প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
৩৫ হাজারেরও বেশি উদ্বাস্তু ব্রু-রিয়াং চুক্তির মাধ্যমে সাহায্য ও ত্রাণ পাবেন : প্রধানমন্ত্রী; নতুন দশকের প্রথম মন কি বাত – এ উত্তর – পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজকর্ম নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আলোচনা;
হিংসার মাধ্যমে কোনও সমস্যার সমাধান হয় না
Posted On:
27 JAN 2020 4:13PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৬ জানুয়ারি, ২০২০
নতুন বছর এবং দশকের প্রথম মন কি বাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন যে, মিজোরামের ৩৪ হাজারেরও বেশি শরণার্থীর দু’দশকের বেশি সময় ধরে চলা সঙ্কটের অবসান ও সাহায্য এবং ত্রাণ নিশ্চিত হয়েছে ব্রু – রিয়াং চুক্তির মাধ্যমে।
শ্রী মোদী এই সমস্যাটির বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন। ‘এই সমস্যাটি শুরু হয়েছিল নব্বইয়ের দশকে। ১৯৯৭ সালে মিজোরামে বসবাসরত ব্রু – রিয়াং জনজাতির মানুষরা জাতিগত উত্তেজনার কারণে রাজ্য ছাড়তে বাধ্য হন এবং ত্রিপুরায় আশ্রয় নেন। উত্তর ত্রিপুরার কাঞ্চনপুরে অস্থায়ী শিবিরে এই বাস্তুচ্যুত মানুষদের রাখা হয়েছিল। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে ব্রু – রিয়াং সম্প্রদায়ের মানুষরা উদ্বাস্তু হয়ে থাকায় তাঁদের জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট হয়েছিল। শিবিরের জীবনের অর্থ হ’ল তাঁরা সবরকমের মৌলিক সাচ্ছন্দ্যগুলি থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন। ২৩ বছর পর্যন্ত না ঘর, না জমি জায়গা; না পরিবারের জন্য সুযোগ-সুবিধা বা চিকিৎসার সুযোগ, না বাচ্চাদের শিক্ষার সুযোগ বা তাদের নিজের জন্য সুবিধা কিছুই ছিল না”।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনও সরকারই এই সমস্যার এবং বাস্তুচ্যুত মানুষগুলির দুর্দশার কোনও সমাধান করতে পারেনি। তিনি ভারতের সংবিধানের প্রতি আস্থা রাখায় উদ্বাস্তুদের প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, তাঁদের সেই বিশ্বাসের কারণেই এ মাসে দিল্লিতে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
তিনি বলেন, এই বিশ্বাসের ফলেই তাঁদের জীবন আজ এক নতুন প্রভাতের সামনে। চুক্তি অনুযায়ী, তাঁদের মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের পথ সূচিত হয়েছে। ২০২০’র নতুন দশকের অবশেষে ব্রু-রিয়াং সম্প্রদায়ের মানুষদের জীবনে নতুন আশা সঞ্চারিত হয়েছে”।
এই চুক্তির সুবিধাগুলি ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রায় ৩৪ হাজার ব্রু শরণার্থী ত্রিপুরায় পুনর্বাসিত হবেন। শুধু তাই নয়, সরকার তাঁদের পুনর্বাসন এবং সর্বস্তরীয় উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা সাহায্য করবে। বাস্তুচ্যুত প্রতিটি পরিবার জমি পাবেন। তাঁদের গৃহনির্মাণে সাহায্য করা হবে। এছাড়াও, তাঁদের রেশন দেওয়া হবে। এখন তাঁরা রাজ্য ও কেন্দ্রের বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কর্মসূচির সুবিধা পাবেন”।
প্রধানমন্ত্রী এই চুক্তিকে একটি বিশেষ চুক্তি বলে বর্ণনা করে বলেন, এর মাধ্যমে সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় ভাবনা প্রতিফলিত হয়েছে।
তিনি বলেন, “এই চুক্তিটি ভারতীয় সংস্কৃতির চিরায়ত সহানুভূতি এবং স্পর্শকাতরতার প্রতীক”।
হিংসার পথ ছেড়ে মূলস্রোতে ফিরে আসা
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনও সমস্যারই সমাধান হিংসার মাধ্যমে হয় না। আসামে ৮টি গোষ্ঠীর ৬৪৪ জন জঙ্গী অস্ত্র সমর্পণ করে সমাজের মূলস্রোতে ফিরে আসার ঘটনাটির তিনি প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, “আসাম সফলভাবে ‘খেলো ইন্ডিয়া’ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল। তাঁদের মুকুটে আরেকটি পালক যুক্ত হ’ল। দিন কয়েক আগে ৮টি বিভিন্ন জঙ্গী সংগঠনের ৬৪৪ জন জঙ্গী তাদের অস্ত্র সমর্পণ করে। যারা হিংসার পথকে বেছে নিয়েছিল, তাঁরা শান্তির আদর্শে বিশ্বাস রেখে দেশের উন্নয়নে শরিক হতে সমাজের মূলস্রোতে ফিরে এসেছে”।
তিনি বলেন, একইভাবে ত্রিপুরাতেই ৮০ জনেরও বেশি হিংসার পথ ছেড়ে সমাজের মূলস্রোতে ফিরে এসেছেন। আর এইভাবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপ যথেষ্ট হ্রাস পেয়েছে।
তিনি বলেন, “এর মূল কারণ হ’ল এই অঞ্চলের প্রতিটি সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সৎভাবে এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধান করা হয়েছে”।
যারা এখনও হিংসার পথ অনুসরণ করছে, তাদের মূলস্রোতে ফিরে আসার তিনি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “পবিত্র এই সাধারণতন্ত্র দিবসে আমি দেশের প্রতিটি প্রান্তে যাঁরা এখনও হিংসা ও অস্ত্রের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে চান, তাঁদের মূলস্রোতে ফিরে আসার আবেদন জানাচ্ছি। তাঁদের নিজেদের এবং দেশের ক্ষমতার প্রতি বিশ্বাস রেখে সমস্যাগুলির শান্তিপূর্ণ সমাধান করা উচিৎ”।
CG/CB/SB
(Release ID: 1600689)
Visitor Counter : 160