পরম্পরা আর আমাদের ব্যবসায়ী বণিকরা গোটা বিশ্বে এই পরম্পরাকে বহন করেছেন। নানা ধরনের মশলা, নানা রকম রেশম আবার কোথাও সুতি বস্ত্র, কোথাও পশম, কোথাও বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের ভান্ডার রয়েছে। আমাদের প্রত্যেক জেলার কাছে একটি পণ্য আছে। আর প্রত্যেক পণ্যের একটি বৈশিষ্ট্য আছে, প্রত্যেক পণ্যের একটি গল্পও আছে। আমাদের জনজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিতেও উন্নত মানের কলা নৈপুণ্যবিশিষ্ট শিল্পদ্রব্য পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, এমন অনেক হস্তশিল্প, অনেক শিল্পোদ্যোগ পরম্পরাগতভাবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সঞ্চারিত হয়েছে। এটাই আমাদের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ এবং ‘এক জেলা, এক পণ্য’ – এর মতো ভাবনাগুলির পেছনে সবচেয়ে বড় প্রেরণা। ভারতের ৫ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলার অর্থনীতির লক্ষ্যের পেছনে এটাই মূল সামর্থ্য।

 

বন্ধুগণ, আমাদের দেশে সম্পদ ও দক্ষতার অভাব কোনও দিনই ছিল না। শুধু একটি ব্যাপক ভাবনা নিয়ে কাজ করা, এই কাহিনীকে বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন রয়েছে। উত্তর প্রদেশ ইন্সটিটিউট অফ ডিজাইন এই কাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমাকে বলা হয়েছে, ইউপিআইডি দ্বারা বিগত দু’বছরে ৩০টি জেলায় ৩ হাজার ৫০০-রও বেশি কারিগর ও তাঁতিদের নক্‌শা তৈরি করতে সাহায্য করা হয়েছে। হস্তশিল্পের সঙ্গে যুক্ত পণ্য উৎপাদন সংস্কারের জন্য ১ হাজার শিল্পীকে সরঞ্ঝাম পেটিকা দেওয়া হয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতা সম্মেলনের মাধ্যমে হস্তশিল্পী ও তাঁতিদের কর্মশালার মাধ্যমে সরঞ্জাম পেটিকা প্রদান করে ইউপিআইডি হাজার হাজার শিল্পীকে তাঁদের ব্যবসা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এবং ব্যবসায় নতুনত্ব আনার ক্ষেত্রে অনেক বড় সাহায্য করেছে। বিশ্বে হস্তশিল্প ও শিল্পীদের মধ্যে যা কিছু চলছে, ইউপিআইডি উত্তর প্রদেশের শিল্পীদের একটি বড় মঞ্চ হয়ে উঠেছে।

 

বন্ধুগণ, এখানে আসার আগে আমি ‘এক জেলা, এক পণ্য’ সংক্রান্ত একটি অসাধারণ প্রদর্শনী দেখে এসেছি। আপনাদের অনুরোধ জানাই, আপনারাও এই প্রদর্শনীটি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখুন, সেখানে উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে উৎপাদিত পণ্যের অনুপম সংগ্রহ রয়েছে। সেখানে যে দোনা-পত্তল নির্মাণকারী কারিগরদের আধুনিক যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়েছে, তাঁদের আত্মবিশ্বাস দেখার মতো ছিল।

 

বন্ধুগণ, ভারত যখন ২০২২ সালের মধ্যে সিঙ্গল ইয়ুজ প্লাস্টিক থেকে মুক্তির সংকল্প গ্রহণ করেছে, সারা পৃথিবী প্লাস্টিকের বিকল্প খুঁজছে, এমন সময় আমাদের পরিবেশ-বান্ধব সমাধানগুলি আমরা দেশ ও বিশ্বে জনপ্রিয় করে তোলার সুযোগ নিতে পারি।

 

বন্ধুগণ, প্রয়োজন শুধু আমাদের সেই পুরনো ঐতিহ্যকে একবিংশ শতাব্দীর নিরিখে বিবর্তিত করা। উৎপাদিত পণ্যকে পরিচ্ছন্ন ও ঝলমলে করে তোলা, সময়ের নিরিখে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা – পণ্যের উৎকর্ষ বৃদ্ধি করবে। আমাদের ঐতিহ্যমণ্ডিত এই শিল্পোদ্যোগগুলিকে আমরা যখন প্রাতিষ্ঠানিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারবো, তখনই এটা সম্ভব হবে। পরিবর্তিত পৃথিবী, পরিবর্তিত সময় ও চাহিদা অনুসারে, এই পণ্যগুলিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে হবে। সেজন্য এই ঐতিহ্যশালী শিল্পোদ্যোগগুলির সঙ্গে যুক্ত বন্ধুদের প্রশিক্ষণ, আর্থিক সহায়তা, নতুন প্রযুক্তি এবং বাজারীকরণের সুবিধা অত্যন্ত প্রয়োজন।

 

বিগত পাঁচ-সাড়ে পাঁচ বছর ধরে আমরা লাগাতার এই চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের সৌর চরকা, সৌর তাঁত, সৌর আলো, মাটির বাসন তৈরি করার বৈদ্যুতিক চাকা ইত্যাদি এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। শুধু তাই নয়, আমরা আজ যে হস্তশিল্প বিদ্যালয়ে বসে আছি, এটাও সরকারের এই ভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গীর পরিণাম। আপনারা আমাকে বলুন, ২০১৪ সালের আগে বারাণসী তথা উত্তর প্রদেশের সাধারণ তাঁতশিল্পী ও সাধারণ রপ্তানিকারকরা এভাবে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কথাবার্তা ও লেনদেন করতে পারতেন কি? কেউ এরকম কল্পনাও করেননি। এটা সম্ভবই ছিল না, কারণ এরকম কোনও মঞ্চই ছিল না। সেজন্য এটা আমরা বলতে পারি না যে, তখনকার সরকারের কাছে অর্থ ছিল না, কিংবা তাঁরা এসব বুঝতেন না। আসল সমস্যা ছিল দৃষ্টিভঙ্গীর। এখন দেশ সেই পুরনো দৃষ্টিভঙ্গী থেকে এগিয়ে গেছে। দেশের প্রত্যেক অঞ্চল, প্রত্যেক ব্যক্তিকে শক্তিশালী ও সাবলম্বী করে তোলার ভাবনা নিয়ে আমরা এগিয়ে চলেছি। সেজন্য এই আন্তর্জাতিক স্তরের কেন্দ্রটি ছাড়াও বারাণসী সহ গোটা দেশে এমন অনেক কেন্দ্র গড়ে উঠেছে, যেখানে সামান্য হস্তশিল্পী ও ব্যবসায়ীরা তাঁদের পণ্য প্রদর্শন করতে পারে।

 

আমি যোগীজী এবং তাঁর টিমকে শুভেচ্ছা জানাই, এই ‘এক জেলা, এক পণ্য’ প্রকল্পটি কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যাপক দৃষ্টিভঙ্গীকেও গতি প্রদান করছে। এসব প্রচেষ্টার পরিণাম হ’ল – বিগত দু’বছরে রপ্তানি ক্ষেত্রে উত্তর প্রদেশের নিরন্তর সাফল্য বাড়ছে। ‘এক জেলা, এক পণ্য’ – এর মতো প্রকল্পগুলি এবং ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলি যেসব সুবিধা পাচ্ছে, সেগুলির কারণেই এমন সাফল্য আসছে। সম্প্রতি চালু করা ই-কমার্স পোর্টালও আগামী দিনে অনেক সহায়ক হবে।

 

বন্ধুগণ, এবারের বাজেটও সরকারের অগ্রাধিকারগুলো স্পষ্ট করে দিয়েছে। শুধু এই বছরের জন্য নয়, আগামী পাঁচ বছরের জন্য ছোট ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলি উন্নয়নের একটা খসড়া রচনা করা হয়েছে। এই বাজেটে যে বিষয়গুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে, তা হ’ল নির্মাণ শিল্প এবং ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস। এতেও ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ এবং স্টার্ট আপগুলিকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এগুলিই ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ এবং দেশে বড় সংখ্যায় কর্মসংস্থান গড়ে তোলার উপায়।

 

বন্ধুগণ, বস্ত্র শিল্প উত্ত্র প্রদেশ তথা দেশের সর্বত্র কর্মসংস্থানের বড় মাধ্যম। এই গোটা এলাকা তাঁতি ও কার্পেট শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শিল্পী ও শ্রমিকদের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। লক্ষ লক্ষ পরিবারের জীবন এই বস্ত্র ও কার্পেট শিল্প-নির্ভর। এ বছরের বাজেটে এই বস্ত্র উদ্যোগকে নতুন মাত্রা প্রদানের চেষ্টা করা হয়েছে। দেশে স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নয়নের পাশাপাশি, অটো মোবাইল ক্ষেত্রেও সম্প্রসারিত হচ্ছে, পর্যটন বাড়ছে, প্রতিরক্ষা এবং কৃষি উদ্যোগ বিস্তার লাভ করছে। এই বিস্তার বস্ত্রের চাহিদা এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত বস্ত্রের ব্যবস্থা বৃদ্ধির কারণ।

 

আপনারা কল্পনা করতে পারেন, আজ ভারত প্রত্যেক বছর কোটি কোটি টাকারও বেশি প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত বস্ত্র আমদানি করে। আমরা যত কার্পেট রপ্তানি করি, তারচেয়েও বেশি প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত বস্ত্র আমদানি করি। এই পরিস্থিতি বদলানোর জন্য আমরা এবারের বাজেটে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত বস্ত্রের কাঁচামাল বা পলিমার ফাইবারের অ্যান্টি ডাম্পিং ডিউটি মকুব করেছি। বস্ত্র শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা অনেক দশক ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু আমাদের সরকারই এবার সেই দাবি পূরণ করলো। এছাড়া, ন্যাশনাল টেকনিক্যাল টেক্সটাইলস্‌ মিশন চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আগামী চার বছরে দেড় হাজার কোটি টাকা খরচ করা হবে। দেশে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত বস্ত্র নির্মাণ সংশ্লিষ্ট পরিষেবা, পরিকাঠামো এবং দক্ষতা নির্মাণ করা হবে।

 

বন্ধুগণ, এবারের বাজেটে উত্তর প্রদেশে নির্মীয়মান প্রতিরক্ষা করিডরের জন্যও প্রায় ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্প্রতি লক্ষ্ণৌতে সারা পৃথিবীর প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলি শিল্প স্থাপনে আগ্রহ দেখিয়েছে। অনেক কোম্পানি চুক্তিও সম্পাদন করেছে। এই প্রতিরক্ষা করিডরের মাধ্যমে চালু ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলি উপকৃত হবে। আর অনেক নতুন ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ গড়ে উঠবে। এই করিডর গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও হাজার হাজার নতুন সুযোগ গড়ে উঠবে।

 

বন্ধুগণ, নতুন ভারতের একটি পরিচয়, সম্পদ সৃষ্টিকারীদের উপর বিশ্বাস এবং তাঁদের সম্মান প্রদর্শন। আজ এটাই চেষ্টা করা হচ্ছে, যাতে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের কাগজ ও দলিলের বোঝা থেকে মুক্ত করা যায়। এখানে যে ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত বন্ধুরা রয়েছেন, আপনাদের অডিট নিয়ে একটি বড় অভিযোগ থাকতো। কিন্তু ১ কোটি টাকা পর্যন্ত লেনদেনকারী শিল্পোদ্যোগগুলিকেও অনেক লিখিত নথিপত্র রাখতে হ’ত। চার্টার্ড আকাউন্টেন্ট রাখতে হ’ত। অডিট সার্টিফিকেট নিতে হ’ত – এমনই কত না অনাবশ্যক খরচ ও সময় নষ্ট করতে হ’ত। এই বাজেটে আপনারা এসব থেকে মুক্তি পেলেন। এখন শুধু ৫ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলে তবেই অডিট করতে হবে।

 

বন্ধুগণ, সরকারের বিভিন্ন বিভাগে লালফিতের ফাঁস ও দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ফলে ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপতিরা নির্মিত অর্থ যোগানের সমস্যায় ভুগতেন। এখন আইন সংশোধন করা হয়েছে। এরপর, আপনাদের পণ্যের বিল ও ইনভয়েসের ভিত্তিতে এনবিএফসি আপনাদের ঋণ প্রদান করতে পারবে। ঋণ পরিষেবাকে আরও সহজ করে তুলতে মোবাইল অ্যাপ-ভিত্তিক ইনভয়েস ফিনান্সিং লোনস্‌ প্রোডাক্টও চালু করার প্রকল্প রয়েছে। আপনারা নিজেদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ঋণ নিতে পারবেন - এমন পরিস্থিতি গড়ে উঠবে। এছাড়া, চলতি মূলধনের জন্যও ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলির জন্য নতুন প্রকল্প নির্মাণের ঘোষণা করা হয়েছে।

 

বন্ধুগণ, শুধু তাই নয়, সরকারি ক্রয় থেকে শুরু করে লজিস্টিক পর্যন্ত এমন অনেক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যার দ্বারা ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলি সরাসরি উপকৃত হবে। সরকারি ই-মার্কেট প্লেস বা জিইএম চালু করায় ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগগুলির সরকারকে পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে সুবিধা হয়েছে। এতে সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা এসেছে। এখন এই প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করে তুলতে ইউনিফায়েড প্রকিওরমেন্ট সিস্টেম গড়ে তোলার ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সরকার ছোট শিল্পোদ্যোগগুলির মাধ্যমে পণ্য পরিষেবা এবং কাজগুলিকে একই মঞ্চ থেকে ক্রয় করতে পারবে।

 

বন্ধুগণ, রপ্তানিকারকদের জন্য টাকা ফেরৎ দেওয়ার ডিজিটাল ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হচ্ছে। এর ফলে, রপ্তানিকারকদের টাকা ফেরৎ পাওয়ার প্রক্রিয়া দ্রুত ও সহজ হবে। বন্ধুগণ, আরেকটি বড় সংস্কার এই সভাগৃহে বসে থাকা সংশ্লিষ্ট সমস্ত ব্যক্তিদের লাভবান করবে। জিএসটি চালু হওয়ায় দেশে পণ্য পরিবহণে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এখন এই পরিবর্তনকে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে। দেশে প্রথমবার জাতীয় পণ্য পরিবহণ নীতি রচনা করা হচ্ছে। এর ফলে, সিঙ্গল উইন্ডো ই-লজিস্টিকস্‌ মার্কেট গড়ে উঠবে। এর ফলে, ক্ষুদ্র শিল্প অনেক বেশি প্রতিযোগিতামূলক হবে এবং কর্মসংস্থান গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে। ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগকে শক্তিশালী করতে এ ধরণের পণ্য আমদানি কম করা হচ্ছে। ফলে, ভারতেই উন্নত পণ্য উৎপাদন হচ্ছে।

 

বন্ধুগণ, কর ব্যবস্থায় সংস্কার, আয়কর থেকে শুরু করে কর্পোরেট কর কিংবা জিএসটি-র মাধ্যমে আপনাদের প্রত্যেকের ব্যাপক লাভ হবে। দেশের প্রত্যেক শিল্পোদ্যোগী লাভবান হবেন। দেশীয় সম্পদ সৃষ্টিকারীদের যাতে অনাবশ্যক সমস্যার মুখোমুখি না হতে হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে এই প্রথম করদাতাদের জন্য সনদ প্রস্তুত করা হচ্ছে। বিশ্বের অনেক দেশেই এ ধরনের ভাবনা নেই। এর ফলে, দেশে করদাতাদের অধিকার সুনিশ্চিত হবে। করদাতারা এর ফলে প্রশাসনকে প্রশ্ন করতে পারবেন। এভাবে করদাতারা বড় মাত্রায় আশ্বস্ত হবেন। কর সংগ্রহকে ফেসলেস করা হচ্ছে। দেশে নির্মাণ শিল্পকে উৎসাহ যোগাতে ১৫ শতাংশ কর নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ ভারত বিশ্বের বিরল সেই দেশগুলির অন্যতম, যেখানে কর্পোরেট করের হার এত কম। বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে ইনভেস্টমেন্ট ক্লিয়ারেন্স সেল গড়ে তোলার প্রকল্প রয়েছে। এটি একটি অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে কাজ করবে। ফলে, বিনিয়োগকারীরা কেন্দ্র ও রাজ্য স্তরে ঞ্ছাড়পত্রএবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য সহজেই পেতে পারেন।

 

বন্ধুগণ, এই সমস্ত পদক্ষেপের ফলে প্রত্যেক ভারতবাসী, প্রত্যেক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, প্রত্যেক বিনিয়োগকারী ও শিল্পপতি লাভবান হবেন। দেশকে ৫ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলারের অর্থনীতির লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে এরকম যত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, তা আমরা ভবিষ্যতেও নেবো। আমাদের তাঁতশিল্পী, হস্তশিল্পী, ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের স্বার্থে আমরা ভবিষ্যতেও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেবো। তা সে কেন্দ্রীয় সরকার হোক কিংবা উত্তর প্রদেশ রাজ্য সরকার – আমরা কখনও পিছ পা হবো না। ভারতকে নির্মাণ শিল্পের পাওয়ার হাউস করে তুলতে আর দেশে উৎপাদিত আন্তর্জাতিক মানের পণ্য সারা পৃথিবীতে পৌঁছে দেওয়ার স্বার্থে আমরা সবাই মিলেমিশে কাজ করবো।

 

আমি আরেকবার এই সুন্দর আয়োজনের জন্য, একটি সুনির্দিষ্ট উদ্যোগের জন্য এবং আন্তর্জাতিক পরিচয় গড়ে তোলার জন্যে তৈরি এই প্রকল্প অনুসারে আজকের এই সমারোহ আয়োজনের জন্যে আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই। আর কিছুদিন পরই বেনারসে সবচাইতে জনপ্রিয় মহাশিবরাত্রির উৎসব পালিত হবে। আমি আপনাদের সবাইকে মহাশিবরাত্রির জন্যে অনেক অনেক শুভ কামনা জানাই। অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

 

ধন্যবাদ।

 

 

CG/SB/SB



(Release ID: 1603587) Visitor Counter : 79


Read this release in: English