মানবসম্পদবিকাশমন্ত্রক

বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের ২০১৯-এর বর্ষশেষ পর্যালোচনা

Posted On: 08 JAN 2020 11:07PM by PIB Kolkata

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘পরিবর্তনশীল ভারত’-এর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক ‘সকলের শিক্ষা, ভালো শিক্ষা’ – এই আদর্শকে সামনে রেখে শিক্ষাক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন এনেছে।

গত বছর ডঃ কে কস্তুরিরঞ্জন কমিটি কেন্দ্রীয় মানবসম্প উন্নয়ন মন্ত্রী শ্রী রমেশ পোখরিয়াল ‘নিশাঙ্ক’-এর কাছে জাতীয় শিক্ষানীতির খসড়া জমা দিয়েছে। নতুন শিক্ষানীতি গঠনের জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়ন, গবেষণা ও উদ্ভাবনী শক্তি-ভিত্তিক করে তোলার লক্ষ্যেই মন্ত্রক এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এতে ছাত্রছাত্রীদের দক্ষতা যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনই বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং শিক্ষাক্ষেত্রে মানবসম্পদের ঘাটতি দূর করা সম্ভব হবে।

কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক সারা বছর ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’, ‘ফিট ইন্ডিয়া প্রচার’, সংবিধান দিবসের ৭০ বছর উদযাপন এবং জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর সার্ধশত জন্মবার্ষিকী উদযাপনে একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে।

দেশব্যাপী স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং অন্যান্য শিক্ষকদের জন্য সুসংহত শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ‘নিষ্ঠা’র সূচনা করেছে মন্ত্রক। বিদ্যালয় শিক্ষা ব্যবস্থাকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসতে http://shagun.govt.in/ - ওয়েবসাইট চালু করেছে। দেশের ১২ কোটি কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়, ৬০০টি নবোদয় বিদ্যালয়, ১৮ হাজার সিবিএসই অনুমোদিত বিদ্যালয়, ৩০টি এসসিইআরটি, এনপিসি অনুমোদিত ১৯ হাজার অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।

গত বছর রাষ্ট্রপতি শিক্ষাক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য দেশের ৪৬ জন শিক্ষককে জাতীয় পুরস্কার প্রদান করেছেন।

গত বছর ২৯শে জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের সঙ্গে ‘দ্বিতীয় দফার পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ১৯ মিনিট ধরে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের সঙ্গে হালকা মেজাজে কাটান। এই অনুষ্ঠানে ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয় ছাত্রছাত্রীরাও যোগ দিয়েছিলেন।

সোশ্যাল মিডিয়ার পরিধি এবং যোগাযোগের ওপর কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন একটি জাতীয় কর্মশালার আয়োজন করেছিল। সময়মতো দেশের সমস্ত বিদ্যালয়ের তথ্য সংগ্রহের জন্য ইউনিফায়েড ডিস্ট্রিক্ট ইনফরমেশন সিস্টেম ফর এডুকেশন প্লাস (ইউডিআইএসই+) ব্যবস্থাপনা চালু করা হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষার সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধানের জন্য ‘দীক্ষা’ পোর্টাল চালু করা হয়েছে। চার বছরের বিএড প্রশিক্ষণ চালুর মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়ন ঘটানো হয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্যে ১ লক্ষ ১ হাজার ৯৬৭টি সরকারি এবং ৪২,৯১৭টি সরকার অনুমোদিত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অন্তত দুটি করে স্মার্ট ক্লাসরুম চালু করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। ভাষাভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের জন্য আর্থিক অনুদান প্রদান করা হচ্ছে।

‘সমগ্র শিক্ষা’ কর্মসূচির আওতায় সমস্ত সরকারি, সরকার অনুমোদিত বিশেষ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিতে মিড-ডে মিল কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এমনকি, বিদ্যালয় চত্বরে যাতে শাকসব্জি এবং ফলমূল চাষ করা যায় তার জন্য স্কুল নিউট্রিশন গার্ডেন চালু করার জন্য নীতি-নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিদ্যালয়গুলিতে পাঠক ক্লাব গড়ে তোলার জন্য বলা হয়েছে। এমনকি, ‘সমগ্র শিক্ষা’র আওতায় বিদ্যালয়গুলিতে পাঠাগার গড়ে তোলার জন্য বলা হয়েছে। ১ লক্ষ ৯ হাজার ৯৫৭টি বিদ্যালয়ের জন্য ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে প্রায় ৭১,১৬৪ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

ছাত্রছাত্রীদের খেলাধূলা এবং শারীর শিক্ষার মানোন্নয়নে এগিয়ে এসেছে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর। ১০ লক্ষ ২ হাজার ৫৫৮টি বিদ্যালয়ের জন্য এই ক্ষেত্রে ৮০০ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

‘সমগ্র শিক্ষা’র আওতায় কস্তুরবা গান্ধী বালিকা বিদ্যালয়ে চার ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের শিশুদের নিরাপত্তার জন্য সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিদ্যালয়গুলিতে ‘বিদ্যালয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত অঙ্গীকার’ বোর্ড অথবা দেওয়ালে প্রদর্শন করতে বলা হয়েছে। মেয়েদের আত্মরক্ষার জন্য প্রশিক্ষণ চালু করা হয়েছে। ‘সমগ্র শিক্ষা’র আওতায় সমস্ত সরকারি বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সমস্ত ছাত্রীদের এই আত্মরক্ষার পাঠ দেওয়া হবে। বিদ্যালয় শিক্ষাক্ষেত্রে সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ন্যাশনাল মিন্স-কাম-মেরিট স্কলারশিপ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। মাধ্যমিক শিক্ষাক্ষেত্রে ছাত্রীদের জন্য জাতীয় কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এর জন্য ৮ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’ উৎসবের আয়োজন করেছে। এই উৎসবে অংশগ্রহণকারী রাজ্যগুলির বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা রাজ্য-ভিত্তিক বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে।

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গত বছর ২৯শে আগস্ট ‘ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্ট’-এর সূচনা করেছিলেন। বিদ্যালয় শিক্ষা ও সাক্ষরতা দপ্তর ক্রীড়া দপ্তরের সহযোগিতায় সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়গুলিতে ফিট থাকার অঙ্গীকার নেওয়া হয়। প্রায় ১১ কোটি ছাত্রছাত্রী এই ফিট থাকার শপথ নেন।

২৬শে নভেম্বর সংবিধান দিবসের দিন সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিদ্যালয়গুলিতে সংবিধান দিবস উপলক্ষে শপথবাক্য পাঠ করা হয়। বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ‘মক পার্লামেন্ট’-এর আয়োজন করা হয় এবং সংবিধানের প্রস্তাবনা এবং মৌলিক কর্তব্যগুলি পাঠ করা হয়।

গান্ধীজির সার্ধশত জন্মবার্ষিকী উদযাপনে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যালয় শিক্ষা ও সাক্ষরতা দপ্তর। এরজন্য সারা বছর দেশ জুড়ে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। গত বছর ১৯শে আগস্ট থেকে তেসরা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিবিএসই মহাত্মা গান্ধীর ওপর বিভিন্ন আলোচনাসভার আয়োজন করেছিল। এতে প্রায় ৪ লক্ষ ৫০ হাজারেরও বেশি ছাত্রছাত্রী অংশ নিয়েছিল। দোসরা অক্টোবর মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনে স্বচ্ছ ভারত দিবসেও প্লাস্টিক সংগ্রহের জন্য বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা স্বেচ্ছায় শ্রমদান করেছিলেন। মাদ্রাসায় ভালো শিক্ষা প্রদানের জন্য একাধিক প্রকল্প চালু করা হয়েছে। বেসরকারি এবং সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত নয় – এই ধরনের সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানগুলির পরিকাঠামোগত মানোন্নয়ন ঘটানো হয়েছে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা যাতে শিক্ষা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে তার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রক।

১০০ দিনের কর্মসূচির আওতায় ১০টি জওহর নবোদয় বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও, এই কর্মসূচির আওতায় আরও ১০টি নতুন জওহর নবোদয় বিদ্যালয় ভবন গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতে। ২,৩৭০টি শূন্যপদ পূরণের কাজ চলছে। নবোদয় বিদ্যালয় সংগঠনের জন্য ‘শালা দর্পণ’ পোর্টালের সূচনা করা হয়েছে। একটি ছাত্র পিছু একটি করে গাছ লাগানোর প্রচার অভিযান চালানো হচ্ছে। ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তির পরীক্ষার জন্য অনলাইনে আবেদনপত্র গ্রহণ প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ১৭টি নতুন ভবনের দ্বারোদ্ঘাটন করা হয়েছে। এছাড়াও মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের সাতটি নতুন বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছে। বিগত ছয় মাসে ২৫টি কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় খোলা হয়েছে। একইসঙ্গে, বিভিন্ন শূন্য পদ পূরণেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এনসিটিই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চার বছরের জন্য শিক্ষক শিক্ষা প্রশিক্ষণ কর্মসূচি (আইটিইপি) নিয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বার্ষিক মূল্যায়ন সংক্রান্ত তথ্য অনলাইনে জমা দেওয়ার ব্যবস্থাপনার সূচনা করা হয়েছে। কর্মরত শিক্ষকদের এনসিটিই অনুমোদিত ডিগ্রি/ডিপ্লোমা/শংসাপত্র আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য অনলাইন ব্যবস্থাপনা ওটিপিআরএমএস চালু করা হয়েছে।

প্রতি বছর ২০ জনকে ‘শ্রেষ্ঠ শিক্ষক প্রশিক্ষক পুরস্কার’ প্রদানেরও উদ্যোগ নিয়েছে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। এ বছর প্রথম এই পুরস্কার প্রদান করা হবে।

 

 

CG/SS/DM



(Release ID: 1598888) Visitor Counter : 225


Read this release in: English