শ্রমওকর্মসংস্থানমন্ত্রক

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রকের ২০১৯-এর বর্ষশেষ পর্যালোচনা

Posted On: 02 JAN 2020 5:17PM by PIB Kolkata

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রক শ্রম আইন সংস্কার এবং বলবৎ করার মাধ্যমে স্বচ্ছতা আনতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রতিটি শ্রমিক যাতে সুরক্ষিত থাকেন, তাঁদের সামাজিক সুরক্ষা যাতে বজায় থাকে তা নিশ্চিত করে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে মন্ত্রক বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হল প্রশাসনিক সংস্কার যাতে ই-গভর্নেন্স-এর ব্যবহার এবং চলতি শ্রম আইনকে চারটি বিধিতে ভাগ করার সংস্থান রয়েছে।

দ্বিতীয় জাতীয় শ্রম কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, চলতি কেন্দ্রীয় শ্রম আইনটি চারটি বিধিতে বিভক্ত করা হয়েছে। এতে সহজ হয়েছে আইন এবং সংশ্লিষ্ট ধারাগুলি। বর্তমানে মন্ত্রক এই আইনকে আরও সরলীকরণ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। চারটি বিধির মধ্যে একটি হল মজুরি সংক্রান্ত, দ্বিতীয়টি হল শিল্প সম্পর্ক সংক্রান্ত, তৃতীয়টি সামাজিক সুরক্ষা ও কল্যাণ এবং চতুর্থটি হল পেশাজনিত সুরক্ষা, স্বাস্থ্য এবং কাজের পরিবেশ সংক্রান্ত।

প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রশাসনিক সংস্কারের জন্য মন্ত্রক একটি ওয়েব পোর্টাল তৈরি করেছে যেটি হল ‘শ্রম সুবিধা পোর্টাল’। একটি ইউনিক লেবার আইডেন্টিফিকেশন নম্বর দেওয়া হচ্ছে সংস্থাগুলিকে যাতে নথিভুক্তিকরণের পর অনলাইনেই নিরীক্ষণ করা যায়। কেন্দ্রীয় স্তরে পোর্টালে একটি স্বচ্ছ শ্রম নিরীক্ষণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। ‘শ্রম সুবিধা পোর্টালে’ ৫ লক্ষ ২৪ হাজার ১৮৯টি নিরীক্ষণ প্রতিবেদন আপলোড করা হয়েছে।

আটটি কেন্দ্রীয় শ্রম আইনের ক্ষেত্রে অনলাইনে বার্ষিক রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে যেমন, পেমেন্ট অফ ওয়েজেস অ্যাক্ট, ১৯৯৬; মিনিমাম ওয়েজেস অ্যাক্ট, ১৯৪৮; মেটারনিটি বেনিফিট অ্যাক্ট, ১৯৬১; পেমেন্ট অফ বোনাস অ্যাক্ট, ১৯৬৫; ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিসপিউটস অ্যাক্ট, ১৯৪৭; কন্ট্র্যাক্ট লেবার অ্যাক্ট, ১৯৭০; ইন্টার-স্টেট মাইগ্র্যান্ট ওয়ার্কমেন অ্যাক্ট, ১৯৭৯ এবং বিল্ডিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন ওয়ার্কার্স অ্যাক্ট, ১৯৯৬। আগে এই রিটার্ন ষান্মাসিক বা বার্ষিক ছিল। এখন সব কর্মচারীকে অনলাইনে শুধুমাত্র বার্ষিক রিটার্ন জমা দিতে হবে।

ইপিএফও এবং ইএসআইসি-র জন্য অভিন্ন নথিভুক্তিকরণ ফর্ম কার্যকর হয়েছে। ১ লক্ষ ২৭ হাজার ৫৪৪টি ইউনিট ইপিএফও-তে এবং ১ লক্ষ ৭ হাজার ৬৮১টি ইউনিট ইএসআইসি-তে নথিভুক্ত হয়েছে ২০১৯-এর ৮ই নভেম্বর পর্যন্ত।

রাজ্যগুলিকে ‘শ্রম সুবিধা পোর্টালে’র সঙ্গে যুক্ত করার কাজ চলছে। এ পর্যন্ত হরিয়ানা, গুজরাট, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড এবং দিল্লিকে এই পোর্টালে যুক্ত করা হয়েছে।

‘স্টার্ট-আপ’গুলির জন্য কিছু কিছু ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে যেমন, ছয়টি কেন্দ্রীয় শ্রম আইনে স্টার্ট-আপ সংস্থাকে শ্রম নিরীক্ষণ থেকে রেহাই দেওয়া হয়েছে। তারা ‘শ্রম সুবিধা পোর্টালে’র মাধ্যমে স্বশংসিত প্রত্যয়পত্র জমা দিতে পারবে। রাজ্যগুলি এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকেও স্টার্ট-আপ-এর ক্ষেত্রে নিরীক্ষণকে নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় সরকার বরিষ্ঠ কর্মচারী এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষার জন্যই দুটি অবসর ভাতা কর্মসূচি চালু করেছে।

‘প্রধানমন্ত্রী শ্রম যোগী মান-ধন’ কর্মসূচিটি চালু হয় ২০১৯-এর ফেব্রুয়ারি মাসে অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের জন্য। যাঁদের রোজগার মাসিক ১৫ হাজার বা তার নিচে, আধার নম্বর আছে, ব্যাঙ্কে সেভিংস অ্যাকাউন্ট বা জন ধন অ্যাকাউন্ট আছে তাঁদের জন্যই এই কর্মসূচি। ন্যূনতম বয়স হতে হবে ১৮, ঊর্ধ্বতন বয়স ৪০। এই কর্মসূচিতে ৬০ বছরের পর থেকে নিশ্চিতভাবে মাসিক অবসর ভাতা ৩ হাজার টাকা করে পাওয়া যাবে।

ন্যাশনাল পেনশন স্কিম চালু হয়েছে গত বছর ১২ই সেপ্টেম্বর খুচরো ব্যবসায়ী, দোকানদার এবং স্বনিযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য। এটাও স্বেচ্ছামূলক। সারা দেশে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার অভিন্ন পরিষেবা কেন্দ্র আছে। www.mandhan.in – এই পোর্টালের মাধ্যমে যে কেউ নথিভুক্ত হতে পারবেন। এই কর্মসূচিতে মাসিক দেয় অর্থের ৫০ শতাংশ সুবিধাপ্রাপক দেবেন এবং কেন্দ্রীয় সরকার বাকি ৫০ শতাংশ দেবে।

গত বছর ৩০শে নভেম্বর থেকে ৬ই ডিসেম্বর সব রাজ্যে অবসর ভাতা সপ্তাহ পালন করা হয়। এই উদ্যোগ নেওয়া হয় নথিভুক্তির সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য।

ইপিএফও-র জন্য যে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলি নেওয়া হয়েছে সেগুলি হল – যেকোন শ্রমিক সরাসরি ইউনিভার্সাল অ্যাকাউন্ট নম্বর পেতে পারেন ইপিএফও-র ওয়েবসাইটে; ইপিএফও ডিজি লকারের সঙ্গে সংযুক্তিসাধন করেছে যাতে অবসরপ্রাপ্ত যে কোন ব্যক্তি ইলেক্ট্রনিক পিপিও-র সুযোগ পান; কর্মচারীদের সঙ্গে ইপিএফও-র বার্তালাপ হবে ডিজিটাল মাধ্যমে। ই-ইন্সপেকশন ফর্ম পাওয়া যাবে ওয়েবসাইটেই।

কর্মচারী ভবিষ্যনিধির কেন্দ্রীয় পর্ষদের ২২৪তম বৈঠকে ভবিষ্যনিধির ওপর ৮.৬৫ শতাংশ হারে সুদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয় ২০১৮-১৯-এর জন্য।

পর্ষদের গত বছর ২১শে আগস্টের বৈঠকে বেশ কয়েকটি নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়। যার মধ্যে রয়েছে কর্মচারী অবসর ভাতা কর্মসূচি, ১৯৯৫-এর সংশোধন এবং ইপিএফআইজিএমএস-এর দ্বিতীয় সংস্করণের সূচনা। এতে প্রায় ৫ কোটি গ্রাহক এবং লক্ষ লক্ষ কর্মদাতা তাঁদের অভিযোগের দ্রুত সমাধান পাবেন। পর্ষদ নিফটি এবং সেনসেক্সে লগ্নি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ক্রিসিল লিমিটেড ছাড়াও পরামর্শদাতা নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় পর্ষদের তহবিল ব্যবস্থাপনার জন্য ব্যবস্থাপক নিয়োগেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ইএসআইসি যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে কর্মচারীদের দেয় অঙ্কের পরিমাণ হ্রাস। ইএসআই-এর সুবিধাপ্রাপকদের জন্য স্বাস্থ্য পাসবুক। এই পাসবুকের বিশেষ বৈশিষ্ট হল এতে আইডি, কিউআর কোড এবং বিমাকৃত ব্যক্তি ও তাঁর পরিবারের লোকজনের ছবি থাকবে। এটির মাধ্যমে গ্রাহকদের চিহ্নিতও করা যাবে এবং তাঁর সম্বন্ধে যাবতীয় তথ্যও জানা যাবে। ইএসআইসি-র শাখাগুলির মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে এই পাসবুক দেওয়া হবে।

ইএসআইসি-তে বিমাকৃত ব্যক্তিরা আয়ুষ্মান ভারত – প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার অধীনে চিকিৎসা পাবেন। এটি পাওয়া যাবে নবরূপায়িত ১০২টি জেলায়।

ইএসআইসি-র ‘চিন্তা সে মুক্তি’ অ্যাপ পাওয়া যাবে ‘উমঙ্গ’ প্ল্যাটফর্মে। একটি মোবাইল হ্যান্ডসেট থাকলেই সুবিধাপ্রাপকরা তাঁর সমস্ত জিজ্ঞাসার উত্তর এই অ্যাপের মাধ্যমে পেয়ে যাবেন।

যাঁরা বিমা করাননি তাঁদেরও চিকিৎসা পরিষেবা দেবে ইএসআইসি। যে সমস্ত ইএসআই হাসপাতালে রোগীর চাপ কম, সেখানে এঁরা মাত্র ১০ টাকা দিয়ে আউটডোরে দেখাতে পারবেন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার জন্য এবং ভর্তি হতে পারবেন সিজিএইচএস প্যাকেজের ২৫ শতাংশ খরচ করে।

ইএসআইসি-র সংস্থাগত পরিচিতি বজায় রাখতে একটি ওয়েবসাইট চালু হয়েছে www.esic.nic.in। ওই ওয়েবসাইটে ইএসআইসি-র সমস্ত হাসপাতাল, চিকিৎসাকেন্দ্র, আঞ্চলিক এবং শাখা অফিসের তথ্য পাওয়া যাবে।

ইএসআইসি উদীয়মান ১৩৫ জন ক্রীড়াবিদকে নিয়োগ করেছে।

গুরুত্বপূর্ণ ইএসআইসি হাসপাতালগুলিতে উচ্চমানের চিকিৎসা পরিষেবা দিতে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করেছে ইএসআইসি।

মন্ত্রক ন্যাশনাল কেরিয়ার সার্ভিস (এনসিএস) প্রকল্প রূপায়ণ করছে। এতে কর্মসংস্থান সংক্রান্ত বিভিন্ন পরিষেবা প্রদানের ব্যবস্থা আছে। যাঁরা চাকরি খুঁজছেন, শিল্প সংস্থা, কর্মসংস্থান কেন্দ্র, প্রশিক্ষণদাতা সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সকলেই এই পরিষেবার সুযোগ নিতে পারবে। এনসিএস প্রকল্পে রাজ্যগুলি এবং অন্য প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে মডেল কেরিয়ার সেন্টার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান পরিষেবা দেওয়া হবে।

অন্যভাবে সক্ষমদের জন্যও সারা দেশে ন্যাশনাল কেরিয়ার সার্ভিস সেন্টার চালু আছে। ৬,৬৪৪ জনকে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে ২০১৯-এর ৩১শে অক্টোবর পর্যন্ত।

তপশিলি জাতি/উপজাতিদের জন্য এ পর্যন্ত ২৫টি ন্যাশনাল কেরিয়ার সার্ভিস সেন্টার গঠন করা হয়েছে। এগুলির মাধ্যমে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় যাতে কর্মসংস্থানের সুবিধা হয়। ৬৭ হাজার ৭৬১ জন প্রার্থীকে কাউন্সেলিং করা হয়েছে। টাইপিং এবং শর্টহ্যান্ডে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে ৭ হাজার ৬২১ জন ছাত্রছাত্রীকে। ১ হাজার ৫০ জন প্রার্থীকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

‘প্রধানমন্ত্রী রোজগার প্রোৎসাহন যোজনা’য় কর্মচারীর ১২ শতাংশ দেয় অর্থই ইপিএফ এবং ইপিএস-এ তিন বছরের জন্য দেওয়া হচ্ছে ইপিএফও-র মাধ্যমে নবনিযুক্ত কর্মচারীদের জন্য। এই কর্মসূচির দুটি সুবিধা আছে, একদিকে কর্মদাতা সংস্থাকে অধিক কর্মসংস্থানে উৎসাহদান এবং অন্যদিকে আরও বেশি সংখ্যায় কর্মচারীকে ওই সংস্থায় কাজের সুযোগ করে দেওয়া।

সংগঠিত, অসংগঠিত এবং গ্রামীণ ক্ষেত্রে পুরুষ-মহিলা উভয় কর্মচারীর জন্য দেশ জুড়ে বিভিন্ন শাখা ও উপ-শাখার মাধ্যমে ভারত সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রকের অধীন ‘দ্য দত্তোপন্ত থেঙ্গাড়ি ন্যাশনাল বোর্ড ফর ওয়ার্কার্স এডুকেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ (ডিটিএনবিডব্লিউইডি) – এই স্বশাসিত সংস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদের এবং বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচির অধীনে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে অবহিত করতে শ্রমিকদের জন্য ডিটিএনবিডব্লিউইডি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে।

পর্ষদ সংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের জন্য ১,৬২৫টি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করেছে। অসংগঠিত ক্ষেত্রের জন্য ১,১২০টি এবং গ্রামীণ শ্রমিকদের জন্য ১৫০টি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

 

 

CG/AP/DM



(Release ID: 1598285) Visitor Counter : 244


Read this release in: English