নারীওশিশুবিকাশমন্ত্রক

মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রকের ২০১৯ বর্ষশেষ পর্যালোচনা

Posted On: 11 JAN 2020 6:35PM by PIB Kolkata

শিশু উন্নয়ন, সুরক্ষা ও কল্যাণ

বিভিন্ন নীতি এবং কর্মসূচি মারফৎ শিশুদের উন্নয়ন, পরিচর্যা ও সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার জন্য মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রক শিশুর অধিকার এবং বিকাশ ও তাদের সম্ভাবনার পূর্ণ উন্নয়নের বিষয়ে সচেতনতা বিস্তার করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।

মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রক চালু করেছে ভারতীয় পোষণ কৃষি কোষ

কেন্দ্রীয় মহিলা ও শিশু উন্নয়ন এবং বস্ত্র মন্ত্রী শ্রীমতী স্মৃতি জুবিন ইরানি দিল্লিতে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের যুগ্ম সভাপতি বিল গেটসকে সঙ্গে নিয়ে গত ১৮ নভেম্বর ভারতীয় পোষণ কৃষি কোষের সূচনা করেন। পুষ্টির ক্ষেত্রে আরও বেশি উন্নতির জন্য এই কোষ হবে ভারতে ১২৮টি কৃষি-জলবায়ু অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় নানাবিধ শস্যের ভাণ্ডার।

মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রকের নির্দেশে হার্ভার্ড চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেল্‌থ ভারতে তার গবেষণাকেন্দ্র এবং মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন মারফৎ উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় আঞ্চলিক খাদ্যশস্যের মূল্যায়ন ও তাদের প্রামাণিক তথ্য নথিবদ্ধ করবে। বানাবে আঞ্চলিক কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থার মানচিত্র। এই দুই উদ্যোগের লক্ষ্য সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রকে একাজে জড়ো করা।

মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রক এবং বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সঙ্গে পরামর্শক্রমে প্রকল্প দলটি ভারতের ভৌগোলিক, সামাজি, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও কাঠামোগত বৈচিত্র্যের প্রতিনিধিত্বকারী ১২টির মতো রাজ্যকে খুব গুরুত্ব দেবে। প্রতিটি রাজ্য কিংবা রাজ্যগোষ্ঠীতে, দলটি খাদ্য মানচিত্র তৈরির জন্য এবং আচরণ পরিবর্তন, যোগাযোগ ও পুষ্টি নিয়ে তাদের অভিজ্ঞতা থাকা স্থানীয় অংশীদার খুঁজে নেবে।

সেপ্টেম্বর, ২০১৯ পোষণ মাস হিসেবে উদযাপিত

২০১৯-এর সেপ্টেম্বর পোষণ মাস রূপে পালিত হয়। এই মাসটিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩ কোটি ৬০ লক্ষ পোষণ সম্পর্কিত কাজকর্ম চালানো হয়।

পোষণ মাসে ১৩ লক্ষ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, ১২ লক্ষ অঙ্গনওয়াড়ি সহায়ক এবং রাজ্য সংস্থাগুলি ৮৫ লক্ষ মহিলা ও শিশুর উপকার করে।

তিন বছরে পোষণ অভিযানে অর্থবরাদ্দ বেড়েছে। ২০১৭-১৮ সালের ৯৫০ কোটি থেকে ২০১৮-১৯-এ ৩,০৬১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা এবং ২০১৯-২০ সালে ৩,৪০০ কোটি টাকা। পুষ্টিকর খাবার যোগাতে পোষণ অভিযানে কোন সংস্থান নেই। পরিপূরক পুষ্টির বন্দোবস্ত করা অঙ্গনওয়াড়ি পরিষেবা প্রকল্পের একটি কাজ। পোষণ অভিযান বিভিন্ন মন্ত্রকের নানাবিধ পুষ্টি সম্পর্কিত কাজকর্মের মধ্যে সমন্বয় সুনিশ্চিত করে।

২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯ এবং চলতি ২০১৯-২০ – এই তিন বছরে রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি পেয়েছে মোট ৪,২২৩ কোটি ৫০ লক্ষ ৩৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের অংশ ২৪৮ কোটি ৩৯ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা। এ রাজ্য অবশ্য ২০১৯-২০ সালে এখনও পর্যন্ত টাকা পায়নি।

পোষণ অভিযানের জন্য সফটওয়্যার ও ড্যাশবোর্ড

পোষণ অভিযান কর্মসূচির আওতায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং মহিলা সুপারভাইজারদের মতো পুষ্টি বিকাশের কাজে অগ্রবর্তী কর্মচারীদের ক্ষমতা বাড়াতে স্মার্টফোন দেওয়া হয়েছে। পোষণ অভিযান কর্মসূচিতে তৈরি হয়েছে আইসিডিএস-কমন অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার (সিএএস)। এই সফটওয়্যার তথ্য সংগ্রহ করতে সাহায্য করে, নির্দিষ্ট পরিষেবা যোগান নিশ্চিত করে এবং দরকার পড়লে মধ্যস্থতা বা হস্তক্ষেপ করতে সাহায্য করে।

ব্লক, জেলা, রাজ্য ও জাতীয় স্তরে তত্ত্বাবধায়ক কর্মীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং নজরদারির জন্য এসব তথ্য ওয়েব-ভিত্তিক আইসিডিএস-সিএএস ড্যাশবোর্ডে জমা করা হয়। পরিষেবা যোগানে উন্নতির জন্য তথ্য বিশ্লেষণ ও ব্যবহার করতে প্রশাসনিক আধিকারিকরা ড্যাশবোর্ডে বিভিন্ন কর্মসূচি সংক্রান্ত তথ্য ও প্রতিবেদন কাজে লাগাতে পারেন। ২৬টি রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ৫ লক্ষ ১০ হাজারেরও বেশি কর্মী প্রশিক্ষণ পেয়েছেন এবং আইসিডিএস-সিএএস ব্যবহার করছেন (৩১/২০/২০১৯-এর হিসেবে)। এই তালিকার মধ্যে অবশ্য পশ্চিমবঙ্গ নেই।

পোষণ অভিযানের লক্ষ্য হল ২০১৭-১৮ সাল থেকে তিন বছরের মধ্যে শিশু (০-৬ বছর) এবং গর্ভবতী মহিলা ও স্তন্যদায়ী মায়েদের পুষ্টি বাড়ানো। এই কর্মসূচির ধার্য লক্ষ্যমাত্রা :

ক্রমিক সংখ্যা

উদ্দেশ্য

টার্গেট

শিশুদের (০-৬ বছর) খর্বতা প্রতিরোধ ও কমানো

বছরে ২ শতাংশ হিসেবে মোট ৬ শতাংশ

শিশুদের (০-৩ বছর) অপুষ্টি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ (ওজন কমা)

বছরে ২ শতাংশ হিসেবে মোট ৬ শতাংশ

৬-৫৯ মাসের বাচ্চাদের রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া কমানো

বার্ষিক ৩ শতাংশ হিসেবে মোট ৯ শতাংশ

মেয়েদের (১৫-৪৯ বছর বয়সী) রক্তাল্পতা কমানো

বার্ষিক ৩ শতাংশ হিসেবে মোট ৯ শতাংশ

কম ওজনের বাচ্চা জন্মানো হ্রাস

বছরে ২ শতাংশ হিসেবে মোট ৬ শতাংশ

 

এসব উদ্দেশ্য পূরণের জন্য পোষণ অভিযানকে মহিলা ও শিশু উন্নয়ন সহ বিভিন্ন মন্ত্রকের পুষ্টি বিষয়ক সব কর্মসূচিকে এক লক্ষ্যে চালিত করতে হবে। এসবের অন্যতম হল – অঙ্গনওয়াড়ি পরিষেবা, প্রধানমন্ত্রী মাত্রু বন্দনা যোজনা, কিশোরীদের জন্য প্রকল্প, জননী সুরক্ষা যোজনা, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন, স্বচ্ছ ভারত মিশন, গণবন্টন ব্যবস্থা, মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা প্রকল্প, পানীয় জল ও স্যানিটেশন দপ্তর, পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রক, উপজাতি মন্ত্রক এবং আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের অন্যান্য কর্মসূচি। এ ব্যাপারে নীতি-নির্দেশিকা সব রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পাঠানো হয়েছে।

তিন বছরে পোষণ অভিযানের অনুমোদিত বাজেট হল ৯,০৪৬ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ সালের জন্য পোষণ অভিযান খাতে বরাদ্দ ৩,৪০০ কোটি টাকা।

পোষণ সঙ্গীত

উপ-রাষ্ট্রপতি শ্রী এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু ২০১৯-এর ৩ ডিসেম্বর পোষণ সঙ্গীতের সূচনা করেন। অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আন্দোলনে যোগ দিতে মানুষকে অনুপ্রাণিত করাই পোষণ সঙ্গীতের লক্ষ্য। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপ-রাষ্ট্রপতি অভিনন্দন জানান সঙ্গীতটির গীতিকার প্রসূন যোশী এবং সুরকার ও গায়ক শঙ্কর মহাদেবনকে। তিনি আশাপ্রকাশ করেন যে এই গানের মাধ্যমে পুষ্টির বার্তা পৌঁছে যাবে দেশের প্রতিটি প্রান্তে। ভারতের সব মানুষকে পুষ্টির বার্তা দিতে এই উদ্ভাবনী উপায় কাজে লাগানোর জন্য তিনি প্রশংসা করেন মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রকের। পোষণ সঙ্গীত যাতে জনগণের গান হয়ে উঠতে পারে সেজন্য বহু আঞ্চলিক ভাষায় এই সঙ্গীত গাওয়ার জন্য তিনি আর্জি জানান। উপ-রাষ্ট্রপতি বলেন, সব সাংসদ, বিধায়ক, প্রশাসক, সমাজকর্মী ও নাগরিকের কাছে অবশ্য অগ্রাধিকার হচ্ছে দেশের প্রতিটি বাচ্চা যেন সম্ভাব্য সেরা শৈশব পায়। তিনি বলেন, ১৩ লক্ষ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী হচ্ছেন পুষ্টি যোদ্ধা এবং পরিবর্তনের প্রতিনিধি। অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাঁরাই দিশারী। তাঁর আশা, সঙ্গীতটি ভারতকে রূপান্তরিত করতে পুষ্টি বিপ্লব ঘটিয়ে ২০২২ সালের মধ্যে দেশকে অপুষ্টিমুক্ত করবে।

যৌন নির্যাতন থেকে শিশুদের রক্ষা (পকসো)

পকসো আইন ২০১২-র ২৮ নং ধারা দ্রুত বিচারের উদ্দেশ্যে বিশেষ আদালত গড়ার ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া এই আইনটির ৩৫ নং ধারায় বিশেষ আদালত অপরাধটি বিচারযোগ্য বলে মনে করার ৩০ দিনের মধ্যে শিশুটির সাক্ষ্য রেকর্ড করার সংস্থান রয়েছে। এক্ষেত্রে কোন দেরি হলে বিশেষ আদালত তার কারন লিপিবদ্ধ করবে। ৩৫ নং ধারাটি আরও নির্দেশ দিয়েছে যে এক বছরের মধ্যে মামলার ফয়সালা করতে হবে।

ভারত সরকার দ্রুত বিচার সুনিশ্চিত করতে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা নিয়েছে :

ধর্ষণ ও পকসো আইন সংক্রান্ত ঝুলে থাকা মামলা দ্রুত বিচার ও নিষ্পত্তি করার জন্য সরকার ২০১৯-এর আগস্টের ১,০২৩টি ফাস্ট ট্র্যাক বিশেষ আদালত গড়তে এক কর্মসূচি চূড়ান্ত করেছে। কর্মসূচিটি চলবে ২০২০-২১ সাল পর্যন্ত।

ভয় দেখিয়ে যৌন অপরাধ বন্ধ করার জন্য ফৌজদারি বিধি-নিয়ম (সংশোধন) আইন, ২০১৩ তৈরি হয়। এছাড়া, ১২ বছরের কম বয়সী কোন মেয়ে ধর্ষণের শিকার হলে ফৌজদারি বিধি-নিয়ম (সংশোধন) আইন, ২০১৮-তে আরও কড়া সাজার সংস্থান রয়েছে। এই অপরাধের ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডেরও বিধান আছে। তদন্ত ও বিচার প্রত্যেকটি শেষ করতে হবে দু’মাসের মধ্যে।

যৌন অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা এবং যৌন অপরাধের তদন্ত চালাতে আইন বলবৎকারী সংস্থাটিকে সাহায্য করার জন্য ২০১৮-র ২০শে সেপ্টেম্বর ‘যৌন অপরাধীদের এক তথ্যভাণ্ডার’ চালু হয়েছে।

ফৌজদারি বিধি-নিয়ম (সংশোধন) আইন, ২০১৮-তে যৌন হামলা সংক্রান্ত মামলার মাসিক ভিত্তিতে নজরদারি এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্তের অগ্রগতিতে পুলিশের জন্য ‘অনলাইন বিশ্লেষাত্মক উপায়’ ‘ইনভেস্টিগেশন ট্র্যাকিং সিস্টেম ফর সেক্সুয়াল অফেন্সেস’ চালু হয়েছে ২০১৯-এর ১৯শে ফেবুয়ারি।

তদন্তের উন্নতির উদ্দেশ্যে কেন্দ্র এবং রাজ্য ফরেন্সিক বিজ্ঞান ল্যাবরেটরিগুলিতে ডিএনএ বিশ্লেষণ ইউনিটগুলি জোরদার করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর অন্যতম হল চণ্ডীগড়ের কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে অত্যাধুনিক ডিএনএ বিশ্লেষণ ইউনিট স্থাপন।

যৌন নিপীড়ন মামলায় ফরেন্সিক সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহের জন্য নীতি-নির্দেশিকার বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। যৌন নিপীড়নের সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহের কিটে কি কি সরঞ্জাম থাকবে তাও জানানো হয়েছে। পুলিশ গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যালয় (ব্যুরো অফ পুলিশ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) এবং লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড ফরেন্সিক সায়েন্স ৬,০২৩ জন আধিকারিককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। প্রশিক্ষণের অঙ্গ হিসেবে পুলিশ গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যালয়ের পক্ষ রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বন্টন করেছে ৩,১২০টি কিট।

মহিলা ও শিশুদের বিরুদ্ধে সাইবার অপরাধ প্রতিরোধ কর্মসূচি অনুমোদন পেয়েছে। সাইবার অপরাধ কমাতে কর্মসূচির আওতায় ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮-তে চালু হয়েছে এক অনলাইন পোর্টাল – www.cybercrime.gov.in। সাধারণ মানুষ এই পোর্টালে শিশুদের অশ্লীল চিত্র/শিশুদের যৌন উৎপীড়নের সামগ্রী/ধর্ষণ/গণ-ধর্ষণের ছবি বা যৌনতা প্রদর্শনকারী বিষয়বস্তু সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে পারবেন।

নারী ক্ষমতায়ন ও সুরক্ষা

হিংসা ও বৈষম্যমুক্ত পরিবেশে, ক্ষমতাপ্রাপ্ত মহিলারা মানমর্যাদা নিয়ে জীবন কাটায় এবং উন্নয়নে সমান অংশীদার রূপে অবদান রাখে। নিরাপদ ও সুরক্ষিত পরিবেশে সুষ্ঠুভাবে বেড়ে ওঠা শিশুরা বিকাশ এবং উন্নয়নের পুরো সুযোগ পায়।

বিভিন্ন নীতি এবং কর্মসূচি মারফৎ সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন, তাঁদের উদ্বেগের বিষয়গুলি সমাজে সকলের গোচরে আনা, তাঁদের অধিকার সম্বন্ধে সচেতনতা গড়া, তাঁদের মানবাধিকার পূরণ এবং সম্ভাবনার পূর্ণ বিকাশে সাহায্য করতে প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনি সহায়তার সুযোগ রয়েছে।

রাজ্যগুলিতে মানবপাচার বিরোধী ইউনিট ও মহিলা সহায়তা ডেস্ক শক্তিশালী করা নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রকের নির্ভয়া কাঠামোর আওতাধীন। কমিটি পাচার চক্রের ফাঁদে পড়া মহিলা ও মেয়েদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার জন্য ১০০ কোটি টাকা খরচে মানবপাচার বিরোধী ইউনিট প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পরিকল্পনা অনুসারে, এসব ইউনিট স্থাপনের পুরো ব্যয় কেন্দ্রীয় সরকার নির্ভয়া তহবিল থেকে দেবে। এসব ইউনিট মারফৎ আইনি পরামর্শ এবং সাহায্য দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কমিটি।

ক্ষমতাপ্রাপ্ত কমিটি ১০০ কোটি টাকা খরচে সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের থানায় মহিলা সহায়তা ডেস্ক গড়ারও সুপারিশ করেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্ভয়া তহবিল এই টাকা যোগাবে। মহিলা সহায়তা ডেস্ক পুলিশি ব্যবস্থার মাধ্যমে মহিলাদের অভিযোগ ফয়সালা করতে নারীদের প্রতি সংবেদনশীল হবে। সেইসঙ্গে, মহিলা ও শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধে গুরুত্ব দিয়ে পুলিশের পাশাপাশি সামাজিক দ্বিধা এবং ভয় ছাড়াই বিপন্ন মহিলাদের থানায় যাওয়ার ক্ষেত্রে ভরসার পরিবেশ গঠনেও এই ডেস্ক সাহায্য করবে।

ক্ষমতাপ্রাপ্ত কমিটির পরামর্শ, এসব ডেস্কের দায়িত্বে থাকবেন জয়েন্ট সাব-ইন্সপেক্টর বা অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার নিচে নন এমন একজন মহিলা পুলিশ আধিকারিক। এছাড়া, মহিলা সহায়তা ডেস্কের সঙ্গে যুক্ত নারী এবং পুরুষ পুলিশকর্মীদের প্রশিক্ষণও দেওয়া দরকার।

এখন হাজারটি থানায় এই ডেস্ক স্থাপনের অনুমোদন মিলেছে। অবশ্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত কমিটির আরও প্রস্তাব, ধীরে ধীরে বা পর্যায়ক্রমে সব থানায় এই ডেস্ক গড়া হোক।

প্রধানমন্ত্রী মাত্রু বন্দনা যোজনা

এই যোজনায় ১ কোটি মহিলা উপকৃত হয়েছেন।

গর্ভবতী মহিলা এবং স্তন্যদায়ী মায়েদের জন্য সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে উপকৃতরা পেয়েছেন এক হাজার কোটি টাকারও বেশি।

প্রধানমন্ত্রী মাত্রু বন্দনা যোজনা একটি প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তর প্রকল্প। আরও পুষ্টির সংস্থান এবং মজুরিবাবদ আয় কিছুটা মেটাতে নগদ টাকা সরাসরি পাঠানো হয় উপকৃতদের অ্যাকাউন্টে। প্রকল্পটির রূপায়ণ শুরু হয় ২০১৭-র পয়লা জানুয়ারি। এই প্রকল্পে তিনটি কিস্তিতে মহিলারা পান ৫ হাজার টাকা। এছাড়া, জননী সুরক্ষা যোজনার আওতায় তাঁদের মেলে আরও ১ হাজার টাকা।

ওয়ান স্টপ সেন্টার প্রকল্প

ইন্দিরা গান্ধী মাতৃত্ব সহযোগ যোজনা তুলে দেওয়া হয় ২০১৭-র ৩১শে মার্চে। ওয়ান স্টপ সেন্টার প্রকল্প এক ছাদের তলায় সুসংহত উপায়ে হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত মহিলাদের জন্য সাময়িক আশ্রয়, আইনি পরামর্শ, চিকিৎসা সহায়তা, পুলিশি সুযোগ ইত্যাদি পরিষেবার বন্দোবস্ত করে দেয়। এযাবৎ, ৭২৮টি এ ধরনের কেন্দ্র মঞ্জুর করা হয়েছে এবং ৫৯৫টি কেন্দ্রে কাজকর্ম শুরু করেছে। পশ্চিমবঙ্গের জন্য মঞ্জুর হয়েছে ২৩টি ওয়ান স্টপ সেন্টার।

 

 

CG/SM/DM



(Release ID: 1599155) Visitor Counter : 2263


Read this release in: English