আদিবাসীবিষয়কমন্ত্রক

আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রকের ২০১৯ বর্ষশেষ পর্যালোচনা

Posted On: 06 JAN 2020 12:58PM by PIB Kolkata

তপশিলি উপজাতিদের উন্নয়নের জন্য সার্বিক নীতি নির্ধারণ, পরিকল্পনা এবং সমন্বয়ের কাজটি উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রক করে থাকে। ভারত সরকারের দায়িত্ব বন্টন সংক্রান্ত ১৯৬১ সালের বিধি অনুযায়ী মন্ত্রক বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে। উপজাতিদের কল্যাণে বিভিন্ন বৃত্তি প্রকল্প ও তহবিলের ব্যয়ে নজরদারির ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় তা সম্পন্ন করার ওপর এ বছর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, উপজাতিদের নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে তাঁদের ব্যবহৃত ওষুধপত্র আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একলব্য মডেল আবাসিক বিদ্যালয় এ বছর আরও বেশি করে স্থাপন করা হচ্ছে। উপজাতিদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে বন ধন যোজনা এবং আদি মহোৎসবের আয়োজন করা হয়ে থাকে। উপজাতিদের অধিকার রক্ষা এবং বনাঞ্চলের উন্নয়নে তাঁদের ভূমিকা চলতি বছরে বিশেষ স্বীকৃতি পেয়েছে।

মন্ত্রকের জন্য নির্ধারিত বিভিন্ন প্রকল্পে ৬,৮৪৭ কোটি ৮৯ লক্ষ টাকা ধার্য করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৫,১৬০ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকা (অর্থাৎ মোট বরাদ্দের ৭৫.৩৭ শতাংশ) ব্যয় করা হয়েছে।

কেন্দ্রের তিনটি বৃত্তির জন্য বাছাই প্রক্রিয়াটি পোর্টালের মাধ্যমে করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আবেদনগুলি এখন পরীক্ষা করা হচ্ছে। চূড়ান্ত তালিকা এ মাসেই তৈরি করা হবে। ডিজি-লকারের সঙ্গে বিভিন্ন ফেলোশিপ ও বৈদেশিক পোর্টালগুলিকে যুক্ত করা হয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা এই ওয়েবসাইটে একই আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ-ইন করতে পারেন। ডিজি-লকারে প্রাপ্ত সমস্ত নথি যে কোন আবেদনপত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে যায়। ৩৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪,৭৯৪ জন আদিবাসী ছাত্রছাত্রী বিভিন্ন ফেলোশিপ কর্মসূচিতে যুক্ত রয়েছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ‘ভেরিফিকেশন মডিউল’–এর আওতায় যুক্ত রয়েছে। ফেলোশিপের অর্থ কানাড়া ব্যাঙ্কের মাধ্যমে প্রদান করা হয়ে থাকে। সমস্ত ছাত্রছাত্রী, বিশ্ববিদ্যালয়, ডিজি-লকার এবং কানাড়া ব্যাঙ্ক বিভিন্ন অভিযোগের নিষ্পত্তির জন্য ‘কমিউনিকেশন মডিউল’ ব্যবহার করে থাকে।

যে সমস্ত উপজাতিভুক্ত ছাত্রছাত্রীরা এমফিল এবং পিএইচডি করছেন, মন্ত্রক তাঁদের মধ্যে ৪,৭৯৪ জনকে আর্থিক সাহায্য করছে। প্রতি বছর ১ হাজার ছাত্রছাত্রীকে ‘টপ ক্লাস স্টুডেন্টস স্কলারশিপ’ দেওয়া হয়। ২০১৭-১৮ সালে পর্যাপ্ত সংখ্যক দরখাস্ত জমা না পড়ায়, ১ হাজার জনই এই স্কলারশিপ পাননি। প্রথমবারের মতো ২০১৮-১৯ সালে ২,৪০০ জন ছাত্রছাত্রী আবেদন জানান। এই স্কলারশিপের অর্থ কানাড়া ব্যাঙ্কে ছাত্রছাত্রীদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি চলে যায়।

প্রধানমন্ত্রী বন ধন যোজনার আওতায় উপজাতিভুক্তদের শিল্পোদ্যোগে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ২৭টি রাজ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ট্রাইফেড-এর আওতায় মন্ত্রক অনুমোদিত বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। চলতি বছরে ১৮টি রাজ্যে ৬৭৬টি বন ধন বিকাশ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। এর ফলে, ২ লক্ষ ৭৪০ জন উপকৃত হয়েছেন। নাগাল্যান্ডে পার্বত্য এলাকার ঘাস নিয়ে লংলিং জেলায় এরকম একটি কেন্দ্র কাজ শুরু করেছে। মহারাষ্ট্রের মালেগাঁও, রেসোদ ও ওয়াসিম জেলায় বাদামের বাণিজ্যিকীকরণের কাজ এই প্রকল্পের আওতায় করা হচ্ছে। ছত্তিশগড়ের বীরগুড়ি এবং গোটিয়ায় শালপাতা ও হলুদের প্রক্রিয়াকরণের কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও, ছোট ছোট বনাঞ্চলে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের মাধ্যমে বন থেকে উৎপাদিত সামগ্রী বাজারজাত করার প্রক্রিয়ায় সাহায্য করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য এবং শিক্ষাখাতে পিছিয়ে পড়া, নকশাল উপদ্রুত এবং সীমান্তবর্তী এলাকায় ৩৫০টি প্রকল্পকে মন্ত্রক সাহায্য করছে। এই কাজে ২৫০টি অসরকারি সংগঠন যুক্ত রয়েছে। লাদাখে ‘সেকমোল’ প্রকল্পের আওতায় ৫০টি গ্রামে বরফের স্তুপ তৈরি করে পানীয় জলের সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে। টাটা ফাউন্ডেশনের সহায়তায় উত্তরাখণ্ডের হিমোত্থান সোসাইটি অ্যাপ্রিকট ও মটরদানা প্যাকেটজাত করে বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। এর ফলে, পচনশীল এইসব সামগ্রী যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা যাচ্ছে এবং স্থানীয় মানুষ এইসব পণ্যের সঠিক মূল্য পাচ্ছেন।

উপজাতিদের বিভিন্ন গাছের থেকে রোগ প্রতিরোধের ওষুধ তৈরির ঐতিহ্যগত জ্ঞান রয়েছে। একে কাজে লাগিয়ে পতঞ্জলি গবেষণা কেন্দ্র উত্তরাখণ্ডে ‘ট্রাইবাল হিলার্স অ্যান্ড মেডিসিনাল প্ল্যান্ট’ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। যোধপুরের এইম্‌স, মহারাষ্ট্রের পারভারা ইনস্টিটিউট অফ মেডিকা সায়েন্স এবং কেরলের মাতা অমৃতমাই ইনস্টিটিউট একই ধরনের প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে।

উপজাতিদের সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা এবং সংগ্রহশালা তৈরি লক্ষ্যে জাতীয় স্তরে একটি ট্রাইবাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। নীতি আয়োগ এক্ষেত্রে সহায়তা করবে। এই ইনস্টিটিউটে রাজ্যগুলি উপজাতিদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণার কাজে সহায়তা করবে। দেরাদুনে স্টেট ট্রাইবাল রিসার্চ-কাম-কালচারাল সেন্টার অ্যান্ড মিউজিয়াম ২১শে আগস্ট উদ্বোধন করা হয়। এটি নির্মাণ করতে মন্ত্রকের ১২ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।

দেশ জুড়ে ৪৬২টি নতুন একলব্য মডেল আবাসিক কেন্দ্র গড়ে তোলার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী গত ১২ই সেপ্টেম্বর রাঁচিতে তার সূচনা করেন। চলতি বছরেই ৫৫টি এরকম বিদ্যালয়ে পঠনপাঠন শুরু হবে। এখানে ৪,৮৩৩ জন নতুন ছাত্র তাদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। জাতীয় একলব্য মডেল আবাসিক বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব রাজস্থানের উদয়পুরে ২৮ থেকে ৩০শে নভেম্বর আয়োজিত হয়েছে। এখানে আদিবাসীরা তাঁদের বৈচিত্র্যময় এবং ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি তুলে ধরেন। একলব্য বিদ্যালয়গুলির জাতীয় স্তরে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ডিসেম্বরের ৯ থেকে ১৩ মধ্যপ্রদেশের ভোপালে অনুষ্ঠিত হয়। ২১টি রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। মন্ত্রক উত্তরাখণ্ডের কালসিতে একলব্য বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা জানায়। এই ছাত্রছাত্রীদের রাষ্ট্রপতি ভবনে ৯ই আগস্ট স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।

ট্রাইবাল কো-অপারেটিভ মার্কেটিং ডেভেলপমেন্ট ফেডারেশ অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড (ট্রাইফেড) আদিবাসী সম্প্রদায়ের আর্থিক উন্নয়নের লক্ষ্যে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মাধ্যমে আদিবাসীদের দক্ষতা বৃদ্ধি হয় এবং তাঁদের নানা সামগ্রী বাজারজাত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রকের পরামর্শক্রমে আইএফএ, ২০১৯-এর খসড়া সংশোধনীটি সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। বন মন্ত্রক জানিয়েছে বনাঞ্চলে উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষদের সব অধিকার সুরক্ষিত থাকবে এবং বনাঞ্চলের উন্নয়ন তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অব্যাহত থাকবে।

 

 

CG/CB/DM



(Release ID: 1598502) Visitor Counter : 885


Read this release in: English