দক্ষতাউন্নয়নওশিল্পোদ্যোগমন্ত্রক
দক্ষতা উন্নয়ন ও শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রকের ২০১৯-এর বর্ষশেষ পর্যালোচনা
Posted On:
08 JAN 2020 11:01PM by PIB Kolkata
দক্ষতা উন্নয়ন ও শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রক সারা দেশ জুড়ে যাবতীয় দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রচেষ্টায় সমন্বয়সাধন করে থাকে। এছাড়াও, মন্ত্রক দক্ষ মানবসম্পদের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ঘাটতি দূর করা; বৃত্তিমূলক ও কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদান; দক্ষতার আরও মানোন্নয়ন; দক্ষতা সংক্রান্ত নতুন কৌশল ও উদ্ভাবনমূলক পদ্ধতি গ্রহণ সহ কর্মসংস্থানের পাশাপাশি, এমন ধরনের কর্মক্ষেত্রের বিকাশ ঘটিয়ে থাকে যেখানে কর্মসংস্থান তৈরি করা যায়। দক্ষ ভারত গড়ে তোলার পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে মন্ত্রকের উদ্দেশ্যই হল দ্রুততার সঙ্গে উচ্চমানের দক্ষতার বাতাবরণ গড়ে তোলা।
দক্ষতার প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মোপযোগী করে তোলার এমন এক অনুকূল বাতাবরণ গড়ে তোলা যাতে উদ্ভাবন-ভিত্তিক শিল্পোদ্যোগের প্রসার ঘটিয়ে সম্পদ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা যায় এবং দেশের সকল নাগরিকের জন্য সুস্থায়ী জীবন-জীবিকার সংস্থান করা যায়। এই লক্ষ্যে মন্ত্রক একাধিক উদ্যোগ ও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ২০১৯ সালে মন্ত্রকের উল্লেখযোগ্য সাফল্যগুলি নিচে উল্লেখ করা হল।
মন্ত্রক ২০১৪ সালে দেশে দক্ষতা উন্নয়ন এবং শিল্পোদ্যোগের প্রসারে আরও গুরুত্ব দিতে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন মিশনের সূচনা করে। এই কর্মসূচির ফলে বার্ষিক ১ কোটিরও বেশি যুবক সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রক, রাজ্য সরকার, বেসরকারি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ও কর্পোরেট সংস্থাগুলির দক্ষতা উন্নয়ন সংক্রান্ত তথ্যের সমাবেশ ঘটিয়ে এক মঞ্চে নিয়ে আসতে তথ্যপ্রযুক্তি-ভিত্তিক দক্ষ ভারত পোর্টালের সূচনা হয়েছে। এই পোর্টালের মাধ্যমে নীতিপ্রণেতারা সিদ্ধান্ত প্রণয়ন করতে পারবেন এবং দক্ষতা প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বাধা-বিপত্তিগুলি দূর করা সম্ভব হবে।
দেশে বর্তমানে চালু দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র যা শিল্প প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান (আইটিআই) নামে পরিচিত, সেগুলির আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণের কাজ চলছে। দেশে দক্ষতা বিকাশ সংক্রান্ত এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২০১৪-র ১১,৯৬৪ থেকে ১২ শতাংশ বেড়ে ২০১৮-১৯-এ ১৪,৯৩৯ হয়েছে। একইভাবে, বেড়েছে শিক্ষানবিশদের সংখ্যাও। ২০১৮-১৯-এ এই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৩ লক্ষ ৮ হাজার। দেশে যুবাদের নিখরচায় দক্ষতার প্রশিক্ষণ দিতে ২০১৫ সালে ফ্ল্যাগশিপ কর্মসূচি ‘প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনা’র সূচনা হয়। কর্মসূচির আওতায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ৮৭ লক্ষ যুবক-যুবতী প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। এছাড়াও, প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের মধ্যে ৫৪ শতাংশের বেশি বিভিন্ন পেশায় যুক্ত রয়েছেন। সারা দেশ জুড়ে ৬৮১টির বেশি প্রধানমন্ত্রী কৌশল কেন্দ্র চালু রয়েছে। এই কেন্দ্রগুলি থেকে ১৮ লক্ষেরও বেশি প্রার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং এঁরা বিভিন্ন পেশায় যুক্ত রয়েছেন।
দক্ষতা বিকাশ ও শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রকের আওতায় ব্যাঙ্কিং, আর্থিক পরিষেবা ও বিমা ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত দক্ষতা বিকাশ পর্ষদ বিএফএসআই, ১ লক্ষ ৭০ হাজার গ্রামীণ ডাক সেবককে প্রশিক্ষণের দিতে ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস ব্যাঙ্কের সঙ্গে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর করেছে। এই সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরের ফলে গ্রামীণ ডাক সেবকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে আরও সুদক্ষ করে তোলা হবে। এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আওতায় এখনও পর্যন্ত ৯,০৪৬ জন গ্রামীণ ডাক সেবক সুদক্ষ হয়ে উঠেছেন।
জম্মু ও কাশ্মীরের যুবক-যুবতীদের প্রশিক্ষণ দিতে মন্ত্রক জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন এবং রাজ্য দক্ষতা উন্নয়ন মিশনের আধিকারিকরা এক বৈঠকে মিলিত হয়ে জম্মু ও কাশ্মীরের সমস্ত যোগ্য যুবক-যুবতীকে দক্ষতা বিকাশ কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রাজ্যের যুবক-যুবতীদেরকে সর্বাধুনিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে যাতে তাঁদের অবিলম্বে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়। একইভাবে, লেহ-তেও দক্ষতা উন্নয়ন প্রক্রিয়া এগিয়ে চলেছে। এজন্য সেখানে জাতীয় স্তরের একটি দক্ষতা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। মন্ত্রকের পক্ষ থেকে লেহ-র যুবক-যুবতীদের দক্ষতার বিকাশে যাবতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নাগাল্যান্ড ও সিকিম সহ আরও চারটি রাজ্যের জেলাস্তরীয় আধিকারিক ও প্রশিক্ষক নিয়ে গত ৩-৪ সেপ্টেম্বর ‘সঙ্কল্প’ নামে একটি আঞ্চলিক কর্মশিবিরের আয়োজন করা হয়। নাগাল্যান্ডের কোহিমায় আয়োজিত এই কর্মশিবিরে জেলাস্তরীয় আধিকারিক ও প্রশিক্ষকদের মধ্যে পারস্পরিক মতবিনিময়ের সুযোগ ঘটে।
মন্ত্রক আইটিআইগুলির প্রশিক্ষণদান ব্যবস্থার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। সেই অনুসারে, ইতিমধ্যেই ৩২৪টি আইটিআই-কে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ১৯৮টি ক্ষেত্রে কাজকর্মের সামগ্রিক নিরূপণের ভিত্তিতে অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৩১টি রাজ্য আইটিআইগুলির মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমঝোতাপত্রে স্বাক্ষর করেছে। ‘প্রধানমন্ত্রী যুবা উদ্যমিতা বিকাশ অভিযান’-এর মাধ্যমে ৩০০টি প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষামূলকভাবে একটি কর্মসূচি রূপায়িত হচ্ছে। ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের আইটিআই, জাতীয় দক্ষতা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠান ও জন-শিক্ষা সংস্থানে এই কর্মসূচি রূপায়িত হচ্ছে। উদ্দেশ্য হল, শিল্পোদ্যোগকে বিকল্প পেশা হিসেবে গ্রহণ করা।
মন্ত্রক দেশে সুদক্ষ কর্মীবাহিনী গড়ে তুলতে সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, জাপান, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের আধিকারিকদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছে। ঐ বৈঠকগুলিতে দক্ষতার মান বাড়াতে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলির মধ্যে দক্ষ কর্মীবাহিনীর চাহিদা মেটানোর ব্যাপারে আলোচনা হয়।
শিল্প সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ আরও মজবুত করতে মন্ত্রকের ডায়রেক্টরেট জেনারেল অফ ট্রেনিং বেসরকারি সংস্থা রিলায়েন্স জিও-র সঙ্গে ছয়টি জাতীয় দক্ষতা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে গবেষণাগার স্থাপনের ব্যাপারে সহযোগিতা করছে। এখনও পর্যন্ত ৪০০ জন শিক্ষানবিশকে আধুনিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
প্রশিক্ষকদের ভালো কাজের স্বীকৃতি ও প্রশংসার জন্য গত ৫ই সেপ্টেম্বর বিভিন্ন ক্ষেত্রের ৫৩ জন প্রশিক্ষককে কৌশল্যাচার্য পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছে। মন্ত্রক ৩০ জন তরুণ শিল্পোদ্যোগী এবং ছয়টি সংস্থা বা ব্যক্তিবিশেষকে দেশে শিল্পোদ্যোগের অনুকূল বাতাবরণ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্য জাতীয় শিল্পোদ্যোগ পুরস্কার প্রদান করেছে। পুরস্কারস্বরূপ প্রাপকদের একটি ট্রফি, মানপত্র ও ১০ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়।
মন্ত্রক ‘দক্ষ ভারত মিশনে’র অধীন বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে দেশের যুবসম্প্রদায়কে সচেতন করে তুলতে এবং দক্ষতা উন্নয়নের স্পৃহা বাড়াতে ‘দক্ষতা সাথী কাউন্সেলিং কর্মসূচি’ শুরু করেছে। এই কর্মসূচিতে এখনও পর্যন্ত ৪০ লক্ষ যুবক-যুবতীকে দক্ষতার সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কিত পরামর্শ ও উপদেশ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয়গুলিতে বৃত্তিমূলক পাঠক্রম চালু এবং নিম্ন-স্নাতক পর্যায়ে ভর্তির জন্য বৃত্তিমূলক পাঠক্রম শুরু করতে মন্ত্রক বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণের পরিকল্পনা নিয়েছে। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে এই পাঠক্রমের চূড়ান্ত রূপদানের কাজ চলছে। এছাড়াও, সরকারি বিদ্যালয়গুলিতে ৫০০টি স্কিল হাব গড়ে তোলার জন্য মন্ত্রক একটি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রক সিবিএসই-র সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় বজায় রেখে কাজ করছে। দক্ষ ভারত উদ্যোগে ৯,১০০-রও বেশি বিদ্যালয়ের ৭ লক্ষ ৫০ হাজার ছাত্রছাত্রী ২০টিরও বেশি ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ পেয়ে উপকৃত হয়েছেন। রাজ্যের বিদ্যালয়গুলিতেও একই ধরনের কর্মসূচি চালু করার ব্যাপারে পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
দক্ষতার ক্ষেত্রে মান ও উৎকর্ষ বাড়াতে মন্ত্রক সম্প্রতি মুম্বাইয়ে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ স্কিল নামে একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপনের কথা ঘোষণা করেছে। প্রস্তাবিত এই প্রতিষ্ঠানটি আইআইএম ও আইআইটি-র সমগোত্রীয় হয়ে উঠবে। টাটা গ্রুপের সঙ্গে সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা হবে। এজন্য সাড়ে চার একর জমির সংস্থান হয়েছে। টাটা গ্রুপ এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা খাতে ৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে যেখানে বার্ষিক ৫ হাজার শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সুযোগ থাকবে।
২০১৯-২০ সালে ব্যাঙ্কিং ফ্রন্ট অফিস একজিকিউটিভ এবং টেলিকলার হিসেবে ৫ হাজার শিক্ষানবিশের কর্মসংস্থানের জন্য ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্কের সঙ্গে মন্ত্রকের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এছাড়াও মন্ত্রক অতিক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলির জন্য একটি স্কিল ভাউচার কর্মসূচি তৈরি করছে। এই ভাউচার বা প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত পুস্তিকাটি শিক্ষানবিশ ও শিল্পোদ্যোগী উভয়েরই কাজে লাগবে।
শিল্প সংস্থাগুলি তাদের প্রয়োজন সাপেক্ষে আরও বেশি সংখ্যায় শিক্ষানবিশদের কাজে লাগানোর জন্য ১৯৬১-র শিক্ষানবিশ আইনের সংস্কার করা হয়েছে। আইন সংস্কারের ফলে শিল্প সংস্থায় শিক্ষানবিশদের সামিল করার সংখ্যা ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৫ শতাংশে পৌঁছবে। শিল্প সংস্থায় কর্মরত শিক্ষানবিশদের ন্যূনতম মজুরির পরিবর্তে প্রথম বছরের ভাতা স্থির করা হয়েছে। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বছরে শিক্ষানবিশদের ভাতা যথাক্রমে ১০ শতাংশ ও ১৫ শতাংশ হারে বাড়বে। প্রয়োজন ভিত্তিতে শিক্ষানবিশদের প্রশিক্ষণের সময় ছয় মাস থেকে ৩৬ মাস পর্যন্ত হতে পারে।
মন্ত্রক এক হাজার আইটিআই-এ ডুয়েল ট্রেনিং সিস্টেম চালু করার উদ্যোগ নিচ্ছে। জার্মানির প্রশিক্ষণ পদ্ধতি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশে দক্ষতা বিকাশের ক্ষেত্রে এই ধরনের পদ্ধতি অনুসরণ করার পরিকল্পনা হয়েছে। ঐ এক হাজারটি আইটিআই-তে ছাত্রছাত্রীদের শিল্প সংস্থার প্রয়োজনভিত্তিক দক্ষতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই ৪০টি জাতীয় শিক্ষা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান এ ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে। সমগ্র প্রশিক্ষণ পর্বের প্র্যাক্টিক্যাল বা হাতে-নাতে শিক্ষণের মেয়াদ শিল্প সংস্থাগুলির সুবিধার ভিত্তিতে স্থির হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দক্ষতা প্রশিক্ষণ পদ্ধতির মানোন্নয়নে মন্ত্রক ১২টি জাতীয় দক্ষতা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে শিল্প সংস্থাগুলির বর্তমান চাহিদা অনুসারে পাঠ্যক্রমের ব্যবস্থা করেছে।
জেলাস্তরে দক্ষতার মান বাড়াতে এবং প্রতিটি নাগরিকের ক্ষমতায়নে মন্ত্রক ‘সঙ্কল্প’ কর্মসূচির আওতায় সমস্ত জেলায় দক্ষতা বিকাশ অভিযানের অঙ্গ হিসেবে জেলাস্তরীয় দক্ষতা কমিটি গঠন করেছে। এই কর্মসূচি রূপায়ণে বিশ্বব্যাঙ্কের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। জেলাস্তরে এ ধরনের কর্মসূচি গ্রহণের উদ্দেশ্য হল তৃণমূলস্তরে দক্ষতার ক্ষেত্রে যে ঘাটতি রয়েছে সেগুলিকে চিহ্নিত করা এবং স্থানীয় বাজার চাহিদা অনুযায়ী দক্ষতার মান বাড়ানো।
মন্ত্রক ছয়টি রাজ্যের ৭৫টি জেলার জন্য মহাত্মা গান্ধী জাতীয় ফেলোশিপ চালু করেছে। এই উদ্যোগের আওতায় জেলাগুলি থেকে ৭৫ জন তরুণ পেশাদারকে চিহ্নিত করা হবে এবং জেলাস্তরের আধিকারিকদের দক্ষতা উন্নয়নের কাজে সহায়তার জন্য কাজে লাগানো হবে।
দেশের যুবকদের দক্ষতা বিকাশের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে সরকার ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিস অথবা পোস্ট অ্যান্ড টেলিগ্রাফ সার্ভিসের মতো ইন্ডিয়ান স্কিল ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস নামে নতুন একটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মন্ত্রকের ট্রেনিং ডায়রেক্টরেটে আধিকারিক নিয়োগের জন্যই এই সার্ভিস চালুর সিদ্ধান্ত। ইন্ডিয়ান স্কিল ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস গ্রুপ ‘এ’ সার্ভিস হিসেবে গণ্য হবে এবং ইউপিএসসি এই সার্ভিসে নিযুক্তির পরীক্ষা গ্রহণ করবে। এই সার্ভিসে সারা দেশে মোট পদের সংখ্যা ২৬৩। এই পদগুলির মধ্যে সিনিয়র অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ গ্রেডের তিনটি, জুনিয়র অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ গ্রেডের ২৮টি, সিনিয়র টাইম স্কেল হিসেবে ১২০টি এবং জুনিয়র টাইম স্কেল হিসেবে ১২০টি পদ রয়েছে।
মহিলা শিল্পোদ্যোগীদের কল্যাণে বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রকল্প থেকে লব্ধ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে রাষ্ট্রসঙ্ঘ সহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় একটি নতুন ধারণার অঙ্গ হিসেবে ‘বিজনেস সখী’দের মাধ্যমে বাণিজ্যিক বিষয়ে পরামর্শদানের পাশাপাশি, মনস্তাত্বিকভাবে সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রক ‘বিজনেস সখী’দের কাজকর্ম সম্পর্কে গত ৯ই নভেম্বর একটি পাঠ্যসূচি প্রকাশ করেছে। মহিলা শিল্পোদ্যোগীরা নিজেদের ব্যবসা চালু করার সময় যে ধরনের বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হয়ে থাকেন তা দূর করার ক্ষেত্রে এই ‘বিজনেস সখী’রা মনস্তাত্বিক পরামর্শ দেওয়া এবং উৎসাহ দেওয়ার কাজ করবে। প্রকৃত অর্থে এদের কাজ হবে শিল্পোদ্যোগের বিকাশে সর্বজনীন ভিত্তিতে ব্যবসায়িক শলা-পরামর্শদান।
জন শিক্ষণ সংস্থান (জেএসএস) কর্মসূচির জন্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি পোর্টাল চালু করা হয়েছে। এই পোর্টালের মাধ্যমে জন শিক্ষণ সংস্থানগুলির পরিচালনা ও নজরদারির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সমাধানসূত্র কার্যকর করা সম্ভব হবে। মন্ত্রক দেশের প্রতিটি জেলায় জন শিক্ষণ সংস্থান স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। প্রযুক্তিচালিত বর্তমান ব্যবস্থায় ই-লার্নিং দক্ষতার সুযোগ-সুবিধাগুলিকে কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। এই লক্ষ্যে মন্ত্রক বহু ভাষাভিত্তিক একটি ই-লার্নিং পোর্টাল ‘ই-স্কিল ইন্ডিয়া’ চালু করেছে। এই পোর্টালের মাধ্যমে ভারতের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও দক্ষতা বিকাশের শ্রেষ্ঠ পন্থাপদ্ধতিগুলি সম্পর্কে জানা সম্ভব হবে। এই প্ল্যাটফর্ম ভারতকে বিশ্বের দক্ষতার মূল কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। ই-স্কিল ইন্ডিয়া পোর্টালে ইংরেজি ও হিন্দি সহ নয়টি আঞ্চলিক ভাষায় দক্ষতার পাঠক্রম রয়েছে। শিক্ষার্থীদের ভিডিও-র মাধ্যমে পারস্পরিক কথোপকথন ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে দক্ষতার ব্যাপারে পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
CG/BD/DM
(Release ID: 1598885)
Visitor Counter : 498